চলুন, শেকড়ে ফেরত যাই
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরিসংখ্যানে এসেছে, আমেরিকান সমাজে প্রিয়জনের মরদেহ মেডিকেলে দানের প্রবণতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। খবরটির শিরোনাম পড়ার পর আমি একটু কৌতূহলী হয়ে বিস্তারিত পড়ার জন্য ক্লিক করলাম। সাধারণত খবরের শিরোনাম পড়া হয়। বাছাইকৃত কিছু খবর বিস্তারিত পড়া হয়। শিরোনাম দেখলেই বোঝা যায়, কে কী বলতে চায়। এটাও সন্দেহের দৃষ্টিতে ক্লিক করার পর দেখি আমার সন্দেহ সত্যি হয়েছে। শিরোনাম পড়লে মনে হবে, তারা বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ, তাই গবেষণার জন্য মরদেহ মেডিকেলে দিয়ে দেয়। এটা তাদের মহানুভবতা- এটা কেউ ভাবতে পরে। আমার আগেই সন্দেহ হয়েছিল। ভেতরে পড়ে দেখি সন্দেহ ঠিক। যারা মা-বাবা আত্মীয়দের দেহ দান করে দিচ্ছে তাদের বড় একটা অংশই অন্তেষ্টিক্রিয়ায় যে বিশাল খরচ হয়- তা করতে চায় না। ভাবটা এমন- মারা গেছে; অন্তেষ্টিক্রিয়ায় এত খরচ করে কী হবে? এর চেয়ে মেডিকেলে দান করে দিলে খরচও বাঁচল আবার তিনি মেডিকেলে দানকারী হিসাবেও পরিচিতি পেলেন।
এদিকে কয়েক মাস আগে আমাদের দারুল ইফতায় একটা প্রশ্ন এসেছে কানাডা প্রবাসী কিছু ভাইয়ের পক্ষ থেকে। তারা একটি সমিতি বা তহবিল গঠন করতে চাচ্ছে। তহবিলে তারা কানাডিয়ান ডলার জমা করবে। সম্ভবত তারা মাথাপিছু ৩০০ ডলার নির্ধারণ করেছে। সদস্য সংখ্যা কয়েক শ হবে। উদ্দেশ্য হল, তাদের মৃত্যু-পরবর্তী কাফন-দাফনের খরচ এই তহবিল থেকে বহন করা হবে। কানাডা থেকে যখন এই প্রশ্ন পঠিয়েছে তখন সেখানে কাফন-দাফনে খরচ হয় জনপ্রতি তিন হাজার ডলার। সাধারণ আয়ের লোকের জন্য এটা বিশাল অংক। তারা চিন্তা করেছে, তিন শ ডলার করে জমা করে একটি তহবিল তৈরি হবে। সমিতির সদস্যদের মধ্যে থেকে কেউ মারা গেলে তার কাফন-দাফনের পূর্ণ খরচ এই তহবিল থেকে দেওয়া হবে। যত টাকা খরচ হয়েছে জীবিতরা ভাগ করে তহবিলে সে পরিমাণ টাকা আবার জমা করে দেবে। এটা জায়েয কি না?
