মুহাররম ১৪৩৯   ||   অক্টোবর ২০১৭

মুমিনের কিছু গুণ

আনাস বিন সা‘দ

ঈমান কী?

১. উমর ইবনুল খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত প্রসিদ্ধ হাদীস-হাদীসে জিবরীলে এসেছে-

فَأَخْبِرْنِي عَنِ الْإِيمَانِ، قَالَ: أَنْ تُؤْمِنَ بِاللهِ، وَمَلَائِكَتِهِ، وَكُتُبِهِ، وَرُسُلِهِ، وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّه، قَالَ: صَدَقْتَ.

হযরত জিবরীল আ. রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, এবার আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘ঈমান হল, তুমি ঈমান রাখবে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণের প্রতি এবং শেষ দিবসের প্রতি। এবং তুমি ঈমান রাখবে তাকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি। জিবরীল আ. বললেন, আপনি সত্য বলেছেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮

ঈমানের স্বাদ

২. আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন,

ذَاقَ طَعْمَ الْإِيمَانِ مَنْ رَضِيَ بِاللهِ رَبّا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا، وَبِمُحَمّدٍ رَسُولًا.

ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করবে ঐ ব্যক্তি, যে আল্লাহকে রবরূপে, ইসলামকে দ্বীনরূপে এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে রাসূলরূপে সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৪

সুস্বাদু খাদ্যের স্বাদ সেই বুঝতে পারে যার জিহ্বায় স্বাদ আছে। রোগ-ব্যাধির কারণে নষ্ট হয়ে যায়নি। তদ্রূপ ঈমান ও যাবতীয় আমলের স্বাদও ঐ খোশ নসীব ব্যক্তিই অনুভব করে যে সম্পূর্ণ সন্তুষ্টিচিত্তে ও সর্বান্তকরণে আল্লাহকে রব ও পরওয়ারদিগার এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাসূল ও আদর্শ এবং ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন ও জীবন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করে।

আল্লাহ তাআলা, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ইসলামের সাথে যার সম্পর্ক কেবলই বংশগত ও প্রথাগত বা কেবলই চিন্তাগত ও বুদ্ধিগত পর্যায়েই নয় বরং সে আল্লাহ তাআলার বন্দেগী, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য এবং ইসলামের অনুসরণকে মনে-প্রাণে নিজের জীবনে গ্রহণ করে নেবে। সেই ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে। (মাআরিফুল হাদীস, হিস্যা : ১, পৃ. ৯১)

ঈমানের মিষ্টতা

৩. আনাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

ثَلاَثٌ مَنْ كُنّ فِيهِ وَجَدَ حَلاَوَةَ الإِيمَانِ: أَنْ يَكُونَ الله وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمّا سِوَاهُمَا، وَأَنْ يُحِبّ المَرْءَ لاَ يُحِبّهُ إِلّا لِلّهِ، وَأَنْ يَكْرَهَ أَنْ يَعُودَ فِي الكُفْرِ كَمَا يَكْرَهُ أَنْ يُقْذَفَ فِي النّارِ.

তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকবে সে ঈমানের মিষ্টতা অনুভব করবে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার কাছে সবকিছু থেকে অধিক প্রিয় হওয়া, কাউকে ভালোবাসলে শুধু আল্লাহরই জন্য ভালোবাসা, আর কুফুরীতে ফিরে যাওয়াকে এমন ঘৃণা করা, যেমন সে ঘৃণা করে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৩

এই হাদীসের বিষয়বস্তুও আগের হাদীসের বিষয়বস্তুর প্রায় কাছাকাছি। উপস্থাপনায় কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। এই হাদীসে বলা হচ্ছে, ঈমানের মিষ্টতা ঐ ব্যক্তিই অনুভব করতে পারবে, যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালবাসায় পরিপূর্ণ সমর্পিত থাকবে-আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে জগতের সবকিছু থেকে বেশি ভালবাসবে। অন্য কারো প্রতি যদি তার ভালবাসা হয়, তা হবে সম্পূর্ণ এই ভালবাসার অধীন। আর ইসলাম তার এতই প্রিয় যে, ইসলাম থেকে ফিরে যাওয়া, কুফুরীতে লিপ্ত হওয়া তার কাছে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার সমতুল্য। (মাআরিফুল হাদীস, হিস্যা : ১, পৃ. ৯১)

