একটি মনগড়া রসম : কাফনের উপর ইয়াসীন, কালিমা ও মুনকার নাকীরের প্রশ্নের উত্তর লিখে দেওয়া
কোনো কোনো এলাকায় এই প্রচলন রয়েছে- মায়্যেতের কাফনের উপর সূরা ইয়াসীন, কালিমা ও মুনকার নাকীরের প্রশ্নের উত্তর লিখে দেওয়া হয়। এটি সম্পূর্ণ মনগড়া রসম ও বিদআত।
মৃতের শরীরে বা কাফনে কুরআনের অয়াত, কালিমা, সুওয়াল-জওয়াব ইত্যাদি লেখার কথা কুরআন-হাদীসের কোথাও নেই। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবা-তাবেয়ীন কোনো যুগেই এমন কিছুর প্রচলন ছিল না। এর দ্বারা মৃতের কোনো উপকার হয় না। সুতরাং এ মনগড়া রসম ও বিদআত অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
তাছাড়া কাফনে ইয়াসীন, কালিমা ইত্যাদি লেখা হলে লাশ যখন গলে যাবে তখন কাফনের লেখা নাপাক-মিশ্রিত হয়ে যাবে এবং এগুলোর অসম্মানী হবে। সুতরাং এটি করা যাবে না।
আর মনে রাখা চাই, কবরের সুওয়াল-জওয়াব কাফনে লেখা বা মুখস্থ করার বিষয় নয়। এটি আমলের বিষয়; দ্বীন অনুযায়ী চলার মাধ্যমে, আল্লাহর হুকুম যথাযথ পালনের মাধ্যমে, রাসূলের সুন্নত অনুযায়ী জীবন গঠনের মাধ্যমে কবরের জবাবের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়। কবরের আযাব থেকে বাঁচার ও আখেরাতে নাজাত পাওয়ার জন্য যা করা দরকার তা না করে এসকল অর্থহীন রসম-রেওয়াজের পিছে পড়া আর মনে করা, আল্লাহ এর মাধ্যমে নাজাত দিবেন- মূর্খতা বৈ কিছুই নয়, যা দ্বীন সম্বন্ধে অজ্ঞতার ফল। হাদীস শরীফে এসেছে-
الكَيِّسُ مَنْ دَانَ نَفْسَهُ وَعَمِلَ لِمَا بَعْدَ الْمَوْتِ، وَالعَاجِزُ مَنْ أَتْبَعَ نَفْسَهُ هَوَاهَا وَتَمَنَّى عَلَى اللَّهِ .
বিচক্ষণ ঐ ব্যক্তি যে নিজের হিসাব নেয় এবং মৃত্যুর পরের জন্য আমল করে। পক্ষান্তরে অক্ষম ঐ ব্যক্তি যে নিজেকে প্রবৃত্তির অনুসারী করে আর আল্লাহ তাআলা সম্পর্কে অলীক আশা পোষণ করে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৪৫৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৪২৬০