পার্বতীপুর : মুন্সিবাড়ির লোকেরা যেখানে খ্রিস্টান
মুসলমান দাঈ জাতি, ইসলামের দিকে ডাকা তাদের কাজ। তারা নিজেদের কাজ ভুলে গিয়ে অন্য জাতির মাদঊ তথা দাওয়াতের নিশানায় পরিণত হয়েছে। দিনাজপুরের পার্বতীপুরে তার কিছু নমুনা দেখে হৃদয়টা কেঁপে উঠল, কষ্ট পেলাম। হায়! মুসলমান খ্রিস্টান হচ্ছে!! এভাবে কতোজন চির জাহান্নমী হয়ে যাচ্ছে- যদিনা আবার ঈমানের দিকে ফিরে আসে এবং ঈমানের উপর তাদের মৃত্যু হয়।
এ অবস্থায় কে করবে তাদের জন্য ঈমানী মেহনত?
মুন্সিবাড়ির লোকজন খ্রিস্টান !
এক মাওলানা সাহেব আমাকে নিয়ে গেলেন সেখানকার মুন্সিপাড়া গ্রামে। মুন্সিপাড়া হল পার্বতীপুর শহর থেকে মাত্র ৪-৫ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত একটি গ্রাম। সেখানে মুন্সিপাড়া গ্রামের মসজিদ সংলগ্ন মুন্সিবাড়ির লোকজন এখন খ্রিস্টান। বাড়ির কর্তা একসময় মসজিদে আযান দিতেন, নামাযও পড়াতেন। কিন্তু তার ইন্তিকালের পর তার ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সাজু, তার দুই বোন ও মাসহ সপরিবারে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হন। তার দুই বোনকে বিয়েও দিয়েছেন খ্রিস্টানের সাথে । দেখা করতে গেলাম সাজু ভায়ের সাথে, দেখা হল না। জানতে পারলাম তিনি প্রচারের কাজে বাইরে গিয়েছেন। তার ভাগ্নের সাথে দেখা হল। তাকে ইসলাম ধর্মের দাওয়াত দিলাম। কথা প্রসঙ্গে তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করছিলাম, সে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছিল না।
আসরের সময় হয়ে গেল। আমরা তার বাড়ির সামনের মসজিদে আসরের নামায আদায় করলাম। তারপর ল্যাম্ব হাসপাতাল ঘুরেফিরে দেখে পার্বতীপুরের দিকে রওনা হলাম।
ল্যাম্ব হাসপাতাল
১৯৮৩ সনে এই গ্রামে স্থাপিত হয় খ্রিস্টান মিশনারীদের ধর্মপ্রচারের কেন্দ্র "ল্যাম্ব হাসপাতাল"। হাসপাতালটিতে ঢুকতেই সামনে পড়ে প্রধান ফটক। সেখানে ৪-৫ জন দারোয়ান দাঁড়ানো থাকে। প্রধান ফটকের উপরে স্টিলের পাত দিয়ে লেখা: ল্যাম্ব হাসপাতাল। সাথে একটি লোগো, লোগোটা হল বাংলাদেশের মানচিত্র, উপর দিকে (উত্তর বঙ্গের অংশে) একটি ক্রুশ চিহ্ন দেওয়া। হাসপাতালে ঢুকতেই মনোরম পরিবেশ। সারি সারি গাছ ও রকমারি ফুল শোভা পাচ্ছে হাসপাতালের আঙিনায়। হাসপাতালে ঢোকার পর প্রথমেই নজরে পড়ে একটি ওয়েটিং রুম। ভেতরে সাজানো কাঠের চেয়ার । পেছনে দেয়ালে সাটা একটি বক্স। সেখানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত করার সহযোগী কিছু পুস্তিকা। উপরে ছাপার অক্ষরে লেখা, "এই বইগুলো বিনামূল্যে পড়ার ও নেয়ার জন্য।" কিছু মানুষ এখান থেকে বই পড়ে সময় কাটাচ্ছে। যারা বই পড়তে পারে না তাদের জন্য দেয়া আছে একটি বড় রঙিন টিভি। এই টিভিতে খ্রিস্টানদের ধর্মান্তর-করণে সহযোগী এমন নাটক ও ঈসা-নবীর জীবনীর উপর বিভিন্ন চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