ঈমানের শাখা-প্রশাখা

৪. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

الْإِيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ ـ أَوْ بِضْعٌ وَسِتّونَ ـ شُعْبَةً، فَأَفْضَلُهَا قَوْلُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَأَدْنَاهَا إِمَاطَةُ الْأَذَى عَنِ الطّرِيقِ، وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الْإِيمَانِ.

ঈমানের সত্তুরের অধিক (অন্য বর্ণনায় আছে, ষাটের অধিক) শাখা রয়েছে, এর মধ্যে শ্রেষ্ঠ হল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা, আর সর্বনিম্ন শাখা হল রাস্তা থেখে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেওয়া। আর লজ্জা ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৫

অগ্রগণ্য মত হিসেবে এখানে নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা উদ্দেশ্য নেওয়া হয়নি। বরং আধিক্য বোঝানোই উদ্দেশ্য, অর্থাৎ ঈমানের অনেক শাখা-প্রশাখা রয়েছে। ঈমানের শাখা-প্রশাখা দ্বারা উদ্দেশ্য হল ঐসব কর্ম ও আচরণ এবং বাহ্যিক ও আত্মিক ঐসব অবস্থা ও গুণাবলী, যা ঈমানের সূত্র ধরে মুমিনের মাঝে অর্জিত হওয়া কাম্য। বস্তুত যা ঈমানেরই ফল ও নতীজা।

এই হাদীসে ঈমানের শ্রেষ্ঠ শাখা বলা হয়েছে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা, অর্থাৎ তাওহীদের সাক্ষ্য দেওয়া, যা মূলত ঈমানের প্রবেশ পথ। এর পরে ভালো ও কল্যাণমূলক যত কাজ আছে, আল্লাহর হকের সাথে সম্পৃক্ত বা বান্দার হকের সাথে সম্পৃক্ত, সবই ঈমানের বিভিন্ন পর্যায়ের শাখা। সবশেষে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেওয়াও ঈমানের একটি শাখা।

হাদীসের শেষে বিশেষভাবে হায়ার কথা বলা হয়েছে- ‘হায়া বা লজ্জা হল ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ শাখা। মানবীয় স্বভাবের মধ্যে হায়া এমন এক বৈশিষ্ট্য, যা মানুষকে স্বভাবের তাড়নায়ই মন্দ কর্ম ও আচরণ থেকে বিরত রাখে এবং অনেক সৎকর্ম ও সুন্দর আচরণে উদ্বুদ্ধ করে। এদিক থেকে ঈমান ও হায়ার মধ্যে এক ধরনের যোগসূত্র রয়েছে। (মাআরিফুল হাদীস, খ. ১, পৃষ্ঠা ৮৯-৯০, হিস্যা : ১,

ঈমানের আলামত

৫. আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত,

 أَنَّ رَجُلًا سَأَلَ رَسُولَ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: مَا الْإِيمَانُ؟ قَالَ: إِذَا سَرّتْكَ حَسَنَتُكَ وَسَاءَتْكَ سَيِّئَتُكَ، فَأَنْتَ مُؤْمِنٌ.

এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ঈমান কী? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার ভালো কাজ যদি তোমাকে আনন্দ দেয় আর মন্দ কাজ তোমাকে পীড়া দেয় তাহলে তুমি মুমিন। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ২২১৬৬

ঈমানের এক বিশেষ আলামত হল, মুমিন যখন কোনো ভালো কাজ করে তখন তার অন্তরে আনন্দের অনুভূতি হয়, আর তার থেকে কোনো মন্দ কাজ হয়ে গেলে সে ব্যথিত ও দুঃখিত হয়। যতক্ষণ ব্যক্তির অন্তরে এই অনুভূতি থাকবে, বোঝা যাবে যে, তার ঈমানী রূহ বহাল আছে। এই অনুভূতি এরই ফলাফল। (মাআরিফুল হাদীস খ. ১, হিস্যা. ১, পৃ. ৯০

মুমিনদের একাত্মতা

৬. আবু মূসা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

إِنّ المُؤْمِنَ لِلْمُؤْمِنِ كَالْبُنْيَانِ، يَشُدّ بَعْضُهُ بَعْضًا وَشَبّكَ أَصَابِعَهُ.

