দুআর ভুবন
আমরা আল্লাহর বান্দা, আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। তাই সবসময় আমরা আল্লাহ্কে স্মরণ রাখব।
মানুষ দুর্বল। মানুষ প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহর মুখাপেক্ষী; আল্লাহর সাহায্য ছাড়া সে চলতে পারে না। তাই আমরা সর্বদা সকল কাজে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করব।
আল্লাহ আমাদের অনেক অনেক নিআমত দিয়েছেন; আমাদের সুন্দর চেহারা, হাত-পা, চলার শক্তি, কথা বলার শক্তি সবই আল্লাহ আমাদের দান করেছেন। তেমনি আমাদের দিয়েছেন নানা রকম ফলমূল- আম-জাম-কাঠাল-কলা-আঙুর- আপেল আরো কত শত ফলমূল! দিয়েছেন সবুজ-শ্যামল সুন্দর পৃথিবী। এ সকল নিআমতের জন্য আমরা সবসময় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করব।
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজের শুরুতে, মাঝে আবার কখনো শেষে দুআ পড়তেন। এসকল দুআর মাধ্যমে তিনি আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করতেন, তাঁর কাছে সাহায্য চাইতেন এবং তাঁর নিআমতের শুকরিয়া আদায় করতেন। নবীজীর শেখানো সেসকল দুআর মাধ্যমে তুমিও উঠতে-বসতে, চলতে-ফিরতে আল্লাহকে স্মরণ করতে পার, তাঁর সাহায্য চাইতে পার এবং নিআমতের শুকরিয়া আদায় করতে পার।
তুমিও যদি নবীজীর মত আল্লাহকে স্মরণ করতে চাও; আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে চাও তোমাকে নবীজীর শেখানো দুআ ও জিকিরগুলো শিখতে হবে, মুখস্থ করতে হবে এবং আমল করতে হবে।
আমি-তুমি-আমরা সবাই মুসলিম। মুসলিম প্রতিটি কাজে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নত মেনে চলে, তাঁর দেখানো পথে চলে, তাঁর শেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী আমল করে। তাই আমরা আল্লাহকে স্মরণ করব ও তাঁর শুকরিয়া আদায় করব নবীজীর শেখানো দুআর মাধ্যমে। নবীজীর শেখানো দুআকে বলে- মাসনূন দুআ।
তুমি যেন সহজে ও সুন্দরভাবে মাসনূন দুআ ও জিকিরগুলো শিখতে পার সেজন্যই আমাদের এ আয়োজন। মাসনূন দুআর ভুবনে তোমাকে স্বাগতম!
তুমি এখন পড়বে, শিখবে আর আমল করবে।
প্রতি মাসে বা সপ্তাহে যদি তুমি দু-একটি করে দুআ শিখতে থাক এবং আমল করতে থাক তাহলে কিছুদিন পর দেখবে- তুমি অনেক দুআ শিখে গেছ এবং অনেক দুআ তোমার আমলে এসে গেছে। তুমি আল্লাহর প্রিয় হয়ে গেছ। প্রিয় নবীর ‘প্রিয় উম্মত’ হয়ে গেছ।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাওফীক দান করুন- আমীন।
ঘুম থেকে জাগার পর দুআ
বন্ধুরা! ঘুম হচ্ছে ছোট মৃত্যু। দেখ না, ঘুমিয়ে গেলে মানুষ দুনিয়ার আর কিছু টের পায় না! যেন সে দুনিয়াতে নেই। তাই ঘুমকে বলে ছোট মৃত্যু। এই ছোট মৃত্যুর পর আল্লাহ তাআলা মানুষকে নতুন জীবন দান করেন। তাই ঘুম থেকে জাগার পর আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা আদায় করতে হয়। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও ঘুম থেকে জেগে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করতেন। হামদ-ছানা পাঠ করতেন। ঘুম থেকে জাগার পর দুআ পড়তেন। তাই চল আমরাও রাসূলের অনুসরণে ঘুম থেকে জাগার হওয়ার দুআ পড়ি।
ঘুম থেকে উঠে আমরা এই দুআ পড়ব-
اَلْحَمْدُ لِلهِ الّذِيْ أحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النّشُوْرُ.
অর্থ : সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে (ঘুম নামক) মৃত্যুর পর আবার (জাগিয়ে) জীবিত করলেন, আর আমাদেরকে তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩১২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৭১১
হাম্মামে (বাথরুমে) প্রবেশের দুআ
স্বভাবতই তুমি ঘুম থেকে উঠে হাম্মামে বা ‘বাথরুমে’ যাবে। হাম্মামে প্রবেশের সময় বাম পা আগে দিবে। কারণ বাম পা দিয়ে হাম্মামে ঢোকা নবীজীর সুন্নত। আর ঢোকার পূর্বে নবীজীর শেখানো এই দুআ পড়বে-
بِسْمِ اللهِ اَللّهُم إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الخُبُثِ وَالخَبَائِثِ.
অর্থ : বিসমিল্লাহ, হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট দুষ্ট পুরুষ জিন ও নারী জিনের (অনিষ্ট) থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। [সহীহ বুখারী, হাদীস ১৪২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৭৫ (বিসমিল্লাহ- মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস ৫; আদদুআ, তবারানী, হাদীস ৩৫৭; আলমুজামুল আওসাত, তবারানী, হাদীস ২৮০৩)]
হাম্মাম থেকে বের হওয়ার দুআ
প্রয়োজন শেষে হাম্মাম থেকে দ্রুত বের হয়ে যাওয়াই ভালো। বের হওয়ার সময় ডান পা আগে বের করবে। কারণ ডান পা আগে বের করা সুন্নত। আর বের হয়ে এই দুআ পড়বে-
غُفْرَانَكَ.
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার ক্ষমা প্রার্থনা করছি। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৭; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩০
আজ এতটুকুই। আগামীতে আবার দেখা হবে- ইনশাআল্লাহ।