ওয়েটিং রুমের পাশেই একটি রিডিং রুম। এই রুমে খ্রিস্টধর্মের অনেক বই, বাইবেল, কিতাবুল মোকাদ্দস, গুনাহগারদের জন্য জান্নাতের পথ ইত্যাদি রাখা আছে। এই রুমে সর্বদা দুই তিনজন খ্রিস্টধর্মপ্রচারক থাকেন। তারা ওয়েটিং রুম থেকে দুইজন করে ডেকে নিয়ে আসেন। এনে তাদেরকে কুরআনের আয়াত পড়িয়ে ও বাইবেলের বিভিন্ন কোটেশন পড়িয়ে খ্রিস্টধর্মের দাওয়াত দেন। এভাবে অনেক মানুষ খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হচ্ছে।
হাসপাতাল থেকে বের হলাম, দেখলাম পূর্ব দিকে একটি সাদা ঘর। ঘরটির বাইরে বড় করে লাল রংয়ের ক্রুশ চিহ্ন। জানতে পারলাম এটা গির্জাঘর। আরো একটু সামনে এগোলাম। একটি টিনের মধ্যে লেখা: সংরক্ষিত এলাকা, অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষেধ। দেখা হল একজন শ্বেতাঙ্গ বিদেশী ভদ্র লোকের সাথে। লোকটির কাছে অনুমতি চাইলাম ইংরেজিতে। তিনি উত্তর দিলেন বাংলায়। আমি ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি পেলাম না। না পেয়ে ফিরে আসছি, তখন দেখি আরো কয়েকজন শ্বেতাঙ্গ বিদেশী সাইকেল চালিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছেন। আমার কৌতূহল বেড়ে গেল। এলাকার লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম তারা বাংলা ভাষা জানেন। বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে প্রকাশ্যে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করেন।
হাসপাতালে থেকে সেবা নিয়েছে এমন একজনের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম, কেউ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরপরই একজন সেবক চলে আসেন। তিনি সুন্দর সুন্দর কথা বলেন এবং খ্রিস্টানদের বিভিন্ন বই পড়ে পড়ে শোনান। সপ্তাহ শেষে তাকে দাওয়াত দেন, আমাদের একটি অনুষ্ঠানে আপনি চাইলে যেতেও পারেন। এভাবে এক সপ্তাহ সেবা পাওয়ার পর সে আর দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। ফলে চার্চে যায়, ফাদাররা যা বয়ান দেন তা শুনে অনেকে খ্রিস্টানও হয়ে যায়। অনেকে আবার নামে মুসলমান থাকলেও বিশ্বাসের দিক থেকে খ্রিস্টানে পরিণত হয়। চিকিৎসা শেষে একটি বিল হাতে ধরিয়ে দেয়, যাদের সামর্থ্য আছে তারা তো বিল পরিশোধ করেই রিলিজ নেয়। যারা বিল পরিশোধে অক্ষম তাদেরকে বলে, অমুক লোক সুপারিশ করলে তোমার বিল মাফ করে দেত্তয়া হবে। সুপারিশের জন্য যার কাছে নেওয়া হয় তিনি একজন খ্রিস্টধর্ম প্রচারক। তিনি খ্রিস্টধর্মের দাওয়াত দেন এবং একটি ফরম পূরণ করে সাইন নিয়ে সুপারিশ করে দেন এবং তার বিল মাফ করে দেত্তয়া হয়। এরপর ঐ রোগীর সাথে যোগাযোগ রাখা হয়। একপর্যায়ে তাকে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করা হয়। তারা প্রথমেই নিজেদেরকে খ্রিস্টান বলে পরিচয় দেয় না; বরং পরিচয় দেয় ঈসায়ী মুসলমান বলে। এবার পার্বতীপুরের এক মসজিদের ইমাম সাহেব এলাকার সাথীদের কাছ থেকে খোঁজ নিলে তাদের কাছে এমন আরও অনেক তথ্য পাওয়া গেল। একজন বললেন, তিন বছরে তাদের ইউনিয়নে ৪ টি নতুন গির্জা স্থাপিত হয়েছে।
সাজু ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ
