খুদে ট্রাফিক : আসুন, এ প্রজন্মকে রক্ষা করি!
একটি হাদীসে শিশু-স্বভাবের নির্মলতার বর্ণনা এভাবে এসেছে-
كُلّ مَوْلُودٍ يُولَدُ عَلَى الفِطْرَةِ، فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ، أَوْ يُنَصِّرَانِهِ، أَوْ يُمَجِّسَانِهِ ...
প্রত্যেক শিশু ফিতরাতের উপর অর্থাৎ ঈমান ও সত্য-ন্যায়ের যোগ্যতা নিয়েই জন্মগ্রহণ করে। এরপর তার বাবা-মা তাকে ইহুদী বানায় অথবা নাসরানী বানায় অথবা অগ্নিপূজারী বানায়। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৩৮৫
শিশুদের স্বভাবগত সরলতা ও নির্মলতা এবং তাদের নম্রতা ও কোমলতার কারণে মানুষমাত্রই শিশুর প্রতি সহানুভ‚তিশীল হয়ে থাকে। শিশুর প্রতি জুলুম-অবিচার না করার বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। ইসলামে তো এই বিষয়টি পূর্ণাঙ্গভাবে আছে। মা-বাবার মাঝে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটলেও যেন শিশু-সন্তানের অধিকার রক্ষা হয় এজন্য মায়ের উপর লালন-পালনের বিধান যেমন আছে তেমনি আছে বাবার উপর খোরপোষের বিধান। শিশুদের কষ্ট দেয়া যাবে না, তাদের জিহাদ ও যুদ্ধে নেয়া যাবে না, শত্রুপক্ষের শিশুকেও হত্যা করা যাবে না- এরকম আরো অনেক বিধানই ইসলামে আছে। বালেগ হওয়ার আগ পর্যন্ত শিশু নিষ্পাপ থাকে। অন্যায় অপরাধ করলেও তাকে বড়দের মতো শাস্তি দেয়া যায় না। শিশুদের মন-মানস হকের দিকে থাকে, অকৃত্রিম থাকে। কপটতা, কৃত্রিমতা, ছলচাতুরি, লৌকিকতা ইত্যাদি থেকে মুক্ত থাকে। এই যে স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য, এগুলো বড় হয়ে চারপাশের বিকৃত ও অবক্ষয়প্রাপ্ত পরিবেশ-পরিস্থিতির কলুষ দ্বারা সম্পূর্ণ কলুষিত হওয়ার আগ পর্যন্ত দেদীপ্যমান থাকে। বর্তমান অবক্ষয়প্রাপ্ত জীবনধারার মধ্যেও শিশু-কিশোর ও নওজওয়ানদের মধ্যে আমরা এর বিভিন্ন দৃষ্টান্ত দেখতে পাই।
শিশু-কিশোর চরিত্রের এই ব্যাপারগুলোই আগস্টের শুরু দিনগুলোতে আমরা ব্যাপকভাবে প্রত্যক্ষ করলাম। গোটা দেশ মুগ্ধ-বিস্ময়ে ব্যাপারটি লক্ষ্য করল। প্রথমে রাজধানী ঢাকায়, এরপর গোটা দেশে। শিশু-কিশোররা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করল সড়ক-মহাসড়ক এবং কীভাবে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল চলার পথের নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনা। তা শুধু দেশবাসীই নয়, বিশ্ববাসীও দেখল।
কী ঘটেছিল?
