একটি ভিত্তিহীন আমল
জুমাতুল বিদা ও তার বিশেষ নামায
জুমাতুল বিদা দ্বারা রমযানের শেষ জুমা বোঝানো হয়। কোনো কোনো মানুষের ধারণা, এর বিশেষ ফযীলত রয়েছে। তারা এ জুমাকে খুব গুরুত্ব দেয় এবং একে শরীয়ত-নির্দেশিত ফযীলতপূর্ণ দিবস-রজনীর অন্তর্ভুক্ত মনে করে। ফলে তারা এ জুমা আদায়ের জন্য পারতপক্ষে এলাকার সবচেয়ে বড় মসজিদে গমন করে। সাথে সাথে এ জুমায় মুসল্লির সমাগমও বেশি হয়। কিন্তু শরীয়তে জুমাতুল বিদা বলে আলাদা ফযীলতের কিছু নেই। এটি একটি নব আবিষ্কৃত পরিভাষা। এর কোনো বিশেষ ফযীলত কুরআন-হাদীসে পাওয়া যায় না। বরং এটি রমযানের অন্যান্য জুমার মতই ফযীলত রাখে; এর বাড়তি কোনো ফযীলত প্রমাণিত নয়।
তবে একথা ঠিক যে, জুমার দিন একটি ফযীলতপূর্ণ দিবস, সাথে সাথে রমযানের জুমার দিন হিসেবে তার গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। আর এ বছরে রমযানের জুমা এটিই শেষ- এ হিসেবে এর যে ফযীলত শরীয়তে আছে তা অর্জনে সচেষ্ট হওয়া উচিত। তাই বলে ‘হাজ্জাতুল বিদা’-এর সাথে মিল রেখে ‘জুমাতুল বিদা’ নামকরণ এবং এর বাড়তি ফযীলতের বিশ^াস রাখা- এর কোনো ভিত্তি নেই।
ঐ দিবস-রজনীকেই আমরা ফযীলতের দিবস-রজনী মনে করব, কুরআন-হাদীসে যার বিশেষ কোনো ফযীলত বর্ণিত হয়েছে।
সাথে সাথে কিছু কিছু মানুষের মাঝে রমযানের শেষ জুমাকেন্দ্রিক আরেকটি মনগড়া আমলেরও প্রচলন রয়েছে। আর তা হল, এদিন নাকি বিশেষ পদ্ধতিতে চার রাকাত নামায আদায় করলে তা সারা জীবনের কাযা নামাযের কাফফারা হবে। এ বর্ণনা ও আমল সবই জাল ও বাতিল।
শাওকানী রাহ. তাঁর জাল হাদীস বিষয়ক রচনা আলফাওয়াইদুল মাজমুআতে রমযানের শেষ জুমার নামায বিষয়ে আরেকটি জাল বর্ণনা উল্লেখ করেছেন-
এদিন যে ব্যক্তি সারা দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায (গুরুত্বের সাথে) আদায় করবে, এর দ্বারা তার সারা বছরের ছুটে যাওয়া নামাযের কাযা আদায় হয়ে যাবে। এটি উল্লেখ করার পর তিনি বলেন-
هَذَا مَوْضُوعٌ لا إِشْكَالَ فِيهِ.
প্রশ্নাতীতভাবে এটি একটি জাল বর্ণনা। -আলফাওয়াইদুল মাজমূআহ, বর্ণনা ১১৫