দেখা করতে গেলাম মুসলমান থেকে খ্রিস্টান হওয়া সাখাওয়াত হোসেন সাজু ভাইয়ের সাথে। ডাক দেওয়ার সাথে সাথেই ব্রাশ করতে করতে বেরিয়ে এলেন। আমাদেরকে দেখেই বললেন, ও আপনারা জামাতে এসেছেন? বললাম, হ্যাঁ! তিনি বলতে লাগলেন, আমাদেরকেই তো আপনাদের দাওয়াত দেওয়া উচিত। আপনারা তো যান শুধু মুসলমানদের কাছে। আমি বললাম, জ্বী। তাইতো আপনাকে দাওয়াত দিতে এসেছি। তিনি বললেন, এখন তো আমার সময় নেই, আমি একটু বাইরে যাব, সেখান থেকে ফিরব রাতে। আমি বললাম, ঠিক আছে। তাহলে আপনার সাথে এশার নামাযের পর আলোচনা হবে। এই বলে আমরা মসজিদে ফিরে এলাম।
সাজু ভাইয়ের সাথে সংলাপ
সাখাওয়াত হোসেন সাজু। ৮ বছর আগে খ্রিস্টান হয়েছেন। তার কাছে এমন কিছু বিভ্রান্তিকর প্রশ্ন আছে যেগুলোকে তিনি তার প্রচারের কাজে নিয়মিত ব্যবহার করার চেষ্টা করেন এবং চিল্লা বা তিন দিনের জামাত এলেই তাদের সাথে খুব উৎসাহের সাথে বসেন এবং তার নির্দিষ্ট প্রশ্নগুলো করেন। তাদের সংলাপগুলো রেকর্ড ও ভিডিও করেন। এই রেকর্ডকৃত সংলাপ আবার সাধারণ মুসলমানদের খ্রিস্টধর্মের দাওয়াত দেওয়ার সময় উপস্থাপন করেন এবং বলেন, দেখ ঢাকা থেকে হুজুররা এসে আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। যদি তাদের ধর্ম সত্যই হত তাহলে এর উত্তর দিতে পারতো ইত্যাদি। আমার সাথে কথা বলার সময়ও তিনি একই কৌশল অবলম্বন করলেন। তিনি ভাবলেন, পূর্বের মতোই কিছু একটা হবে। উত্তর তো দিতেই পারবে না, হেরে যাবে। আর আমি জিতে যাব । এই মনোভাব নিয়ে একটি কিতাবুল মোকাদ্দস (বাইবেল) ইঞ্জিল, ও একটি টেপ রেকর্ডার এবং একটি ভিডিও ক্যামেরা সাথে নিয়ে এশার পর উপস্থিত হলেন। আমি মসজিদেই বসে তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তিনি মসজিদের সামনে এসে আমাকে ডাকলেন আমি বাইরে গিয়ে তাকে সালাম দিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরলাম এবং মসজিদের ভিতরে নিয়ে এলাম। এবার আলোচনা শুরু।
আবু আমাতুল্লাহ : ভাই! প্রথমে আমি আমার পরিচয় দিই। আমি আল্লাহর বান্দাদেরকে আল্লাহর সাথে জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। আমি একজন মুসলমান । আপনার পরিচয়টি কি একটু দিবেন।
সাজু : আমার নাম সাখাওয়াত হোসেন সাজু। আমি আগে মুসলমান ছিলাম, এখন খ্রিস্টান। আগে এই মসজিদে নামায পড়তাম, এখন পড়ি না। প্রার্থনা করি এবং প্রভুর সুসমাচার প্রচার করি।
আবু আমাতুল্লাহ : আপনি খ্রিস্টান হলেন কেন ?
সাজু : ঈসা নবী আমাকে নাজাত দিয়েছেন এবং সেই ধর্মটি সত্য ।
আবু আমাতুল্লাহ : আপনার ধর্মটি যে সত্য একথা আপনি যে ধর্মীয় গ্রন্থে বিশ্বাস করেন এর মাধ্যমে কি প্রমাণ করতে পারবেন ?
সাজু : হ্যাঁ পারব।
আবু আমাতুল্লাহ : আপনার ধর্মীয় গ্রন্থের নাম কী?
সাজু : ইঞ্জিল শরীফ, কিতাবুল মোকাদ্দস-বাইবেল।
আবু আমাতুল্লাহ : আমার কাছে তিন প্রকারের ইঞ্জিল আছে যার একটির সাথে অন্যটির কোনো মিল নেই। (বইগুলো আমার পেছনে রেখেছিলাম, সেগুলো তার সামনে বের করে দিয়ে বললাম) আপনি কোন ইঞ্জিলটি মানেন এবং কোনটির মাধ্যমে আপনার ধর্ম সত্য বলে প্রমাণ করবেন ?
