নতুন শিক্ষাবর্ষ : চাই নতুন উদ্দীপনা ফেতনা মোকাবেলার জন্য নিজেকে প্রস্ত্তত করুন
শাওয়াল মাস থেকে আমাদের শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়। নতুন বছরের সূচনায় সবকিছুতেই নতুনত্ব চোখে পড়ে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নতুন উৎসাহ, নতুন উদ্দীপনা। কেননা নবউদ্দীপনায় নতুন বর্ষের সূচনা হলে তা ইলমের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য খুবই সহায়ক। ইলমের লক্ষ্য হল ‘তাফাক্কুহ ফিদ্দীন’, ‘রূসুখ ফিলইলম’ ও আল্লাহ তাআলার ভয়-তাকওয়া। সূরা তাওবার আয়াত : ১২২, সূরা আলে ইমরানের আয়াত : ৭ ও সূরা ফাতিরের আয়াত : ২৮ মনোযোগ দিয়ে লক্ষ করলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে যাবে।
ইলম বিল্লাহ (আল্লাহকে জানা) ও ইলম বিআমরিল্লাহ’ (আল্লাহর বিধান জানা) এই দুই গুণে গুণান্বিত ব্যক্তি গড়ে তোলাই মাদরাসাসমূহের উদ্দেশ্য। এমন ব্যক্তিরাই হয়ে থাকেন নবীর ওয়ারিছ এবং তাঁদের সম্পর্কেই হাদীস শরীফে বলা হয়েছে-
يحمل هذا العلم من كل خلف عدوله، ينفون عنه تحريف الغالين، وانتحال المبطلين، وتأويل الجاهلين.
অর্থ : এই ইলমকে ধারণ করবে প্রত্যেক উত্তর প্রজন্মের আস্থাভাজন শ্রেণী। তাঁরা একে মুক্ত রাখবে সীমালঙ্ঘনকারীদের বিকৃতি থেকে, বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচার থেকে এবং মূর্খদের অপব্যাখ্যা থেকে।’-শুআবুল ঈমান-বাইহাকী; মুকাদ্দিমাতুত তামহীদ
সাধারণভাবে যে কোনো ফেতনা মোকাবেলার যোগ্যতা একজন তালিবে ইলমের থাকা উচিত। আর ইলমী ফেতনা মোকাবেলা তো আলেম ছাড়া অন্যদের পক্ষে সম্ভবও নয়। অথচ এখন আলেমদের মাঝেও ইলমী ফেতনা মোকাবেলা করার মতো ব্যক্তি ‘আনকা’র মতোই দুর্লভ হয়ে পড়েছে। এর কারণ এই যে, উলামার জামাত তো তালাবার জামাত থেকেই বের হয়ে থাকে। আর তালাবারা এখন সাহস হারিয়ে ফেলছে। নিজেদেরকে বেকার ও অকর্মণ্য মনে করছে। যা একটি বড় গুনাহ। এজন্য তারা নিজেদেরকে ‘উদূলুল খালাফ’ বা ‘নিজ প্রজন্মের বিশ্বস্ত শ্রেণী’র অন্তর্ভুক্ত করে ফেতনা মোকাবেলায় পূর্বসূরীদের ওয়ারিছ হতে চায় না। কেন? শুধু এ কারণে যে, এ আসনে উন্নীত হওয়ার জন্য মেহনত প্রয়োজন; অলসতা, উদাসীনতা ও গতানুগতিকতা ত্যাগ করা প্রয়োজন; নিজের ইচ্ছা ও চাহিদাকে কোরবান করা প্রয়োজন; সর্বোপরি ইলম, আমল ও আখলাক সকল ক্ষেত্রে
মুহাসাবার যিন্দেগী অবলম্বন করা প্রয়োজন এবং নিজেকে কোনো মুশফিক ও মুবাচ্ছির মুরবিবর হাতে সঁপে দেওয়া প্রয়োজন। আর এর সবগুলোই এত কঠিন যে, তালাবার মধ্যে সেই শক্তি ও সাহস কোথায়?
