যে সকল আমল দ্বারা গোনাহ মাফ হয়
৭৯. গোনাহ হয়ে গেলে দুই রাকাত নামায পড়ে ইসতিগফার করা...
মুমিন চেষ্টা করে গোনাহ থেকে বেঁচে থাকতে। কিন্তু কখনো শয়তানের ধোঁকায় পড়ে গোনাহ হয়ে যায়। তখন মুমিনের আফসোস ও আক্ষেপের শেষ থাকে না; কেন গোনাহে জড়ালাম, কেন গোনাহের পথে পা বাড়ালাম, কীভাবে পরিত্রাণ পাব এ গোনাহ থেকে। কৃত গোনাহ তাকে কষ্টে নিপতিত করে। আর এটিই মুমিনের পরিচয়। এটিই তার ঈমানের প্রমাণ। আবু উমামা রা. বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করল, ঈমান কী আল্লাহর রাসূল! (আমি কীভাবে বুঝব আমার মাঝে ঈমান আছে?)
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
إِذَا سَرَّتْكَ حَسَنَتُكَ، وَسَاءَتْكَ سَيِّئَتُكَ فَأَنْتَ مُؤْمِنٌ.
যখন তোমার নেক আমল তোমাকে আনন্দিত করবে এবং তোমার গোনাহ তোমাকে কষ্টে নিপতিত করবে (গোনাহের কারণে তুমি কষ্ট পেতে থাকবে)- তাহলে (বুঝবে) তুমি মুমিন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২২১৬৬; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৩৩
হাঁ, মুমিনের এ কষ্ট হল গোনাহ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ব্যাকুলতার কষ্ট। এ কষ্ট থেকেই মুমিন আল্লাহর দুয়ারে ক্ষমার ভিখারী হয়ে ধরনা দেয়। উত্তমরূপে ওযু করে এবং নামাযে দাঁড়িয়ে যায়। ইসতিগফারের অশ্রুতে সিক্ত হয়।
আর তখনই রাহমানুর রাহীমের ক্ষমার দরিয়ায় মৌজ ওঠে। বান্দার সব গোনাহ ধুয়ে সাফ করে দেয়। সিদ্দীকে আকবর আবু বকর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُذْنِبُ ذَنْبًا ثُمَّ يَتَوَضَّأُ فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ يَسْتَغْفِرُ اللهَ لِذَلِكَ الذَّنْبِ، إِلاَّ غَفَرَ لَهُ وَقَرَأَ هَاتَيْنِ الْآيَتَيْنِ: وَ مَنْ یَّعْمَلْ سُوْٓءًا اَوْ یَظْلِمْ نَفْسَهٗ ثُمَّ یَسْتَغْفِرِ اللهَ یَجِدِ اللهَ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا.
وَ الَّذِیْنَ اِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً اَوْ ظَلَمُوْۤا اَنْفُسَهُمْ...
মুসলিম যখন কোনো গোনাহ করে ফেলে অতঃপর ওযু করে দুই রাকাত নামায আদায় করে এবং উক্ত পাপের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় তখন আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন।
এরপর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দুটি আয়াত তিলাওয়াত করেন,
وَ مَنْ یَّعْمَلْ سُوْٓءًا اَوْ یَظْلِمْ نَفْسَهٗ ثُمَّ یَسْتَغْفِرِ اللهَ یَجِدِ اللهَ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا.
[যে ব্যক্তি কোনো মন্দ কাজ করে ফেলে বা নিজের প্রতি জুলুম করে বসে, তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, সে অবশ্যই আল্লাহকে অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালুই পাবে। -সূরা নিসা (৪) : ১১০]
وَ الَّذِیْنَ اِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً اَوْ ظَلَمُوْۤا اَنْفُسَهُمْ...
