খবর গ্রহণ ও বিশ্বাস
আমরা একে অপরের কাছ থেকে নানা খবর শুনি ও বিশ্বাস করি। এ ক্ষেত্রে সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতা জরুরি। গুরুত্বপূর্ণ খবর বিচক্ষণতার সাথে যাচাই-বাছাই করে গ্রহণ করতে হবে। তাহলে সত্য ও সঠিক খবর সংগৃহীত হবে। যাচাই-বাছাই ছাড়া খবর গ্রহণ করলে মিথ্যা ও ভুল খবর সংগৃহীত হওয়ার আশংকা থাকে, যা বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা বিস্তার করে, শত্রুতা ও বিবাদের সূত্রপাত করে এবং দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করে।
আজ সমাজে যে বহু রকমের অশান্তি ও সহিংসতা লক্ষণীয় তার একটা বড় কারণ হল, খবরগ্রহণে সতর্কতা ও যাচাই-বাছাইয়ের অভাব। যেকোনো খবর ‘ওহী’র মত বিশ্বাস করে ফেলা হয়। হাওয়ায় ভেসে আসা কথাও চোখ বুজে গ্রহণ করে নেওয়া হয় এবং এর ভিত্তিতে পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা সাজিয়ে তা বাস্তবায়ন করে ফেলা হয়। আর যার সম্পর্কে খবর দেওয়া হয় তার সাথে বিরোধ থাকলে তো যাচাইয়ের প্রশ্নই আসে না। বরং নিজ থেকে বাড়িয়ে ফুলানো-ফাঁপানো হয়।
ইসলাম এধরনের দায়িত্বহীনতা পরিহার করে সতর্ক ও দায়িত্বশীল হওয়ার এবং সত্য-মিথ্যা যাচাই করে খবর গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে। এ আপন-পর, শত্রুমিত্র, নির্বিশেষে সকলের ক্ষেত্রে অনুসরণীয়। যে খবর অন্যের ব্যাপারে এবং যা দ্বারা কারো ক্ষতি হওয়ার আশংকা থাকে তা বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত।
পবিত্র কুরআনের ইরশাদ,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَنْ تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَى مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ .
হে মুমিনগণ! কোনো ফাসেক যদি তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তবে ভালোভাবে যাচাই করে দেখবে, যাতে তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতি করে না বস। ফলে নিজেদের কৃতকর্মের কারণে তোমাদেরকে অনুতপ্ত হতে হয়। Ñসূরা হুজুরাত (৪৯) : ৬
এখানে ফাসেকের খবর ভালোভাবে যাচাই করতে বলা হয়েছে। কারণ সে অসত্য খবরও দিতে পারে। তা যাচাই না করা হলে মিথ্যা খবরের ফাঁদে পড়ে কারো ক্ষতি করা হয়ে যেতে পারে। ফলে কৃতকর্মের জন্য নিজেকেই অনুতপ্ত হতে হবে।
লক্ষণীয় যে, কৃতকর্মের জন্য অনুতাপ কেবল তখনই হয় যদি তা অসতর্কতায় হয়। কিন্তু যেখানে খবর হচ্ছে ছুতামাত্র সেখানে তো আর অনুতাপের কিছু নেই। সেখানে তো উদ্দেশ্যই হল যেকোনো উপায়ে অপরের ক্ষতিসাধন।
ইচ্ছাকৃতভাবে কারো ক্ষতি করা তো কল্পনাও করা যায় না। হাঁ, অনিচ্ছায় ও অসতর্কতায় তা হতে পারে। সেজন্য সতর্কতা ও যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
***
খবর যাচাইয়ের ক্ষেত্রে প্রথম কথাই হল, খবরদাতা কে, তার পরিচয় কি, কোন সূত্র থেকে খবর দিয়েছেন, বর্ণনার ক্ষেত্রে তিনি কতটুকু বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্যÑ এ বিষয়গুলো দেখা। সামগ্রিকভাবে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য হলে সাধারণ অবস্থায় তার খবর গ্রহণ করতে অসুবিধা নেই। আর গুজব, উড়ো কথা, অজ্ঞাত-অপরিচিত, ফাসেক ও মিথ্যুকের খবর চিন্তাভাবনা ছাড়া বিশ্বাস করা জায়েয নয়।