হে বন্ধু! এই দুনিয়া তো অল্প কয়েক দিনের। এই ক্ষুদ্র জীবনকে খাহেশাতের জীবন বানিয়ে কোনো লাভ নেই। দুনিয়া তো প্রতিকূলতার বসতি। শত চেষ্টা করেও এখানে একভাগ ইচ্ছাও পূরণ করা সম্ভব নয়। উপরন্তু যারা সুন্নতী সূরত ও সুন্নতী লেবাস ধারণ করেছি এবং তালাবার খাতায় নাম লিখিয়েছি তাদের মাঝে ও খাহেশাতের মাঝে তো রয়েছে বাধার বিন্ধ্যাচল। তাই অল্প কদিনের ভোগের পর অনন্ত জীবনের দুর্ভোগ গ্রহণ করা হবে বড়ই নির্বুদ্ধিতা। বুদ্ধিমানের কাজ হবে, এমন পথ অবলম্বন করা, যাতে কয়েক দিনের কষ্ট-কুরবানী হবে আর আজীবনের জন্য হবে সুখ-শান্তি।
وَأُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ غَيْرَ بَعِيدٍ هَذَا مَا تُوعَدُونَ لِكُلِّ أَوَّابٍ حَفِيظٍ مَنْ خَشِيَ الرَّحْمَنَ بِالْغَيْبِ وَجَاءَ بِقَلْبٍ مُنِيبٍ ادْخُلُوهَا بِسَلَامٍ ذَلِكَ يَوْمُ الْخُلُودِ لَهُمْ مَا يَشَاءُونَ فِيهَا وَلَدَيْنَا مَزِيدٌ
তরজমা : আর মুত্তাকীদের জন্য জান্নাতকে এত নিকটবর্তী করে দেওয়া হবে যে, কোনো দূরত্বই থাকবে না। (এবং বলা হবে,) এই সেই জিনিস, যার প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে (এভাবে) দেওয়া হত যে, এটা প্রত্যেক এমন ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহর অভিমুখী থাকে (এবং) নিজেকে রক্ষা করে চলে। যে দয়াময় আল্লাহকে ভয় করে তাঁকে না দেখেই এবং আল্লাহর দিকে রুজুকারী অন্তঃকরণ নিয়ে আসে। তোমরা এতে প্রবেশ কর শান্তির সাথে। সেটা হবে অনন্ত জীবনের দিন এবং তারা (অর্থাৎ জান্নাতবাসীগণ) তাতে পাবে এমন সব কিছু, যা তারা চাবে এবং আমার কাছে আছে আরও বেশি কিছু। (সূরা কাফ (৫০) : ৩১-৩৫)
ارزوئيں خون ہوں يا حسرتيں پامال ہوں
اب تو اس دل كو بنانا ہے ترے قابل مجهے
شادى وغم سے دو عالم كى مجهے آزاد كر
اپنى درد وغم سے يا رب دل كو مرے شاد كر
সকল কামনা উৎসর্গিত হোক, সকল বেদনা লাঞ্ছিত হোক/এখন তো আমার হৃদয়টাকে তোমার উপযোগী বানাতে হবে
দো’ জাহানের সুখ-দুঃখ থেকে আমাকে নিষ্কৃতি দাও/তোমার ব্যাথা ও দুখে হে রব! আমার হৃদয়কে আনন্দিত কর।
মনে রাখবেন, বর্তমানে ইলমী ফেতনার (ইলম ও গবেষণার আড়ালে জেগে ওঠা ফেতনাসমূহের) কোনো শেষ নেই। আমি এখানে শুধু চারটি ফেতনার দিকে আপনাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাই।
ক) আলমানিয়াত (সেক্যুলারিজম)-এর ফেতনা।
খ) মুসতাশরিকীন ও মুবাশশিরীন অর্থাৎ প্রাচ্যবিদ ও খৃস্টান মিশনারীদের ফেতনা।
গ) মুনকিরীনে হাদীস, আহলে বিদআত ও ফিরাকে বাতেলার ফেতনা।
ঘ) ওলামাদের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করার ফেতনা।
