দরকার তাফাক্কুহ অর্জন এবং তাহকীকের গোড়ায় যাওয়ার চর্চা
তালিবে ইলম ও দ্বীনদার ভাইদের এই মজলিসে শরিক হতে পেরে আমি আল্লাহ তাআলার দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। এ সুযোগে আসাতিযায়ে কেরামের কাছ থেকে শোনা দু-একটি কথা তালিবে ইলম ভাইদের সামনে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
ইলম হাসিলের মনযিল
তালিবে ইলম ভাইদের খেদমতে যে দুটি কথা আরয করতে চাচ্ছি, তার প্রথমটি হচ্ছে, আমাদের ইলমের মনযিল কী-সে বিষয়ে। আমরা সবাই বিষয়টি জানি এবং মুরব্বিদের মুখেও আমরা এ বিষয়ে শুনেছি। হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ. সূরায়ে তাওবার শেষের দিকের আয়াত
وَ مَا كَانَ الْمُؤْمِنُوْنَ لِیَنْفِرُوْا كَآفَّةً ؕ فَلَوْ لَا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَآىِٕفَةٌ لِّیَتَفَقَّهُوْا فِی الدِّیْنِ وَ لِیُنْذِرُوْا قَوْمَهُمْ اِذَا رَجَعُوْۤا اِلَیْهِمْ لَعَلَّهُمْ یَحْذَرُوْنَ۠
(তরজমা) আর সমস্ত মুমিনের অভিযানে বের হওয়া সঙ্গত নয়। তাই তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হয় না- যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্বজাতিকে। যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে। -সুরা তাওবা ৯ : ১২২)
এই আয়াতে কারীমার ভিত্তিতে বলতেন এবং তাঁর বয়ানেও হয়তো বক্তব্যটি আপনারা পেয়েছেন যে, তাফাক্কুহ ফিদ্দীন হচ্ছে দ্বীনী ইলম হাসিলের মনযিল। তাঁর সাহেবযাদা হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ তাক্বী উসমানী ছাহেবের কাছেও একাধিকবার শোনার সুযোগ হয়েছে কথাটি।
হযরত বলতেন, আমরা দরসে নেযামী এবং দরসে নেযামীর পরে আরো বিভিন্ন নেসাব অতিক্রম করে থাকি (এগুলোর নামও কিন্তু নেসাব, আমরা লক্ষ্য করি না। দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত একটি নেসাব এবং এর পরে বিভিন্ন তাখাসসুসাতের নেসাব) এগুলো হচ্ছে ইলম হাসিলের তরীক বা রাস্তা। সুতরাং আমাদের জানতে হবে, মনযিল কোথায়?
মুফতী শফী রাহ. এ কথাই বলতেন যে, তাফাক্কুহ ফিদ্দীন এই ইলম অর্জনের মনযিল। আর তাফাক্কুহ ফিদ্দীন বিষয়টি বড় ব্যাপক । যারা দাওরায়ে হাদীসের পরে উলূমুল হাদীসের ওপর মেহনত করে তারাও তাফাক্কুহ ফিদ্দীনের একটি অংশের ওপর মেহনত করে। যারা উলূমুল কুরআনের শিরোনামে মেহনত করে তারাও তাফাক্কুহ ফিদ্দীন-এর একটি অংশ নিয়ে মেহনত করে। আর যারা ফিকহ ও ইফতার শিরোনামে মেহনত করে তারাও তাফাক্কুহ ফিদ্দীনের একটি অংশ নিয়েই মেহনত করে।
