রবিউল আউয়াল ১৪৩৫   ||   জানুয়ারি ২০১৪

এটি হাদীস নয় : আশুরার রোযা: ষাট বছর ইবাদতের সওয়াব

গত ১৪ নভেম্বর (২০১৩) দৈনিক ইনকিলাবে ধর্ম-দর্শন পাতায় পথ নির্দেশ: মুহররম ও শহীদানে কারবালা শিরোনামে একটি লেখা পড়লাম। সেখানে আশুরার রোযার ফযীলত বর্ণনা করতে গিয়ে লেখা হয়েছে, যে ব্যক্তি আশুরার রোযা রাখে সে ষাট বছর দিনে রোযা রাতে ইবাদত করার সওয়াব লাভ করে। হাদীস হিসেবে লেখা হলেও এটি হাদীস নয়। এটি একটি জাল বর্ণনা যা হাবীব ইবনে আবী হাবীব নামক এক হাদীস জালকারী  থেকে বর্ণিত। ইবনুল জাওযী রাহ. বলেন, এটা নিঃসন্দেহে মওযূ বর্ণনা। (আলমাউযূআত ২:২০৩) আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রাহ. বলেন, এটি একটি বাতিল ও ভিত্তিহীন বর্ণনা। এটা হাবীব ইবনে আবী হাবীব বর্ণনা করে। আর সে হাদীস জাল করত। (আলমানারুল মুনীফ ১:৪৭, বর্ণনা নং ৪৪) হাফেয সুয়ূতী রাহ. ও আল্লামা ইবনু আররাক রাহ. এই সিদ্ধান্তের সাথে একমত হয়েছেন। আল্লামা আবদুল হাই লখনবী রাহ. আশুরার রোযার ফযীলত বিষয়ে জাল বর্ণনার আলোচনা করতে গিয়ে শুরুতেই এই বর্ণনাটি এনেছেন। (আললাআলিল মাসনূআ ১:১৩৫; তানযীহুশ শরীআহ ২:১৪৮; আলআসারুল মারফূআ ১:৯৪)

আশুরার রোযার ফযীলত তো সহীহ হাদীসেই বর্ণিত হয়েছে। হযরত আবু কাতাদা রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি আশাবাদী যে, আশুরার রোযার কারণে আল্লাহ তাআলা অতীতের এক বছরের (সগীরাহ) গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। (সহীহ মুসলিম ১:৩৬৭; জামে তিরমিযী ১:১৫৮) সুতরাং সহীহ হাদীসে যে ফযীলত বর্ণিত হয়েছে শুধু তা-ই বলা উচিত।

আর আশুরা-কেন্দ্রিক বিভিন্ন ভিত্তিহীন বর্ণনা ও ঘটনা আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। এ বিষয়ে ইতিপূর্বে মাসিক আল কাউসারে (মুহাররম-ফেব্রুয়ারি ২০০৫) বিস্তারিত লেখা হয়েছে। 

 

 

advertisement