কোন্ পথে চলেছি আমরা!
কোন্ পথে চলেছি আমরা! আমাদের সমাজব্যবস্থা কি ভেঙে পড়ছে? ধীরে ধীরে কি আমরা নিষ্ঠুর ও অমানুষ জাতিতে পরিণত হচ্ছি? এ প্রশ্ন এখন দেশের সকল বিবেকবান মানুষের। গণমাধ্যমে তো প্রচার পাচ্ছে কেবল জোরপূর্বক ব্যভিচার তথা নারী নির্যাতনের খবরগুলো। কিন্তু সাধারণ বেহায়াপনা ও অসামাজিক কার্যকলাপের সকল রাস্তা তো আমরা আগেই খুলে দিয়েছি। যেগুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট কারো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। অথচ ঐ বেহায়াপনা তথা পরস্পর সম্মতির ব্যভিচারের পরবর্তী ধাপই হচ্ছে নির্যাতন তথা ধর্ষণ। অর্থাৎ অনেকক্ষেত্রে সাধারণভাবে সম্মত করতে না পারলেই দুষ্ট লোকেরা বলপ্রয়োগের রাস্তা বেছে নেয়।
আজকে আমরা ঐ প্রসঙ্গটি লম্বা করতে চাই না। ফিরে আসি বর্তমান আলোচিত ইস্যু নারী নির্যাতন তথা জোরপূর্বক নারীর সম্ভ্রমহানী প্রসঙ্গে।
সারা দেশে একের পর এক ভয়াবহ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে। নরপশুদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশু, গৃহবধু, বয়োবৃদ্ধ কেউই। গোটা দেশের মানুষ এখন চরম আতঙ্কিত এবং ক্ষুব্ধ। ন্যায় বিচারের জন্য সবাই ফুঁসে উঠেছে। নোয়াখালী, সিলেট, হবিগঞ্জ, খাগড়াছঢ়ি, পিরোজপুর, লক্ষ্মীপুর, গাজিপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহীসহ সারা দেশে নারী নির্যাতন ও সম্ভ্রমহানীর বিচারের দাবিতে ছাত্র-শিক্ষক ও সর্বস্তরের জনগণ দফায় দফায় রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন। ধর্ষণের দ্রুত বিচার না হওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে ঘরে-বাইরে কোথাও নারীরা নিরাপদ নয়। এটাই এখন সকলের মনের কথা।
এই মুহূর্তে দেশের অনেক পরিচিত রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং বুদ্ধিজীবীরাও ধর্ষকদের শাস্তি প্রকাশ্যে ফাঁসি, ক্রসফায়ার ও অঙ্গ কেটে দেওয়ার দাবি তুলছেন এবং ইতিমধ্যে আইন সংশোধন করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বিধানের অধ্যাদেশও জারি করা হয়েছে।
সন্দেহ নেই আলোচিত সমস্যাটি জঘন্যতম সামাজিক ব্যধি। একটি সমাজে এ ধরনের বিষয়গুলো যখন ব্যাপক হয়ে যায় তখন মানুষ ও চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে কোনো ফারাক থাকে না।
এ ধরনের জঘন্য কথাবার্তা তো আমরা আগে শুনে এসেছি, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ও তথাকথিত কোনো কোনো উন্নত রাষ্ট্রের ব্যাপারে।
দিল্লিতে গণপরিবহনে দলবেঁধে নারী নির্যাতনের ঘটনায় থমকে উঠেছিল বিশ্ব মানবতা। এরপর দেশটির গণমাধ্যমে এ ধরনের খবরের সয়লাব হয়ে যায়।
কিন্তু একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশে এ ধরনের অপরাধ ব্যাপকতা পাবে, এটা চিন্তা করাই অনেক কষ্টের ব্যাপার।
এ ধরনের জঘন্য অপরাধের বিষয়ে করণীয় কী- এ আলোচনা আসলেই দুটি বিষয় সামনে আসে।
১. অপরাধের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা।
২. এ ধরনের অপরাধ যেন বারবার না ঘটে তার প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
সন্দেহ নেই দুটিই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অপরাধের আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো সব খোলা রেখে কিছু লোককে শাস্তি দিলে অপরাধ তো কমে আসবে বটে, কিন্তু তা দীর্ঘ মেয়াদে কার্যকর হবে না; বরং টেকসই প্রতিরোধব্যস্থার জন্য অপরাধের পথ ও অলি-গলি বন্ধের ব্যবস্থা করতে হবে।
জানা কথা, প্রতিকার ব্যবস্থাগুলোর বাস্তবায়ন বর্তমান পরিস্থিতিতে সময়সাপেক্ষ বিষয়। এই নিবন্ধের শেষের দিকে গিয়ে সে বিষয়ে সামান্য আলোকপাতের ইচ্ছা আছে। কিন্তু আজকে আমরা মূল কথা বলতে চাই অপরাধীদের শাস্তির বিষয়ে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে এধরনের জঘন্য অপরাধ ঘটে যাওয়ার পর প্রথমেই অপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় তুলে যথোপযুক্ত শাস্তি প্রদানের পক্ষে। এরপর অপরাধ বন্ধে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু প্রতিকারের বিতর্কে যদি দীর্ঘ সময় ক্ষেপণ করা হয় তাহলে সে সুযোগে অপরাধীরা পার পেয়ে যাওয়ার আশংকা তৈরি হয় এবং সাথে সাথে বিচারহীনতা বা বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অপরাধ মহামারিতে রূপ নেওয়ার আশংকা সৃষ্টি হয়।
সুতরাং আজকের আলোচনায় অপরাধের শাস্তির বিষয়েই কিছু আরজ করতে চাই।
শস্তি কী হবে?