প্রচলিত অর্থে যেটাকে ইলমুল ফিকহ বলা হয়- যে ইলমুল ফিকহের কিতাবগুলো সাধারণত কিতাবুত তাহারাত থেকে শুরু হয়ে কিতাবুল ফারায়েয পর্যন্ত শেষ হয়- এই ইলমুল ফিকহ তাফাক্কুহ ফিদ্দীনের কুল (সমগ্র) নয়- বরং তাফাক্কুহ ফিদ্দীনের বড় একটি অংশ। এ কথাটা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
আলফিকহুল আম লিদ্দীন
তাফাক্কুহ ফিদ্দীনের বিভিন্ন বিভাগ আছে, আছে বিভিন্ন স্তর। যেমন: তাফাক্কুহ ফিদ্দীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে প্রকারটি- সেটি হচ্ছে : الفقه العام للدين : দ্বীনের উমুমী সমঝ। এটা খুবই জরুরি বিষয়। আলফিকহুল আম লিদ্দীনেরও আবার বিভিন্ন স্তর রয়েছে। একটি স্তর সকল মুসলমানের মধ্যেই থাকতে হবে। যেটা ফরযে আইনের আওতায় চলে আসে। আরেকটা স্তর হল, আল ফিকহুল আম লিদ্দীনের ইখতেসাস (বিশেষ দক্ষতা অর্জন)-এর বিষয়। ওই বিষয়ে আমরা অনেক গাফেল। যেমন : আল ফিকহুল আম লিদ্দীনের ইখতেসাস-এর একটা জুয বা অংশ হল, ফিকহুল ওসাতিয়্যা। অর্থাৎ التوسط والإعتدال (মধ্যপন্থা ও ভারসাম্য নীতিগ্রহণ) সবকিছুর মধ্যেই পরিমিতি লালন করা। ইফরাত-তাফরীত থেকে বা বাড়াবাড়ি-ছাড়াছাড়ির সকল প্রান্তিকতা থেকে বেঁচে মাঝামাঝি যে অবস্থান শরীয়তের, সেটা অবলম্বন করা ও ধরতে পারা। এটা الفقه العام للدين -এর একটা ছোট্ট অংশ। কিন্তু এ অংশটাই বিশাল। এ বিষয়েই অনেক কিতাব বিদ্যমান। যদি আমরা তাদাব্বুরের সাথে কুরআন শরীফ মুতালাআ করি, হাদীস শরীফ মুতালাআ করি, একইভাবে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাত ও হায়াতুস সাহাবা মুতালাআ করি, পাঠ করি সালাফে সালেহীনের জীবনের ঘটনাবলী ও ইতিহাস, তাহলে এ বিষয়ে আমরা প্রচুর উপাত্ত-উপাদান পাব। কিন্তু রদ্দুল মুহতারে এ শিরোনামে কোনো অধ্যায় নেই। এই শিরোনামে ‘হেদায়া’তেও কোনো বাব নেই। তবে হেদায়ার মাসায়েলগুলো এই বিষয়ের উপরই নির্ভরশীল। শিরোনামে না থাকলেও মাসায়েলগুলো এ বিষয়ের বাইরে নয়। তাই এটা আমাদের চর্চার মধ্যে আসতে হবে। মাসিক আলকাউসারে হযরত মাওলানা আবুল বাশার ছাহেবের এ বিষয়ক দীর্ঘ লেখাটি হয়তো অনেকের নযরে এসেছে।
ইসলামের পূর্ণাঙ্গ ধারণা
ঠিক একইভাবে আল ফিকহুল আম লিদ্দীনের আরেকটি প্রকার হল, ইসলামের জামে’ এবং কামেল-মুনাক্কাহ তাসাওউর। ইসলামের পূর্ণাঙ্গ ও সর্বশাখা পরিবেষ্টনকারী রূপ ও কাঠামো সম্পর্কে ধারণা থাকা। হোক সে অবগতি বা ধারণাটি ইজমালি বা সংক্ষিপ্ত, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কাঠামো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। এ বিষয়ে ইলম এত স্পষ্ট থাকতে হযে যে, সেখানে কোনো অস্পষ্টতা নেই।
