সুবহে সাদিক কখন শুরু?
প্রসঙ্গ : সমকালীন কিছু মুশাহাদার বিবরণ-১
আলহামদু লিল্লাহ, আল্লাহ তাআলার অশেষ মেহেরবানী, এই পর্যন্ত লেখাটির মোট চারটি পর্ব মুহতারাম পাঠকবৃন্দের খেদমতে আমরা তুলে ধরতে পেরেছি। (দ্রষ্টব্য : ১. মাসিক আলকাউসার এপ্রিল-মে ’১৯; ২. ফেব্রুয়ারি ’২০; ৩. জুলাই ’২০; ৪. আগস্ট ’২০) যার দ্বারা আমাদের কাছে খুব ভালোভাবেই স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, ১৮º-এর ভেতর সুবহে সাদিক শুরু হওয়ার বিষয়টি বহু মজবুত ও শক্তিশালী দলীল দ্বারা প্রমাণিত। এর পর বিষয়টিতে আর সন্দেহের কোনো অবকাশ থাকে না। এই পর্বে আমরা ১৮º-এর ভেতর সুবহে সাদিক শুরু হওয়ার স্বপক্ষে সমকালীন কিছু মুশাহাদার প্রমাণও তুলে ধরতে চাচ্ছি।
মুশাহাদার অর্থ, চোখে দেখা; পর্যবেক্ষণ। আমাদের এই আলোচনায় মুশাহাদা দ্বারা উদ্দেশ্য, সুবহে সাদিকের চাক্ষুষ পর্যবেক্ষণ। এই লেখাটির আগের পর্বগুলোতে প্রাচীন মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ থেকে ১৮º-এর ভেতর সুবহে সাদিক (অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল টোয়াইলাইট) শুরু হওয়ার যেসব বক্তব্য উদ্ধৃত করা হয়েছে সেগুলোর ভিত্তিও মুশাহাদাই। দীর্ঘদিন মুশাহাদা ও চাক্ষুষ পর্যবেক্ষণ (Observation) করেই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। যেমন ফালাকিয়াতের জগদ্বিখ্যাত ইমাম ইবনে শাতির রাহ. বলেছেন-
وقد رصدت ارتفاع النظير وانحطاط الشمس تحت الأفق في سنين متوالية، فوجدته لا يزيد أبدًا عن ২০ درجة ولا ينقص عن ১৮ درجة.
অর্থাৎ সুবহে সাদিকের সময় সূর্য দিগন্তের কত ডিগ্রি নিচে থাকে তা আমি লাগাতার অনেক বছর পর্যবেক্ষণ করেছি। আমি দেখেছি, তা ২০º-এর আগে হয় না এবং ১৮º থেকে দেরিও হয় না। (আননাফউল আম্ম, পৃ. ২৪৭)
মুসলিম উম্মাহ ও ফালাকীগণ (জ্যোতির্বিজ্ঞানী)-এর এসব মুশাহাদা ও চাক্ষুষ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতেই যুগ যুগ ধরে মুসলিম বিশ্বে ১৮º বা এর কিছু পূর্ব থেকেই সুবহে সাদিক ধরে ফজরের সময় নির্ধারণের মাধ্যমে আমল চলে আসছে। অতএব মুশাহাদা নির্ভর যুগ পরম্পরায় চলে আসা মুসলিম উম্মাহর আমল ও মুসলিম ফালাকীগণের এসব বক্তব্য আমাদের সামনে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হওয়ার পর আমাদের এ যুগে আবার নতুন করে মুশাহাদার উপর বিষয়টি নির্ভরশীল থাকে না।
যদি কেউ বলেন, পূর্বের এসব প্রমাণ আমাদের জন্য যথেষ্ট নয়; বরং আমাদের নিজেদের মুশাহাদা করা জরুরি। এক্ষেত্রে কোন্টি সঠিক আর কোন্টি বেঠিক এর নির্ণয় আমাদের মুশাহাদার উপর নির্ভরশীল। এ ছাড়া আমল করা যাবে না। যদি কেউ এমনটি বলতে চান বা কারো চিন্তাধারা এমন হয় তাহলে তার কাছে আমাদের প্রশ্ন থাকবে, আপনি মুশাহাদা করলেন ভালো কথা। কিন্তু বাকি যারা মুশাহাদা করেনি তারা কীভাবে আমল করবে? মুসলিম নর-নারী প্রত্যেকেরই জনে জনে মুশাহাদা করা তো সম্ভব নয়। তাদের জন্য অন্যের মুশাহাদার অনুসরণ ছাড়া আর কোন্ পথ আছে?! তাহলে প্রশ্ন হল, তারা আপনার মুশাহাদা গ্রহণ করবে, না পূর্ববর্তীদের মুশাহাদা?! উত্তর সহজ। আপনি কোনোভাবেই তাদেরকে আপনার মুশাহাদা মানতে বাধ্য করতে পারেন না। আর আপনার দৃষ্টিতে যদি আপনার মুশাহাদা অন্যদের জন্য আমলযোগ্য হয় তাহলে পূর্বসূরী ফকীহ ও জ্যোতির্বিদগণের মুশাহাদা কেন আপনার জন্য আমলযোগ্য হবে না?!
যে ভাইয়েরা নিজেদের অসম্পূর্ণ মুশাহাদা অন্যদের উপর চাপিয়ে দিতে চান এবং এর দ্বারা পূর্ববর্তীগণের মুশাহাদাকে প্রত্যাখ্যান করতে চান, তাদেরকে আবারো আমরা ঐ বাস্তবতা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যা আগেও বলা হয়েছে। তা হল, যে ব্যক্তি কোনো কারণে সুবহে সাদিক শুরু হওয়ার মুহূর্তে তা মুশাহাদা করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং তা শুরু হওয়ার বেশ কিছু পর দেখতে পেয়েছে, সে এটা তো বলতে পারে যে, আমি অমুক স্থানে এই তারিখে এতটার সময়/এত ডিগ্রিতে সুবহে সাদিক দেখেছি। কিন্তু এর ভিত্তিতে সে কখনো এ দাবি করতে পারে না যে, এই সময়ের আগে সুবহে সাদিক শুরুই হয় না, বা এর আগে কেউ সুবহে সাদিক দেখেনি। কারণ, এটা হবে তার মুশাহাদার অতিরিক্ত একটি দাবি। যার সপক্ষে তার কাছে কোনো প্রমাণ নেই। উপরন্তু তার এই দাবিটি বাস্তবতা বিরোধী হওয়ার উপর রয়েছে অকাট্য দলীল-প্রমাণ। তা হল, হাজারো বছরের চলে আসা বিশেষজ্ঞ ও বিশ্বস্ত মনীষীগণের মুশাহাদা।
বিষয়টি এমনিতেই স্পষ্ট। আলেম ও তালিবে ইলম সবাই এই স্বীকৃত নীতি জানেন-
من رأى حجة على من لم ير.