 মুমিন মুমিনের জন্য প্রাচীর স্বরূপ, একে অপরকে শক্তি যোগায়। একথা বলে তিনি তাঁর দুই হাতের আঙুল প্রবিষ্ট করে দেখালেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০২৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৮৫

৬. প্রাচীরের একেকটি ইট অপরটির সাথে দৃঢ়ভাবে জুরে থাকে। কোথাও সামান্যও ফাঁকা থাকে না। যার ফলে প্রাচীরটি দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। এমন মজবুত হয়, ঝড়-তুফানে এবং শত্রুর আক্রমণেও তা টলে যায় না। তেমনি মুমিনরাও যেন হয় প্রাচীরের মত। তারা একে অপরের সাথে দৃঢ়ভাবে জুড়ে থাকবে, পরস্পর ঐক্যবদ্ধ থাকবে, তাদের মাঝে কোনো বিভেদ-বিচ্ছিন্নতা থাকবে না।

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই হাতের আঙুলগুলোকে পরস্পরের মধ্যে প্রবিষ্ট করে দেখালেন, মুমিনদের মধ্যেও বিভিন্ন শ্রেণী ও স্তরের মানুষ যেন এমনভাবে একতাবদ্ধ হয়, যেমন ভিন্ন ভিন্ন দুই হাতের বিভিন্ন রকম আঙুলগুলো একটি অপরটির সাথে মিলে একটি জিনিস, একটি অস্তিত্বে পরিণত হয়েছে। (মাআরিফুল হাদীস, খ. ৩, পৃ. ৩২৬)

৭. নুমান ইবনে বাশীর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

تَرَى المُؤْمِنِينَ فِي تَرَاحُمِهِمْ وَتَوَادِّهِمْ وَتَعَاطُفِهِمْ كَمَثَلِ الجَسَدِ، إِذَا اشْتَكَى عُضْوًا تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ جَسَدِهِ بِالسّهَرِ وَالحُمّى.

মুমিনদেরকে দেখবে পরস্পরের প্রতি মমতা, হৃদ্যতা ও দয়ার্দ্রতায় এক দেহের ন্যায়। দেহের একটি অঙ্গ পীড়িত হলে গোটা দেহ অনিদ্রা ও জরাক্রান্ত হওয়ার মাধ্যমে তার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০১১; সহীহ মুসলিম, হদীস ২৫৮৬

মুমিনদের পরস্পরের মাঝে ঈমানী বন্ধন কেমন সুদৃঢ় হওয়া উচিত তা আমরা এই হাদীস থেকে পাই। মুমিনদেরকে যে কেউ দেখলেই যেন উপলদ্ধি করতে পারে, শুধু ঈমানী যোগসূত্রের কারণেই তারা একে অপরকে ভালোবাসে, একে অপরের প্রতি মমতা ও হৃদ্যতা পোষণ করে। পৃথিবীর কোথাও কোনো মুমিন আক্রান্ত হলে সবাই তার জন্য এগিয়ে আসে, তার পাশে দাঁড়ায়, তার প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে, ঈমানের দাবিদার হয়েও যদি কারো মধ্যে এই বৈশিষ্ট্য না থাকে, তাহলে তার উপলদ্ধি করা উচিত যে, এখনো তার প্রকৃত ও পূর্ণাঙ্গ ঈমান নসীব হয়নি। ঈমানদারদের এই বৈশিষ্ট্যের কথাই কুরআন মাজীদে এসেছে- رُحَماءُ بَيْنَهُمْ

(আপসের মধ্যে একে অন্যের প্রতি দয়ার্দ্র) সংক্ষিপ্ত অথচ সারগর্ভ বাক্যে। (মাআরিফুল হাদীস খ. ১ হিস্যা-২, পৃ. ১৩৬)

মুমিন নিজের জন্য যা পছন্দ করে অন্যের জন্য তাই পছন্দ করে

৮. আনাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتّى يُحِبّ لِأَخِيهِ مَا يُحِبّ لِنَفْسِهِ.