শেষোক্ত ফেতনায় বাইরের দেশের বিভিন্ন জামেয়া থেকে শিক্ষাগ্রহণকারী এমন কিছু লোকও নিজের অজান্তেই লিপ্ত হচ্ছে, যারা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় ‘মুখতালাফ ফীহ’ (মতভেদপূর্ণ) মাসআলায় একপেশে বিধান শোনাতে অভ্যস্ত। অথচ এসব মাসআলায় সাহাবা যুগ থেকেই মতভেদ হয়ে আসছে। উপরন্তু সেসব বিষয়ের অধিকাংশ মতভেদ হচ্ছে শুধু সুন্নাহর বিভিন্নতা (তানাউওয়ে সুন্নাহ)। প্রকৃতপক্ষে তা কোনো মতভেদই নয়। আর কিছু মতভেদ হচ্ছে দলীল অনুধাবন বা
বিভিন্ন দলিলের মাঝে প্রাধান্যপ্রাপ্ত দলিলটি নির্ধারণ বিষয়ক মতভেদ। এসব বিষয়ে একপেশে বিধান শোনানো, বিশেষ করে এদেশের মানুষের কর্মপন্থার বিপরীত বিধান বলা বড়ই গর্হিত কাজ। কেননা এই বিধান বর্ণনা তো তখনই কোনো নেক আমল হিসেবে গণ্য হত যদি এসব মানুষের আমলের কোনো সূত্র ও সনদ না থাকত। অথচ এদেশের মানুষের আমলের সূত্র ও সনদ বিদ্যমান থাকার পরও শুধু উম্মতের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করা এবং তাদের সামনে আলেমদেরকে জাহেল আখ্যা দেওয়া গর্হিত না হয়ে কোন প্রকারের নেক আমল হবে?
তো এভাবে বিভিন্ন জামেয়া থেকে শিক্ষা সমাপণ করে এসে তারা ওলামাদের সাথে সাধারণ লোকদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে চলেছে। এটা উম্মতের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি ফেতনা।
তালিবে ইলম ভাইদের কাছে প্রশ্ন, তারা কি উপরোক্ত ফেতনাসমূহের মোকাবেলার জন্য নিজেদেরকে তৈরি করতে চান? যদি চান তবে তাদেরকে নিজ মানযিল জেনে নেওয়া অপরিহার্য। তাদের মানযিল তো শুধু পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বরে উত্তীর্ণ হওয়া নয় কিংবা হাতে কলম ধরার অনুশীলনও নয়। তাদের মানযিল তো এর চেয়েও অনেক উপরে। আর তা হল, ‘তাফাক্কুহ ফিদ্দীন’ ও রূসুখ ফিলইলম অর্জন করা এবং নিজের যুগ ও সমাজ সম্পর্কে সচেতন হওয়া আর আল্লাহর ভয় ও তাকওয়া অর্জন করা। এই মানযিলে পৌঁছার পথ হল আল্লাহর মহববত ও ইলমে ওহীর প্রকৃত ভালবাসা ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাচ্চা মুহাববত ও তাঁর অনুসরণ। আর কোনো মুশফিক ও মুবাচ্ছির তালিমী ও ইসলাহী মুরবিবর নিকট নিজেকে অর্পণ করে তাঁর তত্ত্বাবধানে ‘নাশাত’ ও উদ্দীপনার সাথে ইলমের গন্তব্যের পথে চলতে থাকা।
‘মানযিল পে জা-কে দম লেঙ্গে’ গন্তব্যে পৌঁছেই তবে ক্ষান্ত হব।
মানযিলের পথে এই সফর সহজ করার জন্য কিছু ব্যবস্থা পেশ করা হল-
১) শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামা-হাফিযাহুল্লাহু ওয়ারাআহু-এর চারটি ওসিয়ত, যা ‘মিনসিহাহিল আহাদীসিল কিসারে’র বাংলা অনুবাদের (প্রকাশনায় : মাকতাবাতুল আশরাফ, বাংলাবাজার, ঢাকা) ভূমিকায় উল্লেখ করেছি।
২) হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রশীদ নুমানী রাহ. (মৃত্যু : ১৩৩৩ হি.-১৪২০ হি.)-এর সেই উপদেশ, যা আলকাউসারের পাতায় বারবার প্রকাশিত হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন সকালে নতুন করে নিয়ত করা-হে আল্লাহ! আমার এই তালিবে ইলমী যিন্দেগীর সকল কাজ শুধু তোমার সন্তুষ্টির জন্য। তুমি সহজ করে দাও, কবুল করে নাও এবং আমাকে ইলমের মানযিলে পৌঁছে দাও।
৩) হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুমের ওইসব নসীহত, যা তিনি ১৪৩০ হি. ও ১৪৩১ হি. উভয় সফরে তালিবে ইলমদের এক বিশেষ মজলিসে করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন-
ক) প্রতিটি দিনের শুরু এমনভাবে করুন যে, সকালে অতি বিনয় ও কাতরতার সাথে আল্লাহ তাআলার কাছে দুআ করুন-ইয়া আল্লাহ! আপনি দয়া করে আমাকে আরো একটি দিবস দান করেছেন। হে আল্লাহ! দিবসটিকে আপনার মর্জি মোতাবেক অতিবাহিত করার তাওফীক দান করুন। হে আল্লাহ! আমি নিয়ত করছি, এই দিনটি আপনার মর্জি মোতাবেক কাটাব, আপনার কোনো নাফরমানি করব না। হে আল্লাহ! আপনি তাওফীক দান করুন।
খ) হাদীসে বর্ণিত দুআগুলো পড়ুন -
اللهم بك أصبحنا وبك أمسينا وبك نحي وبك نموت
ইয়া আল্লাহ! আপনার অনুগ্রহে আমি প্রত্যুষে উপনীত হয়েছি। আপনার অনুগ্রহেই সন্ধ্যায় উপনীত হয়েছি। আপনারই অনুগ্রহে বেঁচে আছি এবং আপনার আদেশেই আমার মৃত্যু হবে।-সুনানে আবু দাউদ ৭/৪০৪, হাদীস : ৫৭৬৮
اللهم إني أسألك خير هذا اليوم وخير ما بعده
ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আজকের এই দিবস ও পরবর্তী দিবসগুলোর কল্যাণ প্রার্থনা করছি।-আলমুজামুল কাবীর, তবারানী ২/২৪, হাদীস : ১১৭০
اللهم إني أسألك خير هذا اليوم : فتحه ونصره ونوره وبركته وهداه.
ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আজকের এই দিবসের বিজয় ও সাহায্য এবং আলো, প্রাচুর্য ও সুপথ প্রার্থনা করছি।-সুনানে আবু দাউদ ৭/৪১৭, হাদীস : ৫০৮৪; আলমুজামুল কাবীর, তবারানী ৩/২৯৬, হাদীস : ৩৪৫৩
হযরত মাওলানার ‘ইসলাহী খুতবাত’ (১৩/২০১-২৩৮) থেকে এই দুআগুলোর ব্যাখ্যা দেখে নিন এবং অর্থ ও মর্মের দিকে খেয়াল করে এই দুআগুলো পড়ার ইহতিমাম করুন।
এই দুআটিও পড়ুন-যদিও তা হচ্ছে যে কোনো সময়ের সাধারণ দুআ।
اللهم إن قلوبنا ونواصينا وجوارحنا بيديك، لم تملكنا منها شيئا، فإذا فعلت ذلك بنا فكن أنت ولينا، واهدنا إلى سواء السبيل.
ইয়া আল্লাহ! আমাদের হৃদয়, আমাদের ঝুঁটি, আমাদের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আপনারই কবজায়। এসবের কোনো কিছুরই মালিক আপনি আমাদেরকে বানাননি। সুতরাং আপনিই আমাদের অভিভাবক হোন এবং আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করুন।-তারীখে বাগদাদ ১৩/১৯৯; হিলয়াতুল আউলিয়া-কানযুল উম্মাল ২/১৮২
اللهم إنك سألتنا من أنفسنا ما لا نملكه إلا بك، فأعطنا منها ما يرضيك عنا.
ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাদের স্বত্তার কাছে এমন কিছু চেয়েছেন, আপনার অনুগ্রহ ছাড়া (যা পালন করার) ক্ষমতা আমাদের নেই। সুতরাং আপনি আমাদেরকে ঐ সব বিষয়ের (তাওফীক) দান করুন, যা আমাদের প্রতি আপনাকে সন্তুষ্ট করে।-ইবনে আসাকির-কানযুল উম্মাল ২/১০৫, হাদীস : ১৪৫৯
গ) সর্ববিষয়ে আল্লাহর দিকে রুজু করার অভ্যাস করুন। শুধু দুআই করতে থাকুন। ঘর থেকে বের হয়েছেন, বাহনের প্রয়োজন, দুআ করুন, হে আল্লাহ! ভালো বাহনের ব্যবস্থা করে দিন। শান্তি ও নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিন, সকল বিপদাপদ থেকে নিরাপদ রাখুন। মোটকথা, যে প্রয়োজনই হোক, আসবাব-উপকরণের উপর ভরসা না করে আল্লাহ তাআলার রহমতের দিকে মনোনিবেশ করুন এবং দুআ ও তাওয়াক্কুল অবলম্বন করুন।
ঘ) সকল বিষয়ে মাওলার সন্তুষ্টিই যেন হয় মূল লক্ষ্য।
ঙ) সব খুশিতে আলহামদুল্লিাহ, বিপদে ইন্না লিল্লাহ, আর গুনাহ হয়ে গেলে ‘আসতাগফিরুল্লাহ’ পাঠ করুন।
দ্বীনী ও দুনিয়াবী সকল প্রকার বিপদ আপদ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য আল্লাহ তাআলার আশ্রয় প্রার্থনা করুন। যেমন-
رب أعوذ بك من همزات الشياطين، وأعوذ بك رب أن يحضرون.
অর্থ : হে প্রভূ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি শয়তানের
اللهم إني أعوذ بك من الهم والحزن، وأعوذ بك من العجز والكسل، وأعوذ بك من الجبن والبخل، وأعوذ بك من غلبة الدين وقهر الرجال.
ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুঃখ ও দুশ্চিন্তা থেকে; আশ্রয় প্রার্থনা করছি অক্ষমতা ও অলসতা থেকে; আশ্রয় প্রার্থনা করছি কাপুরুষতা ও কৃপণতা থেকে; এবং আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঋণের আধিক্য ও মানুষের প্রাবল্য থেকে।
চ) দুআতে কাকুতি-মিনতি কাম্য। এটি সহনশীলতার পরিপন্থী নয়। আল্লাহ তাআলা ইবরাহীম আ.-এর দুআর অবস্থা বর্ণনা করে বলেছেন-يجادلنا
অর্থ : সে আমার সাথে ঝগড়া করছিল। অথচ তিনি তাকে সহনশীল বলে প্রশংসাও করেছেন-
ان ابراهيم لحليم اواه منيب
অর্থ : নিশ্চয়ই ইবরাহীম সহনশীল, আল্লাহর স্মরণে আহ-উহকারী এবং আল্লাহর প্রতি রুজুকারী।
ছ) ইলমের বিষয়ে অল্পেতুষ্টি কাম্য নয়। এক্ষেত্রে বরং লোভটাই কাম্য। ইলম তো নির্দিষ্ট পাঠ্যসূচি সমাপ্ত করার নাম নয়। ইলমের মানযিল হল তাফাক্কুহ ফিদ্দীন।
জ) সময়ের বিষয়ে সাবধান থাকুন এবং টুকরা সময়কেও কাজে লাগান।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই মূল্যবান নসীহতগুলোর উপর আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন ইয়া রাববাল আলামীন।
[সময়োপযোগী হওয়ায় লেখাটি সেপ্টেম্বর ’১১ থেকে পুনর্মুদ্রিত হল।]