পুরো ইসলামকে সংক্ষিপ্ত ও সামগ্রিকভাবে ধারণায় রাখলেও সেটি হতে হবে স্পষ্ট ও পূর্ণাঙ্গ। খÐিতভাবে ইসলামকে বুঝা- এটাতো আওয়ামের (সাধারণ পর্যায়ের মানুষের) কাজ হলেও হতে পারে, আলেম-তালিবে ইলমের কাজ হতে পারে না। হাকীমুল উম্মত থানভী রাহ.-এর মাকতুবাত-মালফুযাতের মধ্যে এ বিষয়টার ব্যাপারেই বেশি জোর দেয়া হয়েছে। ইসলামের জামে’ তাসাওউর। ইসলামের পূর্ণাঙ্গ কাঠামোর ধারণা। হায়াতুল মুসলিমীন, তালীমুদ্দীন, ফুরূউল ঈমান, এসব কিতাব হযরত থানভী রাহ. ইসলামের পূর্ণাঙ্গ কাঠামো পেশ করার জন্যই লিখেছেন। কিন্তু এসব কিতাব আমাদের নেসাবে নেই। মুতালাআ ঐচ্ছিক। কেউ পড়ি কেউ পড়ি না। কেউ চেহারাও দেখি না। তাখাসসুসের তালিবে ইলম, কিন্তু এই কিতাবগুলোর চেহারাও দেখি না। অথচ এগুলো হচ্ছে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অবয়ব পেশ করার জন্য একেবারেই আলিফ-বা-তা-সা (প্রাথমিক পর্যায়ের কিতাব)। তাখাসসুস তো পড়ছি ঠিক- কিন্তু আল ফিকহুল আম লিদ্দীন আসছে না। এটা শুধু নেসাবের মাধ্যমে আসে না। এর জন্য আমাকে ভিন্ন মেহনত করতে হবে। অনেক কিছু উস্তাযকে দেখে শিখতে হবে। উস্তাযকে মুতালাআ করতে হবে।
সেজন্যই তাফাক্কুহ ফিদ্দীনের কথাটা আমাদের যেহেনে থাকা দরকার। হযরত মুফতী শফী রাহ. বলেছেন, এটাই আমাদের ইলম হাসিলের মনযিল। এই মনযিলে আমি পৌঁছতে পারলাম কি না- সেটাই হলো মুখ্য বিষয়। আমি দাওরা পড়লাম কি না। দাওরার পরে আরো কয়েকটা তাখাসসুস করলাম কি না সেটা মুখ্য নয়। এগুলোতো সবই ইলম হাসিলের তরীক বা রাস্তা। আমি এই রাস্তা অতিক্রম করে মনযিলে পৌঁছলাম কি না সেটাই হচ্ছে দেখার বিষয়। আমার নিজের ইলমের হিসাব মিলাতে হবে।
চাই ইলমের মুহাসাবা
শুধু নিজের আমলের হিসাব নিলেই হবে না। তালিবে ইলমকে তার ইলমের মুহাসাবা করতে হবে, ইলমের হিসাবও নিতে হবে। তালিবে ইলমের ইলম যদি তার আমলের চেয়ে ভিন্ন কিছু হয়- তাহলে তো তার যিন্দেগিই বরবাদ। যে তালিবে ইলম মনে করে তার ইলম তার আমলের জুয বা অংশ নয়, তার তো যিন্দেগিই বরবাদ। তার দিনরাতের ২৪ ঘণ্টার কত ঘণ্টা ব্যয় হয় ইলমের মধ্যে? তো তার ইলম যদি শুধুই ইলম হয়- আমলের জুয না হয় তাহলে কী হবে তার অবস্থা! ওয়াজিবের পর দুই রাকাত ইশরাক পড়তে পারলে, আওয়াবীন পড়তে পারলে ওটাকেই যদি সে আমল মনে করে আর সারাদিন যে সিংহভাগ সময় ব্যয় করল