সাজু : (সবুজ রংয়ের ইঞ্জিলটিকে ইঙ্গিত করে) এইটি মানি।
আবু আমাতুল্লাহ : বাকিগুলো কে মানবে?
সাজু : বাকি ঈঞ্জিলগুলো আমি ইতিপূর্বে কখনো দেখিনি; তবে এগুলোও টাকার জন্য বিভিন্নজন ভুল অনুবাদ করেছে। এর জন্য আমরা তাদের নামে মামলা করব।
আবু আমাতুল্লাহ : কার নামে মামলা করবেন? তিনটিই তো আপনার বিবিএস তথা বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি থেকে ছাপা। দেখুন, আমার সামনে তিনটি ইঞ্জিল, একটির সাথে অন্যটির মিল নেই। কিন্তু কুরআন! পৃথিবীর যে কোনো স্থানে যান সেখানে দেখবেন কুরআন একটিই। একটি যের যবরেরও পরিবর্তন নেই। যাক আপনি যে ইঞ্জিলের কথা বললেন, এটা কি আল্লাহর কালাম?
সাজু : হ্যাঁ এটিই আল্লাহর কালাম এবং এটিই ঈসা নবীর উপর অবতীর্ণ হয়েছিল।
আবু আমাতুল্লাহ : এটি মূলত আল্লাহর কালাম নয়, বরং মানবরচিত কয়েকটি প্রবন্ধ ও কিছু চিঠি-পত্রের সমষ্টি, একটি গ্রন্থ।
সাজু : (উত্তেজিত সুরে ) না-না এটা হতেই পারে না। এটা মানবরচিত কীভাবে?
আবু আমাতুল্লাহ : বলুন তো ঈসা নবীর জীবনী কি কখনো আল্লাহর কালাম হতে পারে ?
সাজু : না।
আবু আমাতুল্লাহ : এবার আপনার ইঞ্জিলটি খুলুন।
সে নিজ হাতে খুলল। এর সূচিপত্রের শুরুতেই লেখা আছে হযরত ঈসা মসিহের জীবনী । এবার আপনার কথা মতোই ঈসার (আ.) জীবনী আল্লাহর কালাম হতে পারে না। অতএব এই ইঞ্জিল আল্লাহর কালাম হতে পারে না।
দ্বিতীয়ত: এই ইঞ্জিলে ২৭ টি অধ্যায় আছে। এর মধ্যে ১৪ টি হল সেন্ট পৌলের লেখা চিঠি। আর পৌল হল একজন ইহুদী । সে তার জীবনেও ঈসা নবীকে দেখেনি। ঈসা আ.-কে আসমানে উঠিয়ে নেওয়ার অনেক পরের মানুষ সে। আর আপনার কথা মতোই কোনো মানুষের লেখা চিঠি আল্লাহর কালাম হতে পারে না। অতএব এই তথাকথিত ইঞ্জিলের পত্রগুলোও আল্লাহর কালাম নয়।
তৃতীয়ত: দেখুন শুরুতেই আছে লেখক হযরত মথি এবং লেখা আছে , লিখিত সময় ৫৫-৬১ কিংবা ৬৬-৬৮। লেখার সময়-কালের মধ্যেই খ্রিস্টানদের মাঝে মতানৈক্য হয়েছে। এটা তো আল্লাহর কালাম হতে পারে না। এটা তো মুসলমানদেরকে ধোঁকা দেয়ার জন্য মুসলমানদের পরিভাষা চুরি করে এনে নিজেদের রচিত গ্রন্থের গায়ে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।
সাজু ভাই : না ভাই ! এটা অসম্ভব।
আবু আমাতুল্লাহ : দেখুন ইঞ্জিল শরীফ, এখানে শরীফ শব্দটি খ্রিস্টানরা ব্যবহার করে না, ব্যবহার করে মুসলমানরা।
দ্বিতীয়ত: এই ইঞ্জিলে লেখা আছে, প্রথম সিপারা । এখানে সিপারা শব্দটি মুসলমানদের থেকে চুরি করা হয়েছে। চুরি করতেও ভুল করেছে। কারণ ‘সিপারা’ শব্দটি ফারসি ভাষার, যার অর্থ হয় ত্রিশ খণ্ড, আর কুরআনের ত্রিশটি অংশ থাকায় এর প্রতিটি অংশকে ত্রিশভাগের একভাগ হিসেবে এ অঞ্চলে সিপারা বলা হয়। সেই সিপারা মুসলমানদের গ্রন্থ থেকে চুরি করে এনে লেখা হয়েছে ইঞ্জিলের মধ্যে, প্রথম সিপারা যার অর্থ হয় ত্রিশ খণ্ডের প্রথম খন্ড, অথচ তাদের বাইবেল সাতাশ খণ্ডে।
তৃতীয়ত: শুরুর দিকে লেখা আছে লেখক হযরত মথি। এখানে হযরত শব্দটি খ্রিস্টানদের পরিভাষা নয়, মুসলমানদের পরিভাষা, যা খ্রিস্টানরা মুসলমানদেরকে ধোঁকা দেত্তয়ার জন্য চুরি করে জুড়ে দিয়েছে। সাজু ভাই বলেন তো এই ইঞ্জিল বাইবেলের অংশ কি না?