তোমাদের কেউ ততক্ষণ মুমিন হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ না করে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৫

৯. আবদুল্লাহ ইবনে আম্র রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

  مَنْ أَحَبّ أَنْ يُزَحْزَحَ عَنِ النّارِ وَيُدْخَلَ الْجَنةَ، فَلْتُدْرِكْهُ مَنِيّتُهُ وَهُوَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَيَأْتِي إِلَى النّاسِ مَا يُحِبّ أَنْ يُؤْتَى إِلَيْهِ.

যে চায় তাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হোক, জান্নাতে প্রবেশ করানো হোক, তাহলে তার যেন মৃত্যু আসে এমন অবস্থায় যে, সে আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে এবং সে যেন মানুষের সাথে এমন আচরণ করে, যে আচরণ নিজের সাথে করা হোক সে পছন্দ করে। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ৬৮০৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৮৪৪

মানুষের সাথে আচরণের বিষয়ে অতি সহজ, সুন্দর ও স্বভাব-অনুকূল একটি মূলনীতি আমরা এই হাদীস শরীফ থেকে পাই। প্রায়োগিক জীবনে যদি এই মূলনীতি বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয় তাহলে আচরণ হবে নির্ভুল, প্রশান্তিময় ও স্নিগ্ধতাপূর্ণ।

মানুষের সাথে আচার-ব্যবহার সুন্দর করার গুরুত্ব কত তা এই হাদীস শরীফ থেকে পাওয়া যাচ্ছে। মানবের চূড়ান্ত সফলতা, জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভের উপায় হিসাবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈমানের পর উত্তম আচার-ব্যবহারের কথা বলেছেন।

ঈমানী ভ্রাতৃত্ব ও ভ্রাতৃত্বের দাবি

১০. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

الْمُؤْمِنُ مِرْآةُ أَخِيهِ، وَالْمُؤْمِنُ أَخُو الْمُؤْمِنِ، يَكُفّ عَلَيْهِ ضَيْعَتَهُ، وَيَحُوطُهُ مِنْ وَرَائِهِ.

মুমিন মুমিনের জন্য আয়না, (তার কোনো ত্রুটি দেখলে সে তা সংশোধন করে দেয়)। আর এক মুমিন অন্য মুমিনের ভাই, সে তার ভাইয়ের জমিজমাকে সুরক্ষা দেয় এবং তার ভাইকে তার পেছন থেকে আগলে রাখে। -সুনানে আবু দাউদ, হদীস ৪৯১৮; আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস ২৩৯

আয়নার সামনে যে দাঁড়ায়, আয়না তার চেহারার খুঁত ও অসৌন্দর্য তুলে ধরে এবং হুবহু যা, তাই শুধু প্রকাশ করে। কোনো বাড়ায়-কমায় না। এবং তা তার সামনেই শুধু প্রকাশ করে, অন্য কারো সামনে তা প্রকাশ করে না। তেমনি মুমিন যেন অন্য মুমিনের দোষ ও ত্রুটি সংশোধনের ক্ষেত্রে হয় আয়নার মত। (মাআরিফুল হাদীস খ. ৩, পৃ. ৩৩২

মুমিনদের পরস্পরের সম্পর্ক হল ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক। ভ্রাতৃত্বের এক গুরুত্বপূর্ণ দাবি এই হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। জমিজমা, জীবিকা এসব নিয়ে দুনিয়াতে মানুষের কত আয়োজন, কত দৌড়ঝাঁপ। একে ঘিরে তার কত দুশ্চিন্তা, কত অস্থিরতা! এসব ক্ষেত্রে মুমিন যেন তার মুমিন ভাইকে সুরক্ষা দেয়, তার আড়ালে-অনুপস্থিতিতেও তাকে যেন সে আগলে রাখে। কোনো মুমিনের মাধ্যমে যেন অন্য মুমিনের কোনো ক্ষতি না হয়। কোনো রকম পেরেশানী না হয়। কোনো সন্দেহ নেই যে, এটা যেন ভাইয়ের কাছে ভাইয়ের দাবি, তেমনি তা ভাইয়ের পক্ষ থেকে ভাইয়ের জন্য বড় পাওয়াও বটে!