সবার জানাই আছে ঘটনার বিবরণ। শিশু-কিশোরেরা বেপরোয়া গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে ও বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করেছে। তাদের প্রধান দাবি ছিল, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’। এছাড়া তাদের হাতে ব্যাপকভাবে যে প্ল্যাকার্ড ছিল তাতে ছিল (We want justice) আমরা সুবিচার চাই। তারা ট্রাফিকের পুরো নিয়ম-কানুন জনগণকে মানানোর চেষ্টা করেছে। পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, তারা এতে সফলও হয়েছে। চালকের লাইসেন্স ও গাড়ির কাগজপত্র চেক করেছে। যাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র পায়নি তাদের গাড়িকে রাস্তার এক পাশে নিয়ে পুলিশ আংকেলদের মাধ্যমে মামলা দায়ের করিয়েছে। এদের হাত থেকে রেহাই পায়নি রাষ্ট্রের বয়োবৃদ্ধ সিনিয়র মন্ত্রী থেকে আরম্ভ করে উচ্চপদস্থ আমলা, আদালতের গাড়ি, এমনকি খোদ পুলিশের গাড়িও। যাদের কাছেই কাগজপত্র পাওয়া যায়নি তাদের বিরুদ্ধেই মামলা নিতে পুলিশকে বাধ্য করেছে। অভ্যাসবশত কোনো কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির গাড়ি উল্টোপথে আসার পর এই ছোট ছোট ছেলেদের প্রতিরোধের মুখে সোজা পথে ফেরত যেতে বাধ্য হয়েছে। তাদের বক্তব্য ছিল, আইন সবার জন্য সমান। এই বক্তব্য সংবলিত প্ল্যাকার্ডও তাদের হাতে শোভা পাচ্ছিল।
লক্ষণীয় বিষয় এই যে, হাজার হাজার শিক্ষার্থী পথে নামলেও তাদেরকে এই কয়দিন কোনো বেআইনী বা অনৈতিক দাবি করতে দেখা যায়নি। সম্ভবত বহু-বছর পর বাংলাদেশের সড়কগুলো ক’দিনের জন্য ঘুষ-বাণিজ্যমুক্ত ছিল।
আরো যা লক্ষণীয় ছিল তা হল, তারা কারো সাথে দুরাচরণ করেছে বা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে এমন কোনো অভিযোগ আসেনি; বরং কেউ নিয়মের বরখেলাফ করলে তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করেছে। সিটবেল্ট বাঁধার, ইন্ডিকেটর লাইট জ্বালানোর নিদের্শনা দিয়েছে। হেলমেট বিহীন মোটর সাইকেল চালক বা আরোহীকে হেলমেট পরার নির্দেশনা দিয়েছে।
প্রশ্ন হল, এই শিক্ষার্থীদেরকে কি তাদের বাড়ি বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কখনো সড়কের শৃঙ্খলা বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হয়েছিল? ট্রাফিকের আইন-কানুন সংক্রান্ত কোনো কর্মশালায় তারা যোগ দিয়েছিল? নিজেদের হাতে শক্তি থাকলে বা সংখ্যায় ভারী হলেও কারো উপর জুলুম-অত্যাচার করা যাবে না কিংবা অপরাধের চেয়ে বেশি শাস্তি দেয়া যাবে না- এরকম কোনো শিক্ষা কি তারা পেয়েছিল? সম্ভবত এর সবগুলোর উত্তরই না-বাচক। সমাজের বর্তমান ধারা থেকে এমন কোনো কিছুই তারা শেখেনি, তাদেরকে শেখানো হয়নি। তাহলে এই শিশু-কিশোরেরা সমাজের চলমান ধারার বিপরীতে এই কাজগুলো করে নিরপেক্ষ ভালো মানুষদের প্রশংসা কুড়াল কীভাবে? এর কারণ সেটিই, যা আমরা আগে বলেছি, সকল শিশুই স্বভাবজাত নির্মলতা ও ন্যায়প্রিয়তা নিয়েই জন্মগ্রহণ করে। প্রায় সকল ভালো ও সদ্গুণাবলি তার ভিতরে লুকায়িত থাকে। ভালো পরিবেশ, ভালো শিক্ষা পেলে এগুলো বিকশিত হয়। অন্যথায় মন্দ পরিবেশে তার ভিতরের ভালো গুণগুলো চাপা পড়ে যায়, একসময় নষ্ট হয়ে যায়। বড়দের কর্তব্য, শিশু-কিশোরদের সামনে ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করা, তাদের জন্য ভালো পরিবেশ নিশ্চিত করা। তাহলেই একটি ভালো সমাজের প্রত্যাশা করা যাবে। কিন্তু আমরা কি এই দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি?