সাজু : হ্যাঁ এটা বাইবেলের অংশ। কারণ বাইবেলের দুটি অংশ: একটি নতুন নিয়ম দ্বিতীয়টি পুরাতন নিয়ম। নতুন নিয়মটিই হল ইঞ্জিল।
আবু আমাতুল্লাহ : সাজু ভাই বলুন তো বাইবেল নামে কোনো কিতাব আল্লাহ কোনো নবীর উপর পাঠিয়েছেন কি? বা আসমানী কিতাব বলে যেই কিতাবগুলো আমরা জানি সেগুলোর মধ্যে বাইবেল আছে কি?
সাজু : না এটা আসমানি গ্রন্থ নয় তবে তাওরাত ইঞ্জিল ও অন্যান্য সহীফার সমষ্টি হল বাইবেল।
আবু আমাতুল্লাহ : (১) প্রথমেই আপনি বললেন, বাইবেল আসমানি গ্রন্থ নয় , বাইবেল যেহেতু আসমানি গ্রন্থ নয় তাই আল্লাহরও কালাম নয় (২) আপনি বললেন, বাইবেল হচ্ছে তাওরাত, ইঞ্জিলের সমষ্টি। আপনি দেখুন বাইবেলে কোথাও লেখা নেই তাওরাত শরীফ বা ইঞ্জিল শরীফ। এমন কি তাওরাত, ইঞ্জিল শব্দটি বাইবেলের কোথাও নেই।
সাজু : কিতাবুল মোকাদ্দসে আছে।
আবু আমাতুল্লাহ : আবার একই প্রশ্ন, কিতাবুল মোকাদ্দসটিও তো আল্লাহর কালাম নয়, কারণ এটা ঐ বাইবেলই। মুসলমানদের পরিভাষাগুলো চুরি করে নিয়ে বাইবেলের মধ্যে লাগানো হয়েছে, মুসলমানদের ধোঁকা দেওয়ার জন্য। (এবার সাজুর চেহারা লাল হয়ে গেল। কারণ, কোনো উত্তর দিতে পারছে না, তাই সে অন্য প্রসঙ্গে চলে গেল।)
সাজু : মুসলমানদের তাওরাত-ইঞ্জিল প্রতিষ্ঠা ও অনুসরণ করতে হবে নতুবা প্রকৃত ঈমানদার থাকবে না।
প্রমাণ দেখুন আল্লাহ তাআলা বলেন (কুরআন মজিদের অনুবাদ খুলে দিল)
- قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ لَسْتُمْ عَلَى شَيْءٍ حَتَّى تُقِيمُوا التَّوْرَاةَ وَالْإِنْجِيلَ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْكُمْ مِنْ رَبِّكُمْ وَلَيَزِيدَنَّ كَثِيرًا مِنْهُمْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ طُغْيَانًا وَكُفْرًا فَلَا تَأْسَ عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
অর্থ: বলে দিন, হে আহলে-কিতাবগণ, তোমরা কোনো পথেই নও, যে পর্যন্ত তোমরা তাওরাত, ইঞ্জীল এবং যে গ্রন্থ তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তাও পুরোপুরি পালন না কর। আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তার কারণে তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফর বৃদ্ধি পাবে। অতএব, এ কাফের সম্প্রদায়ের জন্যে দুঃখ করবেন না।-সুরা মায়েদা :৬৮
এই আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন,
لَسْتُمْ عَلَى شَيْءٍ حَتَّى تُقِيمُوا التَّوْرَاةَ