১১. উকবা ইবনে আমের রা. বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

الْمُؤْمِنُ أَخُو الْمُؤْمِنِ، فَلَا يَحِلّ لِلْمُؤْمِنِ أَنْ يَبْتَاعَ عَلَى بَيْعِ أَخِيهِ، وَلَا يَخْطُبَ عَلَى خِطْبَةِ أَخِيهِ حَتّى يَذَرَ.

এক মুমিন অন্য মুমিনের ভাই। সুতরাং কোনো মুমিনের জন্য জায়েয নেই তার ভাইয়ের বিক্রয়-প্রস্তাবের উপর নিজে প্রস্তাব করা এবং তার ভাইয়ের বিবাহ-প্রস্তাবের উপর নিজে প্রস্তাব করা। হাঁ, যদি সে ছেড়ে দেয় (তাহলে সেখানে প্রস্তাব করতে পারে)। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪১৪

স্পষ্টই যে, এটা প্রথমে প্রস্তাবকারী ব্যক্তির জন্য কষ্টের কারণ, এবং এটা তার অন্তরে গিয়ে বিঁধে। ভাই কি ভাইকে এভাবে কষ্ট দিতে পারে? আর এমন কাজ দ্বিতীয় ব্যক্তির জন্যও মানবিকতা ও মানসিকতার দিক থেকে বড়ই আশোভন! তাছাড়া এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের ফিতনাও হয়ে যায়।

 ‘মুমিননামের দাবি

১২. আনাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

الْمُؤْمِنُ مَنْ أَمِنَهُ النّاسُ، وَالْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ، وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ السّوءَ.

মুমিন সেই, যার থেকে মানুষ (সবদিক থেকে) নিশ্চিন্ত থাকে, মুসলিম সেই যার জিহ্বা এবং হাত থেকে মুসলমানরা নিরাপদ থাকে। আর মুহাজির হল ঐ ব্যক্তি, যে অন্যায় বর্জন করে চলে। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ১৬৫৬১

মুমিন শব্দটিই নিরাপত্তার অর্থ ধারণ করে আর মুসলিম শব্দটি ধারণ করে শান্তির অর্থ। কাজেই মুমিন ও মুসলিম নামের অধিকারী যিনি হবেন তিনি তো কারো জন্যই শংকা ও অশান্তির কারণ হবেন না। আর যে হিজরত করে দেশ ছেড়েছে, তাকে তো গোনাহ, অন্যায়-পাপাচার ছাড়তেই হবে; এটা মুহাজিরনামটিরই দাবি।

আমানতদারি মুমিনের অবিচ্ছেদ্য বৈশিষ্ট্য

১৩. আনাস রা. বলেন,

مَا خَطَبَنَا نَبِيّ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ إِلّا قَالَ: لَا إِيمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَهُ، وَلَا دِينَ لِمَنْ لَا عَهْدَ لَهُ.

আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিলেই বলতেন তার ঈমান নেই, যার আমানতদারি নেই আর যার প্রতিশ্রুতিশীলতা নেই তার দ্বীনদারি নেই। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ১২৩৮৩

