জুনায়েদ জামশেদ
গত ৭ ডিসেম্বর পি আই এ ফ্লাইট দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করেন এ সময়ের বিখ্যাত ‘না‘তখাঁ’ জুনায়েদ জামশেদ রাহিমাহুল্লাহু তাআলা ওয়াগাফারা লাহু। একটি দ্বীনী দাওয়াতের কাজ শেষে তিনি ঐ বিমানে চিত্রাল থেকে ইসলামাবাদে ফিরছিলেন। বিমানটিতে তাঁর স্ত্রীও ছিলেন। জাহাজটির ৪৭ যাত্রীর কেউই বেঁচে থাকেনি। আল্লাহ তাআলা তাদের সকলকে জান্নাত নসীব করুন এবং তাদের উত্তরসূরীদের সবদিক থেকে উত্তম রক্ষণাবেক্ষণ করুন। আমীন!
তাঁর মৃত্যুতে বিশ্বব্যাপী লক্ষ-কোটি মুসলিমের হৃদয় শোকার্ত হয়েছে এবং চোখ থেকে অশ্রু ঝরেছে। পাকিস্তানের কে. কে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত তাঁর জানাযায় হয়েছিল লাখো মানুষের সমাবেশ। সামরিক-বেসামরিক পদস্থ কর্মকর্তাগণসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় আলেম ও দাঈগণ। শেষে তার অসীয়ত অনুসারে তাকে দাফন করা হয় পাকিস্তানের বিখ্যাত দ্বীনী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলূম করাচির কবরস্থানে।
কিন্তু কে এই জুনায়েদ জামশেদ? প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন একজন পপ-তারকা। তাঁর মিউজিক-ইন্ডাষ্ট্রি Vitalsings -এর গান আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। তার অ্যালবাম পাকিস্তানের সঙ্গীত চ্যানেলচার্টে শীর্ষস্থানে। ২০০২-এর পর তার মধ্যে পরিবর্তন আসে এবং মিউজিক-এর প্রতিষ্ঠিত জগৎ ছেড়ে তিনি চলে আসেন ইসলামী ভুবনে। সম্পূর্ণ ইসলামী বেশভূষা অবলম্বন করেন এবং উলামা-সুলাহার সাহচর্য গ্রহণ করেন। হামদ-নাত ও ইসলামী নাশীদের ভুবনেও তিনি ব্যাপক সমাদৃত হন। লাভ করেন কোটি মুসলিমের হৃদয়-নিংড়ানো ভালবাসা। তাঁর দরদী কণ্ঠের ‘মুহাম্মাদ কা রাওযা কারীব আ রাহা হ্যায়’ কত আশেকে রাসূলকে আকুল করেছে! তাঁর কণ্ঠের ‘ইলাহী তেরে চৌখট পর’ কত খোদাপ্রেমিকের অশ্রু ঝরিয়েছে! মৃত্যুর পর অসংখ্য মুসলিমের যে অশ্রুভেজা হৃদয়-ভাঙ্গা দুআ তিনি পেয়েছেন তা তো খুব স্বল্প-সংখ্যক মানুষের ভাগ্যেই জোটে।
আমি এখানে শুধু দুটো কথা বলতে চাই। প্রথম কথা হচ্ছে, জুনায়েদ জামশেদ রাহ. একটি দৃষ্টান্ত। মিউজিক, শোবিজ ও এ ধরনের অঙ্গনে জড়িত হয়ে যারা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ে গিয়েছেন তাদের জন্য তিনি একটি দৃষ্টান্ত। যে সকল অঙ্গনের লোকজনের ব্যাপারে সাধারণত প্রত্যাবর্তনের চিন্তা করা হয় না, গায়ক, নায়ক, গীতিকার, নাট্যকার, গল্পকার, কবি, উপন্যাসিক যাই হোন না কেন আল্লাহর রহমত তাদের জন্যও উন্মুক্ত, যদি তারা তা গ্রহণ করতে চান।
পাকিস্তানের জিও টিভির পক্ষ হতে জুনায়েদ জামশেদের একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছিল। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, মিউজিকের ঝলমলে জীবন ছেড়ে এসে বর্তমান লম্বা কোর্তা ও উঁচু পায়জামার দরবেশী জীবনে আপনার কেমন লাগছে? তাঁর জবাব ছিল, ‘আমি আমার লাইফস্টাইল চেঞ্জ করেছি। আমি এতে যে সুকুন ও শান্তি পেয়েছি তা অতীত জীবনে পাইনি।’
সুতরাং ভীরুতা ও হতাশা নয়। ইসলামী লাইফস্টাইল যদি আপনাকে শান্তি দান করে তাহলে কেন নয়? কেন আবিল আবর্তে আটকে থাকা? কুরআন বলছে-
قُلْ یٰعِبَادِیَ الَّذِیْنَ اَسْرَفُوْا عَلٰۤی اَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ اِنَّ اللهَ یَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِیْعًا اِنَّهٗ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ وَ اَنِیْبُوْۤا اِلٰی رَبِّكُمْ وَ اَسْلِمُوْا لَهٗ مِنْ قَبْلِ اَنْ یَّاْتِیَكُمُ الْعَذَابُ ثُمَّ لَا تُنْصَرُوْنَ .
