একটি বাড়াবাড়ি : জামাত চলাকালীন কারো ফোন এলে ফোনদাতাকে বেনামাযী বলে গালি দেওয়া
মোবাইলের রিংটোনের ক্ষেত্রে সতর্কতা কাম্য। গান বা এমন রিংটোন ব্যবহার না করা চাই, যা শরীয়তে নিষিদ্ধ এবং যা মসজিদের মত স্থানে বেজে উঠলে সকলকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। সাথে সাথে জামাতের সময় মসজিদে ফোন বন্ধ বা সাইলেন্ট করার বিষয়েও সতর্ক থাকা চাই।
তবে কখনো এমন হয় যে, বেখেয়ালে কারো মোবাইলটা বন্ধ করতে মনে নেই। নামাযের মধ্যে কীভাবে মোবাইলের আওয়াজ বন্ধ করবে বেচারা সে মাসআলাও জানে না; তার ধারণা, নামাযের মধ্যে মোবাইল বন্ধ করতে গেলে তার নামাযই ভেঙে যাবে। এখন নামাযের মধ্যে তার মোবাইল বেজে উঠল। সে বন্ধ করল না। সকলের নামাযে বিঘ্ন ঘটল। নামায শেষে কিছু মানুষ জোরে জোরে চিৎকার করে নিজেদের বিরক্তি প্রকাশ করল। তার মোবাইলের রিংটোনের কারণে মুসল্লীদের নামাযে যতটুকু না বিঘœ ঘটেছিল তাদের হট্টগোলে মাসবুক মুসল্লীদের নামাযে আরো বেশি বিঘ্ন ঘটল। এরকম সময় দেখা যায়, কোনো মুসল্লি বলছে- কোন্ বেনামাযী রে, নামাযের সময় ফোন্ করে!
অনেক সময়ই এমন কথা মানুষ বলে ফেলে। অথচ বাস্তবতা হয়ত এর উল্টো। ফোনদাতা ব্যক্তি এইমাত্র নামায শেষ করেই ফোন করেছে। তার মসজিদে ৪টায় আছর আর এই মসজিদে আছরের জামাত ৪ : ১৫। এখান থেকেই বিপত্তিটা ঘটেছে। সে ভেবেছে, যার কাছে সে ফোন করছে, তার ওখানেও জামাত শেষ। যদিও ফোন করার আগে সময় ও পরিস্থিতির বিবেচনা একটি জরুরি বিষয়। যেহেতু এলাকা বা মসজিদ ভেদে জামাতের সময় ১৫ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত কমবেশি হয়ে যায়, তাই এ ধরনের সময়ে ফোন করার আগে বিষয়টি বিবেচনায় রাখা চাই। তাহলে এরকম বিপত্তি ঘটে না।
এ গেল এক দিক। আরেক দিক হচ্ছে, বেনামাযী হলেই কি কাউকে বেনামাযী বলে গালি দেওয়া যায়? ইসলামে কি এর অনুমতি আছে? এ বিষয়টিও ভালোভাবে বুঝে নেওয়া চাই।
আর মসজিদে কারো কোনো ভুল হয়ে গেলে আদবের সাথে তার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। হট্টগোল করা মোটেও উচিত নয়। তার রিংটোনের কারণে মুসল্লিগণ যতুটুকু না বিরক্ত হবে, আমার আওয়াজের কারণে আরো বেশি বিরক্ত হবে। আর হতে পারে আমার অশোভন আচরণের কারণে ঐ ব্যক্তি আর মসজিদেই আসবে না। নবীজী তো মসজিদে পেশাবকারীকেও ধমক দেননি, এমনকি পেশাবেও বাধা দেননি। আমরা তো তাঁরই উম্মত। তাঁর শেখানো পন্থাই তো আমাদের পন্থা।