মাসআলা পরের বিষয়। সেটি দারুল ইফতা দেখবে।
এই দুটো ঘটনার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমার মনে পড়ে গেল একজন ভারতীয় কবির কবিতা, অনেক আগে সামনে এসেছিল-
بہتر ہے موت کہ دیتی تو ہے کفن
گر زندگی کا بس نکلے تو کپڑے اتار دے
মৃত্যু একদিক থেকে ভালো যে, কাফনের ব্যবস্থা করে/ জীবনের গাড়ি যখন চলমান তখন গায়ের কাপড়ও খুলে নেয়।
কবিরা সমাজ নিয়ে ভাবেন। তাদের কবিতায় অনেক সময় সমাজের চিত্র ফুটে ওঠে। এই ভদ্রলোক সমাজের চিত্র তুলে ধরেছেন। এটা দুনিয়ার চিত্র; যেখানে ক্ষমতাবান ও জুলুমবাজরা মজলুম ও দুর্বলদের উপরে জুলুম করতে করতে এমন একটা অবস্থা হয় যে, পারলে গায়ের কাপড়ও খুলে নিয়ে যায়।
কবি বলেছেন, মৃত্যুটা তবুও ভালো; মৃত্যু হলে অন্তত কাফন তো দেয়। মরে গেলে তো কাফন দিতে কেউ অস্বীকার করে না। সুতরাং বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যু ভালো। অন্তত পুরো শরীর কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়। এতটুকু কার্পণ্য করে না। কিন্তু বেঁচে থাকলে মজলুম ও দুর্বলরা এমন একটা অবস্থায় থাকে, মনে হয় যেন তার গায়ের কাপড়ও খুলে নিয়ে যেতে চাচ্ছে।
উপরের দুটো ঘটনা দেখার পর আমার মনে হল, ঐ কবি বেঁচে থাকলে এখন আফসোস করবেন। অবাক হবেন যে, তার কবিতার সীমাদ্ধতা প্রকাশ পেয়ে গেছে। তিনি তো উপমহাদেশীয় সমাজচিত্রকে সামনে এনেছিলেন। এখন আমেরিকা-কানাডাসহ যেসব জায়গায় অন্তেষ্টিক্রিয়া বা আমাদের ইসলামের পরিভাষায় কাফন-দাফনের খরচ বেড়ে গেছে এবং যেখানে মানুষ পরিবার-সমাজ থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বা যাচ্ছে সেখানে এখন কাফনও দিতে চায় না। কবি তো চিন্তা করেছিলেন, অন্তত কাফন জুটবে বলে মৃত্যু ভালো। কিন্তু এখন কবি বেঁচে থাকলে অবাক হবেন, আমি তো ভেবেছিলাম অন্তত কাফনটুকু দেবে। এখন তো কাফনও দেয় না। কবি হয়তো আরেকটা কবিতা লিখতে চেষ্টা করবেন। অথবা তার কবিতা সংশোধন করে নতুন কিছু বলবেন।
উপরের দুটো ঘটনা হল সাধারণ চিত্র। যে চিত্রটা পশ্চিমা সমাজের পূর্ণ অবস্থাকে সামনে নিয়ে আসে। আমরা আমেরিকার যে পরিসংখ্যান পেয়েছি সেটা অবাক হওয়ার মতো বড় কিছু না। এগুলো আমরা আগে থেকেই শুনে এসেছি। মরহুম এ্যাড. জহিরুল ইসলাম। পল্লবী মারকাযুদ দাওয়াহর পাশে তাঁর বাসা ছিল। খুবই মহব্বতের মানুষ ছিলেন। নামাযী আল্লাহভক্ত মানুষ। বেশি বেশি দুআ করতেন। তিনি দুআর একটি বইও সংকলন করেছিলেন। ভদ্রলোক, তাঁর ছেলে ও ছেলের বউয়েরা আমেরিকায় থাকতেন। আমেরিকায় ছয় মাস থাকতেন, দেশে ছয় মাস থাকতেন। তিনি ওখানে ওকালতি করতেন। দেশেও সীমিত পরিসরে ওকালতি করতেন। লেখক, সংবাদিক, সাহিত্যিক ছিলেন। আল্লাহ তাঁর প্রতি রহম করুন। কিছুদিন আগে ইন্তেকাল করেছেন।
তিনি আমেরিকার সমাজচিত্র তো বলতেনই সঙ্গে একটি ঘটনা বিশেষ করে বলতেন। আমেরিকার একটি হাসপাতালে তাঁর মা চিকিৎসার জন্য অনেকদিন ভর্তি ছিলেন। তিনি প্রায়ই মাকে দেখতে যেতেন। মায়ের ওয়ার্ডে যেতে এক বৃদ্ধা মহিলাকে পার হয়ে যেতে হত। পার হওয়ার সময় ঐ মহিলাকে গুড মর্নিং বা গুড ইভিনিং ইত্যাদি বিভিন্ন অভিবাদন জানাতেন।
মহিলা একজন দাড়িওয়ালা মুসলিমকে দেখে বিরক্ত হতেন। কোনো জবাবও দিতেন না। একদিন মহিলার রোগ বেড়ে গেল। ফলে তার কাপড়-চোপড়েও সমস্যা হল। জহির সাহেব তার প্রাথমিক সেবা দিলেন। নার্সদের ডেকে মহিলার সামনে বকা দিলেন, কেন তোমরা দেরি করলে? ভালো করে খোঁজ-খবর রাখ না কেন?
