সান্নিধ্যের স্মৃতি
ইবনে নসীব
আমার কৈশোরের একটি স্মৃতি এখনও মানসপটে উজ্জ্বল। তখন
হযরতজ্বী হযরত মাওলানা এনামুল হাসান রাহ. বা-হায়াত ছিলেন। সম্ভবত টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার
আগের বা পরের কোনো এক দিন ছিল। আব্বা আমাকে কাকরাইল মসজিদে নিয়ে গেলেন। আসরের পর চত্বরের মতো একটি জায়গায় অনেক মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন, যেন
কারো জন্য প্রতীক্ষা।
আমি আব্বার সাথে বসে ছিলাম। সামনে একটু উঁচু জায়গায় ফরশ বিছানো ছিল।
কিছুক্ষণ পর কয়েকজন মুরব্বী একজন অতি নূরানী চেহারার বৃদ্ধ মানুষকে অত্যন্ত সম্মানের সাথে ধরে ধরে এনে সেখানে বসিয়ে দিলেন। তিনি কোনো বয়ান করলেন না।
তাকিয়ায় হেলান দিয়ে যিকরে মশগুল রইলেন। আমি দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত তাঁর নূরানী চেহারার দিকে শুধু তাকিয়ে রইলাম। এক অনাবিল
প্রশান্তি অনুভূত হচ্ছিল। যেন চাঁদের জোসনা ঝরে ঝরে পড়ছে। আমি অনুচ্চস্বরে আব্বাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আব্বা! ইনি কে? আব্বাও যেন
তন্ময় হয়ে ছিলেন, খুব নীচু স্বরে বললেন, ইনি হযরতজ্বী মাওলানা এনামুল হাসান ছাহেব!
(আল্লাহ তাঁকে জান্নাতের বুলন্দ মাকাম দান করুন। আমীন।)
ওই সামান্য সময়টুকু আমার কিশোর-হৃদয়ে এমন
অসামান্য প্রভাব ফেলেছিল যে, প্রায় দেড় দশক পরও তা স্মৃতির পাতায় ঝলমল করছে।
এরপর শুধু আল্লাহ তাআলার ফয্ল ও করমে আরো যে ক’জন বুযুর্গকে দেখার কিংবা তাঁদের
সান্নিধ্যে বসার সৌভাগ্য হয়েছে তাঁদের ব্যাপারেও একই ধরনের অনুভূতি হয়েছে। তাঁদের সবাই যে হযরতজ্বী এনামুল হাসান রাহ.-এর
মতো জামাল ও সৌন্দর্যের অধিকারী ছিলেন তা নয়, কিন্তু কোথায় যেন একটি মিল ছিল! সবাই
যেন একই আকাশের তারা কিংবা একই বাগানের ফুল! কীভাবে এমন হয়? মাটির মানুষ কীভাবে ছড়ায় সিতারার রৌশনী ও
গোলাবের খোশবু ?