বাংলাভাষায় আমানত শব্দের সাধারণত যে অর্থ আমরা বুঝি, কুরআন-সুন্নাহয় আমানতের অর্থ এরচেয়ে অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত। কুরআন-সুন্নাহর ভাষায় বান্দার প্রতি আল্লাহ পাকের সমস্ত হক (হুকুকুল্লাহ) আমানতের অন্তর্ভুক্ত। তদ্রƒপ মানুষের পরস্পরের মাঝে আস্থা ও নির্ভরতার যত ক্ষেত্র আছে সবই আমানতের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং গচ্ছিত অর্থ-সম্পদ, অর্পিত দায়-দায়িত্ব, প্রার্থিত মতামত ও পরামর্শ, একান্ত কথাবার্তা ইত্যাদি সব একেকটি আমানত। মুসলিম সমাজের সর্বস্তরে, মুসলিম জীবনের সর্বক্ষেত্রে যেন আমানত রক্ষার পরিবেশ গড়ে উঠে সে বিষয়ে কুরআন মাজীদে ও হাদীস শরীফে বহু হেদায়েত ও তাকীদ এসেছে। এই হাদীসে আমরা পাই যে, এটা ছিলো আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মজলিসের নিয়মিত প্রসঙ্গ।

মুমিনের কাছে ঈমানের দাবি

১৪. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِالله وَاليَوْمِ الآخِرِ فَلاَ يُؤْذِ جَارَهُ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِالله وَاليَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِالله وَاليَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ.

যে আল্লাহ এবং শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। যে আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানকে ইকরাম করে। যে আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে, আর না হয় নীরব থাকে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০১৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৭

প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেওয়া। প্রতিবেশীর সাথে সদাচার করা এবং অতিথির আতিথ্য- এসব বিষয়কে মনে করা হয় শুধুই ভদ্রতা, সভ্যতা ও সামাজিকতার বিষয়। অথচ আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীস শরীফে বিষয়গুলো কীভাবে উপস্থাপন করেছেন- যে আল্লাহর ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন...। অর্থাৎ এটিও একটি দ্বীনী কাজ এবং এটিও ঈমানের একটি শাখা।

ইসলামী শরীয়তে মেহমান ও মেজবানের বিষয়ে বিস্তারিত বিধান রয়েছে। বিভিন্ন আদব রয়েছে। সেসব বিধান ও আদব রক্ষা করে যদি আমলটি করা হয়, তাহলে একদিকে তা যেমন অতি মহিমময় ফযীলতপূর্ণ কাজ, তেমনি তা মেহমান-মেজবান উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রশান্তি, আনন্দ ও মাধুর্যেরও বিষয়।

এর পরবর্তী প্রসঙ্গ হল- হয় ভালো কথা বলবে, না হয় নীরব থাকবে। মানুষের পারস্পরিক জীবনে স্বভাব ও চরিত্রগত যে দিকগুলো সবচেয়ে বেশি সামনে আসে এবং যার প্রভাবও বিস্তৃত হয়ে থাকে সেগুলোর একটি হল, পরস্পর কথা বলা। কুরআন মাজীদে ও হাদীস শরীফে বিভিন্ন আঙ্গিকে বিভিন্ন শিরোনামে এই বিষয়ে শিক্ষা ও নির্দেশনা পেশ করা হয়েছে।

কথা বললে হয় ভালো কথা বলব, আর না হয় নীরব থাকব। এটা এই বিষয়ের মৌলিক শিক্ষা এবং একটি ঈমানী আমল। সর্বস্তরের ও সর্বশ্রেণীর মুমিনের জন্য এই আমলের বিষয়ে যত্নবান থাকা কর্তব্য। এর সুফল দুনিয়াতে-আখিরাতে উভয় জাহানে সে লাভ করবে। পক্ষান্তরে এই বিষয়ে সচেতন না হলে পার্থিব জীবনে যেমন অশান্তি দেখা দেবে তেমনি এর জন্য আখেরাতেও জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হবে।

প্রতিবেশীর সাথে মুমিন

১৫. আবু শুরাইহ খুজায়ী রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

وَالله لاَ يُؤْمِنُ، وَالله لاَ يُؤْمِنُ، وَالله لاَ يُؤْمِنُ قِيلَ: وَمَنْ يَا رَسُولَ الله؟ قَالَ: الّذِي لاَ يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ.

আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়। জানতে চাওয়া হল, কে ইয়া রাসূলুল্লাহ! তিনি বললেন, যার অনিষ্ট ও উৎপীড়ন থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০১৬

উপস্থাপনা থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কী জালাল ও প্রতাপ নিয়ে বিষয়টি ইরশাদ করেছেন। কত কঠিন ছিল বলার ভাব ও আন্দায!

