পরিচ্ছন্নতা ইসলামের শিক্ষা
উৎসবে-অনুষ্ঠানে নিজে পরিপাটি থাকা, আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখা মানুষের এক সাধারণ স্বভাব। নিজেদের কোনো উৎসবে সাধ্যমতো পরিচ্ছন্নতায় মনোযোগী হয় না—এমন মানুষ বিরল। আর এক্ষেত্রে ইসলামের বিশেষত্ব হলো, পরিচ্ছন্নতাকে ইসলাম শুধু স্বভাবজাত বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি। বরং ইসলামে পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা ইবাদতও। ব্যক্তি-সমাজ-পরিবেশের সর্বত্রই ইসলাম পরিচ্ছন্নতার শিক্ষা দিয়েছে। স্থানভেদে এ শিক্ষা কোথাও কঠোর, কোথাও কিছুটা শিথিল। কিন্তু কোথাও অপরিচ্ছন্নতার কোনো স্থান ইসলামে নেই।
পরিচ্ছন্নতা প্রসঙ্গে প্রথমেই আসে ওযুর কথা। প্রতিটি বালেগ নর-নারীর ওপর প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়া ফরয। আর নামাযের জন্যে ফরয ওযু। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জন্যে ওযু করার যে বিধান ইসলাম দিয়েছে তাতে স্বাভাবিকভাবেই অপরিচ্ছন্নতার দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। ভোরে ঘুম থেকে উঠেই মুমিন বান্দা ওযু করে পবিত্রতা হাসিল করে। তার পরিচ্ছন্নতার চর্চা শুরু তখনই। দেহ-মনে যত ক্লান্তিই থাকুক, ভালোভাবে যদি কেউ ওযু করে তাহলে তার মন সতেজতায় ভরে ওঠে। সারাদিনের অবসাদ নিয়ে রাতে যখন সে ঘুমাতে যায় তখনও তাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে, যেন সে ওযুর সঙ্গেই ঘুমাতে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَبِيتُ عَلَى ذِكْرٍ طَاهِرًا فَيَتَعَارُّ مِنَ اللَّيْلِ فَيَسْأَلُ اللَّهَ خَيْرًا مِنَ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ إِلاَّ أَعْطَاهُ إِيَّاهُ
যে কোনো মুসলমান যখন পবিত্রতার সঙ্গে আল্লাহর নামে ঘুমায়, এরপর সে রাতে ঘুম থেকে উঠে আল্লাহর কাছে দুনিয়া-আখেরাতের কোনো কল্যাণ প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাকে তা দিয়ে দেন। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫০৪৪
দৈহিক পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে এমন কিছু বিষয়কে হাদীসে বলা হয়েছে ফিতরত বা ইসলামের স্বভাবজাত বিষয়। এগুলো নবীগণের সুন্নত। সহীহ মুসলিমের হাদীস :
عَشْرٌ مِنَ الْفِطْرَةِ قَصُّ الشَّارِبِ وَإِعْفَاءُ اللِّحْيَةِ وَالسِّوَاكُ وَاسْتِنْشَاقُ الْمَاءِ وَقَصُّ الأَظْفَارِ وَغَسْلُ الْبَرَاجِمِ وَنَتْفُ الإِبْطِ وَحَلْقُ الْعَانَةِ وَانْتِقَاصُ الْمَاءِ. قَالَ زَكَرِيَّاءُ قَالَ مُصْعَبٌ وَنَسِيتُ الْعَاشِرَةَ إِلاَّ أَنْ تَكُونَ الْمَضْمَضَةَ.
দশটি বিষয় ফিতরতের অন্তর্ভুক্ত—১. গোঁফ ছোট রাখা ২. দাড়ি ছেড়ে দেয়া ৩. মেসওয়াক করা ৪. নাকে পানি দিয়ে ধোয়া ৫. নখ কাটা ৬. আঙ্গুলের গিটগুলো ধুয়ে রাখা ৭. বগলের লোম পরিষ্কার করা, ৮. নাভির নীচের পশম মু-ানো, ৯. প্রাকৃতিক প্রয়োজন শেষে পানি ব্যবহার করা, ১০. কুলি করা। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৬১
কোথাও যেতে হলে কিংবা কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হলে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই বাহ্যিক পরিপাটির দিকে নজর রাখে। কিন্তু এ হাদীসে কেবল অন্যের সঙ্গে মেলামেশার সময়ই নয়, একান্ত ব্যক্তিগত জীবনেও যেন পরিচ্ছন্নতা অটুট থাকে সে শিক্ষাও দেয়া হয়েছে। আর অন্য কারও সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ইসলামের শিক্ষা হলো, এমন সব আচরণ পরিহার করা যাতে কেউ কষ্ট পেতে পারে। উপরোক্ত হাদীসে মেসওয়াকের বিষয়টি তাই অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। মেসওয়াকের অনেক ফজিলত রয়েছে। হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي، أَوْ عَلَى النَّاسِ - لأَمَرْتُهُمْ بِالسِّوَاكِ مَعَ كُلِّ صَلاَةٍ.