আলোচিত অপরাধের শাস্তি ইসলামে সুনির্ধারিত আছে। তা হল, অপরাধী অবিবাহিত হলে তাকে একশ দোররা ও বিবাহিত হলে তাকে মৃত্যুদ- দেয়া হবে। তবে এটি ব্যভিচারের শাস্তি; যা পুরুষ-মহিলা উভয়কেই প্রদান করা হবে। কিন্তু যদি ব্যভিচার হয় বলপ্রয়োগপূর্বক তাহলে সেক্ষেত্রে বলপ্রয়োগকারী শাস্তি পাবে, যার উপর অত্যাচার করা হয়েছে সে নয়।
বর্তমান সময়ে দ্বীতীয় অপরাধটির কথা ব্যাপক আলোচনায় আসলেও প্রথমটির আলোচনা খুব কম করা হচ্ছে। অথচ প্রথম অপরাধটির ব্যাপকতার পরেই অপরাধীরা বলপ্রয়োগের পথে অগ্রসর হয়। সাধারণভাবে যাকে পাপাচারে সম্মত করতে পারে না তার উপর বলপ্রয়োগ করা হয়। তাই এসব জঘন্য অপরাধ থেকে বাঁচতে হলে সাধারণ ব্যভিচারের সকল পথকেও বন্ধ করতে হবে। কুরআনে কারীমে-
وَ لَا تَقْرَبُوا الزِّنٰۤی.
অর্থাৎ তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেওনা বলে- এ অপরাধের জন্য সহায়ক সকল অপরাধের রাস্তা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর বলপূর্বক ব্যভিচার, যা বর্তমানের আলোচিত বিষয়, সেটার শাস্তি সবক্ষেত্রে একরকম হবে না। কারণ যেসকল ঘটনার কথা এখন আলোচনায় শোনা যাচ্ছে, যেমন সিলেট ও নোয়াখালীর ঘটনাদুটি- এগুলো কুরআনে বর্ণিত ‘আলহিরাবা’ ও ‘ফাসাদ ফিল আরদ’-এর আওতায় পড়ে।
ফাসাদ ফিল আরদের অর্থ হল, জনসম্মুখে মানুষকে আতঙ্কিত করে সন্ত্রাসী কায়দায় ফৌজদারি অপরাধ করা। কুরআন মাজীদে সূরা মায়েদার ৩৩ নম্বর আয়াতে এ ধরনের অপরাধীদের কঠোর শাস্তি প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের ফৌজদারি সন্ত্রাসী অপরাধীরা দুটি শাস্তি একত্রে পাওয়ার যোগ্য :
১. অপরাধের শাস্তি।
২. ‘ফাসাদ ফিল আরদ’ তথা সন্ত্রাসের শাস্তি।
সুতরাং আমরা যদি বাস্তবেই এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ করতে চাই, তাহলে দাম্ভিক ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদেরকে তাদের নারী নির্যাতনের অপরাধের শাস্তির পাশাপাশি ‘ফাসাদ ফিল আরদ’-এর শাস্তিও প্রদান করতে হবে।
এবার জাতি অবাক-বিস্ময়ে লক্ষ করেছে যে, আলোচিত অপরাধগুলো মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার পর চারদিক থেকে অপরাধীদের প্রকাশ্য মৃত্যুদ-ের জোর দাবি উঠেছিল। এ দাবিতে সমাজের হরেক পেশার শিক্ষিতশ্রেণিও যুক্ত হয়েছেন। যাদের কেউ কেউ ইসলামের ফৌজদারি আইন নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ব্যঙ্গ-কটাক্ষ করতে কুণ্ঠাবোধ করেন না। অথচ এ অপরাধে প্রকাশ্যে মৃত্যুদ-ের শাস্তি কেবল ইসলামই ঘোষণা করেছে। তাহলে কথাটা কী দাঁড়াল? আমরা আমাদের অজান্তেই কুরআনের কথা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করে ফেলছি। এটি ইসলামের স্বভাবজাত ধর্ম হওয়ার প্রমাণ বহন করে।