আমাদের দেশের কথায় আসি। আমরা কি কেউ কখনো চিন্তা করেছি, আমাদের সড়কগুলোতে যানবাহন সুশৃঙ্খলভাবে চলবে? গণপরিবহনের অধিকাংশই যেখানে ফিটনেস বিহীন, বৈধ কাগজপত্র বিহীন সেখানে এই চিন্তার দাবিও তো হাস্যকর। টেম্পু, লেগুনা ও লোকাল বাসের চালকদের কাউকে কোথাও লাইসেন্স দেখাতে হবে- এটা হয়ত তারা কখনো চিন্তাও করেনি। (কারণ বাজারে এ কথা চালু আছে যে, এদের প্রত্যেককেই নির্ধারিত হারে বিভিন্ন জায়গায় মাশোহারা দিতে হয়। সে মাশোহারার পরিমাণ বেড়ে গেলে বাস লেগুনার ভাড়াও বেড়ে যায় তেলের দাম না বাড়া সত্তে¡ও।)
অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা, ঘুষ-উৎকোচই যেন সকলের গা-সওয়া হয়ে গিয়েছিল। এখনকার প্রৌঢ় ব্যক্তিরা, যারা একসময় সড়কের ভালো অবস্থা দেখেছেন তারাও হয়ত হতাশ হয়ে পড়েছিলেন যে, এই অবস্থা থেকে নিস্তার অসম্ভব! কিন্তু বিগত কয়েক দিনের ঘটনা সকলকেই কিছুটা হলেও নাড়া দিয়ে গেছে। ক্ষমতাসীন শ্রেণির ব্যক্তিরা এতদিন কোনো প্রকারের চ্যালেঞ্জের মুখে না পড়লেও এ ক’দিন তাদের পড়তে হয়েছে। তারাও যে নিয়ম ও জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নন এ বিষয়টি হয়ত তাদেরও মনে পড়েছে। আইন প্রয়োগকারী শ্রেণির লোকেরাও আইন প্রয়োগে বাধ্য হয়েছেন। কোনো কোনো জায়গায় তো পুলিশকে মামলা নিতে নিতে গলদঘর্ম হতে দেখা গেছে। কাগজ-টাগজ ফুরিয়ে যাওয়ার পর ছেলেরা অনেক লাইসেন্স বিহীন বা হেলমেট বিহীন লোককে মশ্ক করাতেও দেখা গেছে। এই নিন খাতা, এখানে দশবার লিখুন, ‘আমার লাইসেন্স নেই’, দশবার লিখুন ‘আমার হেলমেট নেই।’ স্কুলের ছেলেরা যেন বড়দেরকে তাদের স্কুলজীবনে ফেরত পাঠিয়েছে! কিন্তু অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার সুবিধাভোগীরা এই শাসন বরদাশত করবে কীভাবে? সব দিক থেকে অস্থির আওয়াজ উঠেছিল, শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরত যাক; তা তারা গেছেও। কিন্তু এইটুকু হয়েছে যে, হতাশ লোকদের মাঝে কিছুটা হলেও আশা জাগিয়ে গেছে এবং দাম্ভিক-অহংকারীদেরও অল্প-বিস্তর নাড়া দিয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরাতে আমরা এত ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলাম কেন? তাদের বাধা দেয়ার জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করা হল, প্রচার-প্রচারণা চালানো হল, উপর থেকে নীচ পর্যন্ত এত মিটিং, এত তোড়জোড় কেন হয়েছিল? ওরা তো সরকারের পদত্যাগ চায়নি। কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ও ছিল না, এরপরও উপরের মহলে এত মাথাব্যথা আরম্ভ হয়েছিল কেন? অনেকে মনে করছেন যে, আসলে যে অনিয়মগুলোকে আমরা নিয়মে পরিণত করেছিলাম তা সবার সামনে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছিল। এই একচ্ছত্র অরাজকতাও যে প্রতিরোধ হতে পারে এর দৃষ্টান্তও সকলের সামনে স্থাপিত হচ্ছিল।
শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মানা হয়েছে বলে তাদেরকে বাড়ী ফেরানো হয়েছে; তাহলে কি দেশের সড়ক এখন নিরাপদ? পত্রিকাগুলোর শিরোনাম বলছে ‘স্বরূপে ফিরেছে সড়ক’। তবে নতুন একটি ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত হয়েছে, যাতে চালকদের জন্য সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। অনেকেই সাজার পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন ওঠাচ্ছেন। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনার জন্য শুধুই কি চালকরা দায়ী? ফিটনেস বিহীন গাড়ী রাস্তায় নামানোসহ অন্যান্য কারণগুলো এখনো আড়ালে থেকে যাচ্ছে। আর সবচেয়ে বড় কথা হল নতুন আইন করার আগে কি একবারও ভাবা হয়েছে যে, বিদ্যমান আইন কার্যকর হয় কি না? যতটুকু আইন আছে তাও যদি কার্যকর হত তবুও সড়কের এত বেহাল দশা হত না। আইন থেকে কী লাভ যদি তা যথাযথভাবে প্রয়োগ না হয়। এজন্য প্রয়োজন বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের মধ্যে সততা প্রতিষ্ঠা। তেমনি গণমানুষের মধ্যেও আইন মেনে চলার মানসিকতা তৈরি করা অপরিহার্যভাবে দরকার। সেসব পথে না হেঁটে শত আইন করলেও কোনো কাজে আসবে না।
সম্প্রতি ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, দেশের ৯০% মানুষ ট্রাফিক আইন মানে না। তাঁর ৯০%-এর মধ্যে তিনি হয়ত প্রভাবশালী, ক্ষমতাবান ও আইনের সাথে জড়িতদেরও শামিল করেছেন। যদি এ তথ্য বাস্তবসম্মত হয় তাহলে নিরাপদ সড়কের জন্য কোন কাজটি সবার আগে প্রয়োজন। নিশ্চয়ই জাতিকে এমন শিক্ষা দেওয়া, যার মাধ্যমে তারা হয়ে উঠবে খোদাভীরু, সুশৃঙ্খল এবং আইন প্রয়োগকারীগণও আইন মানবেন ও দুর্নীতি থেকে দূরে থাকবেন। তা না হলে শুধু জিডিপি ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির দ্বারাই কি একটি জাতি উন্নত হয়ে যাবে?
