রবিউল আউয়াল ১৪৩৮   ||   ডিসেম্বর ২০১৬

একটি ভুল পদ্ধতি : সময় বিবেচনা ছাড়াই সুন্নতের জন্য দাঁড়িয়ে যাওয়া

ফজরের সুন্নত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা ফজরের সুন্নত ছেড়ে দিও না; যদিও সৈন্যবাহিনী তোমাদেরকে তাড়া দেয়। -মুসনাদে আহমদ ২/৪০৫

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা., আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ও আবু দারদা রা.-এর মতো বিশিষ্ট সাহাবীদের থেকে বর্ণিত আছে যে, তাঁরা ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও সুন্নত পড়ে নিতেন।

সুতরাং ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও বারান্দায় বা জামাতের কাতার থেকে দূরে সরে খুঁটির আড়ালে সুন্নত পড়ে নিবে। তবে এ জন্য শর্ত হল, আগে নিশ্চিত হতে হবে যে, সুন্নত শেষ করে দ্বিতীয় রাকাত পাওয়া যাবে। কিন্তু কিছু মানুষকে দেখা যায়, কোনো বিবেচনা ছাড়াই সুন্নতের জন্য দাঁড়িয়ে যায়। কাউকে কাউকে তো এমনও দেখা যায়, দ্বিতীয় রাকাতের সূরা ফাতিহা শেষ হওয়ার পরও সুন্নতের জন্য দাঁড়িয়ে যায়। অথচ দ্বিতীয় রাকাতে সাধারণত একটু ছোট কেরাত পড়া হয়। ফলে দ্বিতীয় রাকাতও পাওয়া যায় না। এটি ঠিক নয়।

জামাত শুরু হওয়ার পর সুন্নতে দাঁড়ানোর জন্য আগে বিবেচনা করে নিবে- দ্বিতীয় রাকাত পাওয়া যাবে কি না। স্বাভাবিকভাবে যদি অনুমান করা না যায়- প্রথম রাকাত চলছে না দ্বিতীয় রাকাত, তাহলে ঘড়ির সাহায্য নিবে। কারণ, জামাত শুরু হওয়ার সময় দেখে বোঝা সম্ভব- এখন প্রথম রাকাত চলছে না দ্বিতীয় রাকাত।

আর (নির্ভরযোগ্য মতানুযায়ী) যদি ফজরের সুন্নত আদায় করে দ্বিতীয় রাকাত পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে সুন্নত না পড়ে জামাতে শরীক হয়ে যাবে এবং সুর্যোদয়ের পর এ সুন্নত আদায় করে নিবে। -আলজামিউস সগীর ৯০; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬৪০; ফাতহুল মুলহিম ৪/৮৯-৯২; ফয়যুল বারী ২/১৯৮

উল্লেখ্য, যোহরের সুন্নতের ক্ষেত্রেও এমনটি দেখা যায়- সময় বিবেচনা ছাড়াই সুন্নতের জন্য দাঁড়িয়ে যায়। এটিও ঠিক নয়।

আর যোহরের সুন্নতের বিষয়টি ফজরের সুন্নতের চেয়ে ভিন্ন। এক্ষেত্রে জামাত দাঁড়িয়ে গেলে সুন্নতের নিয়ত করার অবকাশ নেই। এমনকি চার রাকাত সুন্নতের জন্য দাঁড়ানোর পর যদি দেখা যায় জামাত শুরু হয়ে গিয়েছে, তাহলে দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে জামাতে শরীক হয়ে যাবে এবং ফরযের পর দুই রাকাত সুন্নত পড়ে পূর্বের চার রাকাত সুন্নত পড়ে নিবে।

 

 

advertisement