ইলমের মধ্যে, ওটাকে যদি সে আমল মনে না করে, যার ধারণা ইলমের ব্যাপারে এ রকম-সে তালিবে ইলমের তো যিন্দেগিই বরবাদ। এভাবে ভাবলে তো ইলমের মধ্যে থাকার কারণে তার পুরা যিন্দেগিই বিলা-আমল। এরকম ধারণা আসলে জাহেলী ধারণা। ইলমের জন্য মেহনতকে আমলের জুয মনে না করা জাহেলি ধারণা। ইলমের এ মেহনত তো গুরুত্বপূর্ণ আমল। ইলমের জন্য সময় ব্যয়, একটা মাসআলার তাহকীকের জন্য কিতাবের পৃষ্ঠা উল্টানো- এটা গুরুত্বপূর্ণ আমল। আমলে সালেহের শীর্ষস্থানীয় প্রকারগুলোর মধ্যে এটি একটি। আমি যদি আমার ইলমের মুহাসাবা না করি তাহলে তো আমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমলেরই মুহাসাবা করলাম না।
সুতরাং আমাকে আমার ইলমী হালাতের মুহাসাবা করতে হবে। সাধারণভাবে আমলী হালতের যেমন মুহাসাবা করতে হয় সেভাবে ইলমী হালতেরও মুহাসাবা করতে হবে। আর ওই মুহাসাবা করতে গেলে শুধু এই হিসাব নিলে হবে না যে, কয়টা কিতাব মুতালাআ করেছি, তাখাসসুসের বিভিন্ন পরীক্ষায় আমার নতীজা কী হয়েছে? এটাও অবশ্য হিসাবের অংশ। কিন্তু শুধু এই হিসাবটুকু করলেই হবে না। বরং আমার ইলমের মনযিল যে তাফাক্কুহ ফিদ্দীন সেটার কতটুকু অংশ আমি হাসিল করেছি সেটা আমাকে হিসাব করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সেই তাওফীক নসীব করুন।
তাহকীকের মূল মাসদার পর্যন্ত পৌঁছার মেহনত
তাখাসসুস কিংবা ইফতা বিভাগের তালিবে ইলম ভাইয়েরা যেহেতু ফতোয়ার তামরীন করছেন তারা তো আসাতিযায়ে কেরামের হেদায়াত ও পথনির্দেশনা পাচ্ছেনই। উস্তাযদের কাছে তারা যেসব কথা পেয়ে থাকেন সেরকমই আরো একটি কথা- হতে পারে অন্য ভাষায়-আমি আরয করার চেষ্টা করছি। আল্লাহ আমাকে এবং আমার তালিবে ইলম ভাইদেরকে ফায়দা পৌঁছান।
সেরকম একটি বিষয় হচ্ছে, কিতাবের মুরাজাআতে মূল মাসদার পর্যন্ত পৌঁছার চেষ্টা। মূল উৎস-কিতাব দেখা। মুরাজাআতের ক্ষেত্রে একটি বিষয় যদি আমরা যেহেনে রাখি, যতক্ষণ পর্যন্ত সময় আছে সাধারণভাবে তাহকীকের তামরীন করতে চাইলে অনেকগুলো শর্তের একটি এটা যে, যতক্ষণ পর্যন্ত মূল মাসদার বা উৎস পর্যন্ত পৌঁছার আমার সুযোগ আছে এর আগের স্টেশনে আমি থামব না। যেমন : কোনো মাসআলার জন্য আমি রদ্দুল মুহতার খুললাম। রদ্দুল মুহতারে ‘আল বাহরুর রায়েকের’ হাওয়ালা দেয়া আছে। ‘বাহর’ পর্যন্ত পৌঁছার আমার অবকাশ আছে। যাব বাহরে। নাহলে কেন থেমে থাকব? ফতহুল কাদীরের যেখানে হাওয়ালা দেয়া আছে। ফাতহুল কাদীরে পৌঁছার অবকাশ আমার আছে। দেখব ফাতহুল কাদীর। ফাতহুল কাদীরে হাওয়ালা দেওয়া হল মাবসুতের। মাবসুত আছে। মাবসুতে সারাখসী আছে। মাবসুতে দেখা গেল হাওয়ালা দেয়া হয়েছে ইমাম মুহাম্মাদ রাহ.