সচেতনতা ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য
আরবের জনমানবহীন ফলফসলহীন এক অনাবাদ অঞ্চলে স্বীয় স্ত্রী হাজেরা আর শিশুপুত্র ইসমাঈলকে মহান আল্লাহর নির্দেশে রেখে গিয়েছিলেন নবী হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। পরবর্তীতে পুত্র ইসমাঈলও নবুওতপ্রাপ্ত হন। পিতা-পুত্র দুজনে মিলে নির্মাণ করেন মহান প্রভুর ঘর―পবিত্র কাবা শরীফ। শুরু হয় হজ্বের ধারা। পবিত্র কুরআনের কত সুন্দর বর্ণনা―(হযরত ইবরাহীম আ.-কে মহান আল্লাহর নির্দেশ) (তরজমা) তুমি মানুষের মাঝে হজ্বের ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার নিকট চলে আসবে হেঁটে হেঁটে, দূর-দূরান্ত থেকে গভীর পথ মাড়িয়ে আগত শীর্ণকায় উটের পিঠে চড়ে। -সূরা হজ্ব (২২) : ২৭
নবী ইবরাহীম আ.-এর ছেলেবেলায় স্বগোত্রের সঙ্গে বিতর্ক হয়েছিল মূর্তির উপাসনা নিয়ে। তাদের অবর্তমানে মূর্তিশালায় ঢুকে মূর্তি গুড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথায় কুলাতে না পেরে তারা সোজা তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করে পুড়িয়ে মারার সিদ্ধান্ত নেয়। আল্লাহর কুদরতে তিনি সেদিন জ্বলন্ত অগ্নিকু- থেকেও নিরাপদে বেরিয়ে আসেন। পবিত্র কুরআনে এ ঘটনাও বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। এই নবীর হাতেই নির্মিত পবিত্র কাবাঘর। সেই কাবাঘরে মানুষ হজ্ব করতে আসে। পবিত্র এই ঘর তওয়াফ করে। কিন্তু কালের আবর্তনে এই কাবাঘরের ভেতরেই স্থান করে নেয় তিনশ ষাটটি মূর্তি। যে মূর্তির উপাসনা নিয়ে তিনি সংগ্রাম করেছেন স্বজাতির সঙ্গে, তাঁরই হাতে নির্মিত পবিত্র ঘরটিতেও একটা সময় স্থান করে নিল এই মূর্তির দল। পৃথিবী জুড়ে ‘আল্লাহর ঘর’ বলে পরিচিত এই ঘরখানি। অথচ এই ঘরের পড়শিরাই আল্লাহর দ্বীন ছেড়ে মূর্তিপূজায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত! প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ পৃথিবীতে আগমনকালে আরবসমাজ এ মূর্তিপূজার কৃষ্ণ আবরণে এভাবেই আচ্ছাদিত ছিল।
জানা কথা, ইসলাম প্রথমেই মানুষকে আহ্বান জানায় সৃষ্টির উপাসনা ছেড়ে একমাত্র স্রষ্টা মহান আল্লাহর বন্দেগি ও দাসত্ব গ্রহণ করতে। তাই মরু আরবে ইসলামের ঘোষণাই ছিল মূর্তিপূজার মূলে কুঠারাঘাত। অথচ প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াত গ্রহণ করে যারা মূর্তিপূজার অন্ধকার গলি থেকে উঠে আসছিলেন তাওহীদের আলোকিত রাজপথে, তাদেরকেই পবিত্র কুরআনে এ বলে সতর্ক করে দেয়া হল― (তরজমা)‘আল্লাহকে ছাড়া যাদের তারা ডাকে, তোমরা তাদেরকে গালি দিয়ো না!’ [সূরা আনআম (৬) : ১০৮] সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে এর রহস্য―‘এমন করলে তারাও যে শত্রুতাবশত আল্লাহকে গালি দেবে!’ (প্রাগুক্ত) কোনো জটিল সমীকরণ নয়। যিনি আল্লাহবিশ্বাসী মুমিন, তার কোনো কর্মের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ যদি কেউ আল্লাহকে গালি দিয়ে বসে, তাহলে এর দায় তো স্বাভাবিকভাবেই সে মুমিনের ওপরও বর্তায়। দুর্ভাগ্যবশত যদি কেউ আল্লাহকে গালি দেয় তাহলে সে যেমন অপরাধী, কারও কথা বা কাজের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ যদি এমনটি ঘটে তাহলে সেও এর দায় এড়াতে পারে না। ইসলাম তার অনুসারীদের এভাবেই সচেতনতা শিক্ষা দেয়।