প্রভাবশালী, ক্ষমতাবান ও সাধারণ জনগণ নির্বিশেষে আইন মেনে চলার প্রসঙ্গটি যখন এসেই গেল তখন আবার ফিরে যাই শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে। নিরাপদ সড়কের আন্দোলন করতে গিয়ে তারা যেসব প্ল্যাকার্ড বহন করেছে তার মধ্যে একটিতে লেখা ছিল ‘যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ’। এ রুখে দাঁড়ালে শুধু বাংলাদেশই হয় না বরং সাথে ইসলামও হয়ে যায়। ইসলামেও অন্যতম শিক্ষা হল সৎকাজে সহযোগিতা ও অসৎ কাজে অসহযোগিতা তথা রুখে দাঁড়ানো।
مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ، وَذَلِكَ أَضْعَفُ الْإِيمَانِ.
তোমাদের মধ্যে যে অন্যায় কিছু দেখবে সে যেন তা হাত দ্বারা পরিবর্তন করে। এর সামর্র্থ্য না থাকলে মুখে (প্রতিবাদ করবে)। এরও সামর্থ্য না থাকলে মনে (ঘৃণা করবে)। আর এটা হচ্ছে ঈমানের দুর্বলতম স্তর। -সহীহ মুসলীম, হাদীস ৪৯
প্রসিদ্ধ হাদীসটিতে এই শিক্ষাই উচ্চারিত হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এ শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যত জীবনে নিজেদের দৃঢ়তা ও সততা ধরে রাখতে পারবে তো? উচ্চশিক্ষা শেষে তারা যখন কর্মক্ষেত্রে যাবে তখন তাদের সিনিয়রদের অসৎ কর্মকাণ্ড এবং দুর্নীতি, বে-ইনসাফ ও অনিয়মে ভরা প্রচলিত ব্যবস্থা এদেরকে গ্রাস করে ফেলবে না তো? যদি আমরা চাই এমনটি না হোক তবে সবার আগে নজর দিতে হবে এসব দিকেই। কোমলমতি শিশু-কিশোর ও নবীনদের পিছনে ব্যাপক মেহনত করে তাদের মন-মানসকে পরিশুদ্ধ রাখার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে নিরলসভাবে।
এ উদ্দেশ্যে ওলামা, খুতাবা, আইম্মা ও ইসলামের দাঈদেরও সর্বাত্মক মেহনত প্রয়োজন। ব্যাপক প্রতিভাসম্পন্ন জাগ্রত শিক্ষার্থীগণ যেন কালের স্রোতে হারিয়ে না যায়, সেজন্য প্রয়োজন ব্যাপকভিত্তিক কর্ম পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন।
ছেলেরা আজকে ‘সুবিচার চাই’ বলে চিৎকার করে ঘরে ফিরে গেল, সুবিচার হয়ত পেল না; কিন্তু এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, এরা না পেলেও একটা সময় আসবে যখন সুবিচার করতে হবে, মজলুমের ফরিয়াদ শুনতে হবে। আর আখিরাতে তো সকলকেই দাঁড়াতে হবে আহকামুল হাকিমীনের আদালতে। ওই আদালতে কারো কোনো প্রভাব কাজে আসবে না। প্রত্যেকে তার বিন্দু পরিমাণ ভালো ও মন্দ দেখতে পাবে।
আমরা যারা সাধারণ মানুষ, তাদের জন্য এই ঘটনায় শিক্ষা আছে যে, নিরাশ হওয়া উচিত নয়। শিক্ষা-দীক্ষার সাথে জড়িত মানুষকে সমাজের অবক্ষয়-অধঃপতন নিঃসন্দেহে পীড়া দেয়; কিন্তু হতাশা নয়, পিছিয়ে যাওয়া নয়। প্রত্যেকের সাধ্য অনুসারে কাজ করে যেতে হবে। একসময় সফলতা আসবেই- ইনশাআল্লাহ।