এধরনের ঘটনা এবারই প্রথম ঘটেনি। কোনো কোনো হত্যাকা-ের বিচারের কথা বলতে গিয়ে এর আগেও জাতীয় সংসদে ‘ইসলামের হুদূদ ও কিসাস’ বাস্তবায়নের কথা প্রভাবশালীদের মুখেই উচ্চারিত হয়েছে। কিন্তু দুখঃজনক বিষয় হল, ঐ শ্রেণির লোকেরাই কিছুদিন পর কুরআনের আইনের কথা যারা বলে, তাদের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগে যায়।
এজন্য আমি কিছুদিন আগে এ বিষয়ের আলাপচারিতায় একটি গণমাধ্যমে বলেছিলাম, ‘তাদের কথা কোট করে রাখুন, যারা এখন জঘন্য অপরাধীদের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের দাবি তুলছেন, ক’দিন পর আমরা যখন এটাকে ইসলামের শাস্তি হিসেবে উপস্থাপন করব তখন তারা যেন তথাকথিত মানবাধিকার বা অন্য কোনো অজুহাত তুলে এর বিরোধিতা করতে না পারেন।
আমরা দেশের কোনো শ্রেণির লোককেই খাটো করে দেখতে চাই না। কারো কথা বা মতের অসম্মানও আমাদের উদ্দেশ্য নয়। শুধু একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বিনীতভাবে আরজ করতে চাই, যদি ইসলামের শাশ্বত বিধানগুলির প্রতি আপনাদের ভীতি থাকে তবে অন্তত ইসলামের ফৌজদারি অপরাধের শাস্তিগুলিই পরীক্ষা করে দেখুন না!
আমরা চ্যালেঞ্জ দিতে পারি, এমনটি করতে পারলে শুধু এসকল অপরাধই দমন হবে না; বরং সমাজের অন্যান্য স্তরেও ইসলামী বিধিবিধান কায়েমের প্রতি আপনারা আগ্রহী হয়ে উঠবেন। এবং যারা না বুঝে অযথা ভীত হচ্ছেন তাদের ভীতিও কাটবে। অবশ্য ভীতি সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীটির কথা বলে তো লাভ নেই। কারণ তাদের অনেকেই তো অন্যের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে থাকেন। তাদের চিন্তা-চেতনা বা দর্শন কোনোটাতেই কি নিজস্বতা বলে কিছু আছে? সবকিছুই এমন দেশ ও জাতি থেকে ধার করা, যাদের পরিবার ও সমাজব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে অনেক আগেই। আজ থাক সে প্রসঙ্গ।
মূল কথাটি হচ্ছে, বিচার করতে হবে। এবং অবশ্যই কঠোর শাস্তি বাস্তবায়ন করতে হবে।
শুধু আইন নয়, চাই কঠোর শাস্তির বাস্তবায়ন
এটি আশার কথা যে, ইতিমধ্যেই আইন সংশোধন করে ধর্ষকের জন্য সর্বোচ্চ মৃত্যুদ- শাস্তির বিধান আনা হয়েছে এবং এ নিয়ে মন্ত্রী সাহেবরা অনেক প্রচার-প্রচারণাও করেছেন। ভাবটা এমন দেখিয়েছেন, যেন তারা অনেক কিছু করে ফেলেছেন; এ অপরাধের জন্য দেশে আগে কোনো শাস্তির বিধান ছিল না? যাবজ্জীবন শাস্তির বিধান তো আগেও ছিল। সেটা বাস্তবায়ন হয়েছে কয়জন অপরাধীর ক্ষেত্রে?