সচেতনতার আরেকটি রূপও এখানে লক্ষণীয়। স্বভাবধর্ম ইসলামে সবকিছুতেই মধ্যপন্থাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভাষ্য দেখুন―মধ্যপন্থা মেনে যে কর্ম করা হয় সেটাই শ্রেষ্ঠ। -বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, হাদীস : ৩৬০৪
উপরোক্ত বিষয়েও সযত্নে রক্ষিত হয়েছে এ মধ্যপন্থার শিক্ষা। মূর্তিপূজা আর ইসলাম সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী দুটি বিষয়। এ দুয়ের মাঝে কোনোরকম সমন্বয় কিংবা মূর্তিপূজাকে ছাড় দেয়ার অবকাশ ইসলামে নেই। ইসলামের মৌলিক যে দাওয়াত―এক আল্লাহকে মাবুদ ও উপাস্য হিসেবে মেনে নেয়ার আহ্বান, এটিই তো শিরিক ও মূর্তিপূজাকে গুড়িয়ে দেয়। এ থেকে কেউ যেন আবার কাফেরদের দেবতা বা মূর্তিগুলোকে গালমন্দ করাকে ‘ভালো কাজ’ না বানিয়ে ফেলে, সেজন্যে সতর্ক করা হয়েছে। একদিকে মূর্তিপূজার বিপরীতে ইসলামের শাশ্বত বাণীর প্রচার এবং সৃষ্টির উপাসনা ছেড়ে এক আল্লাহর ইবাদতের প্রতি আহ্বানের আদেশ, সঙ্গে সঙ্গে পরিণতিতে ইসলাম আক্রান্ত হতে পারে এমন সব কাজে নিষেধাজ্ঞা―এ সচেতনতাই ইসলামের সৌন্দর্য।
শুধু এই একটি ক্ষেত্রই নয়, ইসলামের সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছে এই সচেতনতার শিক্ষা। দ্বীনী ও পরকালীন বিষয়ে তো বটেই, নিরেট পার্থিব বিষয়েও ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয় এই সচেতনতার। সচেতনতার শিক্ষা পাওয়া যায় এমন কয়েকটি দৃষ্টান্ত আমরা এখানে উল্লেখ করছি :
প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দীর্ঘদিনের খাদেম হযরত আনাস ইবনে মালিক রা. বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করল, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কীভাবে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করব? আমার উটনীটি ছেড়ে দিয়ে, না বেঁধে রেখে?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, প্রথমে তোমার উটনীটি বাঁধ, এরপর আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল কর। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৫১৭
আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল ও ভরসা একজন মুমিনের ঈমানের অপরিহার্য অংশ। তাই বলে স্বেচ্ছায় ‘আল্লাহ ভরসা’ বলে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়া তো আর ইসলামের শিক্ষা হতে পারে না। আমাদের স্থির বিশ্বাস, আল্লাহর হুকুমেই আগুন পোড়ায়, আগুনের নিজস্ব কোনো শক্তি নেই। তবে সঙ্গে এও বিশ্বাস করতে হবে, আল্লাহ তাআলাই আগুনকে পোড়ানোর শক্তি দিয়েছেন। সেই শক্তি দিয়েই আগুন পুড়িয়ে ছাই করে দেয় সবকিছু। এটি আগুনের শক্তি নয়, আল্লাহর দেয়া শক্তি। মহান আল্লাহ কখনো সেই শক্তি হরণ করে কুদরতের কারিশমা দেখান। মানুষ অবাক হয়ে দেখে―নমরুদের জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েও ইবরাহীম আলাইহিস সালাম নিরাপদ।