[এবং তারা সেই সকল লোক, যারা কখনও কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা (অন্য কোনোভাবে) নিজেদের প্রতি জুলুম করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে...। -সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৩৫]
-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৪৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৬২৩; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস ১৩
৮০. চল্লিশ থেকে একশ মুসলিম যার জানাযা পড়ে তাকে মাফ করে দেওয়া হয়
কোনো মুসলিম ইন্তেকাল করলে অপর মুসলিমদের উপর তার হক- জানাযায় শরীক হওয়া; তার জন্য ইসতিগফার করা, দুআ করা। কুরআনে কারীমে মুমিনদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে- তারা পরলোকগত মুমিনদের জন্য মাগফিরাত কামনা করে।
জানাযার নামাযে মূলত আমরা মায়্যেতের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। তার জন্য ইসতিগফার ও দুআর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সুপারিশ করি- আল্লাহ তাকে মাফ করে দিন। তাকে গোনাহ থেকে পবিত্র করুন। তাকে কবরের আযাব থেকে, জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন। তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান।
মায়্যেতের জন্য আমাদের এ ইসতিগফারের অনেক মূল্য। এর মাধ্যমে আমরা তো সওয়াব লাভ করবই; কিন্তু এর চাইতে বড় কথা- আমাদের ইসতিগফারের কারণে আল্লাহ মায়্যেতকে মাফ করে দেবেন। এজন্য গুরুত্বের সাথে জানাযায় শরীক হওয়া উচিত। কারণ, যত বেশি মানুষ মায়্যেতের জন্য ইসতিগফার করবে, ক্ষমা লাভ তত সহজ হবে। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
مَنْ صَلّى عَلَيْهِ مِائَةٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ غُفِرَ لَهُ.
একশ মুসলিম যার জানাযা পড়ে, আল্লাহ তাকে মাফ করে দেন। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৪৮৮; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৮৮১৫
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আরেক বর্ণনায় বিষয়টি এসেছে এ ভাষায়-
مَا مِنْ مَيِّتٍ تُصَلِّي عَلَيْهِ أُمّةٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ يَبْلُغُونَ مِائَةً، كُلّهُمْ يَشْفَعُونَ لَهُ، إِلّا شُفِّعُوا فِيهِ.
যে মায়্যেতের উপর একটি জামাত জানাযা আদায় করে, যাদের সংখ্যা এক শ’তে পৌঁছে আর তারা তার জন্য সুপারিশ করে (দুআ-ইসতিগফার করে) তাদের সুপারিশ কবুল করা হয় (অর্থাৎ তাকে মাফ করে দেওয়া হয়)। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৪৭; জামে তিরমিযী, হাদীস ১০২৯; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১৯৯১
উপরের বর্ণনায় এক শ মুসলিম জানাযা আদায়ের কথা বলা হয়েছে। আবার ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে চল্লিশজনের কথা বলা হয়েছে-
ইবনে আব্বাস রা.-এর আযাদকৃত গোলাম কুরাইব বর্ণনা করেন, একবার ‘কুদাইদ’ বা ‘উসফান’ নামক স্থানে ইবনে আব্বাস রা.-এর এক সন্তান ইন্তেকাল করেন। তখন জানাযা পড়ার আগে ইবনে আব্বাস রা. বললেন, দেখ জানাযায় উপস্থিতি কতজন? উপস্থিতির বিষয়ে খবর দিতে গেলে তিনি বললেন, কী বল, উপস্থিতি কি চল্লিশজন হবে? খবরদাতা হাঁ-সূচক উত্তর দিলে বললেন, এবার তাকে জানাযার জন্য বের করা যায়; আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-
مَا مِنْ رَجُلٍ مُسْلِمٍ يَمُوتُ، فَيَقُومُ عَلَى جَنَازَتِهِ أَرْبَعُونَ رَجُلًا، لَا يُشْرِكُونَ بِاللهِ شَيْئًا، إِلّا شَفّعَهُمُ اللهُ فِيهِ.
কোনো মুসলিম মৃত্যুবরণ করলে তার জানাযায় যদি এমন চল্লিশজন উপস্থিত হয়, যারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে না, আল্লাহ তার ব্যাপারে তাদের সুপারিশ (দুআ-ইসতিগফার) কবুল করেন (অর্থাৎ তাকে মাফ করে দেন)। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৪৮; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩১৭০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৩০৮২; সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ৫৬২১
আর মালেক ইবনে হুবায়রা রা.-এর বর্ণনায় তিন কাতারের কথা এসেছে। মারছাদ ইবনে আব্দুল্লাহ রাহ. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, মালেক ইবনে হুবায়রা রা. যদি কোনো জানাযায় শরীক হতেন আর সেখানে উপস্থিতি কম হত তাহলে তিনি মুসল্লিদের তিন কাতারে ভাগ করে দিতেন আর বলতেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ صَلّى عَلَيْهِ ثَلَاثَةُ صُفُوفٍ فَقَدْ أَوْجَبَ.