তবে বিষয়টি আরো স্পষ্টভাবে বুঝে আসবে যদি একটি তথ্যের প্রতি খেয়াল করা হয়। তা হল, এক্ষেত্রে কারো দাবি তো এমনও রয়েছে যে, সুবহে সাদিক শুরু হয় ১৪.৬º-এ। আবার কেউ বলেছেন, সুবহে সাদিক তখনো শুরু হয় না। বরং সুবহে সাদিক হয় ১২º-এ। আর ১৫º-এ সুবহে কাযিবের সময় হয়।১ তারাও কিন্তু মুশাহাদার বরাত দিচ্ছেন। তাহলে কি বলতে হবে যে, সুবহে সাদিক ১৫º-এও শুরু হয় না; বরং তখন সুবহে কাযিব হয়?!
মূলত ব্যাপারটি হল, সুবহে সাদিক যেহেতু ১৮º-এর ভেতর শুরু হয়ে যায় তাই এর পর থেকে যে যখন সুবহে সাদিক দেখেছে তার দেখা সঠিক। যদিও সে সুবহে সাদিকের শুরুটা দেখার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারেনি। কিন্তু তাই বলে যারা এই সৌভাগ্য অর্জন করতে পেরেছেন তাদের মুশাহাদা প্রত্যাখ্যান করার অধিকার তার আদৌ নেই।
দেখুন, প্রত্যেক এলাকায় সূর্যোদয় কখন হয়- এর সময় নির্ধারিত। কিন্তু আমার এলাকার আবহাওয়া ও পরিবেশগত অবস্থা এমন যে, অনেকদিন মুশাহাদার চেষ্টা করেও সেই সময় সূর্যোদয় দেখতে পারিনি। অথচ সূর্যোদয় কত সুস্পষ্ট প্রকাশ্য আলামত। তাহলে এক্ষেত্রে কি আমার জন্য এই দাবির কোনো অবকাশ আছে যে, আমার স্বচক্ষে সূর্যোদয় দেখার আগ পর্যন্ত সূর্যোদয় হয় না? তাই আমি এর আগ পর্যন্ত ফজরের নামায পড়তে থাকব, যদিও হিসাব অনুযায়ী এবং অন্য বিশ^স্ত অনেক মানুষের মুশাহাদা অনুসারে সূর্যোদয় আরো আগেই হয়ে গেছে?! এর কি কোনো সুযোগ আছে??
ভালোভাবে বোঝা দরকার, আমরা এ কথা বলি না যে, বর্তমানে মুশাহাদা করাই যাবে না, বা করতে যাওয়াটা দূষণীয়। উপযুক্ত স্থান ও অনুকূল পরিবেশ পেলে আমরা অবশ্যই মুশাহাদা করতে পারি। আমাদের আপত্তি মানসিকতা নিয়ে। পূর্ববর্তীদের মুশাহাদা আমাদের কাছে নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রমাণিত হওয়ার পরও একে দলীল মনে না করা এবং তার পরও বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান থাকা- এই মানসিকতা সংশোধনযোগ্য। পূর্ববর্তীদের মুশাহাদাগুলোকে নির্ভরযোগ্য মনে না করাটা বড়ই অন্যায়!
মুশাহাদা করা অবশ্যই প্রশংসনীয়। বরং যাদের কাছে পূর্ববর্তীদের মুশাহাদা ও মুসলিম উম্মাহর তাআমুলের প্রমাণ বিদ্যমান নেই তাদের তো মুশাহাদা করা ছাড়া কোনো উপায়ও নেই। তবে যারা যে উদ্দেশ্যেই মুশাহাদা করবেন তাদেরকে মুশাহাদা করতে হবে যাবতীয় শর্ত পালন করে।
মনে রাখা দরকার, সুবহে সাদিক হল সূর্যোদয়ের আগের প্রশস্ত আকারের আলো। তবে এটি শুরু হয় الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ সাদা রেখার মত হাল্কা ও ক্ষীণ আকারে। যা কুরআনুল কারীম দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রামাণিত। আলোটি এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। সূর্য দিগন্তের যত কাছাকাছি আসতে থাকে আলোর পরিমাণও সে হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। একসময় সূর্যোদয় হয়ে যায়। অতএব যারা সুবহে সাদিক কখন শুরু হয় এটি মুশাহাদা করতে চান তাদেরকে মুশাহাদা করতে হবে الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ তথা সাদা রেখার মত ক্ষীণ আলো। প্রশস্ত আলো দেখলেই এটিকে সুবহে সাদিকের শুরু বলা যাবে না, যদি তা ক্ষীণ আকারে না হয়। বরং বুঝতে হবে, সুবহে সাদিক শুরু হয়ে গেছে আরো আগেই, যা আমি খেয়াল করতে পারিনি।
আর সুবহে সাদিক الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ -এর মত হাল্কা ও ক্ষীণ আকারে দেখার জন্য রয়েছে কিছু শর্ত। কেননা এই আলোটি যেহেতু ক্ষীণ আকারে প্রকাশ হয় তাই এটি দেখার জন্য পরিবেশ পরিপূর্ণ অনুকূলে থাকা আবশ্যক। যেমন-
১. পর্যবেক্ষণের জন্য এমন এলাকা নির্বাচন করতে হবে যেখানে বৈদ্যুতিক আলো নেই। কারণ, সেখানে বিদ্যুতের আলো থাকলে এর আলোর কারণে সুবহে সাদিকের ক্ষীণ আলো দেখা সম্ভব হবে না।
২. এমন সময় পর্যবেক্ষণ করতে হবে যখন দিগন্তে চাঁদের আলো থাকে না।
৩. সাথে সাথে দিগন্ত থাকতে হবে সবরকম দূষণমুক্ত। মেঘ, কুয়াশা, ধোঁয়া, জলীয়বাষ্প ও ধুলোবালি ইত্যাদি থেকে দিগন্ত পরিষ্কার থাকতে হবে।
৪. এবং পর্যবেক্ষণকারী ও উদয়স্থলের মাঝে কোনো আড়াল থাকতে পারবে না।
৫. আর পর্যবেক্ষণও করতে হবে ধারাবাহিকভাবে অনেকদিন। কারণ, হঠাৎ করে দেখে সুবহে সাদিক উদয়ের সময়ের ক্ষীণ আলো ধরা যায় না। প্রখর দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তিও তা বুঝতে পারে সুবহে সাদিকের উদয় বারবার দেখে অভ্যস্ত হলে।
এসব দিক খেয়াল করে যথাযথভাবে মুশাহাদা করলে الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ -এর মত হাল্কা ও ক্ষীণ আকারে প্রকাশিত সুবহে সাদিকের শুরুর প্রথম আলো দেখা সম্ভব। এসব শর্ত পালন করে বর্তমান যুগেও বিভিন্ন দেশে মুশাহাদার ধারা চলমান রয়েছে। বিগত পাঁচ দশকের ভেতর অনেক দেশেই বিজ্ঞজনেরা মুশাহাদা করেছেন। এর মধ্যে লিবিয়া, জর্দান, ইয়েমেন, দুবাই, তুরস্ক, সৌদি আরব, ভারত ও পাকিস্তানসহ মোট আটটি দেশের অনেকগুলো মুশাহাদার প্রমাণ আলহামদু লিল্লাহ আমাদের কাছে রয়েছে। এসব মুশাহাদার বিবরণ উদ্ধৃতিসহ মুহতারাম পাঠকবৃন্দের খেদমতে আমরা তুলে ধরছি।