তবে এটা তাঁর সাধারণ ধারা নয়। স্বাভাবিকতা এটিই―আল্লাহ আগুনকে পোড়ানোর ক্ষমতা দিয়েছেন আর আগুন সেই ক্ষমতাবলে পোড়ায়। উপরোক্ত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এই শিক্ষাই দিয়েছেন, উটনী ছেড়ে দিলে তা চলে যাবে কোথাও, হারিয়ে যাবে, তখন তুমি অর্থহীন পেরেশানিতে আক্রান্ত হবে―এটাই স্বাভাবিক। তাই উটনীটি ছেড়ে না দিয়ে বেঁধে রাখ, এরপর আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল কর এভাবে―একমাত্র আল্লাহই পারেন উটনীটি রক্ষা করতে। বাঁধার পরও তো উটনীটি আক্রান্ত হতে পারে কোনো বিপদে। তাই তোমার সাধ্যের সচেতনতাটুকু অবলম্বনের পর তুমি আল্লাহর ওপর ভরসা কর, যেন তিনি তোমার সাধ্যের বাইরের অনাকাক্সিক্ষত বিষয়াদি থেকে তোমাকে ও তাকে নিরাপদ রাখেন।
ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছু রোগ আছে। এক রোগীর ছোঁয়ায় আরেকজনের দেহে সংক্রমিত হয় এ রোগ। কিন্তু এ ধারণা যেন মূল বিষয়টি ভুলিয়ে না দেয়; তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ছোঁয়াচে কোনো রোগ নেই। তখন এক গ্রাম্য সাহাবী দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা তো দেখি, একটা পাঁচড়াযুক্ত উট যখন কোনো পালে থাকে, তখন পুরো উটের পালকেই পাঁচড়ায় আক্রান্ত করে দেয়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই হলো ভাগ্য, বলো দেখি, প্রথমটির পাঁচড়া হলো কীভাবে? -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৮৬
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বুঝিয়েছেন, প্রথম উটটিকে যিনি পাঁচড়ায় আক্রান্ত করেছেন, তিনিই অন্যগুলোকেও এ রোগ দিয়েছেন। যে কোনো প্রকার রোগই হোক, তা কেবল আল্লাহর হুকুমেই কাউকে আক্রান্ত করতে পারে কিন্তু এখানেও একই কথা, আল্লাহ তাআলাই কিছু কিছু রোগকে সংক্রামক করে দিয়েছেন। আল্লাহ প্রদত্ত এই সংক্রমণ শক্তির কারণেই এক রোগী থেকে আরেক রোগীতে তা সংক্রমিত হয়। আরেকটি হাদীসে এই বাস্তবতাটিকেই তিনি স্পষ্ট করেছেন এভাবে―কুষ্ঠ রোগী থেকে দূরে থাক, যেভাবে তুমি সিংহ থেকে দূরে থাক। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৭০৭ প্রথমোক্ত হাদীসটি যেমন আমাদের ঈমানী ভিত মজবুত করে, দ্বিতীয় হাদীসটি আমাদেরকে সচেতনতার শিক্ষা দেয় এবং ঈমান-আকীদা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বা অলীক সন্দেহে আক্রান্ত করতে পারে এমন ক্ষেত্র থেকেও সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজনীয়তা শেখায়।
দান-সদকা তথা দুঃস্থ-অভাবীদের অভাব মোচনে এগিয়ে আসা একটি নৈতিক গুণ। শুধু মানুষই নয়, স্বজাতির বিপদে এগিয়ে আসে বনের হিংস্র পশুও। তাই মানুষ হয়েও যে মানুষের কষ্ট বোঝে না, সে বাস্তবিকই পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। দান-সদকার প্রতি ইসলাম আমাদের যথেষ্ট উৎসাহিত করেছে। যেমন দেখুন, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে পেটভরে আহার করে আর তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে সে তো মুমিনই নয়। -আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস ১১২
