একটি লজ্জাকর দৃষ্টান্ত!
ভারতবর্ষের মুসলিম-শাসনামল সম্পর্কে অনেক মূল্যায়ন হয়েছে। ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হওয়ার কারণে এমনটি হওয়াই ছিল স্বাভাবিক। তবে ইংরেজ বেনিয়াদের আগ্রাসনের আগের এবং তাদের রাজ্যক্ষমতা লাভের পরের মূল্যায়নের মাঝে যে স্পষ্ট পার্থক্য-এর কারণ ঐতিহাসিক নয়; রাজনৈতিক। তবে সত্যনিষ্ঠ ঐতিহাসিক প্রতিযুগেই ছিলেন এবং ধর্ম ও সংস্কৃতির সকল পার্থক্য সত্ত্বেও ইতিহাসের সত্যকে তারা যথাযোগ্য মর্যাদায় উপস্থাপন করেছেন। বহু অমুসলিম ঐতিহাসিকের কাছেও ভারতবর্ষের মুসলিম-শাসনামল ইনসাফ ও ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে সমসাময়িক কোনো শাসনব্যবসন্তার চেয়েই কোনো অংশে পিছিয়ে ছিল না।
জ্ঞান ও গবেষণার ক্ষেত্রে সত্যনিষ্ঠা এক অমূল্য সম্পদ। যে কোনো ধরনের সংকীর্ণতা ও সাম্প্রদায়িক মনোভাব একটি মূল্যবান গবেষণা কর্মকেও ম্লান করে দিতে পারে। এ ধরনের একটি অপ্রত্যাশিত দৃষ্টান্ত সম্পর্কে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
‘সংসদ বাঙ্গালা অভিধান’ গ্রন্থের সাথে পরিচিত নন এমন বিদ্যামোদী ভারতে তো বটেই বাংলাদেশেও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু এই অভিধানের ১৪১ পৃষ্ঠায় একটি শব্দের ব্যাখ্যা দেখে হতাশ হতে হয়েছে।
‘কাজী১, কাজি-বি. মুসলমান বিচারক বা ব্যবসন্তাপক। [আ.কাজী] কাজীর বিচার-ন্যায় ধর্মহীন বা একচোখা বিচার।’’
(সংসদ বাঙ্গালা অভিধান, সাহিত্যসংসদ অষ্টাদশ মুদ্রণ : জুন ১৯৯৫, মো. ফয়েজ উদ্দীন কর্তৃক মিরপুর, ঢাকা হতে প্রকাশিত ও মুদ্রিত।)
আমার জানা নেই, অভিধান্তগ্রন'টির পরবর্তী কোনো সংস্করণে তা সংশোধিত হয়েছে কি না।