উসওয়ায়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম : যে আদর্শ শাশ্বত, সর্বজনীন
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াত বিশেষ কোনো যুগ ও সময়কে কেন্দ্র করে ছিল না। মহান আল্লাহ তাঁর সর্বশেষ রাসূলকে প্রেরণ করেছেন সর্বযুগের সকল শ্রেণীর মানুষের হেদায়েতের জন্য। মুক্তি ও কল্যাণের প্রাসঙ্গিকতা যদি সর্বজনীন ও সর্বকালীন হয়ে থাকে তবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াতও শাশ্বত, সর্বজনীন। মানব জাতির জাগতিক সাফল্য আর পরকালীন মুক্তির পূর্ণাঙ্গ পথ-নির্দেশ তাঁর আদর্শে বিধৃত।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই যে, জীবনযাত্রার সকল অঙ্গনে সে আদর্শের সফল বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাস্তব ও প্রামাণ্য দৃষ্টান্তও তিনি স্থাপন করে গেছেন।
খেলাফতে রাশেদার পুণ্যযুগে যে ইনসাফভিত্তিক কল্যাণসমাজ পৃথিবী প্রত্যক্ষ করেছে তা আজকের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গর্বে আত্মহারা পৃথিবীর কল্পনারও অতীত। এতে প্রমাণ হয়েছে যে, সব ধরনের অন্যায় অবিচার, শোষণ ও বৈষম্য, মানসিক ও সামাজিক অস্থিরতা এবং জান-মাল-ইজ্জত-আব্রুর ব্যাপক নিরাপত্তাহীনতা এগুলো সমাজ-জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ নয় এবং ‘উসওয়ায়ে নবী’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণের মাধ্যমে স্থিতিশীল সমাজ-ব্যবস্থার সকল সুফল ভোগ করা এখনও সম্ভব।
বলাবাহুল্য, এই শাশ্বত সত্যের বাস্তব অনুসরণ ছাড়া সমাজ-জীবনে শান্তি-স্থিতিশীলতা আশা করা বাতুলতা মাত্র। বর্তমান যুগটা যেহেতু প্রযুক্তি ও যোগাযোগের উৎকর্ষার যুগ তাই মানবতার ‘কল্যাণ-সাধন’-এর বহু শ্লোগান হরদম শ্রুতিগোচর হয়, কিন্তু বাস্তবতা এই যে, বাস্তব জীবনে এসবের কোনো ইতিবাচক প্রভাব নেই।
আর এখানেই নবী-আদর্শের বিশিষ্টতা। এটি মন-মানসে সাময়িক মুগ্ধতার পরশ বুলানো কোনো চিত্রকর্ম নয় কিংবা কল্পনা-বিহারী ঔপন্যাসিকের আবেগ-উদ্দীপক কোনো সাহিত্যকর্মও নয়, মানব জাতির সকল শ্রেণীর হাসি-কান্না আর সফলতা-ব্যর্থতার সঙ্গেই এ আদর্শের নাড়ির সংযোগ।
‘তোমার ভাইকে সাহায্য কর সে জালেম হোক বা মাজলুম।’ এ পয়গামের সর্বজনীনতা কি অস্বীকার করা যায়?
‘মাজলুমের সাহায্য হল জুলুমের নিগড় থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া আর জালেমের সাহায্য হল জুলুম থেকে তাকে বিরত রাখা।’
কিন্তু নবী-আদর্শের এ মূলনীতির অনুসরণ না থাকার ফলে সমাজ-জীবনে অস্থিরতাই শুধু বৃদ্ধি পাচ্ছে। আধুনিক প্রগতিবাদ শান্তি ও মানবতার অ্রাপ্তবাক্য যতই আউড়ে যাচ্ছে, ততই বেড়ে চলেছে জালেম-মাজলুম উভয় শ্রেণীর গ্লানি আর ব্যর্থতা। আমরা মনে করি, এ পর্যায়ে উসওয়ায়ে নবীর প্রাসঙ্গিকতা তাদেরও বোধগম্য হওয়া উচিত, যারা এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে শুধু অবহেলাই প্রদর্শন করেছেন।
পাঠক, গ্রাহক শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি
আল্লাহ তাআলার অশেষ মেহেরবানিতে এখনো আলকাউসারের পথচলা অব্যাহত রয়েছে। পাঠক, শুভাকাঙ্ক্ষীদের সমর্থন ও ভালোবাসা আমাদের জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা। বিভিন্ন সময় আমরা আমাদের পাঠকদের পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা চেয়েছি এবং আলহামদুলিল্লাহ আশানুরূপ সাড়াও পেয়েছি। বর্তমান দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত। সবকিছুর মতো মুদ্রণবিষয়ক উপকরণের মূল্যও অনেক বেড়েছে। এছাড়া ডাক-খরচ হয়েছে তিনগুণ। এ অবস্থায় অনেক পত্রিকাই তাদের মূল্য বাড়িয়েছে কিংবা পত্রিকার ফর্মা সংকোচন করেছে। এ পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কী হতে পারে-এ বিষয়ে আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের পরামর্শ কামনা করেছিলাম। অনেকে আন্তরিক পরামর্শ দিয়েছেন- ফর্মা সংকোচনের পরিবর্তে সামান্য মূল্যবৃদ্ধির পরামর্শই সবাই দিয়েছেন। তবে এবারও পত্রিকার কলেবর ও মূল্য অপরিবর্তিত থাকল। আমরা অন্য ভাইদেরও মতামতের অপেক্ষা করছি।#