-এর। ইমাম মুহাম্মাদ রাহ.-এরও অনেক কিতাব ছাপা হয়ে গেছে। কিতাবুল আসল -ইমাম মুহাম্মাদ রাহ.। আগে আবুল ওয়াফা আফগানী রাহ. কত মেহনত করে সেটার দুই-চার খণ্ড ছেপেছিলেন। এক মর্দে মুজাহিদ ছিলেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! পুরা যিন্দেগী মেহনত করে কাটিয়েছেন ফিকহে হানাফীর মৌলিক গ্রন্থগুলো কিভাবে তালিবে ইলমদের হাতে তুলে দেয়া যায়। কত মাখতুতাত (পাণ্ডুলিপি) তিনি জমা করেছিলেন। তাঁর লাইব্রেরী পাওয়া যাবে ‘লাজনাতু ইহয়ায়ে মাআরিফে নু’মানিয়া’ হায়দারাবাদে। এই ‘লাজনা’ বা সংস্থা মানে তিনি নিজে একাই। তিনি বলে গিয়েছেন, তিনি পুরো ‘কিতাবুল আসার’ পাননি। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ পরে পুরোটাই পাওয়া গেছে এবং সেটা ১৩ খণ্ডে ছেপে গেছে। এ দেশেও সেই কিতাবের অনেক নুসখা এসে গেছে। সুতরাং কিতাবুল আসলেরও মুরাজাআত করা যাবে।
এভাবে যতক্ষণ পর্যন্ত আমার গোড়ায় যাওয়ার অবকাশ আছে, আগের স্টেশনে আমি থামব না। গোড়ায় যেতে থাকব। যার বক্তব্য তার কিতাব থেকে দেখার চেষ্টা করব। যদি দেখি ইমাম মুহাম্মাদ সেখানে বলেছেন- سمعت أبا حنيفة (ইমাম আবু হানিফা থেকে আমি শুনেছি) তাহলে ইমাম আবু হানিফা আর আমার মাঝে কোনো ইনকিতা’ বা বিচ্ছিন্নতা রইল না। ইমাম মুহাম্মাদ রাহ.-এর থেকে প্রসিদ্ধি ও তাওয়াতুরের সঙ্গে যে কিতাব প্রমাণিত সে কিতাবেই আমি পেয়ে গেছি قال أبو حنيفة /سمعت أبا حنيفة ইমাম আবু হানিফা রাহ. কী বলেছেন কোন ভাষায় বলেছেন। এখন ইতমিনান হল। এই ইতমিনান সব জায়গায় এভাবেই করতে হবে, মুরাজাআত করতে গিয়ে কিতাবুল আসলের এদিকের কোনো কিতাবের উপর ইতিমাদ করা যাবে না- তা কিন্তু আমি বলছি না। আমি বলছি তাহকীকের জন্য এই মেযাজ পয়দা হতে হবে এবং এভাবে মুরাজাআর ফায়দাও ইনশাআল্লাহ প্রকাশ পাবে।
সুতরাং এভাবে মুরাজাআ করে মূল মাসদার বা উৎস-কিতাব পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করা চাই। এটা তাহকীকের জন্য খুবই জরুরি। অবশ্য তাহকীক কেবল এর দ্বারাই হবে না। তাহকীকের জন্য আরো বিভিন্ন শর্ত রয়েছে। তবে এটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। ব্যস্ এতটুকুই আজ আরয করলাম। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফীক দিন।
[২৮ রজব ১৪৩৬ হি. সোমবার তালিবে ইলমদের একটি মজলিসে প্রদত্ত বয়ান]
অনুলিখন : শরীফ মুহাম্মদ