আমরা আশা করি, আল্লাহ তাআলার ফযল ও করমে আমাদের পূর্বের আলোচনাগুলো থেকেই মুহতারাম পাঠকবৃন্দের কাছে ১৮º -এর ভেতর সুবহে সাদিক হওয়ার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়ে গেছে। সমকালীন এসব মুশাহাদার বিবরণ পাঠ করার দ্বারা এ বিষয়ে তাদের আরো সুকূন ও প্রশান্তি লাভ হবে ইনশাআল্লাহ।
লিবিয়া
১৯৯৩ ঈসাব্দে ফজরের ওয়াক্তসহ পাঁচ ওয়াক্তেরই সময় নিরীক্ষণের জন্য লিবিয়ার কুল্লিয়্যাতুদ দাওয়াতিল ইসলামিয়াহ একটি কমিটি গঠন করে। যাতে উলামায়ে শারীয়াহ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়ারদের এক জামাত ছিলেন। শহর থেকে অনেক দূরে সুবহে সাদিক দেখার মতো উপযোগী বিভিন্ন এলাকায় তারা গমন করেন এবং ১৯৯৩ ঈ.-এর ভেতর অনেকদিন তারা সুবহে সাদিক মুশাহাদা করার চেষ্টা করেন। সাথে সাথে সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত, শাফাকে আহমার ও শাফাকে আবইয়ায ইত্যাদি অন্যান্য নামাযের ওয়াক্তের সময়ও পর্যবেক্ষণ করেন।
তাদের এসব পর্যবেক্ষণ ও মুশাহাদার বিবরণ এবং সংশ্লিষ্ট আরো আলোচনাসহ নামাযের একটি সময়সূচি مواقيت الصلاة في الجماهيرية العظمى নামে কিতাব আকারে ছাপা হয়। যার প্রকাশক হল লিবিয়ার বড় বড় তিনটি প্রতিষ্ঠান-
১. কুল্লিয়্যাতুদ দাওয়াতিল ইসলামিয়াহ। ২. আওক্বাফ ও ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর الهيئة العامة للأوقاف والشؤون الإسلامية (General Authority of Awqaf and Islamic Affairs) ৩. মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান المركز الليبي للاستشعار عن بعد وعلوم الفضاء (Libyan Centre for Remote Sensing and Space Sciences (LCRSSS)এই কিতাবটিতে তাদের পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে দশটি লক্ষণীয় বিষয় ও শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে সুবহে সাদিক পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত লক্ষণীয় বিষয় ও শর্তগুলো এই-
إرشادات الرصد والقياس
-১ يتم الرصد والقياس في اليوم الذي يكون فيه الجو صحوا خاليا من الغيوم والسحب.
-২ يتم الرصد من موقع لا توجد أمامه عوائق تحجب الرؤية على مدى البصر.
-৩ يتم رصد المغرب...
-৪ يتم رصد الفجر الصادق مع ظهور البياض المنتشر من أفق المشرق.
-৫ يتم رصد العشاء... .
-৯ يجب أن يتم الرصد في أماكن لا توجد بها إضاءة ليلية في الشوارع أو المدن التي تقع على نفس اتجاه طلوع الفجر.
-১০ يجب أن يكون نظر الراصد سليما، ويفضل من له خبرة سابقة في هذا الشأن.
অর্থাৎ ১. মুশাহাদার জন্য এমন দিন নির্বাচন করা হবে, যেদিন আবহাওয়া ভালো থাকে এবং আকাশ মেঘমুক্ত থাকে। ২. আর এজন্য এমন জায়গা নির্বাচন করা হবে, যার সামনে পর্যবেক্ষণে প্রতিবন্ধক কিছু থাকবে না। ৩. ...। ৪. সুবহে সাদিকের পর্যবেক্ষণ তখন থেকে শুরু হবে যখন দিগন্তের উভয় দিকে প্রশস্ত আকারে শুভ্র আলো দৃশ্যমান হয়। ৯. সুবহে সাদিক মুশাহাদার জন্য এমন এলাকা নির্বাচন করা জরুরি, যেখানে রাস্তা-ঘাটে রাতের আলোকসজ্জা থাকবে না এবং মুশাহাদার বরাবর সামনের শহরগুলোও রাতের আলোকসজ্জামুক্ত থাকতে হবে। ১০. এবং পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকতে হবে। আর এক্ষেত্রে এমন ব্যক্তিকে প্রধান্য দেওয়া হবে, যার এ বিষয়ে পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে।
দেখুন-
مواقيت الصلاة في الجماهيرية العظمى، ص২৮-২৭.
কিতাবটির ৩১ থেকে ৪০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত মোট দশ পৃষ্ঠাব্যাপী মুশাহাদার এই জামাত কত তারিখে, কোন্ স্থানে, কোন্ সময়ে সুবহে সাদিক, সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত, শাফাকে আহমার, শাফাকে আবইয়ায ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করেছেন এর পুরো বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে।
মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আন্তর্জাতিক সংস্থা مركز الفلك الدولي (International Astronomical Center) -এর চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মাদ শাওকাত ওদাহ তার একটি গবেষণা পত্রে উক্ত পুস্তিকা থেকে ১৯৯৩ ঈ.-এর মোট ১৮ দিনের সুবহে সাদিক মুশাহাদার সংক্ষিপ্ত রিপোর্ট ডিগ্রিসহ তুলে ধরেছেন। যা নিম্নরূপ-
তারিখ |
স্থান |
সময় |
ডিগ্রি |
২২.০৪ |
سبها |
৫:০৮-৫:১০ ১৮.৬ |
২২.০৪ |
২৩.০৪ |
سبها |
৫:০৯ |
১৮ |
২৪.০৪ |
سبها |
৫:০৮-৫:১০ ১৮ |
২৪.০৪ |
২৬.০৪ |
تراغن |
৫:০০-৫:০৫ ১৮.৬ |
২৬.০৪ |
২৭.০৪ |
تراغن |
৫:০২ |
১৯ |
২৮.০৪ |
تراغن |
৫:০২ |
১৮.৮ |
২৯.০৪ |
القطرون |
৫:০১ |
১৯.২ |
৩০.০৪ |
القطرون |
৫:০০ |
১৯.২ |
০১.০৫ |
القطرون |
৫:০১ |
১৮.৮ |
২২.০৭ |
غدامس |
৪:৫৫ |
১৯.২ |
২৩.০৭ |
غدامس |
৪:৫৬ |
১৯.২ |
২৪.০৭ |
غدامس |
৪:৫৭ |
১৯.২ |
২৫.০৭ |
غدامس |
৪:৫৮ |
১৯.১ |
২৬.০৭ |
الحمادة |
৪:৫২ |
১৮.১ |
২৭.০৭ |
الحمادة |
৪:৫৩ |
১৮.১ |
২৯.০৭ |
هون |
৪:৪৩ |
১৮.৪ |
৩০.০৭ |
هون |
৪:৪৩ |
১৮.৬ |
৩১. |
০৭ |
هون |
৪:৪৪ |
দেখুন-
مواقيت الصلاة في الجماهيرية العظمى، ص ৪০-৩১.