কখনো খবরের ধরন, যার সম্পর্কে খবর দেওয়া হয় তার অবস্থা ইত্যাদি কারণে খবরের সত্যতা সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্য খবরদাতার বিশ্বস্ততা ও নির্ভরযোগ্যতা ছাড়াও আরো কিছু বিষয় দেখতে হয়। প্রয়োজনে একাধিক সূত্র থেকে খবর নিতে হবে। ক্ষেত্রবিশেষে যার সম্পর্কে খবর দেওয়া হয় সরাসরি তাকে জিজ্ঞাসা করতে হবে।
একজন সাধারণ মানুষ সম্পর্কে খবর আর বিশেষ কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে খবর এক পর্যায়ের নয়। তেমনি মামুলি কোনো বিষয়ের খবর আর স্পর্শকাতর কোনো বিষয়ের খবর এক রকম নয়। প্রতিটি খবরের অবস্থা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করে সে অনুযায়ী সতর্কতা অবলম্বন করা সমীচীন।
এ ক্ষেত্রে উমর রা.-এর ঘটনাটি এক উত্তম পাথেয়। তিনি এবং তাঁর এক আনসারী সঙ্গী পালাক্রমে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যেতেন। যেদিন যার পালা আসত সেদিনকার যাবতীয় খবর তিনি অপরজনকে পৌঁছাতেন।
উমর রা. বলেন, একদিন ঐ সাথী তার পালার দিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেল। রাতে ফিরে এসে আমার দরজায় খুব জোরে করাঘাত করল। আমি ঘাবড়ে বের হলে সে বলল, বিরাট ব্যাপার ঘটে গেছে। জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে? গাসসান এসে গেছে? (সেসময় মদীনায় গাসসান কর্তৃক হামলার আশংকা ছিল) বলল, না, এর চেয়েও ভয়াবহ ব্যাপার। ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দিয়েছেন’।
উমর রা. বললেন, ‘তাহলে তো হাফসা ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হল। আমি ধারণা করছিলাম অচিরেই এমন কিছু একটা ঘটতে পারে’।
এরপর তিনি মেয়ের কাছে গিয়ে দেখলেন, তিনি কাঁদছেন। বললেন, ‘কাঁদছ কেন? আমি কি তোমাকে সতর্ক করিনি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তোমাদেরকে তালাক দিয়েছেন? বললেন, ‘আমি জানি না, তিনি ঐ কোঠায় আছেন’।
এরপর উমর রা. মিম্বরের কাছে গিয়ে দেখলেন, সেখানে এক জামাত সাহাবী উপস্থিত এবং কেউ কেউ কাঁদছেন। তিনি তাঁদের সঙ্গে কিছুক্ষণ বসলেন। কিন্তু উদ্বেগের কারণে স্থির থাকতে পারছিলেন না। পরপর তিনবার খাদেমের কাছে গিয়ে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে তাঁর জন্য অনুমিত নিতে বললেন। খাদেম গিয়ে অনুমতি চাইলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব থাকেন। তৃতীয়বার যখন উমর রা. ফিরে যাচ্ছিলেন তখন খাদেম তাঁকে ডেকে বললেন, আপনার অনুমতি মঞ্জুর হয়েছে। তিনি সালাম দিয়ে দাঁড়িয়েই জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনার স্ত্রীদেরকে কি তালাক দিয়েছেন? বললেন, না’। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ২৪৬৮
আসলে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি কারণে একমাস স্ত্রীদের কাছে না যাওয়ার কসম করেছিলেন এবং সেসময় তাঁর পা মচকে গিয়েছিল। তাই তিনি একটি কোঠায় অবস্থান করছিলেন। একেই কেউ কেউ তালাক মনে করে প্রচার করেছেন। উমর রা. এই খবরে উদ্বিগ্ন হলেও প্রচার করেননি। অথচ খবরদাতা ছিলেন তাঁর বিশ্বস্ত সাথী এবং মিম্বরের কাছে গিয়ে তিনি কতক সাহাবীকে কাঁদতেও দেখেছেন। উপরন্তু স্বয়ং নবীজীকেও উদ্বিগ্ন দেখা গেছে। কারণ খবরটি ছিল খুবই করুণ ও বিরল। এ কারণে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।
আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, অধীনস্থ-সহকর্মীর পক্ষ থেকে অনাকাক্সিক্ষত কোনো খবর পৌঁছলেও সরাসরি তাকে জিজ্ঞাসা করা উত্তম। যেমন আপনার কোনো বন্ধু সম্পর্কে কেউ খবর দিল যে, অমুক আপনার সমালোচনা করেছে। শুধু এই খবরের ভিত্তিতে তার সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব পোষণ করা ঠিক হবে না। বরং বন্ধুত্বের দাবি হল, বিষয়টি সরাসরি তাকে জিজ্ঞাসা করা।
এ ব্যাপারে ইমাম শাফেয়ী রাহ.-এর একটি চমৎকার অসিয়ত আছে। যা তিনি তাঁর প্রিয় শাগরেদ ইউনুস ইবনে আবদুল আলাকে করেছিলেন।
ইউনুস ইবনে আবদুল আলা বলেন, একদিন ইমাম শাফেয়ী রাহ. আমাকে বললেন, হে ইউনুস! তোমার কোনো বন্ধুর পক্ষ থেকে অপ্রীতিকর কোনো খবর পৌঁছলে শত্রুতা পোষণ ও বন্ধুত্ব ছিন্নকরণে ত্বরা করবে না। অন্যথায় তুমি নিশ্চিত বিষয়কে সন্দেহের দ্বারা বাতিল করে ফেলতে পার। বরং তুমি এটা (মাথা থেকে) ফেলে দিয়ে তাকে বলবে, তোমার পক্ষ থেকে আমার কাছে এরূপ এরূপ পৌঁছেছে। এ ক্ষেত্রে খবরদাতার নাম উল্লেখ করবে না। সে তা অস্বীকার করলে বলবে, তুমিই সবচেয়ে সত্যবাদী। এর চেয়ে বেশি কিছু বলবে না।
আর যদি স্বীকার করে এবং তার কোনো ওযর দেখো, তবে তাকে মাযূর মনে করবে। আর কোনো ওযর না পেলে জিজ্ঞেস করবে, ঐ কথা দ্বারা তোমার কী উদ্দেশ্য? কোনো ওযর উল্লেখ করলে কবুল করবে। আর যদি কোনো ওযর উল্লেখ না করে এবং তা মেনে নিতে তোমার মন সম্মত না হয়, তাহলে একে তার একটি অন্যায় ধরে নিবে। এ ক্ষেত্রে তুমি স্বাধীনÑ ইচ্ছে করলে অনুরূপ বদলা নিতে পার আর ইচ্ছে করলে মাফ করে দিতে পার। তবে মাফ করে দেওয়াই তাকওয়ার বেশি নিকটবর্তী।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَجَزَاءُ سَيِّئَةٍ سَيِّئَةٌ مِثْلُهَا فَمَنْ عَفَا وَأَصْلَحَ فَأَجْرُهُ عَلَى اللهِ.
(মন্দের বদলা অনুরূপ মন্দ। তবে যে ক্ষমা করে দেয় ও সংশোধনের চেষ্টা করে, তার সওয়াব আল্লাহর যিম্মায়। Ñসূরা শুরা (৪২) : ৪০
আর তোমার মন বেশি বদলা নিতে চাইলে তার বিগত সদাচরণ স্মরণ করবে। এই অন্যায়ের কারণে অন্যান্য সদাচরণগুলো খাটো করবে না। কারণ এটাও যুলুম।
নেককার ব্যক্তি বলতেন, আল্লাহ ঐ ব্যক্তির প্রতি রহম করুন যে আমার অন্যায় আচরণের অনুরূপ বদলা নিয়েছে এবং আমার কোনো হক ছোট করে দেখেনি ।
হে ইউনুস! তোমার কোনো বন্ধু থাকলে তাকে ধরে রাখবে। কেননা বন্ধু বানানো কঠিন কিন্তু বিচ্ছেদ সহজ।
নেককার ব্যক্তি বন্ধু বিচ্ছেদের সহজতাকে ঐ শিশুর সাথে তুলনা করতেন যে কুয়ায় বিশাল পাথর নিক্ষেপ করে। এ নিক্ষেপ করা তো সহজ কিন্তু তুলে আনা বড়দের পক্ষেও কঠিন। এ তোমার প্রতি আমার অসিয়ত। (হিলইয়াতুল আওলিয়া ৯/১২৯-১৩০)
প্রতিপক্ষের ব্যাপারে অভিযোগের কোনো খবর শোনার ক্ষেত্রেও এই নীতি অনুসরণ করা শ্রেয়। প্রতিপক্ষরা একে অপরের ব্যাপারে সত্য-অসত্য নানা কথা বলেÑ এটা ঠিক। তবে এটাও সত্য যে, কখনো তাদেরকে উত্তেজিত করার জন্য অসত্য খবর প্রচার করা হয়। তাই প্রতিপক্ষ সম্পর্কে অপ্রীতিকর কোনো খবর পৌঁছলে উত্তেজিত না হয়ে বিষয়টি যাচাই করা এবং সরাসরি তাকেই জিজ্ঞাসা করা উচিত।