যদি আমি আমার উম্মতের জন্যে কষ্টকর মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে প্রত্যেক নামাজের সময় মেসওয়াক করতে আদেশ দিতাম। -সহীহ বুখারী, হাদীস : ৮৮৭
আরেকটি হাদীস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
السِّوَاكُ مَطْهَرَةٌ لِلْفَمِ ، مَرْضَاةٌ لِلرَّبِّ.
মেসওয়াক মুখের জন্যে পবিত্রতা আর প্রভুর সন্তুষ্টির মাধ্যম। -সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৫
মেসওয়াকের দ্বীনী ও পরকালীন উপকারিতার পাশাপাশি এর তাৎক্ষণিক কল্যাণও প্রশ্নাতীত। কারও মুখে যদি দুর্গন্ধ থাকে, তাহলে তার সঙ্গে কথা বলাটাই কষ্টকর হয়ে পড়ে । অথচ অনেক সময় সে বুঝতেই পারে না—তার মুখ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে আর সে দুর্গন্ধে অন্যদের কষ্ট হচ্ছে। নিয়মিত যদি কেউ মেসওয়াক করে তাহলে মুখের দুর্গন্ধ থেকে সে নিজে মুক্তি পাবে আর অন্যরা নিষ্কৃতি পাবে তার মুখের দুর্গন্ধজনিত কষ্ট থেকে।
প্রতিদিন গোসল করা আমাদের দেশের এক স্বাভাবিক রীতি। কিন্তু প্রাচীন আরবের রীতি এমন ছিল না। নিয়মিত গোসল না করলে ঘাম জমে ধীরে ধীরে শরীরে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। এমন অবস্থায় যদি অনেক মানুষ কোথাও একত্রিত হয় তাহলে সেখানে দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। এজন্যেই জুমার দিনের গোসলকে হাদীস শরীফে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
الْغُسْلُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ
জুমার দিনে গোসল করা প্রতিটি বালেগ পুরুষের জন্যে আবশ্যক। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৮৫৮
ইসলাম যেমন মানুষের রুহের খোরাক জোগায়, তেমনি বাহ্যিক সৌন্দর্য অবলম্বনও এখানে কাক্সিক্ষত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন অহংকারের ভয়াবহতা বর্ণনা করছিলেন। সাহাবায়ে কেরামের মনে তখন সংশয়—তাহলে সুন্দর পোশাক সুন্দর জুতাও কি অহংকারের শামিল? তাদের একজন আল্লাহর রাসূলকে প্রশ্ন করলেন—মানুষ তো চায় তার কাপড়-চোপর সুন্দর হোক, তার জুতা সুন্দর হোক। (এটাও কি অহংকার?)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
إِنَّ اللَّهَ جَمِيلٌ يُحِبُّ الْجَمَالَ الْكِبْرُ بَطَرُ الْحَقِّ وَغَمْطُ النَّاسِ.
নিশ্চয় আল্লাহ সুন্দর, তিনি সৌন্দর্য ভালোবাসেন। অহংকার হলো সত্য অগ্রাহ্য করা এবং মানুষকে তুচ্ছ মনে করা। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯১
সাহাবী মালেক ইবনে নাযলা রা.-এর ঘটনা। তিনি নিজেই বর্ণনা করছেন—একদিন আমি মসজিদে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে বসে ছিলাম। তিনি দেখলেন আমার গায়ে ছেঁড়াফাটা কাপড়। তখন তিনি জানতে চাইলেন : তোমার কি অর্থসম্পদ আছে? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সব রকম সম্পদই আমার রয়েছে। তিনি বললেন,
فَإِذَا آتَاكَ اللَّهُ مَالاً فَلْيُرَ أَثَرُهُ عَلَيْكَ
আল্লাহ যখন তোমাকে সম্পদ দিয়েছেন তাই এর চিহ্ন যেন তোমার ওপর প্রকাশ পায়। -সুনানে নাসাঈ, হাদীস : ৫২২৩
আরেক বর্ণনায় জাবের রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আমাদের বাড়িতে এলেন। এক ব্যক্তির চুল উষ্কখুষ্ক দেখে বললেন, তার কি এমন কিছু নেই যার দ্বারা সে তার চুল আঁচড়িয়ে পরিপাটি রাখতে পারে। আরেক ব্যক্তির কাপড় ময়লা দেখে বললেন, সে কি তার কাপড় পরিষ্কার রাখার মত কিছু পায় না? -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪০৬২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৪৮৫০
পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য অবলম্বনে এই হলো ইসলামের শিক্ষা। প্রান্তিকতা ও বাড়াবাড়ি থেকে যারা মুক্ত থাকে, তাদের জন্যে এ বাহ্যিক সৌন্দর্যও ইবাদত ও পুণ্যের মাধ্যম হতে পারে।
পরিচ্ছন্নতা মানুষকে আকর্ষণ করে আর অপরিচ্ছন্নতা কষ্ট দেয়। তখন সে তা থেকে মুক্তি পেতে চায়; নিজে তা থেকে দূরে সরে গিয়ে কিংবা তা দূরে সরিয়ে দিয়ে। চুল-দাড়ি যদি উষ্কখুষ্ক থাকে তাহলে এমনি এক অপ্রীতিকর দৃশ্য সৃষ্টি হয়। হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন মসজিদে ছিলেন। এমন সময় এক লোক এল। লোকটির চুল ও দাড়ি ছিল এলোমেলো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতের ইশারায় তাকে বেরিয়ে যেতে বললেন। তিনি যেন এটাই বোঝাতে চাচ্ছিলেন, সে যেন তার মাথার চুল আর দাড়িগুলো ঠিক করে আসে। লোকটি মসজিদ থেকে বেরিয়ে গেল। চুল-দাড়ি ঠিক করে আবার ফিরে এল। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
أَلَيْسَ هَذَا خَيْرًا مِنْ أَنْ يَأْتِيَ أَحَدُكُمْ ثَائِرَ الرَّأْسِ كَأَنَّهُ شَيْطَانٌ.
