ভিত্তিহীন আমল
রবিউস সানী’র বিশেষ নামায ও আমল
প্রতি সপ্তাহের কিছু আমল এবং প্রতি মাসের কিছু আমল সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতি রোযা রাখা, আইয়ামের বীযের তথা প্রতি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখ রোযা রাখা ইত্যাদি। এসব আমল রবিউস সানীতেও রয়েছে। এগুলো ছাড়া রবিউল আখির (রবিউস সানী) মাসে শরীয়তে বিশেষ কোনো আমলের কথা বর্ণিত হয়নি; কিন্তু বার চান্দের আমল জাতীয় কিছু কিতাবে রবিউস সানী মাসের আমল হিসাবে কিছু ভিত্তিহীন নামায ও আমল আবিষ্কার করা হয়েছে। কোনো কোনোটিতে রয়েছে-
‘বর্ণিত আছে যে, রবিউস সানীর নতুন চাঁদ দেখে যে ব্যক্তি মাগরীবের নামাযের পর দুই রাকাত করে মোট ৮ রাকাত নফল নামায পড়বে এবং প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহার সাথে সূরা ইখলাস...।”
কোনোটাতে আছে, “যদি কোনো ব্যক্তি এ মাসের শেষ রাতে দু’রাকাআত করে চার রাকাআত নফল নামায এ নিয়মে আদায় করে...।”
কোনোটাতে আছে, “বর্ণিত আছে, যে এ মাসের প্রথম থেকে সূরা মুজ্জাম্মেলের আমল করবে তার খুবই উপকার হবে..” ইত্যাদি।
এসকল নামায ও আমল সবই ভিত্তিহীন। যেহেতু বার চান্দের আমল বিষয়ক বই লেখা হচ্ছে, ফলে আন্যান্য মাসের বিভিন্ন বানোয়াট নামাযের পদ্ধতির সাথে মিল রেখে মনগড়াভাবে কিছু নামায ও আমলের কথা রবিউস সানীর আমল শিরোনামে লিখে দেওয়া হয়েছে। আর রবিউস সানীর নামায ও আমল এমন বানোয়াট বিষয় যে, জালহাদীস বিষয়ক কিতাবেও এ সম্পর্কে তেমন কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না। অর্থাৎ হাদীস জালকারীরাও এ বিষয়ে তেমন কিছু জাল করেনি; বরং এগুলো বারো চান্দের আমল জাতীয় কিতাবের কিছু লেখক কর্তৃক জালকৃত। আল্লাহ মাফ করুন।
এছাড়াও রবিউস সানীর আমল হিসাবে এজাতীয় কিছু পুস্তিকায় ‘ফাতেহায়ে ইয়াযদহম’-এর কথাও রয়েছে। ফাতেহায়ে ইয়াযদহম হল, আবদুল কাদের জিলানী রাহ.-এর ওফাত দিবস হিসাবে রবীউস সানীর এগারো তারিখে কৃত ফাতেহা বা ইসালে ছওয়াব মাহফিল। এ রসমের অসারতা বিষয়ে জুমাদাল উলা ১৪২৯হি. মে ২০০৮ঈ. সংখ্যায় প্রচলিত ভুল বিভাগে (‘প্রচলিত ভুল’ বইয়ের পৃ. ১২৬-১২৭) বিস্তারিত লেখা হয়েছে। আগ্রহি পাঠক তা দেখে নিতে পারেন।