মুসলিম শরীফের এক হাদীসে এসেছে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- সে জান্নাতে যাবে না, যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না। -সহীহ মুসলিম, হদীস ৪৬

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এমন প্রতাপান্বিত ইরশাদ, আর এমন ভয়াবহ হুঁশিয়ারির পরও প্রতিবেশীর সাথে আচরণ সুন্দর করার ফিকির না করা সত্যিই বড় দুর্ভাগ্যের কথা। (মাআরিফুল হাদীস, খ. ৩, পৃষ্ঠা ৩০৮)

উচ্চ আওয়াজে গান-বাদ্য বা সঙ্গীত ছেড়ে দেওয়া, যাতে প্রতিবেশীর আরাম-বিশ্রামের ব্যাঘাত ঘটে, বড়ই অন্যায় কাজ। তাছাড়া এমনিতেও এটি একটি ঘৃণিত কাজ।

১৬. আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

لَيْسَ الْمُؤْمِنُ الّذِي يَشْبَعُ وَجَارُهُ جَائِعٌ.

সে তো মুমিন নয়, যে নিজে তৃপ্তিভরে আহার করে, আর তার প্রতিবেশী থাকে অনাহারে, অর্ধাহারে। -আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীস ১১২

পূর্ণাঙ্গ মুমিন

১৭. আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا.

ঈমানের দিক থেকে মুমিনদের মধ্যে সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ ঐ ব্যক্তি, যে সবচেয়ে সুন্দর চরিত্রের অধিকারী। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৬৮২; জামে তিরমিযী, হাদীস ১১৬২

অর্থাৎ ঈমানের পূর্ণতা চরিত্রের সৌন্দর্যের উপর নির্ভরশীল। যে যত সুন্দর চরিত্রের অধিকারী হবে, তার ঈমান তত বেশি পূর্ণাঙ্গ হবে।

মুমিনের চরিত্রের মহাত্ম্য

১৮. আয়েশা রা. বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,

إِنّ الْمُؤْمِنَ لَيُدْرِكُ بِحُسْنِ خُلُقِهِ دَرَجَةَ الصّائِمِ الْقَائِمِ  .

নিশ্চয়ই মুমিন তার চরিত্রের সৌন্দর্য দিয়ে রোজাদার তাহাজ্জুদগুজার ব্যক্তির মর্যাদা লাভ করতে পারে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৭৯৮

অর্থাৎ আল্লাহর যে বান্দা নিজের আমল-আকীদা, কর্ম ও বিশ্বাসের ক্ষেত্রে সাচ্চা মুমিন হবে, সাথে সাথে সুন্দর চরিত্রের অধিকারীও হবে, সে যদিও রাতে বেশি নফল নামায পড়ে না, বেশি রোযা রাখে না, তবুও সে তার সুন্দর চরিত্রের কারণে ঐ ব্যক্তির মর্যাদা লাভ করবে, যে দিনে রোযা রাখে, আর রাতভর নফল নামায আদায় করে। (মাআরিফুল হাদীস খ. ১. হিস্য. ২ পৃ. ১০৯)

উত্তম মুমিন

১৯. আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেন,

قِيلَ يَا رَسُولَ الله أَيّ النّاسِ أَفْضَلُ؟ فَقَالَ رَسُولُ الله صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: مُؤْمِنٌ يُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ الله بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ، قَالُوا: ثُمّ مَنْ؟ قَالَ: مُؤْمِنٌ فِي شِعْبٍ مِنَ الشِّعَابِ يَتّقِي الله، وَيَدَعُ النّاسَ مِنْ شَرِّهِ.

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! কোন্ ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন, এমন মুমিন, যে নিজের জান-মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে। তারা জিজ্ঞাসা করলেন, তারপর কে? তিনি বললেন, এমন মুমিন, যে নির্জনে কোনো পাহাড়ের উপত্যকায় বাস করে, সে আল্লাহকে ভয় করে এবং মানুষকে তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ রাখে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৭৮৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৮৮৮

 

 

advertisement