এবং-
إشكالات فلكية وفقهية حول تحديد مواقيت الصلاة، الدكتور محمد شوكت عودة، ص ২৫.
লক্ষ্য করুন, এই আঠারো দিনের প্রত্যেক দিনই তারা সুবহে সাদিক মুশাহাদা করেছেন ১৮º -এর ভেতর।
জর্দান
জর্দানে যুগ যুগ ধরে ১৮ ডিগ্রি হিসাবে সুবহে সাদিকের উপর আমল চলে আসছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে কারো কারো পক্ষ থেকে এর উপর আপত্তি আসে। তখন ১৪০১ হি. মোতাবেক ১৯৮১ ঈসাব্দে জর্দানের ওয়াকফ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সুবহে সাদিক মুশাহাদার ব্যবস্থা করা হয়। তখন তারা ১৮.৬ ডিগ্রিতে সুবহে সাদিক মুশাহাদা করেন। অতঃপর ১৯৮২ সনে জর্দান ওয়াকফ ও ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকেالتقويم الأردني لمواقيت الصلاة والصيام والحج لعام ১৯৮২م নামে পুস্তিকা আকারে নামাযের সময়সূচি ছাপা হয়। এই পুস্তিকার শুরুতে উক্ত মুশাহাদার বিবরণ এবং এ সংক্রান্ত আরো আলোচনা তুলে ধরা হয়। তাতে উক্ত মুশাহাদার বিবরণ এভাবে উল্লেখ করা হয়েছে-
جاء الشهود في اليوم الثالث من الاجتماع، أي بتاريخ ১৯৮১/৫/১২، وهم السادة:
أ- عايش احويان الذي رضي بشهادته الجميع، وهو من أهل التقى والصلاح.
ب- عبد الكريم غنيم من أهل التقى والصلاح.
ج- عبد الكريم عبد الله العرميطي من أهل التقى والصلاح.
د- تيسير محمد عبد الفتاح المحارمة من أهل التقى والصلاح.
وأقسم هؤلاء الشهود اليمين الشرعي بأنهم رأوا الفجر الصادق شرقي الموقر بعد أن ناموا ليلتهم هناك، وكانت رؤيتهم في الساعة الثالثة والدقيقة الخامسة، فوافق ذلك تقويم اللجنة.
এখানে বলা হয়েছে, চারজন সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি শরয়ী পন্থায় সাক্ষ্য প্রদান করেছেন যে, ১২-০৫-১৯৮১ ঈ. তারিখে তারা জর্দানের আলমুওয়াক্কার (Al-Muwaqqar) নামক এলাকার পূর্ব অংশে ৩ : ০৫ মিনিটে সুবহে সাদিক পর্যবেক্ষণ করেছেন।
দেখুন-
التقويم الأردني لمواقيت الصلاة والصيام والحج لعام ১৯৮২م، ص ২২.
পুস্তিকাটির ৪৫ থেকে ৪৭ পৃষ্ঠায় ভিন্ন ভিন্নভাবে তাদের চারজনের সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
مركز الفلك الدولي (International Astronomical Center) -এর চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মাদ শাওকত ওদাহ জর্দানের এই মুশাহাদা সম্পর্কে বলেন-
وبعد الرجوع لأحد برامج الحاسوب الفلكية لذلك الوقت والتاريخ والموقع وجد أن انخفاض الشمس حينها كان ১৮.৬ درجة تحت الأفق الشرقي.
অর্থাৎ হিসাব করে দেখা গেছে, ঐ দিন উক্ত স্থানে এই সময় সূর্য দিগন্তের ১৮.৬º নিচে ছিল।
দেখুন-
إشكالات فلكية وفقهية حول تحديد مواقيت الصلاة، محمد شوكت عودة، ص ২৪.
একনজরে তাদের মুশাহাদা-
০ |
তারিখ |
সময় |
ডিগ্রি |
১ ১২.০৫.১৯৮১ |
০৩:০৫ ১৮.৬ |
১ ১২.০৫.১৯৮১ |
০৩:০৫ ১৮.৬ |
জর্দানের কেন্দ্রীয় ফতোয়া বিভাগ থেকেও এই পুস্তিকার সমর্থন করা হয়। তাদের অনলাইনে প্রকাশিত একটি ফতোয়ায় বলা হয়েছে-
ومواقيت الصلاة المعمول بها في بلدنا وُضعت بناء على لجان شرعية متخصصة استطلعت الأوقات واستعانت بالحسابات الفلكية، ودونت نتائجها في كتاب طبعته وزارة الأوقاف في العام (১৯৮২م).
দেখুন-
https://www.aliftaa.jo/Question.aspx?QuestionId=2002#.YIAwIOgzbIU
আরেকটি ফতোয়ায় আরো বিস্তারিত বলা হয়েছে যে-
واستمر الحال في بلدنا المبارك الأردن حتى العقود الأخيرة، حيث تدون وزارة الأوقاف والشؤون والمقدسات الإسلامية في كل عام تقويماً سنوياً خاصاً ومفصلاً بمواقيت الصلاة في جميع أنحاء المملكة، يلتزم به المؤذنون، ويراعي الأدلة الشرعية والعلامات الفلكية، ويشرف عليه قسم خاص في الوزارة، يستند إلى دراسات وأرصاد مفصلة قامت بها لجان عدة قديماً، سبق وأن نشرت الوزارة تلك الدراسات في كتاب مستقل مطبوع يمكن الرجوع إليه.
ولهذا فإن مجلس الإفتاء والبحوث والدراسات الإسلامية يؤكد أن الأخذ بهذا التقويم مجزئ في صحة العبادة بإذن الله، وأنه كاف بين يدي الله، وأن من أخذ به برئت ذمته في تحقيق شرط الصلاة والصيام. فلا يجوز نشر الإشاعات عبر وسائل الإعلام ومواقع التواصل الاجتماعي بغرض تشكيك الناس في عبادتهم وأركان دينهم من صلاة وصيام.