এ সম্পর্কে একটি ঘটনা উদ্ধৃত করা যায়। একবার একটি যুদ্ধ শেষে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েক দিন সেখানে অবস্থান করেন। সেসময় এক আনসারী ও এক মুহাজির সাহাবীর মধ্যে পানি নিয়ে বিবাদ দেখা দেয় এবং মুহাজির সাহাবী আনসারী সাহাবীকে আঘাত করেন। তখন আনসারী সাহাবী তাঁর সাহায্যের জন্য আনসারদের এবং মুহাজির সাহাবী মুহাজিরদের ডাকেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনে উভয় পক্ষকে তিরস্কার করে বললেন, ‘জাহিলিয়াতের ডাক কেন?’ তাঁরা বললেন, এক মুহাজির এক আনসারীকে আঘাত করেছে। তিনি বললেন, ‘এসব পুঁতিগন্ধময় ডাক বর্জন করো’।
এ দিকে মুনাফিক-নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবাই এটাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করল। সে আনসার সাহাবীদের উত্তেজিত করার জন্য বলল, ‘আচ্ছা, মুহাজিররা এটা করেছে? তোমরা এদের জন্য ব্যয় করো না, যতক্ষণ না তারা নিজেরাই সরে পড়ে। আমরা মদীনায় ফিরে গেলে যারা মর্যাদাবান তারা হীনদেরকে সেখান থেকে বের করে দেবে’।
যায়দ ইবনে আরকাম রা. তা শুনে তাঁর চাচাকে বললেন। তিনি নবীজীর কাছে ব্যক্ত করলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়দ রা.-কে ডেকে পাঠালে তিনি আবদুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের কথা বর্ণনা করেন।
তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুল্লাহ ইবনে উবাই ও তার সঙ্গীদেরকে ডেকে পাঠালেন। তারা সকলেই কসম করে বলল, তারা এ কথা বলেনি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়দ রা.-কে মিথ্যাবাদী আর তাদেরকে সত্যবাদী সাব্যস্ত করলেন।
যায়দ রা. বলেন, এতে আমি এমন দুঃখ পেলাম যা আর কখনো পাইনি। আমি ঘরে বসে রইলাম। চাচা এসে বললেন, তুমি কেন এমন কাজ করতে গেলে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করলেন এবং তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন? এ পরিপ্রেক্ষিতে সূরা মুনাফিকূন নাযিল হয়। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ডেকে তা শুনালেন এবং বললেন, আল্লাহ তোমাকে সত্যবাদী ঘোষণা করেছেন। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ৪৯০০, ৪৯০৫
সকল সাহাবী সত্যবাদী। সততা ও আল্লাহভীতি ছিল তাঁদের স্বভাবজাত। আর মুনাফিকদের অবস্থা ছিল সম্পূর্ণ উল্টো। নিফাকের ভিত্তিই হচ্ছে মিথ্যার উপর। ইতিপূর্বে তাদের মিথ্যাচারিতা বহুবার প্রমাণিত হয়েছে এবং রাসূল ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা কথাবার্তা তারা বলেছে। তাই বলে তাদের সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো একটি খবর যাচাই করতে হবে নাÑ তা নয়।
আর কোনো খবর যাচাই করার একমাত্র অর্থ এই নয় যে, খবরদাতার সততায় সন্দেহ করা হচ্ছে। বরং তার তো ভুলও হতে পারে। মানুষ ভুলের ঊর্ধেŸ নয়। যায়দ ইবনে আরকাম রা. ভুল শুনতে বা ভুল বুঝতে পারেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডেকে তাঁর কাছ থেকে শুনলেন। তিনি একই কথা বললে এবার যাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, ডেকে তাদেরকেই জিজ্ঞাসা করলেন। এসব কিছুর কারণ হল, খবরটি ছিল গুরুতর। তদুপরি প্রতিপক্ষ সম্পর্কে।