قال الترمذي : حَدِيثُ مَالِكِ بْنِ هُبَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ.
তিন কাতার মুসলিম যার জানাযা আদায় করবে, তার জন্য জান্নাত অবধারিত। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১০২৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৪৯০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩১৬৬
এখানে কোনো বর্ণনায় দেখা যাচ্ছে একশ, কোনো বর্ণনায় চল্লিশ। আবার কোনো বর্ণনায় বলা হয়েছে তিন কাতারের কথা। এসবের মধ্যে আসলে কোনো বৈপরীত্য নেই। কারণ, এসব ক্ষেত্রে সাধারণত বেশি সংখ্যা আগে বলা হয় আর কম সংখ্যা পরে বলা হয়। আর হতে পারে সংখ্যা এখানে উদ্দেশ্য নয়, উদ্দেশ্য হল, আধিক্য বোঝানো। অর্থাৎ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুমিন যদি কোনো মুসলিমের জানাযা আদায় করে তাহলে এদের দুআ-ইস্তিগফারের ওসিলায় আল্লাহ মায়্যেতকে মাফ করে দেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ, হাদীস ১৬৬১-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)
আমার জানাযায় শরীক হয়ে অধিকসংখ্যক মানুষ আমার জন্য ইস্তিগফার করলে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ আমাকে মাফ করে দেবেন; এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী? আমার জানাযায় হাজির হওয়া-না হওয়া- এটা তো অন্যদের বিষয়; এক্ষেত্রে আমার কি কোনো করণীয় আছে?
হাঁ, আমার করণীয় আছে। আমার করণীয় হল, মানুষের সাথে ভালো আচরণ করা, মানুষের বিপদে-আপদে সাহায্যের হাত বাড়ানো, তাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকা। তাহলেই তো আমি ইন্তিকাল করলে মানুষ আমার পাশে থাকবে, আমার জানাযায় শরীক হবে, আমার জন্য দুআ-ইস্তিগফার করবে। সুতরাং এ ফযীলত ও ক্ষমা লাভ করতে চাইলে জীবদ্দশায় সকলের সাথে ভালো আচরণ করতে হবে, সুখে-দুঃখে সকলের পাশে থাকতে হবে।
৮১. মৃতের পক্ষে প্রতিবেশীদের নেক সাক্ষ্য...
এক হল মায়্যেতের জন্য মুমিনদের দুআ-ইস্তিগফার করা; যার দ্বারা মায়্যেত ক্ষমা লাভ করে। আরেক হল, মানুষ মৃতের প্রশংসা করা। ভালো মানুষ হিসেবে সাক্ষ্য দেয়া; এর মাধ্যমেও আল্লাহ বান্দাকে মাফ করেন, জান্নাত দান করেন। আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মানুষের পাশ দিয়ে একজন মুমিনের জানাযা নিয়ে যাওয়া হল। মানুষ তার প্রশংসা করল। এ দেখে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
وَجَبَتْ
(অবধারিত হয়ে গেছে।)
আরেকজনের জানাযা নিয়ে যাওয়া হল। লোকেরা তার বিষয়ে মন্দ বলল। এ শুনেও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
وَجَبَتْ
(অবধারিত হয়ে গেছে।)
তখন ওমর রা. প্রশ্ন করলেন-
مَا وَجَبَتْ؟
কী অবধারিত হয়ে গেল, (আল্লাহর রাসূল!)
(একজনের উত্তম প্রশংসা করা হল, তাকে ভালো বলা হল তখন আপনি বললেন, ‘অবধারিত হয়ে গেছে।’ আবার আরেকজনের বিষয়ে মন্দ বলা হল তখনও বললেন, ‘অবধারিত হয়ে গেছে।’- এর অর্থ কী?)