দেখুন-
https://www.aliftaa.jo/Decision.aspx?DecisionId=564#.YIAwrugzbIU
এই ফতোয়াদুটিতে জোরালোভাবে জর্দানের এই সময়সূচির সমর্থন জানানো হয়েছে এবং বলা হয়েছে, অতীতে বিভিন্ন কমিটি কর্তৃক বিস্তারিত গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই এই সময়সূচি প্রস্তুত হয়েছে। অতএব সবার জন্য এই সময়সূচির অনুসরণ জরুরি। তা না করে উল্টো মানুষকে নামায-রোযার বিষয়ে বিভ্রান্তিতে ফেলা এবং গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়াতে এ বিষয়ে অপপ্রচার চালানো কিছুতেই জায়েয নয়।
ইয়েমেন
ইয়েমেনের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. আব্দুল হক সুলতান। তিনি কয়েকজনকে নিয়ে ‘সানআ’ থেকে পূর্ব দিকে ৩০ কি. মি. দূরে অবস্থিত বনি হাশীশ (Bani Hashish) এলাকায় সুবহে সাদিক পর্যবেক্ষণের জন্য গমন করেন। যার অবস্থান ১৫.৪৯৭৯º অক্ষাংশ ও ৪৪.৪০৪০º দ্রাঘিমাংশে। ২৪-১১-২০০৩ তারিখে সূর্যোদয়ের দুই ঘণ্টা আগে ৪ : ০১ মিনিটে তারা সুবহে কাযিব (Zodiacal Light) দেখতে পান। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী ৪ : ০১ মিনিটে এই আলোর ধরন ছিল দিগন্তের উপর দিকে খাড়াভাবে উত্থিত হাল্কা কলাম আকারে। অল্প কিছুক্ষণ পরই হালকা কলামটি দিগন্ত থেকে ৫০º উপর পর্যন্ত প্রসারিত আলোর ত্রিভুজাকার আভাতে পরিণত হয়। ড. মুহাম্মাদ শাওকাত ওদাহ বলেন, আমরা হিসাব করে দেখেছি ৪ : ০১ মিনিটে সেখানে উক্ত তারিখে সূর্য দিগন্তের ২৯.৫º নিচে থাকে।
অতঃপর সূর্যোদয়ের ৭১ মিনিট পূর্বে ৪ : ৫০ মিনিটে তারা সুবহে সাদিক (Astronomical Twilight) দেখেছেন। ততক্ষণে সুবহে কাযিব বিলিন হয়ে যায়।
দেখুন-
Sun Apparent Motion and Salat Times. al-Irshaad Vol. 8, p.10
এবং-
إشكالات فلكية وفقهية حول تحديد مواقيت الصلاة، محمد شوكت عودة، ص ২৪.
অথচ অ্যাস্ট্রোনমির হিসাব অনুযায়ী এই তারিখে উক্ত স্থানে ১৮º -এর সময় হয় আরো তিন মিনিট পর, অর্থাৎ ৪:৫৩ মিনিটে। আর ৪:৫০ মিনিটে সূর্য দিগন্তের প্রায় ১৮.৯º নিচে থাকে। তাহলে এই দিন তারা সুবহে কাযিব দেখেছেন ২৯.৫º-এ এবং সুবহে সাদিক দেখেছেন ১৮.৯º-এ।
একনজরে ২৪-১১-২০০৩ তারিখের এই মুশাহাদা-
০ |
তারিখ |
সময় |
ডিগ্রি |
১ সুবহে কাযিব |
৪:০১ |
২৯.৫ |
১ সুবহে কাযিব |
২ সুবহে সাদিক |
৪:৫০ |
১৮.৯ |
২ সুবহে সাদিক |
এখানে উল্লেখ্য, ড. আব্দুল হক সুলতান এই আলোচনায় কয়েক জায়গায় স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল টোয়াইলাইট সুবহে কাযিব নয়। যারা একে সুবহে কাযিব বলেছেন তাদেরকে তিনি ভুল আখ্যায়িত করেছেন। এবং বলেছেন, আমাদের গবেষণা অনুযায়ী আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জোডিয়াকাল লাইট সুবহে কাযিব ছাড়া আর কিছু নয়।
দুবাই
দুবাই সরকারের ধর্ম বিভাগ Islamic Affairs & Charitable Activities Department =
دائرة الشؤون الإسلامية والعمل الخيري -এর পক্ষ থেকে একাধিকবার সুবহে সাদিক মুশাহাদার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তাদের এই মুশাহাদার অভিজ্ঞতা ও ফলাফল দুবাই অ্যাস্ট্রোনমি গ্রুপের সাথে আয়োজিত একটি সেমিনারে উপস্থাপন করা হয় এবং দুবাই ধর্ম বিভাগের ওয়েবসাইটে উক্ত সেমিনারে উপস্থাপিত বক্তব্যের উপর একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। তা হল-
إسلامية دبي تعرض تجربتها المميزة لـ"رصد الفجر" في لقاء علمي مع دبي للفلك.
الثلاثاء، ১৯ مايو، ২০২০
... تناول اللقاء العلمي الحديث عن ثلاث مراحل تمت لعملية الرصد، ابتدأها المحاضر بالمرحلة الأولى تحت مسمى: مرحلة التأسيس، وهي مرحلة البحث والتعلم والتي كانت في عام (২০১৪م)، ثم تناول المرحلة الثانية تحت عنوان: مرحلة "التمرس" بين العامين (২০১৫ – ২০১৬م)، أما المرحلة الأخيرة وهي مرحلة "الخبرة" والتي كانت في عام (২০১৭م)...
خلاصة المراحل الثلاثة :
وأفاد اللقاء أن خلاصة المرحلة الأولى لم تكن إيجابية، وهذه النتائج طبيعية لأي مبتدئ، لعدم توفر الخبرة العملية في رصد بداية طلوع الفجر الصادق، إذ من الطبيعي عدم التمكن من رؤية بزوغ الفجر من أطراف المدينة، خاصة في الأماكن التي تشوبها تلوث ضوئي، لذا تم البحث عن أماكن أخرى تصلح لرصد الفجر، وتم التركيز على صحراء الربع الخالي من الدولة وخاصة من محاضر ليوا لاستكمال عملية الرصد.
وتمكن فريق الرصد في المرحلة الثانية "مرحلة التمرس" من رصد الفجر على زاوية (১৮) درجة بسهولة وبشكل جماعي، والتأكد من صحة الحسابات الموجودة في صفحات التقويم، والمراد بزاوية (১৮) هو انخفاض الشمس عن الأفق قبل شروقها، وعند هذا المقدار يطلع الخيط الأبيض من الفجر الصادق.
وأضاف حمد صالح أن معرفة الأسباب التي منعتنا من رؤية الفجر الصادق في المرحلة الأولى، كانت تعلمنا وتجنبنا الوقوع في نفس الأخطاء، مشيراً إلى أن عملية الرصد كانت تقام على فترات طويلة بليال متتالية، بحيث كان يتم رصد شفق العشاء للتدرب على ملاحظة تدرج الألوان حتى ينتهي الشفق الأبيض، وبعد ذلك يقوم فريق الرصد بتصوير الأفق للتأكد من خلوه من الملوثات الضوئية بهدف التحقق من دقة النتائج.
