দূর্ঘটনা: মিডিয়ার আচরণ রহস্যমুক্ত থাকাটাই কাম্য
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ইটালীর প্রধানমন্ত্রী বার্লুসকোনির ওপর হমলে পড়েছিলেন এক ইটালিয়ান নাগারিক, খালি হাতেই। একটি সম্মেলনে উপস্থিতির সময় এ ঘটনাটি ঘটে। কোনো কোনো সূত্র বলেছে, আক্রমণকারীর হাতে পাথরের একটি ছোট্ট মূর্তি ছিল, সেটি দিয়ে সে আঘাত করেছে। কেউ কেউ জানিয়েছেন, সোজা ঘুষি দিয়ে আক্রমণকারী ইটালির প্রতাপশালী প্রধানমন্ত্রীর নাক থেতলে দিয়েছে এবং দাঁত ভেঙ্গে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তাৎক্ষণিক শল্য চিকিৎসা লেগেছে। আক্রমণকারী লোকটিকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং তাকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বা ‘উন্মাদ’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সে লোকটির ক্ষোভ, দুঃখ বা বক্তব্য কিছুই জানানো হয়নি।
অপর ঘটনাটি ঘটেছে ২৪ ডিসেম্বর রাতে। ভ্যাটিক্যান সিটিতে ক্যাথলিক খৃষ্টানদের বর্তমান পোপ বেনেডিক্ট সাহেব তাদের বড় দিন পালনের অনুষ্ঠান-মঞ্চে যাওয়ার সময় এক যুবতী তার ওপর হামলে পড়ে। সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে ভিড় ঠেলে যুবতী এগিয়ে যায় এবং পোপের ওপর খালি হাতে চড়াও হয়। এতে বৃদ্ধ পোপ মাটিতে পড়ে যান। তার এক সঙ্গী পা ভেঙ্গে আহত হন। অক্ষত অবস্থায় পোপ দু’ঘণ্টার অনুষ্ঠান সমাপ্ত করেন। এক্ষেত্রেও যুবতীকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বা ‘উন্মাদ’ আখ্যা দিয়ে গ্রেফতার করে সরিয়ে নেওয়া হয়। ওই যুবতীর কোনো বক্তব্যও মিডিয়াতে আসেনি। মানসিক ভারসাম্যহীন একজন যুবতী কিভাবে এ ধরনের গুরুগম্ভীর একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারল, মিডিয়াগুলো তার কোনো ব্যাখ্যাও দেয়নি। একজন পোপের প্রতি এক যুবতীর আক্রোশ বা ক্রোধের এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ বহিঃপ্রকাশের কোনো সম্ভাব্য কার্যকারণও খুঁজে দেখার চেষ্টা করেনি মিডিয়া।
এ দু’টি ঘটনা এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনা। কারণ ঘটনা ঘটার পরপরই বলা হয়েছে আক্রমণকারী হচ্ছে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’। আমাদের স্মৃতিতে রয়েছে, বছর খানেক আগে ইরাকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশের প্রতি জুতা নিক্ষেপ করেছিলেন এক ইরাকী সাংবাদিক। তখন তাকে আঘাতে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে এবং গ্রেফতার করে বিচার ও বন্দিত্বের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বিপুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠা সেই সাংবাদিক অবশ্য এখন মুক্ত। তাকে কেন জানি তখন ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বলে ঘোষণা করা হয়নি। সেজন্য নিরস্ত্র সে ‘আক্রমণটি’ হয়ে উঠেছিল ঘটনা। ঘটনা কিংবা দুর্ঘটনা আমরা যাই বলি আর