সফর ১৪২৯   ||   ফেব্রুয়ারি ২০০৮

কূ ট জা ল : মানবাধিকার নেত্রীর মতলব কী

আবু তাশরীফ

গত জানুয়ারি মাসে ঢাকায় একজন মানবাধিকার নেত্রী এসেছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার মহাসচিব। ঢাকায় এসে তিনি বিভিন্ন উপদেশ বিতরণ করেছেন। এর মধ্যে একটি ছিল, কার্টুন অাঁকার জন্য শাস্তি জরিমানা করা ঠিক নয়। এ কারণে কেউ জেল-জুলুমের শিকার হলে তাকে মুক্তি দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে জরুরি অবস্থার মধ্যেই ওই কার্টুন প্রকাশের বিরুদ্ধে যারা রাজপথে বিক্ষোভ করেছে আইনভঙ্গের দায়ে তাদের কেন শাস্তি দেওয়া হয়নি, এ প্রশ্নও তিনি রেখেছেন। স্পষ্টতই তিনি গত রমযানে ঢাকার একটি দৈনিক পত্রিকার ম্যাগাজিনে মুদ্রিত কার্টুনের জন্য কারান্তরীণ কার্টুনিস্টের পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। গণতন্ত্র, দুর্নীতি, নির্বাচন ইত্যাদি বিষয়েও তিনি বর্তমান  তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে বিচিত্র পরামর্শ দিয়েছেন। আসলে হযরত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র নাম নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করলে আইরিন খানদের দৃষ্টিতে কোনো অপরাধই হয় না। তারা অন্য সব অপরাধের শাস্তির জন্য, অপরাধ বন্ধের জন্য কথা বলেন, কিন্তু ইসলাম, ইসলামের নবী এবং ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ নিয়ে কেউ বিদ্রুপ-মস্করা করলে সেটাকে তারা কোনো অপরাধই বিবেচনা করেন না। এ ধর্ম, এ ধর্মের নবী এবং এ ধর্মের অনুসারীদের আবেগ-বিশ্বাস ও বিধিবিধানকে তারা এতটাই বে-ওয়ারিশ দেখতে চান যে, তার জন্য কোথাও কেউ টু শব্দ করে বসলে তারা খুবই বিরক্ত-বোধ করেন।

আইরিন খানের ব্যক্তিগত পরিচয় তুলে ধরা কঠিন। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ নারী উত্তরাধিকার সূত্রে যে মুসলিম, এটা তার নাম শুনলেই বুঝা যায়। লক্ষ্য করার মত বিষয় হলো, মানবাধিকার বা এ ধরনের চটকদার কোনো নামে ইসলামের বিরোধিতা করার জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সক্রিয় ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠী উত্তরাধিকার সূত্রে মুসলিম অথচ ধর্ম, ধর্মানুভূতি সম্পর্কে অজ্ঞ ও ধর্ম-বিদ্বেষী কোন ব্যক্তিকেই মনোনীত করে থাকে। আন্তর্জাতিক মোড়ল শক্তি কোনো মুসলিমকে যখন নির্দ্বিধায় কোনো গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে বসায় এবং পশ্চিমা কিংবা পশ্চিমাঘেঁষা মিডিয়া যখন সে ব্যক্তির বন্দনা করে তখন অপরাপর মুসলমানদের ধরে নেওয়াই নিরাপদ যে, এ চেয়ার ও এ প্রচারের পেছনে অন্য কোনো মতলব সক্রিয়। আইরিন খানের পেছনেও সে সক্রিয় মতলবের ছায়া বিদ্যমান। তিনি এদেশে এসেছেনই এজন্য কিংবা এ দেশে এসে এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন একারণেই। তাকে কিংবা তার ভূমিকাকে আলাদা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। স্যাটানিক ভার্সেসের লেখক যেমন তাদের কাছে খুব কদরযোগ্য ব্যক্তি তেমনি তাদের কাছে কদরযোগ্য সব ব্যক্তিরই পেছনে এ ধরনের কদর্য কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়। কারোটা নগদ কারোটা বকেয়া। কিন্তু মতলবী কিছু থাকেই। এদেশে বেড়াতে এসে মানবাধিকার নেত্রী আসলে পেছনে থাকা সে ধরনের কোনো মতলব পূরণ করে চলেছেন কিনা, সেটাই এখন বড় ধরনের সন্দেহের বিষয়।#

 

 

advertisement