أما بالنسبة للمرحلة الثالثة فإن أهم ما يميزها هو وصول الأعضاء لدرجة: "الخبرة"، وحدوث نقلة نوعية في نتائج الرصد، وسبب ذلك الاعتماد على خرائط ليلية حديثة وبجودة عالية تكشف التلوث الضوئي إن وجد، إضافة إلى اختيار مناطق مظلمة أكثر كمنطقة "قمرا" الواقعة في أقصى جنوب غرب الدولة، وعمل تجربة حاسمة في منطقتين في وقت واحد، والتأكد من دقة المعيار الذي تم تطبيقه على تقاويم دولة الإمارات العربية المتحدة، والاهتمام بتوثيق كل ما يتعلق بظروف الرصد ونتائجه، والأخذ بعين الاعتبار طلوع الفجر الكاذب وتمييزه عن الفجر الصادق.
ونوه كبير باحثين أنه من المهم معرفة شكل الفجر الصادق، وكيف يبدأ ومتى يتبيّن وكيف ينتشر ويسفر، مؤكدًا أن كل أرصاد الدائرة كانت لبداية بزوغ الصادق أي عند تغير الخيط الأسود بطلوع تباشير الأبيض من أسفله مغيراً شدة حلك السواد، مشيرا إلى أن أذان الفجر يوافق الفجر الصادق تماما، وأنه تم التحديث على معيار دخول الفجر والعشاء واعتماد الزاوية (১৮) درجة. ...
দেখুন-
https://www.iacad.gov.ae/ar/Media/Pages/NewsDetails.aspx?NewsID=777
এই রিপোর্টটি প্রসিদ্ধ সংবাদ সংস্থা Emirates News Agency (وكالة أنباء الإمارات) থেকেও প্রকাশিত হয়।
দেখুন-
http://wam.ae/ar/details/1395302843413
উক্ত সেমিনারের ভিডিও-ও অনলাইলে বিদ্যমান আছে। কেউ চাইলে https://www.youtube.com/watch?v=TcJGy8aK0pk এই লিংক থেকে এটি দেখতে পারবেন।
এই বক্তব্যটিতে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে যে, মুশাহাদার প্রথম পর্বে তারা ১৮º-এ সুবহে সাদিক পর্যবেক্ষণ করতে না পারলেও দ্বিতীয় পর্বে খুব সহজেই সর্বসম্মতভাবে ১৮º -এর ভেতর সুবহে সাদিক পর্যবেক্ষণ করেছেন। ভিডিওটিতে আরো সুনির্ধারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ০৪-১০-২০১৬ তারিখে তারা ১৭.৮ ডিগ্রিতে সুবহে সাদিক মুশাহাদা করেছেন। আর ০৫-১০-২০১৬ তারিখে ১৮.২ ডিগ্রিতে সুবহে সাদিক মুশাহাদা করেছেন। এবং পরের দিন ০৬-১০-২০১৬ তারিখে ১৮.৩ ডিগ্রিতে তারা সুবহে সাদিক মুশাহাদা করেছেন।
একনজরে তাদের এই মুশাহাদা-
০ |
তারিখ |
সময় |
ডিগ্রি |
১ ০৪.১০.২০১৬ |
০৫:০১ |
১৭.৮ |
১ ০৪.১০.২০১৬ |
২ ০৫.১০.২০১৬ |
০৫:০০ |
১৮.২ |
২ ০৫.১০.২০১৬ |
৩ ০৬.১০.২০১৬ |
০৫:০০ |
১৮.৩ |
৩ ০৬.১০.২০১৬ |
তাদের বক্তব্যে একথাও তারা স্পষ্টভাবে বলেছেন, মুশাহাদার তৃতীয় পর্বে ১৮º-এর ভেতর সুবহে সাদিক শুরু হওয়ার বিষয়টি তাদের কাছে আরো দৃঢ়ভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
সৌদি আরব
تقويم أم القرى সৌদির সরকারি ক্যালেন্ডারের নাম। এতে সুবহে সাদিকের সময় হিসাব করা হয় ১৮.৫º থেকে। এভাবে সেখানে আমল চলে আসছে।
কিন্তু এর উপর কারো কারো পক্ষ থেকে আপত্তি আসলে শায়েখ বিন বায রাহ. কয়েকজনের একটি কমিটি গঠন করে সুবহে সাদিক পর্যবেক্ষণের জন্য তাদেরকে পাঠান। পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কমিটির সবার ঐক্যমতে প্রমাণিত হয় যে, ক্যালেন্ডারে দেওয়া ফজরের সময় সঠিক। তখন বিন বায রাহ. ২২-০৭-১৪১৭ হি. তারিখে একটি সরকারি বিবৃতি প্রদানের মাধ্যমে তাদের আপত্তির জবাব দেন। এতে তিনি বলেন-
الحمد لله وحده، والصلاة والسلام على نبينا محمد وعلى آله وصحبه، وبعد: فإنه لما كثر الكلام من بعض الناس في الآونة الأخيرة حول تقويم أم القرى، وأنَّ فيه غلطاً في توقيت صلاة الفجر من ناحية التقديم قبل الوقت بخمس دقائق أو أكثر، كلفتُ لجنة من أهل العلم بالذهاب إلى خارج مدينة الرياض بعيداً عن الأنوار لمراقبة طلوع الفجر، ومعرفة مدى مطابقة التقويم المذكور للواقع، وقد قررت اللجنة بالإجماع مطابقة توقيت التقويم لطلوع الفجر، وأنه لا صحة لما يدعيه بعض الناس من تقدمه عليه. ولأجل إزالة الشكوك التي شوشت على بعض الناس صلاتهم جرى بيانه، والله الموفق والهادي إلى سواء السبيل.
এখানে তিনি বলেছেন, সম্প্রতি কিছু লোক যখন تقويم أم القرى সম্পর্কে বিভিন্ন কথা উঠিয়েছেন এবং দাবি করেছেন যে, এতে প্রদত্ত ফজরের নামাযের সময় সুবহে সাদিকের ৫ মিনিট বা এর পূর্বে দেওয়া হয়েছে। তখন আমি আলেমদের একটি কমিটিকে সুবহে সাদিকের উদয় পর্যবেক্ষণের জন্য রিয়াদ শহরের বাইরে আলোকসজ্জা থেকে দূরে প্রেরণ করি- বাস্তবতার সাথে ক্যালেন্ডারে প্রদত্ত সময়ের কতটুকু মিল রয়েছে তা যাচাই করে দেখার জন্য। এই কমিটি পর্যবেক্ষণের পর সর্বসম্মতিক্রমে রিপোর্ট দিয়েছে যে, ক্যালেন্ডারে প্রদত্ত সময় সুবহে সাদিক উদয়ের সময়ের সাথে মিল রয়েছে। আর কিছু লোক যা দাবি করেছেন তা সঠিক নয়।
শায়েখ বিন বায রাহ.-এর বক্তব্যটির জন্য নিম্নোক্ত কিতাবটি দেখুন-
طلوع الفجر الصادق بين تحديد القرآن وإطلاق اللغة، أ. د. إبراهيم بن محمد الصبيحي، قدم له: الشيخ عبد العزيز بن عبد الله آل الشيخ والشيخ صالح الفوزان، ص১৬২.