তাই শুধু আইন করাই যথেষ্ট নয়, দ্রুত বিচারের মাধ্যমে এর বাস্তবায়নও জরুরি। মূল সমস্যাটিই হচ্ছে বিচারহীনতা, অথবা বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা। মূলত এ দুটি কারণেই অপরাধীদের দুঃসাহস দিন দিন বেড়েই চলেছে। কারণ তারা দেখছে, বারবার অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। তাই কঠোর আইন করেই কৃতিত্ব নেওয়ার সুযোগ নেই; বরং জাতীর সামনে সে আইনের সুফল দৃশ্যমান করতে হবে।
আরেকটি কথা, বিভিন্ন সময় অপরাধের ঘটনাগুলোর আলোচনা এলে এসবের অধিকাংশের পেছনেই প্রভাবশালী গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততার বিষয় সামনে চলে আসে। বিভিন্ন মহল থেকে অপরাধীদেরকে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সদস্য হিসাবে প্রচার করা হয়ে থাকে। পরে দেখা যায়, উপর মহল থেকে বিষয়টি হয়তো অস্বীকার করা হয় অথবা তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আমরা বলতে চাই, সরকারের জন্য এটি তো সমাজের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার এবং জনপ্রিয়তা অর্জনের বিরাট সুযোগ। কারণ এদের যদি শাস্তি নিশ্চিত করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে অন্য অপরাধীরা যেমন কোনো দলের পরিচয় ভাঙিয়ে অপকর্ম করার আগে দশবার ভেবে নেবে, তেমনিই জনগণও সরকারের নিরপেক্ষ ও আন্তরিকতার প্রতি আস্থাবান হবে।
তাই ঘুরেফিরে একই কথা আবার বলতে হয়, দ্রুততম সময়ে কঠোর শাস্তি বাস্তবায়ন। বাংলাদেশে তো ইতিমধ্যেই কয়েকটি ক্ষেত্রে আমরা দ্রুততম সময়ে বিচারকার্য সম্পন্ন করে তা বাস্তবায়ন করতে দেখেছি। এ অপরাধগুলোর ক্ষেত্রেও কি তা বাস্তবায়ন করা যায় না?
সমাজে নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমরা কি একটু সাহসী হয়ে উঠতে পারি না?
বেপর্দা নারীর দিকেও দৃষ্টি দেওয়া যাবে না
আরেকটি বিষয়ে আলোকপাত করে শেষ করছি। নারী নির্যাতনের মত অপরাধগুলোর ব্যাপকতা সামনে এলেই উলামায়ে কেরামসহ অনেকেই অপরাধের গোড়ায় হাত দেয়ার আহ্বান জানিয়ে থাকেন। এজন্য তারা মাতৃজাতী নারীকে পণ্য ও ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত করার এবং তথাকথিত বিনোদনের নামে নিজেদের লোভ-লালসা চরিতার্থ করার প্রচলিত সকল পথ বন্ধের দাবিও তোলেন। সাথে সাথে প্রাসঙ্গিকভাবেই পর্দার কথাও আসে। আমরা শুরুতেই আরয করেছি যে, এ ধরনের অপরাধ স্থায়ীভাবে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য অবশ্যই সে পথে হাঁটতে হবে। কিন্তু আজ আমরা সে বিষয়ে ঢুকতে চাই না। ‘আলকাউসারে’ এর আগেও নারীদের ইসলামপ্রদত্ত অধিকার ও সম্মান নিয়ে লেখা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের নিবন্ধ আরো আসবে ইনশাআল্লাহ।
যে বিষয়টি এ মুহূর্তে বলা দরকার তা হল, কোনো নারী যদি বেপর্দা বা সংক্ষিপ্ত পোশাকেও চলাফেরা করে বা ঘর থেকে বের হয় তবে তার কাজটি যা-ই হোক ইসলাম কিন্তু তার দিকেও কুদৃষ্টি দেয়ার অনুমতি দেয় না। কুরআনুল কারীমে এধরনের সকল ক্ষেত্রেই মুমিনদেরকে দৃষ্টি অবনত রাখতে বলা হয়েছে। সুতরাং কোনো বেপর্দা মহিলার উপর কেউ অত্যাচার করলে বা তার শ্লিলতাহানী করলেও ইসলামে তার শাস্তি অবধারিত। এবং তা সাধারণ ক্ষেত্রের মতই। মহিলাকে তার পোশাক-আশাকের জন্য বিচারক ভিন্নভাবে হয়ত জিজ্ঞেস করবে, কিন্তু একারণে অত্যাচারী পুরুষের শাস্তি লাঘব হবে না।
অতএব সবার আগে শুরু হোক অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। বিশেষত আমরা মুসলিমরাই তো ঐ জাতি, যাদের ধর্ম সর্বপ্রথম নারীজাতিকে সম্মানের উচ্চ শিখরে উঠিয়েছে। সে জাতির মা-বোনগণের ইজ্জতে হাত পড়লে আমাদের চোখ-মুখে কালি অন্যদের থেকে বেশি দৃশ্যমান হবে। এবং আমরা অবোধ ও দায়িত্বহীন হিসেবে পরিচিত হব। তাই এসব অপরাধ বন্ধে ঐক্যবদ্ধ দাবি তুলতে হবে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে কঠিন সামাজিক প্রতিরোধ।