একটি অবাস্তব কথা : বিদায় হজ্বের ভাষণ শেষে সাহাবীগণের যার ঘোড়া যেদিকে মুখ করা ছিল তিনি সেদিকেই বেরিয়ে পড়েছেন...!
এ কথাটি লোকমুখে প্রসিদ্ধ। বিদায় হজ্বে ‘ইয়াওমে আরাফা’ ও ‘ইয়াওমুন নাহর’-এর খুতবার শেষে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন,
فليبلغ الشاهد الغائب
[উপস্থিত ব্যক্তিরা যেন অনুপস্থিত ব্যক্তিদের কাছে (কথাগুলো) পৌঁছে দেয়।]
ব্যস, এটা শোনা মাত্রই নাকি সাহাবীগণ যার ঘোড়ার মুখ যেদিকে করা ছিল তিনি দ্বীন প্রচারে সেদিকেই ছুটে গিয়েছেন। এটি বাস্তবসম্মত নয় এবং এমনটি ঘটা সম্ভবও নয়। কেননা উকূফে আরাফা এবং কুরবানীর পর হজ্বের অনেক কাজ বাকি থাকে। সেগুলো বাদ দিয়ে সকলে কীভাবে চলে যাবেন?
সাহাবাগণ দ্বীনের প্রচারে কী পরিমাণ কুরবানী করেছেন সে কথা বুঝাতেই হয়তো এটি বলা হয়ে থাকে। দ্বীনের জন্য তাঁদের কুরবানীর অসংখ্য ঘটনা হাদীস, সীরাত ও ইতিহাসের কিতাবে রয়েছে। কিন্তু কোথাও এধরনের কথা নেই।
আসল বিষয় হল, সাহাবীগণ দ্বীন প্রচার ও জিহাদে পৃথিবীর দিগি¦দিকে ছড়িয়ে পড়েছেন- একথাটি বর্ণনা করতে গিয়ে অতিরঞ্জন করে কেউ হয়তো فليبلغ الشاهد الغائب এই সহীহ বর্ণনার সাথে উপরোক্ত কথাটি যুক্ত করে বলেছে, সেই থেকে লোকমুখে কথাটি ছড়িয়ে পড়েছে। যারা ঘটনাটি এভাবে বলেন তারা এ বিষয়টি চিন্তা করেননি যে, হজ্বের পরে হাজার হাজার সাহাবী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লামের সাথেই মদীনা মুনাওয়ারায় ফিরে এসেছেন।
সুতরাং আমরা এ কথাটি বলা থেকে বিরত থাকব এবং দ্বীনের জন্য কুরবানী বিষয়ক সাহাবীগণের যে সকল সহীহ ঘটনা রয়েছে সেগুলো বলব। কারণ, আমাদের প্রতিটি কথার জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। আল্লাহ আমাদের অবাস্তব, ভিত্তিহীন কথা বলা থেকে হেফাজত করুন।