আমি যেন হতে পারি এমন পড়শি
আবু হামযা সুক্কারী একজন হাদীস বর্ণনাকারী। তাকে সুক্কারী বলার কারণটা খুব মজার। আরবী ভাষায় মিষ্টিজাতীয় জিনিসকে ‘সুক্কার’ (سُكَّر) বলা হয়। তাঁর কথা ছিল খুব মিষ্টি। সুন্দর উচ্চারণ। অনুপম শৈলী। আকর্ষণীয় ভঙ্গি। সব মিলিয়ে অসাধারণ। কথা বলার সময় শ্রোতারা যেন মধুর স্বাদ অনুভব করত। তাই তাঁর নামই হয়ে গেছে ‘সুক্কারী’।
তিনি থাকতেন খোরাসানের মার্ভে। তোমরা খোরাসানের নাম শুনেছ? খোরাসান অনেক বড় একটা শহর। একসময় ছিল ছবির মত সুন্দর। শিশিরের মত পবিত্র। ফুলের মত সুরভিত। পবিত্র, সুন্দর ও সুরভিত অনেক মানুষ থাকতেন এ শহরে। তেমন একজন ছিলেন আবু হামযা সুক্কারী রাহ.। তিনি ১৬৭ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।
একবারের ঘটনা। তার এক প্রতিবেশী নিজ বাড়ি বিক্রি করার ইচ্ছা করল। দাম জানতে চাইলে সে এক আজীব কথা বলল। সে বলল, আমার বাড়ি নিতে হলে আমাকে চার হাজার দিরহাম (অথবা দিনার) দিতে হবে। এত বেশি কেনÑ জানতে চাইলে সে বলল, দুই হাজার আমার বাড়ির মূল্য আর দুই হাজার আমার প্রতিবেশী আবু হামযা সুক্কারীর প্রতিবেশী হওয়ার মূল্য!
হাঁ, আবু হামযার মত এমন মহৎ ও ভালো মানুষের প্রতিবেশী হতে পারা অনেক বড় সৌভাগ্যের ব্যাপারÑ এটাই বুঝাতে চাইল সে। পরবর্তীতে ঘটলও এমন কিছু। আবু হামযা সুক্কারী রাহ. নিজ প্রতিবেশীর বাড়ি বিক্রির বিষয়টি জানতে পারলেন। অমনি তিনি প্রতিবেশীর বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন চার হাজার দিরহাম এবং তাকে বাড়ি বিক্রি না করতে অনুরোধ করলেন।
এমন ভালো প্রতিবেশীর আবদার কি আর ফেলা যায়। আর যাওয়া হল না তার। রয়ে গেলেন চিরদিন আবু হামযা সুক্কারীর প্রতিবেশী হয়ে। (সিয়ারু আলামিন নুবালা ৭/৬৯ আবু হামযা সুক্কারির জীবনী দ্রষ্টব্য)