এরপর থেকেই মহিলা তাকে গুরুত্ব দেয়া শুরু করল। তিনি মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলে মহিলা তাঁকে ডেকে নিয়ে গল্প করতেন। নিজের জীবন ও ছেলে-মেয়েদের কথা বলতেন। একসময় মহিলা বলল, তুমি আমার সাথে আলাদা দেখা কর।
মহিলা চেয়েছিল ধন-সম্পদ তাকে দিয়ে দিতে। কারণ, বৃদ্ধার সন্তানেরা সবাই দূরে বিভিন্ন জায়গায় থাকে। তারা ফোনে খোঁজ-খবর নেয়। কেউই দেখতে আসে না।
এমন এক-দুটি ঘটনা নয়। এটা ওখানকার সাধারণ চিত্র। এই পরিসংখ্যান তো নতুন। অনেক আগ থেকেই শুনে আসছি, ওখানে মৃত্যুর পর ওয়ারিসদেরকে জানানো হলে তাদের অনেকে বলে, টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি, তোমরা অন্তেষ্টিক্রিয়ার ব্যবস্থা করে নাও। তখন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা অন্তেষ্টিক্রিয়ার কাজ সম্পন্ন করে। ব্যাংকে টাকা পঠিয়ে দিল আর মা-বাবা আত্নীয়-স্বজনের দায়িত্ব আদায় হয়ে গেল! অনেকেই এমন থাকে, অন্তেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেয়ার জন্য হাতে সময় থাকে না। কেউ কেউ হয়তো যোগও দেয়। উভয় প্রকারই থাকে। ওখানকার সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা আগে থেকেই জেনে এসেছি। নতুন করে এ কথাগুলো এজন্য এসেছে যে, বর্তমানে এগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা হচ্ছে। এগুলো তারাই প্রমোট করছে, যারা পরিবারিক ও সামাজিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। প্রত্যেকেই ব্যক্তি ও ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে। ব্যক্তিস্বার্থ তাদের কাছে প্রাধান্য পেয়েছে। তারাই এগুলো স্যোশাল মিডিয়ায় নিয়ে এসেছে। এগুলো খুব জনপ্রিয় হয়েছে। কারণ মানুষ কর্মের পরে একাকীত্বে বাস করে। মা-বাবার সাথে সন্তানের সম্পর্ক নেই। ভাই-বোনের একে-আপরের সাথে সম্পর্ক নেই। তাদের বিশাল একটা অংশ তো মা-বাবা থেকে আলাদা হয়ে যায়। তাদের আসলে সমাজ-পরিবার বলতে কিছু নেই। পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন ওখানে খুবই ক্ষীণ। এজন্য তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বানিয়েছে। যার পরিবার নেই বা পরিবারের সাথে সম্পর্ক নেই, পুরো দুনিয়ায় তার বন্ধু আছে। হাজার হাজার বন্ধু। একবার প্রশ্ন এসেছিল, অমুসলিমদেরকে কি বন্ধু বানানো জায়েয আছে? তারা তো আমাদের অফিসের কলিগ। তাদের সাথে খাওয়া-দাওয়া, উঠা-বসা হয়।
আমি বলি, ফেসবুক মার্কা সাধারণ বন্ধু হলে জায়েয হবে। কারণ, সেখানে মানুষের এমন হাজার হাজার বন্ধু থাকে, যাদের সাথে গায়েবী সময় কাটানো ছাড়া আর কোনো সম্পর্কই হয় না। শুধু লাইক, কমেন্ট, হাই হ্যালো দিয়েই বন্ধুত্বের দাবি পূরণ হয়ে যায়। আরেকটা হল ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সেটা ভিন্ন মাসআলা। অমুসলিমদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব নিষেধ। কারণ, তাদের সাথে অন্তরঙ্গতা-ঘনিষ্ঠতা কুরআনে নিষেধ করা হয়েছে।
মূলকথা হল, পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কুরআনের বিভিন্ন সূরায় এ নিয়ে আলোচনা আছে। হাদীসের অনেক অধ্যায় আছে এ বিষয়ে। সেগুলো মানুষ হারিয়ে ফেলেছে। এখন শুধু মৌখিকভাবেই সামাজিক জীব হিসাবে রয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার সমাজ হল দূরের সমাজ। কাছের সমাজ নয়, আপনজন নয়। মানুষ যদি এখন ইসলামের দিকে না আসে, মুসলিমরা যদি অন্যদের ফাঁদে পা দেয়, নিজের পারিবারিক বন্ধন, নিজেদের আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-পড়শি কাছের লোকজনের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক রক্ষা না করে, একে-অন্যের হকের রেয়ায়েত না করে, আত্মীয়-স্বজন পরস্পর পরস্পরকে দেখা-শোনা না করে, ইসলামের যে হকগুলো আছে সেগুলোর প্রতি যদি খেয়াল না করে তাহলে তো দুর্ভোগ আর গঞ্জনা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। এক হাদীসে কিছু হকের বিবরণ এসেছে-
حَقّ المُسْلِمِ عَلَى المُسْلِمِ خَمْسٌ: رَدّ السّلاَمِ، وَعِيَادَةُ المَرِيضِ، وَاتِّبَاعُ الجَنَائِزِ، وَإِجَابَةُ الدّعْوَةِ، وَتَشْمِيتُ العَاطِسِ.
এক মুসলিমের ওপর আরেক মুসলিমের পাঁচটি হক রয়েছে, সালামের উত্তর দেওয়া, অসুস্থের সেবা করা, জানাযায় শরীক হওয়া, দাওয়াত করলে গ্রহণ করা, হাঁচির জবাব দেওয়া। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১২৪০
সহীহ মুসলিমের এক বর্ণনায় ছয়টি হকের কথা আছে। সেখানে এই পাঁচটির সঙ্গে আরেকটি হল, কোনো মুসলমান যদি তোমার কাছে হীত উপদেশ চায় তাহলে উপদেশ দাও। উল্লেখ্য, উপরোক্ত হাদীসে اتباع الجنائز অর্থাৎ মৃত্যুপরবর্তী কাফন-দাফন ও জানাযায় অংশগ্রহণের এ নির্দেশটি আশপাশের সকলের জন্যই, শুধু আত্মীয়-স্বজনের জন্য নয়। যে কোনো মুসলিমের মৃত্যু হলে তার পাশর্^বর্তী মুসলিমদের উপর এ দায়িত্ব বর্তায়। যেখানে সাধারণ মুসলিমদেরই এটি করণীয়, সেখানে নিকটজন, আত্মীয়-স্বজনের বিষয়টি কত গুরুত্ব রাখে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
خدا محفوظ رکھیں ایسی مجبوریوں سے ہم سب کو/جو مجبوری پڑوسیوں کا جنازہ چھوڑ دیتی ہے
আল্লাহ আমাদেরকে এমন অপারগতা থেকে রক্ষা করুন, যে অপারগতার দরুন পড়শির জানাযা ছেড়ে দিতে হয়।
এসব দায়দায়িত্বের প্রতি সচেতন না হলে এবং আমাদের নির্দেশিত ঐতিহ্যবাহী ও নিজস্ব সমাজব্যবস্থায় ফিরে না গেলে আমাদের অবস্থাও তো তাদের মত হতে বাধ্য। সেগুলোর কিছু নজির তো দেখাই যাচ্ছে। আমাদের মত দেশেও এখন বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
