পাখি ও মানুষ
গত ১৫ জানুয়ারি ইউএস এয়ারলাইন্সের একটি অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী বিমান একঝাঁক বালিহাসের সামনে পড়ে গিয়েছিল। দুটো হাস বিমানের ইঞ্জিনে ঢুকে পড়ায় বিমানটি জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয় হার্ডসন নদীতে। অল্পের জন্য প্রাণে বেuঁচ যান বিমানের যাত্রীরা। শায়খ আলী তানতাভী এ ধরনের একটি বিমান দুর্ঘটনার উপরই তার এই লেখাটি লিখেছিলেন অনেক দিন আগে। প্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় লেখাটির অনুবাদ সামান্য পরিবর্তনসহ পেশ করা হল।
আমার ধারণা, অধিকাংশ পাঠকই গত দুই সপ্তাহ আগের খবরটি পড়েছেন এবং একজন ভদ্র মানুষ যেভাবে পথের ধারের হট্টগোলে যোগ না দিয়ে শান্তভাবে হেটে চলে যান সেভাবেই তারা অন্য শিরোনামে চলে গিয়েছেন। খবরটি ছিল, একটি চলন্ত যাত্রীবাহী বিমানের সামনে হঠাৎ একটি বিশাল পাখির ঝাঁক এসে পড়ে এবং অল্পের জন্য বিমানটি যাত্রীসমেত বিধ্বস্ত হওয়া থেকে রক্ষা পায়।
আমি কিন্তু খবরটি পড়ে অবাক হয়েছি এবং চিন্তা করেছি। এই পাখিগুলো কীভাবে একতাবদ্ধ হল? কোথায় পেল তারা ঐক্যবদ্ধতার শিক্ষা? এরপর এই ছোট ছোট পাখির ঝাক তাদের আরও ছোট ছোট ডানা নিয়ে কীভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ল বিশাল দুটি ইস্পাতের ডানার উপর? আর তাদের নরম তুলতুলে দেহ ও সামান্য ঠোটের সংঘর্ষে এই বিশাল যন্ত্র-দানবকে মৃত্যুর মুখোমুখি করে দিল? অথচ ...
অথচ আমরা আরব, সংখ্যায় আশি মিলিয়ন, যাদের আছে বিদ্যা, আছে বুদ্ধি, আছে রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রপুঞ্জ। আছে কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি। আছেন বাকপটু ভিসি এবং বুদ্ধিজীবী। বাক্যচালনায় যারা সেনাবাহিনীকে পর্যন্ত পরাস্ত করার ক্ষমতা রাখেন। অথচ ...
অথচ এখনও আমরা না ঐক্যবদ্ধ হতে পারলাম আর না আমাদের ছয় দেশের সম্মিলিত বাহিনীর দ্বারা ওই আরোপিত রাষ্ট্রের কর্ণধারদের কোনো কিনারা করতে পারলাম! ...
দশহাজার ক্ষুদ্র পাখির যে শক্তি ও বীরত্ব, তা-ও কেন নেই আশি মিলিয়ন আরবের? কিংবা পাঁচশ মিলিয়ন মুসলিমের? ভাবুন, পাঁচশ মিলিয়ন মুসলিম!!
এই সংখ্যাটা যদি হত চারপেয়ে কোনো অবোধ প্রাণীর তবুও তো পৃথিবীর কোনো শক্তি তাদেরকে জবাই করে শেষ করতে পারত না! তাদের রক্তের তোড়েই ভেসে যেত ওই দেশ।
যদি সংখ্যাটা হত কোনো পাখির ঝাঁকের তাহলে পৃথিবীর কোনো প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীও এদেরকে নির্মূল করতে পারত না!
কিন্তু আমাদের কী হল? কী আমাদের ভাগ্যলিপি? আমরা কি হারিয়ে ফেলেছি আমাদের প্রতিভা? কিংবা ভুলে গেছি আমাদের অতীত? অথবা আমাদের বিত্ত ও নেতৃত্বই আমাদের দুর্ভাগ্য?
আমাদের নেতৃত্বই কি আমাদের দুর্ভাগ্য?#