একটি অসর্ম্পূণ ও ত্রুটিযুক্ত মুশাহাদা
২০০৪ থেকে ২০০৫ -এর ভেতর مدينة الملك عبد العزيز للعلوم والتقنية ‘কিং আব্দুল আজিজ সিটি ফর সাইন্স এন্ড টেকনোলজি’-এর পক্ষ থেকেও সুবহে সাদিক মুশাহাদার একটি আয়োজন করা হয়। তখন একটি জামাত ২০০৪ -এর ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৫ -এর মার্চের ভেতর মোট তেরো দিন একই স্থানে সুবহে কাযিব ও সুবহে সাদিক মুশাহাদার চেষ্টা করেন। মুশাহাদার এই জামাতের প্রধান ছিলেন ড. যাকী ইবনে আবদুর রহমান মুস্তফা। সদস্য হিসেবে ছিলেন আরো সাতজন।
তাদের এই মুশাহাদাটি ছিল খুবই অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিযুক্ত। এই মুশাহাদার ভিত্তিতে তারা ১৪.৬º -এ সুবহে সাদিক শুরু হওয়ার কথা বলেছেন।
দেখুন-
مشروع دراسة الشفق (المرحلة الأولى) ১৪২৬هـ -২০০৫م،ص ৪৫، ৫৫
১৪.৬º -এ সুবহে সাদিক শুরু হওয়ার তাদের এই দাবি যে নিতান্তই অগ্রহণযোগ্য তা তো সহজেই অনুমেয়। আহসানুল ফাতাওয়ার দাবি অনুযায়ীও তো সুবহে সাদিক হয় ১৫º -এ। অতএব এই অনুযায়ীই তো তাদের কথা সঠিক নয়। আর যদি উল্টো করে বলা হয় তবে বলতে হবে, এর দ্বারা আহসানুল ফাতাওয়ার ১৫º -এ সুবহে সাদিক শুরু হওয়ার দাবিও সঠিক প্রমাণিত হয় না।
মূলত তাদের এই মুশাহাদায় বিভিন্ন দিক থেকে ত্রুটি ও অসঙ্গতি বিদ্যমান ছিল। যার কারণে তারা উপযুক্ত সময়ে সুবহে সাদিক মুশাহাদা করে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে ব্যর্থ হয়েছেন। এজন্যই তারা একটি পুস্তিকা আকারে এর খসরা রিপোর্ট তৈরি করলেও পরবর্তীতে তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। ইন্টারনেটে এর যে পিডিএফ পাওয়া যায় সেটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রকাশিত কোনো পুস্তিকা নয়।
এই মুশাহাদার ত্রুটি ও অসঙ্গতির দিকগুলোর পুরো বিবরণ এখানে তুলে ধরতে গেলে আমাদের মূল আলোচনার ধারাবাহিকতা নষ্ট হবে বিধায় এর উপর বিস্তারিত আলোচনা আমরা পরবর্তী কোনো কিস্তিতে করব ইনশাআল্লাহ। এখানে আমরা কেবল এই মুশাহাদা কমিটির প্রধান ড. যাকী ইবনে আবদুর রাহমান আলমুস্তাফার বক্তব্য তুলে ধরছি। যাতে তিনি নিজেই এই মুশাহাদা অসম্পূর্ণ ও ক্রটিযুক্ত হওয়ার কথা বলেছেন।
মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আন্তর্জাতিক সংস্থা مركز الفلك الدولي (International Astronomical Center) -এর চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মাদ শাওকাত ওদাহ বলেন-
إن الفلكيين الرئيسيين الذين قاموا بهذه الدراسة هما الدكتور زكي المصطفى والدكتور أيمن كردي، وفي مؤتمر فلكي في بلجيكيا جمعني بهما وبوجود الدكتور سعد الخثلان، كنت سألت الدكتور زكي عن تلك الدراسة التي لم تنشر حتى هذه اللحظة، فأجابني قائلا: لقد تبين فيما بعد وجود إشكاليات في الأرصاد، وأن الدراسة لم تكن دقيقة، وقد قاموا بدراسة جيدة، ووجدوا أن وقت الفجر يحين على زاوية ১৮، لقد دار هذا الحديث على مسمع من الدكتور سعد الخثلان.
এখানে তিনি বলেছেন, সুবহে সাদিকের এই গবেষণার প্রধান দুই ব্যক্তি হলেন ড. যাকী মুস্তফা ও ড. আয়মান কুরদী। বেলজিয়ামে অ্যাস্ট্রোনমির একটি কনফারেন্সে তাদের দুজনের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়। তাদের এই মুশাহাদা কমিটির সদস্য ড. সাদ খাসলানও এতে উপস্থিত ছিলেন। তখন আমি ড. যাকী মুস্তফাকে তাদের এই অপ্রকাশিত গবেষণা সম্পর্কে প্রশ্ন করি। (কেন এটি এখনো ছাপা হয়নি?) তিনি এর জবাবে বলেন, ‘পরে আমাদের কাছে স্পষ্ট হয় যে, এই মুশাহাদায় ক্রটি ছিল এবং গবেষণাটি যথাযথ ছিল না।’ পরবর্তীতে তারা এর চেয়ে আরো ভালোভাবে এটি গবেষণা করেন। তখন তাদের কাছে ১৮º -এ সুবহে সাদিক হওয়ার বিষয়টি সঠিক প্রমাণিত হয়।
দেখুন-
إشكالات فلكية وفقهية حول تحديد مواقيت الصلاة، الدكتور محمد شوكت عودة، ص ৩০.
এ তো গেল ড. মুহাম্মাদ শাওকাত ওদাহর মাধ্যমে প্রাপ্ত ড. যাকী মুস্তফার বক্তব্য। এখন সরাসরি ড. যাকী মুস্তফার বক্তব্য পড়–ন।
সৌদি আরবের প্রসিদ্ধ দৈনিক ‘আররিয়াদ’ পত্রিকায় ২৫-০৯-১৪২৬ হি. (২৮-১০-২০০৫ ঈ.) তারিখে ডা. যাকী মুস্তফার একটি পত্র প্রকাশিত হয়। এতে তিনি বলেন, ‘তাদের এই গবেষণাটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে; তাঁরা এখনো চূড়ান্ত ফলাফলে পৌঁছেননি। সুতরাং অসম্পূর্ণ গবেষণার উপর ভিত্তি করে কোনো কিছু বলা বা কোনো ফলাফল আবিষ্কার করা যায় না।’
পত্রটির শেষাংশে তিনি এ-ও বলেছেন যে, বর্তমানে প্রচলিত ক্যালেন্ডারে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই।
ড. যাকী মুস্তফার বিবৃতি সম্বলিত পত্রিকার এই রিপোর্টটির মূল অংশ সামনে তুলে ধরা হল-
مدينة الملك عبدالعزيز للعلوم والتقنية ترد على الشيخ العبيكان: دراسة الشفق ما زالت في مراحلها الأولى ولم تتوصل لنتائج نهائية.