একশ্রেণির বড় বড় শিক্ষিতরাও বৃদ্ধ মা-বাবাকে অবহেলা করছেন। বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছেন। এসব কীসের আলামত?! সুতরাং শুধু ইসলামী তাহযীব তামাদ্দুন নিজেরাই গ্রহণ করলে হবে না, বরং স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তান-সন্ততিকেও নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ইসলামের পারিবারিক-সামাজিক চেতনাগুলোর বিষয়ে পরিচিত ও অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। নতুবা দেখা যাবে, নিজের লাশ দাফন করার জন্য নিজেদের সন্তানের মানসিকতা থাকবে না। নিজের মৃত্যুর আগে নিজের চিন্তা হবে, আচ্ছা আমার তো এখানে ফ্ল্যাট-বাড়ি, টাকা-পয়সা অনেক কিছু আছে। আমি বিদেশে আছি। টাকা কামাই করছি। বাড়িতে পাঠাচ্ছি। মোটামুটি এখানে সমৃদ্ধ ও স্বচ্ছল জীবন যাপন করছি। কিন্তু সন্তানেরা আমার কাফন-দাফনের টাকা দেবে তো? সে চিন্তা করে আবার সমিতি বানাতে হতে পারে অথবা টাকা জমা করতে হতে পারে।
আচ্ছা যারা আমেরিকা-কানাডার মত দেশে যাচ্ছে, লক্ষ লক্ষ টাকা বেতন পাচ্ছে, সে কেন ভয় পাচ্ছে, তার মৃত্যুর পর তিন হাজার ডলার তার সন্তানরা দেবে কি না! সে ভয় থেকে মৃত্যু-পরবর্তী খরচের টাকা অগ্রিম জমা করার চিন্তা করছে! এখানেই ভাবনার বিষয়, মুসলিমদেরকে যদি নিজ স্বকীয়তা এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের শিক্ষার দিকে ফিরিয়ে নেওয়া না যায়, তারা যদি না বোঝে তাহলে অধঃপতনের কঠিন গহ্বরে নিপতিত হতে হবে। কতটুকু কঠিন হবে মানুষ কল্পনাও করতে পারবে না। কোন্ অবস্থায় গেলে মানুষ চিন্তা করে, মৃত্যুর পর আমার দাফনের খরচ দেয়া হবে তো? এই একটা প্রবণতা ও দুশ্চিন্তা যদি মানুষের কাজ করে এর চেয়ে দুঃখের আর কী হতে পারে? সুতরাং ফেরত যেতে হবে। বিজাতিরা কোনো বিষয়কে সভ্যতা, ফ্যাশন, উন্নয়ন বলে আমাদেরকে ধরিয়ে দিল আর আমরা চোখ বন্ধ করে নিয়ে নিলাম- এই প্রবণতা পরিহার করে বাস্তবতায় ফিরে যেতে হবে এবং তারা যেখানে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে সে জায়গাগুলো আমাদের বুঝতে হবে।
যেসব কারণে তাদের অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করছে। ইসলামে পারিবারিক, সামাজিক সৌন্দর্যগুলো আছে। এগুলো দেখেই তারা ইসলামের দিকে আসছে। তারা যেগুলো অপছন্দ করছে সেগুলোতেই এখন এক শ্রেণির মুসলিমরা ঝুঁকে পড়ছে। সুতরাং ফিরতে হবে, ফেরাতে হবে এবং তাদেরকে সঠিক পথে আনতে হবে।
কবির ভাষায়-
رفعتوں کی جستجو میں ٹھوکریں تو کھا چکے/آستان یار پر اب سر جھکا کر دیکھئے
উন্নতির সন্ধানে অনেক ঠোকরই তুমি খেয়েছ,
বন্ধুর আস্তানায় এখন মাথা ঝুঁকিয়ে দেখ।