মধ্যপ্রাচ্যে ‘শান্তির’ তোড়জোড় : নতুন অশান্তির অশনিসংকেত নয় তো?
ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে ইসরায়েল যারপরনাই উদ্বিগ্ন। তাদের আশংকা ২০১০ সালের মধ্যে ইরান পারমাণবিক বোমা বানাতে সক্ষম হবে এবং এর ফলে ইসরায়েলের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। এদিকে গত ৯ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ১ সপ্তাহের লম্বা সফরে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। এই সফরের এজেন্ডা হিসেবে বলা হয়েছে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তিপ্রক্রিয়া এবং ইরানের পরমাণু কর্মসূচি।
ফিলিস্তিন অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রূপরেখা প্রণয়ন প্রসঙ্গে আলোচনা ও পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হচ্ছে। বালাবাহুল্য, এটা অত্যন্ত স্থূল রাজনৈতিক চালবাজি ছাড়া আর কিছু নয়। এ ধরনের পদক্ষেপ যে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের উপস্থিতিকে বৈধতা দানেই নতুন করে পুরনো চাল তা বর্তমান বিশ্ব-পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন ব্যক্তিদেরকে নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। হাজার হাজার আরব মুসলিমকে তাদের বাস্ত্তভিটা ত্যাগে বাধ্য করার পর তাদের স্বাধীন করার নামে নামমাত্র ভূমি ফেরত দেওয়ার কাগুজে কোন নাটক হয়তো ভবিষ্যতে কখনও অভিনীত হবে, কিন্তু চুরির সম্পদে চোর-গৃহস্তের মালিকানা প্রমাণের ওই কাগুজে নাটকও যে আরব দেশগুলোর জন্য হতে পারে আরেকটি নতুন কাঁটা তা ইতোপূর্বেকার বহু অভিজ্ঞতা থেকে স্পষ্ট। সম্ভবত এজন্য প্রথম থেকেই শান্তিচুক্তির বাইরে রয়েছে হামাস। এ ধরনের ‘ফাঁকির মুলো’ এজেন্ডা করে ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের জন্য আরব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সম্মতি আদায়ের প্রচেষ্টা একদিকে যেমন কৌতুকপূর্ণ, অন্যদিকে এতে মুসলিমবিশ্বের জন্য রয়েছে চিন্তার খোরাক। মুসলিম রাজনৈতিক লিডাররা যদি তাদের চলার পথ পরিবর্তন করতে সক্ষম না হন তবে তারা কখনও কোনো বিষয়ে, এমনকি একটি সম্মানজনক মৌখিক প্রস্তাবও আশা করতে পারেন না। নতজানু মনোবৃত্তির দুর্বল লোকদের প্রতি সম্মান দেখানোর বিরক্তিকর ভদ্রতা অন্তত কূটনৈতিক ক্ষেত্রে যে পরিত্যাক্ত এটা আমাদের নেতাদের বোঝা উচিত।
এদিকে জর্জ বুশ তার মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ করে যাওয়ার পরপরই ওই অঞ্চলে ‘শান্তি’র ডংকা বাজতে শুরু করেছে। একাধিক ইসরায়েলী বিমান হামলায় অন্তত চল্লিশজন ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছেন। এসব হত্যাকান্ডের কোন বিচার হয় না। এরপর গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে সেখানকার অসংখ্য মানুষকে নজিরবিহীন কষ্টে নিপতিত করা হয়েছে। খাবারের সন্ধানে অসংখ্য ফিলিস্তিনী মিশরে প্রবেশ করেছে।
এ ধরনের অমানবিক ও বর্বরোচিত কর্মকান্ড মুসলিম ফিলিস্তিনে ঘটেই চলেছে। এটা অনেক আগেই পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, মুসলিমবিশ্বের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির জন্য তাদের নিজেদেরকেই সচেতন হতে হবে। মাত্র বারো মিনিটের মাথায় যারা একটি জবরদখলকারী জাতির সকল জবরদখলের বৈধতা প্রদান করেছে এবং এ পর্যন্ত পূর্ণ পৃষ্ঠপোষকতা ও মদদ দিয়ে ‘মধ্যপ্রাচ্যের কষ্ট’রূপে গড়ে তুলেছে তারা সেখানকার আরব মুসলিমদের স্বার্থ সংরক্ষণে উদ্যোগী হবে তা কল্পনাবিলাস মাত্র।
পাঠক, গ্রাহক, শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি
আল্লাহ তাআলার অশেষ মেহেরবানিতে এখনো আলকাউসারের পথচলা অব্যাহত রয়েছে। পাঠক, শুভাকাঙ্ক্ষীদের সমর্থন ও ভালোবাসা আমাদের জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা। বিভিন্ন সময় আমরা আমাদের পাঠকদের পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা চেয়েছি এবং আলহামদুলিল্লাহ আশানুরূপ সাড়াও পেয়েছি। এখন যে বিষয়ে আমরা আপনাদের পরামর্শ কামনা করছি তা উল্লেখ করার আগে পরিস্থিতি সম্পর্কে দুটো কথা বলতে চাই। বর্তমান দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত। সবকিছুর মতো মুদ্রণবিষয়ক উপকরণের মূল্যও অনেক বেড়েছে। এছাড়া ডাক-খরচ হয়েছে তিন গুণ। এ অবস্থায় অনেক পত্রিকাই তাদের মূল্য বাড়িয়েছে বা পত্রিকার ফর্মা সংকোচন করেছে। এটা হল বর্তমান পরিস্থিতি। এ পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কী হতে পারে-এ বিষয়ে আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের পরামর্শ কামনা করছি। বর্তমান সংখ্যা পূর্বের আকারেই প্রকাশিত হচ্ছে। দামও অপরিবর্তিত থাকছে। আমরা আপনাদের পরামর্শের অপেক্ষায় রইলাম।