কান্নার সাধক
হযরত ফাত্হ মাওসিলী [রহ.]এর নাম আমরা অনেকেই হয়তো জানি না। তিনি ছিলেন একজন সাধক ও মহান বুযুর্গ। আল্লাহ তাআলার সাথে তাঁর ছিল গভীর ইশক ও নিবিড় মহববত। সারাক্ষণ তিনি আল্লাহর ভয়ে কাঁদতেন। আর আল্লাহকে পাওয়ার আশায় ব্যাকুল থাকতেন। মাঝে মাঝে তাঁর দুচোখ বেয়ে রক্তের ধারা প্রবাহিত হত। মানুষ অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করত, হযরত! আপনি এত কাঁদেন কেন? অশ্রু শেষ হয়ে রক্ত বয়ে যাচ্ছে যে? তিনি বলতেন, ‘রক্ত প্রবাহিত হোক, তবুও যেন আল্লাহ পাকের কাছে আমার কান্না মুনাফেকি থেকে মুক্ত থাকে।’
তাঁর সাধনার দৃঢ়তা ও খোদাভীতি দেখে সবাই অবাক হয়ে ভাবত- এও কি সম্ভব!
হযরত ফতেহ মাওসিলী [রহ.]এর ইন্তেকালের পর এক বুযুর্গ তাঁকে স্বপ্নে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘দুনিয়াতে তো আপনি সারাক্ষণ কাঁদতেন, মহান আল্লাহ তাআলা আপনার সাথে কেমন ব্যবহার করেছেন?’ ফতেহ [রহ.] জবাব দিলেন, ‘আল্লাহ আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন, কেন আমি কাঁদতাম? আমি বলেছি, যাতে আপনি আমাকে মুনাফেক না ভাবেন।’ তখন আল্লাহ তাআলা বললেন, ‘গত ৪০ বছর যাবৎ তোমার আমলনামায় আমি কোনো গোনাহ দেখিনি।’ তাই আল্লাহ তাআলা আমার উপর খুশি হয়েছে।
কত বড় সাধনা আর কত বড় প্রাপ্তি। সামান্য কদিনের এ ধরণীতে যদি আমরাও আল্লাহ তাআলাকে খুশি করতে পারি, অনন্ত অসীম পরকাল হবে আনন্দময়। একজন আল্লাহ-প্রেমিক মুমিনের জন্য মহান রবের সন্তুষ্টির চেয়ে বড় ও মূল্যবান পাওনা আর কী হতে পারে!
[সূত্র : শায়খুল হাদীস যাকারিয়া [রহ.]এর রচনা।]