الجمعة ২৫ رمضان ১৪২৬هـ - ২৮ أكتوبر ২০০৫م - العدد ১৩৬৪০
نشرت ্রالرياضগ্ধ مقالاً للشيخ عبد المحسن العبيكان عضو مجلس الشورى حول دخول الفجر الصادق وذلك يوم الاربعاء الماضي ২৩ رمضان، أشار فيه الشيخ العبيكان إلى أن مدينة الملك عبد العزيز للعلوم والتقنية قد شكلت لجنة لدراسة الشفق ্রالفجر الصادقগ্ধ وذكر فيها أن الباحثين في المشروع قد أمضوا عاماً كاملاً في رصد بدايات الشفق، مشيراً إلى أن اختلاف دخول الفجر الصادق يختلف بما يقارب ২১ دقيقة عن تقويم أم القرى تزيد قليلاً أو تنقص.
وقد ورد لـ্রالرياضগ্ধ توضيح من مدينة الملك عبد العزيز للعلوم والتقنية يشير إلى أن هذه الدراسة ما زالت في مرحلتها الأولى وأنها لم تتوصل إلى نتائج نهائية.
وفيما يلي نص الرد:
سعادة رئيس تحرير جريدة ্রالرياضগ্ধ
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته، وبعد:
إشارة إلى ما ورد في صحيفتكم الموقرة تحت عنوان ্রفي رد حول دخول الفجر الصادقগ্ধ لفضيلة الشيخ عبد المحسن بن ناصر العبيكان في العدد ্র১৩৬৩৮গ্ধ يوم الأربعاء ১৪২৬/৯/২৩هـ، وحيث أشار فضيلته في معظم رده إلى مدينة الملك عبد العزيز للعلوم والتقنية من خلال دورها في مشروع دراسة الشفق، فإننا نود أن نوضح التالي :
إذ أشكر فضيلة الشيخ عبد المحسن بن ناصر العبيكان على اهتمامه بالقضايا العلمية والفلكية، فإنني أود أن أبين للقارئ الكريم بأن مشروع دراسة الشفق هو في مرحلته الأولى، وهذا يعني أن المشروع على عدة مراحل ولم ينته بعد، كما لم يتم التوصل إلى نتائج نهائية، ومن السابق لأوانه الاستنتاج أو بناء نتائج على بحث لم ينته...
يتضح لي من خلال التجربة والممارسة أنه متى ما كان تعريف دخول الفجر الكاذب والفجر الصادق هو نفس التعريف الوارد في فتوى المجمع الفقهي برئاسة سماحة الشيخ عبد العزيز بن باز رحمه الله في دورته التاسعة عام ১৪০৬هـ فإن الحسابات المعمول بها حالياً قد لا تتغير بشكل ملموس. نأمل أن يكون في ما أشرنا إليه توضيح للالتباس أو سوء الفهم.
والله من وراء القصد..
د. زكي بن عبدالرحمن المصطفى، مساعد المشرف على معهد بحوث الفلك والجيوفيزيا ورئيس قسم الفلك، الباحث الرئيس لمشروع دراسة الشفق، وعضو لجنة الإشراف على تقويم أم القرى.
দেখুন-
https://www.alriyadh.com/103983
তাহলে দেখুন, এই মুশাহাদা কমিটির প্রধান নিজেই বলছেন, তাদের এই মুশাহাদায় ত্রুটি ছিল; তাদের এই গবেষণা অসম্পূর্ণ; তা এখনো চূড়ান্তে পৌঁছেনি। অতএব এর উপর ভিত্তি করে অন্যদেরকে কোনো ফলাফল বা সিদ্ধান্ত প্রদান না করতে বলেছেন। সুতরাং তাদের থেকে এমন সুস্পষ্ট বক্তব্য আসার পরও কেউ যদি এটিকে দলীল হিসেবে উল্লেখ করতে চায় তাহলে সেটি তার ব্যক্তিগত বিষয়, কারো কিছু করার নেই!
দ্বিতীয়ত একথা মনে রাখা দরকার, তাদের এই মুশাহাদা ও গবেষণা সঠিক হোক আর বেঠিক, এর দ্বারা তো আর আহসানুল ফাতাওয়ার দাবি প্রমাণিত হচ্ছে না। কেননা আহসানুল ফাতাওয়ার দাবি হল, সুবহে সাদিক শুরু হয় ১৫º-এ। আর তাদের দবি হল, সুবহে সাদিক শুরু হয় আরো পরে অর্থাৎ ১৪.৬º-এ। তাহলে তাদের দাবি অনুযায়ী তো আহসানুল ফাতাওয়ার দাবিও ভুল প্রমাণিত হচ্ছে!
পূর্বে আমরা উদ্ধৃতিসহ আরেক গবেষকের কথা উল্লেখ করেছি, তিনি বলেছেন, ১৫º-তেও নাকি সুবহে সাদিক হয় না; বরং তখন সুবহে কাযিব হয়। আর সুবহে সাদিক শুরু হয় ১২º-তে। এখন প্রশ্ন হল, এভাবে যে কেউ নিয়ম-নীতি ও শর্ত না মেনে মুশাহাদা করবে আর কোনো কারণে সঠিক সময়ে সুবহে সাদিকের শুরুর অবস্থা মুশাহাদা করতে না পেরে দেরিতে দেখবে আর দাবি করে বসবে- সুবহে সাদিক তিনি যখন দেখেছেন তখন থেকেই হয়; এর আগে হয় না!- এর ধারা কতটুকু পর্যন্ত চলবে, কত ডিগ্রিতে গিয়ে ঠেকবে! শেষ পর্যন্ত কার দাবি সঠিক গণ্য করা হবে এবং কীসের ভিত্তিতে সঠিক সাব্যস্ত করা হবে? এক্ষেত্রে সঠিক-বেঠিক নির্ণয়ের মানদ- কী হবে? এই দাবিগুলোর মধ্যে যারা বলেন, ১৫º-তেও সুবহে সাদিক হয় না; বরং তারা এরও পরে সুবহে সাদিক হওয়ার কথা বলেছেন, তাদের দাবিকে গ্রহণ না করে আহসানুল ফাতাওয়ার দাবিকেই বা কীসের ভিত্তিতে সঠিক বলা হবে?!
মূলত নিয়ম-নীতি ও শর্ত-শারায়েত না মেনে মুশাহাদা করলে এমন বাস্তবতা পরিপন্থী ও পরস্পরবিরোধী দাবির ধারা চলতেই থাকবে। আর যাবতীয় শর্ত ও নিয়ম অনুসরণ করে মুশাহাদা করলে এর দ্বারা পূর্ববর্তীগণের মুশাহাদা ও মুসলিম উম্মাহর তাআমুলের সমর্থনই খুঁজে পাবে। হ
.১ أما الدكتور عمر أفضل فهو يرى أن الفجر الكاذب يحين على الزاوية ১৫، وأن الفجر الصادق يحين على زاوية ১২.
(إشكالات فلكية وفقهية حول تحديد مواقيت الصلاة، الدكتور محمد شوكت عودة، ص32)