নবীজী উত্তরে বললেন-
هَذَا أَثْنَيْتُمْ عَلَيْهِ خَيْرًا، فَوَجَبَتْ لَهُ الجَنّةُ، وَهَذَا أَثْنَيْتُمْ عَلَيْهِ شَرّا، فَوَجَبَتْ لَهُ النّارُ، أَنْتُمْ شُهَدَاءُ اللهِ فِي الأَرْضِ.
তোমরা যার প্রশংসা করেছ তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে গেছে আর তোমরা যাকে মন্দ বলেছ তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গেছে। তোমরা হলে পৃথিবীতে আল্লাহর সাক্ষী। অর্থাৎ তোমরা পৃথিবীতে ব্যক্তির ভালো-মন্দের সাক্ষী। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৩৬৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৪৯
আরেক হাদীসে বিষয়টি একটু অন্যভাবে এসেছে। সেখানে মৃতের পক্ষে প্রতিবেশীর উত্তম সাক্ষ্যের কারণে তাকে মাফ করে দেওয়ার কথা এসেছে। আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ فَيَشْهَدُ لَهُ أَرْبَعَةُ أَهْلِ أَبْيَاتٍ مِنْ جِيرَتِهِ الْأَدْنَيْنَ أَنّهُمْ لَا يَعْلَمُونَ إِلّا خَيْرًا إِلّا قَالَ اللهُ جَلّ وَعَلَا قَدْ قَبِلْتُ عِلْمَكُمْ فِيهِ وَغَفَرْتُ لَهُ ما لا تعلمون.
কোনো মুসলিম মৃত্যুবরণ করলে তার নিকট প্রতিবেশীদের চার পরিবার যদি সাক্ষ্য দেয়- তারা তাকে ভালোই জানে; তখন আল্লাহ তাআলা বলেন-
قَدْ قَبِلْتُ عِلْمَكُمْ فِيهِ وَغَفَرْتُ لَهُ ما لا تعلمون.
তার ব্যাপারে তোমাদের উত্তম ধারণা আমি গ্রহণ করলাম আর তোমরা তার বিষয়ে যা জানো না তা (অর্থাৎ তার পাপ) আমি ক্ষমা করে দিলাম। -সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৩০২৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৩৫৪১; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ১৩৯৮; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৯১২১; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস ৩৪৮১; আলআহাদীসুল মুখতারা, যিয়া আলমাকদীসী, হাদীস ১৬৬০; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ৩৯৬০
এক্ষেত্রে আমাকে যে কথাটি মনে রাখতে হবে তা হল, প্রতিবেশীর উত্তম প্রশংসা কিন্তু এমনিতেই লাভ হয় না; প্রতিবেশীর সাথে উত্তম আচরণের মাধ্যমেই তা হাসিল হয়। সুতরাং এ ফযীলত লাভ করতে হলে প্রতিবেশী ও অন্যদের সাথে সদাচরণ করতে হবে। এর মাধ্যমেই মুত্যুর পর তাদের উত্তম প্রশংসা ও আল্লাহর ক্ষমা লাভ হবে।
আরেকটি বিষয়, এখান থেকেই হয়ত কোনো কোনো সমাজে একটি প্রচলন দেখা যায়- জানাযা সামনে রেখে সকলকে জিজ্ঞেস করা হয়- লোকটি কেমন ছিলেন? সকলে সমস্বরে উত্তর দেয়- ভালো ছিলেন।
আসলে এই যে মানুষের উত্তম প্রশংসা- এটা স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বপ্রণোদিত প্রশংসা। প্রশ্নের মুখে চক্ষুলজ্জায় করা প্রশংসা নয়। তাই তো হাদীসের ভাষা হল, ‘তার প্রশংসা করা হল’ বা ‘লোকেরা তার প্রশংসা করল’।
যাইহোক, এ প্রশংসা মৃত্যুর পর অর্জন করার বিষয় নয়; তা অর্জনের সময় জীবনব্যাপী। মানুষের জীবনব্যাপী কর্ম ও আচরণই এ প্রশংসা এনে দেয়। হ