মুহাররম ১৪২৮   ||   ফেব্রুয়ারি ২০০৭

একটি ভুল কাজ
দুআর মধ্যেও কি মুকাব্বিরের প্রয়োজন হয়?

পুরানো ঢাকার একাধিক মসজিদে বিষয়টি লক্ষ করেছি। অন্যান্য আরও মসজিদেও এমন হয়ে থাকবে। অর্থাৎ নামাযে মুকাব্বির ছিল না আর বিনা প্রয়োজনে কারো মুকাব্বির হওয়া ঠিকও নয়-কিন্তু দুআর সময় মুয়াজ্জিন সাহেব হঠাৎ করে মুকাব্বির হয়ে যায়। ইমাম দুআর জন্য হাত ওঠালে মুয়াজ্জিন উচ্চস্বরে বলেاللهم آمين দুআ শেষ করলে বলে, برحمتك يا ارحم الراحمينٍ এই প্রচলিত পদ্ধতিতে কয়েকটি বিষয় সংশোধন যোগ্য রয়েছে,

১. এই মুকাব্বির হওয়ার মূল কারণ হল নামাযের পরে সম্মিলিতভাবে দুআ করাকে জরুরি মনে করা হয়। অথচ এটি কোনো জরুরি ব্যাপার নয়।

২. এর এক কারণ এটাও যে, অনেক মানুষের সম্মিলিত দুআতে সবারই দুআর সূচনাকারীর সঙ্গে আরম্ভ করা এবং তার সঙ্গেই শেষ করাকে জরুরি মনে করা হয়। অথচ এটিও জরুরি নয়। কেউ ইচ্ছা করলে পরে দুআ আরম্ভ করেও আগে শেষ করতে পারে। আবার ইচ্ছা করলে একসঙ্গে শুরু করে অন্যদের দুআ শেষ হওয়ার পরও নিজের দুআ জারী রাখতে পারে। মোটকথা সবার একসঙ্গে দুআ শুরু করা কিংবা একসঙ্গে শেষ করা কোনোটিই জরুরি নয়। দুআতে নামাযের মত ইমামত ও ইক্তেদার বিধান প্রযোজ্য হয় না।

৩. নামাযে মুকাব্বির না হয়ে দুআতে মুকাব্বির হওয়া-এ থেকে এই ধারণা সৃষ্টি হতে পারে যে, নামাযে জামাতবদ্ধ হওয়ার চেয়ে দুআতে জামাতবদ্ধ হওয়া অধিক জরুরি। অথচ এটি সম্পূর্ণ ভুল। নামাযে প্রয়োজনের সময় মুকাব্বির হওয়া কাম্য কিন্তু দুআতে কোনো সময়ই মুকাব্বির রাখার আদেশ করা হয়নি।

৪. সাধারণত জামাতের নামাযে কিছু মানুষ মাসবূক থাকে। এ অবস্থায় ইমাম উচ্চ স্বরে দুআ করে কিংবা মুয়াজ্জিন উচ্চ আওয়াজে মুকাব্বির হয়ে তাদের নামাযে অসুবিধা সৃষ্টি করে। এটি জায়েজ নয়। যদি একজন মানুষও নামাযে মাসবূক থাকে তাহলে ইমাম-মুয়াজ্জিন কারও জন্যই এভাবে দুআ করার অধিকার নেই, যাতে নামাযীর নামাযে বিঘ্ন ঘটে।

৫. দুআর সূচনা হামদ ও ছানা দ্বারা এবং সমাপ্তিও হামদ-ছানা ও আমীন দ্বারা করা মুস্তাহাব। উপরোক্ত রেওয়াজি পদ্ধতিতে এই বিষয়টিও অনুসৃত হয় না।

 

 

advertisement