বল, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না; আল্লাহ সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দিবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমুখী হও এবং তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ কর তোমাদের ওপর শাস্তি আসার আগে; এরপর আর তোমাদের সাহায্য করা হবে না। -সূরা যুমার (৩৯) : ৫৩-৫৪
এই আয়াত সম্পর্কে সহীহ বুখারীতে আছে, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, মুশরিকদের মধ্যে কিছু লোক ছিল, যারা বহু মানুষকে হত্যা করেছিল, বহু নারীর সাথে ব্যভিচার করেছিল, এরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, আপনার বাণী ও আহ্বান অতি উত্তম, যদি আমাদের জানাতেন যে, আমাদের কৃতকর্মেরও প্রায়শ্চিত্ত রয়েছে। তখন এই আয়াত নাযিল হয়। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৮১০
কাজেই যে অঙ্গনেই আপনি থাকুন প্রত্যাবর্তনের পথ আপনার জন্যও খোলা।
এরপর আপনি যদি হোন বিশেষ প্রতিভা ও নানা মানবীয় গুণ ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী, যা বর্তমান ভুবনে আপনাকে দান করেছে বিশেষ অবস্থান, তাহলে এই প্রতিভা ও গুণাবলি ইসলামী ভুবনেও আপনাকে নিয়ে যেতে পারে বিশেষ মর্যাদার অবস্থানে। মনে পড়ছে সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের একটি বিখ্যাত হাদীস; সাহাবীগণ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহর রাসূল! মানুষের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত কে? তিনি বললেন, যে বেশি তাকওয়ার অধিকারী। সাহাবীগণ আরজ করলেন, আমরা এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করছি না। তখন তিনি বললেন, তাহলে সবচেয়ে সম্মানিত হচ্ছেন ইউসুফ আলাইহিস সালাম, যিনি নিজেও ছিলেন আল্লাহর নবী, যাঁর বাবাও আল্লাহর নবী, যার দাদাও আল্লাহর নবী এবং যাঁর পরদাদা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম হলেন আল্লাহর খলীল।
সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, এটিও আমাদের জিজ্ঞাসা নয়। তিনি তখন বললেন, তবে কি আরবের বিভিন্ন গোত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছ, তাহলে শোন,
خِيَارُهُمْ فِي الجَاهِلِيَّةِ خِيَارُهُمْ فِي الإِسْلاَمِ، إِذَا فَقُهُوا.
জাহেলী যুগে যারা ছিল শ্রেষ্ঠ তারা ইসলামেও শ্রেষ্ঠ, যদি ফিক্হ অর্জন করে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৩৫৩
তো প্রতিভা ও সদগুণ, যার দ্বারা কারো শ্রেষ্ঠত্ব সাব্যস্ত হয়, ইসলামে তার অবমূল্যায়ন ঘটে না। ইসলামে এর মূল্য আছে, মর্যাদা আছে। মেধা-মনন, প্রতিভা, ভদ্রতা, উদারতা, পরোপকার এইসকল গুণ ইসলামে সমাদৃত। বরং বলুন, এই সকল গুণের প্রকৃত সমঝদার ও গুণগ্রাহী হচ্ছে ইসলাম। তো এই সকল গুণের কারণে যারা ইসলাম-পূর্ব যুগে শ্রেষ্ঠ ছিল তারা ইসলাম কবুলের পর এসকল গুণের কারণে মুসলিম-সমাজেও শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হবে। জুনায়েদ জামশেদের জীবনটি এর সুন্দর ও সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত। ব্যক্তিগতভাবেও তিনি একজন ভদ্র ও সুশীল মানুষ ছিলেন। ধৈর্যশীল ও বিনয়ী ছিলেন। জীবনের নানা ঘটনায় তার এ সকল সদগুণের পরিচয় পাওয়া গেছে। জনসেবা, গরীবদের কাছে থাকা এবং সামাজিক কাজ-কর্মে তাঁর অগ্রণী ভূমিকা ছিল। করাচি নগরীর পরিচ্ছন্নতা অভিযানেও তাঁর ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। বহুবার তিনি জালেমদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। এমনকি তাঁর জীবনের উপর হামলাকারীদেরও তিনি নিঃশর্ত মাফ করে দিয়েছেন। এগুলো এমন গুণ যা একজন কামেল মুমিনের সাথেই বেশি মানানসই।
দ্বিতীয় কথাটি বলতে চাই, দাঈদের উদ্দেশ্যে। দাঈগণের কর্তব্য, সমাজের কোনো শ্রেণির মানুষকেই চিন্তা থেকে বাদ না দেয়া। জুনায়েদ জামশেদের প্রসঙ্গে মাওলানা তারিক জামিল ছাহেবের একটি কথা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন, একবার আমি এক জায়গায় অপেক্ষারত ছিলাম। হঠাৎ সামনের স্ক্রিনে চোখ পড়ল। দেখলাম একটি ছেলে গান গাইছে। তার সাথে কয়েকজন মেয়েও আছে। আমি চোখ নামিয়ে ফেললাম এবং ভাবতে লাগলাম, কীভাবে ছেলেটিকে দাওয়াত দেয়া যায়। কীভাবে তার কাছে দ্বীন পৌঁছবে।
এই ছেলেটিই জুনায়েদ জামশেদ। একজন দাঈর জন্য এই চিন্তাটা খুব প্রয়োজন। দাঈ কাউকে বাদ দিবে না, যত পাপীই হোক, তার কাছে পৌঁছার চেষ্টা করবে। কীভাবে কথা বললে, কী উপায় অবলম্বন করলে সে প্রভাবিত হবে তা চিন্তা করবে।
মাওলানা তারিক জামিল ছাহেব তাঁর দেশের চলচ্চিত্র জগৎ ও ক্রীড়া জগতের অনেক তারকার জীবনেই পরিবর্তন এনেছেন। ইন্ডিয়ার বিখ্যাত অভিনেতা আমীর খানের পিছনেও মেহনত করেছেন এবং সম্ভবত কিছু সুফলও পেয়েছেন। এ সম্পর্কে তিনি তার অভিজ্ঞতাও বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। আমীর খানের হজ্বে যাওয়া, তারিক জামিল ছাহেবের তার সাথে সাক্ষাতের ইচ্ছা প্রকাশ, প্রথমে অনীহা প্রকাশ করেও দশ মিনিট সময় দিতে সম্মত হওয়া, তারিক জামিল ছাহেবের ফিল্ম নিয়ে আলোচনা, একপর্যায়ে আমীর খানের হুযুর-ভীতি দূর হওয়া এবং তারিক জামিল ছাহেবের কাছ থেকে আল্লাহর রাসূলের হজ্বের বিবরণ শোনা ইত্যাদি বর্ণনা স্বয়ং তারিক জামিল ছাহেবের আলোচনায় আছে।
আমি বলছি না, প্রত্যেকে এই অঙ্গনে দাওয়াতের উদ্দেশ্যে চলে যাক, আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, দাঈগণ কাউকে বাদ দিবেন না। আর দু-চার জন তো এমন থাকতে হবে, যারা ঐসব অঙ্গনের লোকদের পেছনেও মেহনত করতে পারেন।
জুনায়েদ জামশেদের খেদমতের আরেক দিক, তিনি হাজ্বীদেরও খেদমত করেছেন। অর্থাৎ তার হজ্ব-কাফেলাও ছিল। তবে এটিকে তিনি নিয়েছিলেন খেদমত হিসেবে, তিজারত হিসেবে নয়। এ কারণে অনেক সময় তাকে ভর্তুকিও দিতে হয়েছে। তারিক জামিল ছাহেব দশ বার তার কাফেলায় হজ্ব করেছেন। তাঁর বক্তব্য, জুনায়েদ জামশেদ আন্তরিকভাবে হাজ্বীদের সেবা করতেন। এবং অনেক সময় নিজ পকেটের টাকা খরচ করে হাজীদের উন্নত সেবা দিতেন।
একবার মিনায় তাঁর হজ্ব কাফেলার ব্যানার জে. জে. (J J) টানানো ছিল, তিনি তারিক জামিল ছাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এর চেয়ে বড় মর্যাদার বিষয় আর কী হতে পারে যে, এই পবিত্র ভূমিতে আমার মত নগণ্য বান্দার নামের ব্যানার জে. জে. টানানো রয়েছে!
