কুরআন মজীদের আলো
‘এবং আল্লাহ তোমাদেরকে নির্গত করেছেন মাতৃগর্ভ থেকে এমন অবস্থায় যে, তোমরা কিছুই জানতে না। তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি এবং হৃদয়, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।’-সূরা নাহল ৭৮
মহাকাশ কাকে বলে?
বাংলায় মহাকাশ, ইংরেজীতে স্পেস (ংঢ়ধপব)। মহাকাশকে অন্তহীন, বিস্তীর্ণ শূন্যস্থান বলে বর্ণনা করা হয়। এর মধ্যেই রয়েছে সৌরজগত বা সৌরমন্ডল, সব নক্ষত্রমন্ডল, আর এসব নক্ষত্রমন্ডলের মধ্যবর্তী সব শূন্যস্থান। নক্ষত্রবিদরা ‘নিকটবর্তী’ গ্রহ-নক্ষত্রের মধ্যাকর্ষণ জনিত প্রভাব অনুসারে মহাকাশের অঞ্চলগুলোর নাম নির্ধারণ করেন।
গ্রহগুলোর মধ্যবর্তী অঞ্চলকে বলা হয় ইন্টারপ্ল্যানেটারি স্পেস বা গ্রহগুলোর মধ্যবর্তী মহাকাশ। সূর্যের মধ্যাকর্ষণ যতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত আছে, তার সম্পূর্ণ এলাকাই গ্রহগুলোর মধ্যবর্তী মহাকাশের অন্তর্ভুক্ত।
বিভিন্ন নক্ষত্রের মধ্যবর্তী স্থানকে বলা হয় ইন্টারস্টেলর স্পেস বা নক্ষত্রগুলোর মধ্যবর্তী মহাকাশ। সূর্য থেকে তার নিকটতম নক্ষত্র, প্রক্সিমা সেন্টারির দূরত্ব প্রায় ৪.৪ আলোকবর্ষ (ষরমযঃুবধৎ)। ঠিক এভাবে অন্যান্য নক্ষত্রগুলোর মধ্যবর্তী অঞ্চলকেও ইন্টার স্টেলার বলা হয়।
গ্যালাক্সি বা ছায়াপথগুলোর মধ্যবর্তী অঞ্চলকে ইন্টার গ্যালাটিক স্পেস বলা হয়। এ অঞ্চল সবদিকেই এত বেশি দূর পর্যন্ত বিস্তৃত যে, তা কল্পনাতীত। এভাবে এ সীমাহীন আকাশকেই মহাকাশ বলা হয়।
সম্প্রতি মার্কিন ও ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নতুন একটি গ্যালাক্সি খুঁজে পেয়েছেন। আর সেই সঙ্গে মহাকাশের সীমারেখা তারা টেনে দিলেন আরো পিছনের দিকে। ১২.৩ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত নব আবিষ্কৃত এ গ্যালাক্সিটি কার্যত একটি শিশু গ্যালাক্সি। এর দূরত্ব পৃথিবী থেকে ১২.২ বিলিয়ন আলোকবর্ষ। -সূত্র:দৈনিক নয়া দিগন্ত ৯.৩.০৫ঈ.
সত্যিই তিনি মহিমান্বিত।
‘মহামহিমান্বিত তিনি, সর্বময় কর্তৃত্ব যার করায়ত্ব। তিনি সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল। যনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সপ্তাকাশ। দয়াময় আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি কোনো খুঁত দেখতে পাবে না। তুমি আবার তাকিয়ে দেখ, কোনো ত্রুটি দেখতে পাও কি? অতঃপর তুমি বারবার দৃষ্টি ফিরাও, সেই দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে। আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা দ্বারা এবং সেগুলোকে করেছি শয়তানের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ এবং তাদের জন্য প্রস্ত্তত রেখেছি জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তি। -সূরা মূলক ১-৫
কেমন ছিলেন তাঁরা
হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ. ১৩৯৬ হিজরীর রমযান মাসে অত্যন্ত অসুস্থ ও শয্যাশায়ী ছিলেন। গোটা রমযান অসুস্থ অবস্থায় কেটে গেল। রমযানের শেষ দশকে একদিন বললেন, আমার অবস্থাও আশ্চর্য! লোকেরা রমযান মাসে মৃত্যুবরণ করার তামান্না করে। এই পবিত্র মাসের খায়র ও বরকতের কারণে আমারও আরজু এই যে, মৃত্যু তো আসবেই, তা এ মাসে এলেই তো ভালো, কিন্তু যখন এ বিষয়ে দুআ করতে মনস্থ করি তখন দুআ করতে পারি না। যখনই দুআ করার ইচ্ছা করি তখনই এই চিন্তা হয় যে, রমযান মাসে যদি আমার মৃত্যু হয় তাহলে আমার প্রিয়জন ও বন্ধুবান্ধবদের কষ্ট বেশি হবে। প্রিয়জনের বিয়োগব্যাথা তো রয়েছেই রোযাদার অবস্থায় গোসল ও কাফন-দাফনে অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি কষ্ট হবে। এজন্য অন্তর প্রস্ত্তত হয়নি যে, নিজের একটা আরজু পূরণের জন্য সঙ্গীদের কষ্ট বাড়িয়ে দেই। এরপর তিনি উর্দূ ভাষায় একটি পংক্তি পড়লেন, যার তরজমা এই যে, সারা জীবন এই সতর্কতার মধ্যে কেটে গেল যে, এই নীড়খানি বাগানের কোনো পুষ্পবৃক্ষে ভারী যেন না হয়ে যায়। (যিকর ও ফিকর, পৃ. ২৩)