তোমাদের কেউ শয়তানের মতো এলোমেলো চুল নিয়ে উপস্থিত হওয়ার চেয়ে এটি কি ভালো নয়? -মুয়াত্তা মালেক, হাদীস ১৭০২
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও চুল পরিপাটি করে রাখতেন। একবার নবীজীর সাথে কিছু মানুষ দেখা করতে এল। নবীজী তাদের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার সময় একটি পানির পাত্রের মধ্যে তাকিয়ে নিজের চুল-দাড়ি পরিপাটি করে নিলেন। ...নবীজী বললেন, আল্লাহ সুন্দর, তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন। যখন কেউ তার ভাইদের সাথে সাক্ষাতে যাই, সে যেন নিজেকে পরিপাটি করে নেয়। -আমালুল ইয়াউমি ওয়াল লাইলাহ, হাদীস ১৭৩
এক হাদীসে তিনি এমনও বলেছেন,
مَنْ كَانَ لَهُ شَعْرٌ فَلْيُكْرِمْهُ
যার চুল আছে সে যেন চুলের যতœ নেয়। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪১৬৫
অবশ্য অন্য সব বিষয়ের মতো চুলের পেছনেও যেন মাত্রাতিরিক্ত সময় ব্যয় করা না হয় হাদীসে সেদিকেও সতর্ক করা হয়েছে—
نَهَى رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- عَنِ التَّرَجُّلِ إِلاَّ غِبًّا
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাঝে মাঝে চুল আঁচড়ানো অনুমোদন করেছেন। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪১৬১
কষ্টদায়ক কোনো বিষয় কোথাও থাকলে, বিশেষ করে তা যদি পথে থাকে, তাহলে তা সরিয়ে ফেলাও ঈমানের দাবি। হযরত আবু হুরায়রা রা. কর্তৃক বর্ণিত একটি হাদীস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
الْإِيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ - أَوْ بِضْعٌ وَسِتُّونَ - شُعْبَةً، فَأَفْضَلُهَا قَوْلُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَأَدْنَاهَا إِمَاطَةُ الْأَذَى عَنِ الطَّرِيقِ، وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الْإِيمَانِ
ঈমানের সত্তরোর্ধ্ব কিংবা ষাটোর্ধ্ব শাখা রয়েছে। তন্মধ্যে শ্রেষ্ঠতম শাখা হচ্ছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা, আর সর্ব নি¤œস্তরের শাখা রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৫
হাদীসে উল্লেখিত কষ্টদায়ক বস্তুর পরিধি অনেক বিস্তৃত। যে কোনো ভাবেই কষ্টদায়ক হোক না কেন, তা সরিয়ে ফেলা উচিত। চলার পথে পড়ে থাকা কোনো কাটা, ভাঙ্গা কাঁচ কারও পায়ে বিঁধে যেতে পারে, ইটের টুকরা বা শক্ত কোনো কিছুতে কেউ হোঁচটও খেতে পারে, পড়ে থাকা কোনো ফলের খোসা কিংবা পলিথিনের প্যাকেটে কারও পা পিছলে যেতে পারে, দুর্গন্ধযুক্ত কোনো কিছু পথিকের কষ্টের কারণ হতে পারে, এমনকি দৃষ্টিকটু কোনো বিষয়ও অন্যদের কষ্ট দেয়। ইসলাম আমাদের যে পরিচ্ছন্নতা শিক্ষা দেয় তা আমলে নিলে সবরকম কষ্টদায়ক বস্তু থেকেই পথঘাট মুক্ত থাকবে।
দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, ইসলামের এই সুন্দর শিক্ষা থেকে আমরা অনেকেই উদাসীন। ইসলামের পরিচ্ছন্নতার শিক্ষাকে জীবনের সর্বক্ষেত্রেই বাস্তবায়িত করতে হবে। ব্যক্তিজীবন থেকে সমাজ পর্যন্ত সর্বত্রই ছড়িয়ে দিতে হবে এ শিক্ষার আলো।