আসলে তিনি তাঁর এ জীবনটি নিয়ে খুবই তৃপ্ত ছিলেন। এমনকি পূর্বের পেশা ছেড়ে নতুন জীবন ধারায় আসার পর যখন দারিদ্র্য তাকে চরমভাবে আঁকড়ে ধরেছিল তখনও। সে সময়েও কোটি কোটি রূপীর অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞাপনের অফার তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। একবার মাওলানা তারিক জামিল ছাহেবকে কোনো এক মসজিদ থেকে ফোনে বলেছেন, মাওলানা! এ ভাঙ্গা বেড়ার ছোট মসজিদ ও মাটির ওপর ছেঁড়া চাটাইতে আমার এত শান্তি লাগছে যা কখনো ফাইভ স্টার হোটেলেও পাইনি। এখানে আমার এত আরামের ঘুম হচ্ছে যা সম্ভবত আগে কখনো হয়নি।
জুনায়েদ জামশেদের একটি বড় বৈশিষ্ট্য ছিল, তিনি দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করতেন নির্ভরযোগ্য উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে থেকে। মাওলানা তারিক জামিল ছাহেব ছাড়াও হযরত মাওলানা মুফতী তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুমসহ আরো বহু আলেম থেকে তিনি দ্বীনী রাহনুমায়ী নিয়েছেন।
এক সময় তিনি আরেকজন পার্টনারসহ পোশাকের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। তাঁর পার্টনার বলেছেন, ব্যবসা শুরুর আগে আমরা দুজন মুফতী তাকী উসমানী ছাহেবের কাছে পরামর্শের জন্য যাই। তিনি আমাদেরকে ব্যবসা শুরুর অনুমতি দেন এবং বলেন, আপনাদের দুজনের সাথে তৃতীয় শরীক হচ্ছেন আল্লাহ। এ চিন্তা মাথায় রেখে কারবার পরিচালনা করবেন। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত আমরা সেভাবেই ব্যবসা করে আসছি। আল্লাহ তাআলা তাতে অনেক বরকত দিয়েছেন।
মোটকথা জুনায়েদ জামশেদ তাঁর লাইফস্টাইল পরিবর্তনের পর নিজেকে পরিপূর্ণ সমর্পণ করেছেন উলামায়ে দ্বীনের কাছে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি তাঁর আল্লাহপ্রদত্ত মেধা ও প্রতিভাগুলোর বিকাশ ঘটিয়েছেন। এতে তিনি উঠে গেছেন সফলতার উচ্চ শিখরে। কিছু দিনের কষ্ট ও সাধনার পর আল্লাহ তাঁর হালাল রিযিকে ব্যাপক বরকত দিয়েছেন এবং তাঁর জন্য খুলে দিয়েছেন বিভিন্ন রাস্তা। কুরআন বলছে-
وَ مَنْ یَّتَّقِ اللهَ یَجْعَلْ لَّهٗ مَخْرَجًا وَّ یَرْزُقْهُ مِنْ حَیْثُ لَا یَحْتَسِبُ وَ مَنْ یَّتَوَكَّلْ عَلَی اللهِ فَهُوَ حَسْبُهٗ.
যে কেউ আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার পথ করে দিবেন। এবং তাকে তার ধারণাতীত উৎস থেকে দান করবেন রিয্ক। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। -সূরা তালাক (৬৫) : ২-৩
আর আমরা আশাবাদী যে, শেষ পর্যন্ত তিনি পেয়ে গেছেন স্থায়ী কামিয়াবীও। পেয়েছেন শহীদী মৃত্যু। একে তো বিমান দুর্ঘটনা আবার আগুনে পুড়ে যাওয়া এবং তার চেয়েও বড় হল আল্লাহর রাহে মৃত্যু। তিনি তো দাওয়াতী কাজ থেকে বাড়ি ফেরার আগেই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন। বিমানে উঠার আগেও মানুষকে ডেকে এসেছেন আল্লাহর পথে। শুনিয়ে এসেছেন প্রিয় নবীজীর না‘ত।
জুনায়েদ জামশেদ চলে গেছেন, রেখে গেছেন অনেক ত্যাগ, কুরবানী, আদর্শ ও কামিয়াবীর ফিরিস্তি। আল্লাহ তাঁর কবরকে জান্নাতের বাগিচা বানিয়ে দিন এবং মুসলিম তরুণ-যুবকদের তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নেয়ার তাওফীক দান করুন। মুসলমানদের মেধা, মননশীলতা, সৃজনশীলতা, কণ্ঠ ও মেহনত ব্যয় হোক মহান সৃষ্টিকর্তার অনুমোদিত পথ ও পন্থায়। আমীন।