জাতীয় নির্বাচন : নির্বাচনে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দিন
অনেক জল্পনা কল্পনার পর দেশে নির্বাচনের আবহ সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন তৎপরতাও পরিলক্ষিত হচ্ছে। বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন না ঘটলে এই ধারা ধীরে ধীরে জোরদার হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। স্বভাবতই এখন প্রার্থী মনোনয়নের প্রশ্ন আসবে। আমরা মনে করি, সকল রাজনৈতিক দলেরই সচেতন ও সাহসী হওয়া দরকার। প্রার্থী মনোনয়নে তুলনামূলক সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এক-এগারোর পরবর্তী সময়ে দেশের জনগণ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের যে অবস্থা দর্শন করেছেন তার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, অন্তত কিছুটা হলেও নিষ্ঠা ও সততার প্রতিফলন যেন এ অঙ্গনে ঘটে-এটাই কামনা।
দুর্নীতি ও ভেজাল এবং মিথ্যাচার ও অশ্লীলতায় গোটা দেশ যেভাবে সয়লাব হয়ে গিয়েছে তাতে কিছু যোগ্য, সৎ ও সাহসী ব্যক্তির বলিষ্ঠ নেতৃত্ব অতি প্রয়োজন। আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে কীভাবে এটা সৃষ্টি হতে পারে তা ভেবে দেখা দরকার।
রাজনৈতিক দলের কর্ণধাররা এবং দেশের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যারা রয়েছেন তারা যদি নিষ্ঠার সঙ্গে ভাবেন তাহলে দেশের কল্যাণ সাধিত হবে বলে আমরা মনে করি।
মূর্তি ও ভাস্কর্য
আশ্চর্য! আশ্চর্য!! আশ্চর্য!!!
এভাবে বিস্ময় প্রকাশ করা ছাড়া আর কী করার আছে? আমাদের দেশের কিছু শিক্ষিত মানুষ ভাস্কর্যের সম্পর্কে যে কথাগুলো বলছেন তাতে বিস্মিত হওয়া ছাড়া উপায় নেই। তারা যদি অন্তত এটুকু না বলতেন যে, ‘এটা ইসলামেও গ্রহণযোগ্য’ তবে সেটা তাদের জন্য ভালো হত। এভাবে নিজেদের বিশ্বস্ততা ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কী কারণ থাকতে পারে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
মূর্তি ও ভাস্কর্য ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়-এটা কুরআন সুন্নাহর স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন বিধান। এ বিষয়ে গোটা মুসলিম উম্মাহর ইজমা রয়েছে। অতএব এ ধরনের স্পষ্ট একটা বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করা যে ব্যক্তির ভাবমূর্তিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে এটা ওই বন্ধুদের বোঝা উচিত ছিল।
এ প্রসঙ্গে এক আশ্চর্য প্রমাণ পেশ করতে দেখা গেছে। দু’তিনটি দৈনিক পত্রিকায় একযোগে দেখানো হয়েছে মুসলিম দেশগুলোর কোথায় কোথায় ভাস্কর্য রয়েছে তার একটা তালিকা !
তদ্রূপ মুসলিম সমাজে বরেণ্য কিছু ব্যক্তির সমাধিতে স্থাপিত কিছু ভাস্কর্যের কথাও এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু একজন সাধারণ মুসলমানও এটা বোঝেন যে, এভাবে কোনো বিষয়কে ইসলামসম্মত বলা যায় না। তাহলে তো ইসলামে কোনো হারাম কাজ আর হারাম থাকবে না। আর বরেণ্য ব্যক্তিদের সমাধিতে স্থাপিত হয়েছে বলেই যদি ভাস্কর্য ইসলামসম্মত হয়ে যায় তবে তো সব ধরনের শিরকও ইসলামসম্মত হয়ে যায়?! (নাউযুবিল্লাহ) বিভিন্ন অলি-আউলিয়ার মাযারে যেসব কর্মকান্ড জাহেল লোকদের মাধ্যমে প্রচলিত তাকেও কি আমাদের ওই বন্ধুরা ইসলামসম্মত বলবেন?
কেউ কেউ মূর্তি ও ভাস্কর্যের পার্থক্য বয়ান করছেন- মূর্তি হল পুজার উপকরণ কিন্তু ভাস্কর্য শিল্পের! আশ্চর্য বিষয় এই যে, ওই বন্ধুরা লক্ষই করছেন না যে, কুরআন ও হাদীসে ‘মূর্তি বা ‘ভাস্কর্য’ কোনো শব্দই উচ্চারিত হয়নি। যে শব্দগুলো সেখানে ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো মূর্তি ও ভাস্কর্য দুটোকেই নির্দেশ করে।
আমরা আশা করি, আমাদের শিক্ষিত ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণী এভাবে তাদের সততা ও বিশ্বস্ততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না।