ওভাবে নয় এভাবে বলুন
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ দ্বীন। ইসলামের এই পরিচয় তার অকাট্য ও স্বতঃসিদ্ধ বিষয়াদির অন্তর্ভুক্ত। প্রত্যেক কালেমা পাঠকারী মুলমানের এ বিষয়টি জানা থাকা অপরিহার্য। এ প্রসঙ্গে আলকাউসারে বেশ কিছু আলোচনা প্রকাশিত হয়েছে। গত সংখ্যায় (আগস্ট ’০৮) পৃ. ৪১ এবং জুমাদাল উখরা ১৪২৯ হি. (৭-৮) সংখ্যায়ও পৃ. ৭-৮ এ বিষয়ে লেখা হয়েছে। এখন আমি যে কথাটা আরয করতে চাই তা হচ্ছে, উপরোক্ত বিষয়টা ব্যক্ত করার জন্য অনেকে নিম্নোক্ত বাক্য ব্যবহার করে থাকেন : ‘ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন-ব্যবস্থা’ বাক্যটি খুবই প্রচলিত। আমি সাইয়্যেদ আবুল আ’লা মওদুদী মরহুম (১৯০৩ ঈ.-১৯৭৯ ঈ.)-এর একজন অনুসারীকে শুনেছি, তিনি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে কাউকে লক্ষ করে বলছিলেন, ‘এ বাক্যটি আজ সবাই ব্যবহার করে থাকে, কিন্তু জানেন এর প্রথম ব্যবহার কে করেছিলেন?’
কথাটা সত্য। আমাদের জানামতে এ বাক্যটা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের কোনো মনীষীর নয় এবং বাক্যটা আপত্তিকর। কেননা, এখান থেকে যে মর্ম নির্গত হয় তা হচ্ছে, ইসলাম শুধু একটি ব্যবস্থা ও বিপ্লবী মতবাদমাত্র কিংবা ইসলামের প্রধান বৈশিষ্ট্য এই যে, তা একটি কল্যাণকর ব্যবস্থা এবং এ পর্যন্তই। বলাবাহুল্য, এই চিন্তাধারা কুরআন-সুন্নাহর বুনিয়াদী শিক্ষা এবং ইসলামের মৌলিক চেতনার পরিপন্থী। আমাদের মতে উপরোক্ত বাক্যটি সংশোধন করে এভাবে বলা উচিত যে, ‘ইসলামে পূর্ণাঙ্গ জীবন-ব্যবস্থা রয়েছে।’ অর্থাৎ ইসলাম শুধু জীবন-ব্যবস্থার নাম নয়; বরং ইসলামের অনন্যসাধারণ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের একটি এই যে, সে তার অনুসারী ও আস্থাশীলদেরকে একটি পূর্ণাঙ্গ শরীয়ত ও পরিপূর্ণ সংস্কৃতি প্রদান করেছে, যার মধ্যে সকল প্রশ্নের উত্তর এবং জীবনের সকল ক্ষেত্রের যথার্থ নির্দেশনা বিদ্যমান রয়েছে এবং যা সকল শ্রেণীর ও সকল যুগের মানবতার জন্য অনুসরণযোগ্য এবং যাতে সকল শ্রেণীর কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
মোটকথা, নিখুঁত ও পূর্ণাঙ্গ জীবন-ব্যবস্থা পেশ করা ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য তবে একমাত্র বৈশিষ্ট্য নয়। এটি ইসলামের অনেক বড় অংশ তবে এটিই পূর্ণ ইসলাম নয়।