পবিত্র কুরআন ও হাদীসে দান-সদকার ফযীলতও বর্ণিত হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন ভঙ্গিতে। এতে উৎসাহিত হয়ে কেউ তার সর্বস্ব বিলিয়ে দিতে পারে এবং আক্রান্ত হতে পারে অভাবে―এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু একজন অভাবীর অভাব মোচন করতে গিয়ে নিজেও অভাবের শিকারে পরিণত হওয়া―ইসলাম আমাদেরকে এ থেকে সতর্ক করে দিয়েছে। পবিত্র কুরআনের ভাষ্য দেখুন―(তরজমা)‘তুমি (দান-সদকা করার ভয়ে) তোমার দুই হাত তোমার কাঁধে আটকে রেখো না, আবার তা পুরোপুরি বিছিয়েও দিয়ো না, (অর্থাৎ সবকিছু দান করে দিও না, বরং কিছু নিজের প্রয়োজনে রেখে দাও,) অন্যথায় তো নিন্দিত নিঃস্ব হয়ে পড়বে।’ -সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ২৯
আল্লাহকে গালি দেয়ার মতোই আরেকটি বিষয় লক্ষ করুন। হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একটি কবিরা গোনাহ―কোনো ব্যক্তি তার বাবা-মাকে গালি দেবে। সাহাবায়ে কেরাম জানতে চাইলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কেউ কি তার বাবা-মাকে গালি দেয়? তিনি উত্তর দিলেন, হাঁ, সে আরেকজনের বাবাকে গালি দেবে। তখন দ্বিতীয় ব্যক্তি প্রথম ব্যক্তির বাবাকে গালি দেবে। সে কারও মাকে গালি দেবে। তখন দ্বিতীয় ব্যক্তি প্রথম ব্যক্তির মাকে গালি দেবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯০
বাবা-মাকে যদি কোনো কুসন্তান গালি দেয় তাহলে তা অতি জঘন্য―এ কথা সহজেই বোঝা যায়। কিন্তু ইসলামের সচেতনতা দেখুন, অন্যের বাবা-মাকে গালি দেয়ার পরিণামেও যেন নিজের বাবা-মা গালির শিকার না হন- সে বিষয়টি সবিশেষ লক্ষ রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, এভাবেও যদি বাবা-মাকে গালি শুনতে হয় তাহলে তাও সন্তানের জন্যে কবিরা গোনাহ!
বর্তমানের অগ্রসর পৃথিবীতে আর্থিক লেনদেন কিংবা যে কোনো বিষয়ে লিখিত চুক্তির প্রয়োজনীয়তা সর্বজন স্বীকৃত ও বহুল প্রচলিত। কিন্তু আমরা যদি দেড় হাজার বছর আগের পৃথিবীর দিকে ফিরে তাকাই দেখব, তখন চুক্তি কেবল মুখে মুখেই হতো। ইসলামে সচেতনতার শিক্ষা কত ব্যাপক দেখুন, ইসলাম আমাদেরকে সেই প্রাচীন কালেই এ শিক্ষা দিয়েছে যে কোনো মেয়াদি ঋণচুক্তি করলে তা লিখে রেখো। কুরআনের ভাষায়- (তরজমা) ‘হে মুমিনগণ! তোমরা যখন একে অন্যের সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের জন্যে ঋণের কারবার কর, তখন তা লিখে রেখো।’ -সূরা বাকারা (২) ২৮২
ঋণচুক্তি, বাকিতে ক্রয়-বিক্রয় কিংবা যে কোনো ধরনের আর্থিক চুক্তি যদি লিখে রাখা হয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে অনেক অনাকাক্সিক্ষত জটিলতা এড়ানো সম্ভব হয়। মৌখিক নির্ধারিত শর্ত ও চুক্তি ভুলে যাওয়া বিচিত্র কিছু নয়। যদি চুক্তিটি লিখিত থাকে, তাহলে উভয়পক্ষের জন্যেই তা নিরাপদ থাকে।
সচেতনতাকে যারা তাওয়াক্কুল পরিপন্থী মনে করেন সামনের উদাহরণটি তাদের জন্যে। ইয়েমেনের কিছু লোক হজ্ব করতে আসত খালি হাতে। হাজ্বীগণ আল্লাহর মেহমান―এই ভরসায় তারা কোনো ধরনের খাবার-পানি সঙ্গে না নিয়েই হজ্বে চলে আসত। তারা বলত, আমরা আল্লাহর ওপর ভরসাকারী। পরে তারা অন্যদের বোঝা হয়ে থাকত। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে তাদের এ থেকে বারণ করেছেন এভাবে- (তরজমা) ‘আর (হজ্বের সফরে) পথ খরচা সাথে নিয়ে নিও...’ -সূরা বাকারা (২) : ১৯৭
সচেতনতার জন্য চাই দ্বীনের সহীহ ইলম ও সহীহ সমঝ। আল্লাহ আমাদের দ্বীনের সহীহ ইলাম সহীহ সমঝ ও সচেতনতা দান করুন।