হে আহলে-কিতাবগণ, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তাওরাত ইঞ্জিল প্রতিষ্ঠিত না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের কোনো ভিত্তি নেই।’’ অতএব, মুসলমানদেরকে তাওরাত ও ইঞ্জিল প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আবু আমাতুল্লাহ : ১। মূলত আয়াতো তো আহলে কিতাব অর্থাৎ যাদেরকে পূর্বে কিতাব দান করা হয়েছে তারা উদ্দেশ্য (ইহুদী-খ্রিস্টান সম্প্রদায়) মুসলমানরা নয়।
২। তাওরাত ও ইঞ্জিলে (ক) শেষ নবীর সুসংবাদ অর্থাৎ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে যা বর্ণিত আছে। (খ) আল্লাহর একত্ববাদ ও ১০ আজ্ঞা এবং (গ) শরিয়তের বিধিবিধান যেগুলি আসল তাওরাত-ইঞ্জিলে আছে সেগুলি প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা। যদি খ্রিস্টান বিশ্ব এই আয়াত অনুযায়ী তাওহীদ ও শরীয়ত প্রতিষ্ঠা করত, শিরক ও ব্যভিচারের শাস্তি প্রতিষ্ঠা করত, তাহলে মানবসভ্যতা বর্তমান অবক্ষয়ের মধ্যে পড়ত না। এমনটি আমি বাইবেল থেকে কুফর-শিরক ও ব্যভিচারের শাস্তির বিবরণ কিছু খুলে খুলে দেখালাম।
৩। কুরআন ইহুদী-খ্রিস্টানদেরকে তাওরাত-ইঞ্জিলের বিধিবিধান প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দিয়েছে, তাওরাত-ইঞ্জিলের নামে শিরক ও ব্যভিচার প্রতিষ্ঠার বা প্রচারের নির্দেশ দেয়নি। আগে আপনারা খ্রিস্টানগণ আপনাদের ব্যক্তি, দেশ ও রাষ্ট্রগুলিতে তাওরাত-ইঞ্জিলের তাওহীদ ও আইন-বিধান প্রতিষ্ঠা করুন। শিরক, ব্যভিচার ইত্যাদি পাপের ; কিতাব- নির্দেশিত শাস্তি প্রতিষ্ঠা করুন। সকল খ্রিস্টান চার্চে ঈসা মসীহ, তার মাতা মরিয়ম ও অন্যান্য অগণিত মানুষের প্রতিমা বিদ্যমান। তাওরাত-ইঞ্জিলের বিধান অনুসারে এগুলো ধ্বংস করুন। যারা এগুলো বানিয়েছে, এগুলোতে ভক্তি বা মানত-উৎসর্গ করেছে বা উৎসাহ দিয়েছে তাদের সকলকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করুন। এরপর তাওরাত-ইঞ্জিল নিয়ে দাওয়াত দিতে আসুন।
৪। বর্তমান তাওরাত-ইঞ্জিল বিকৃত ও বাতিল, তা মানা যাবে না।
(এভাবে রাত অনেক হয়ে গেল। তিনি আরো অনেকগুলো প্রশ্ন করলেন আমি তার উত্তর দিলাম।)
সাজু ভাই! আপনি শুরুতেই বলেছেন, ঈসা আ. আপনাকে পাপমুক্ত করেছেন এবং আপনি তাঁকে মানেন। কিন্তু ঈসা আ. তো আপনার নবী নন।
সাজু ভাই : কে বলেছে তিনি আমাদের নবী নন, তিনি সকল মানুষকে মুক্তি দিতে এসেছেন।
আবু আমাতুল্লাহ : আপনাদের ইঞ্জিলেই এর প্রমাণ দেখুন, যীশু হলেন ইস্রায়েল বংশের লোকদের নবী। আমাদের বাংলাদেশীদের নবী নন। কারণ যীশু নিজেই বলেছেন আমি ইস্রায়েল বংশের নবী। দেখুন মথি লিখিত সুসমাচারের ১৫:২৪ নং পদে লেখা আছে, তিনি উত্তর করিয়া কহিলেন: ইস্রায়েল কুলের হারানো মেষ ছাড়া আর কাহারও নিকটে আমি প্রেরিত হই নাই। বাইবেল, নতুন নিয়ম পৃ. ২৪
আবার মথি লিখিত সুসমাচারের ১০:৫ নং পদে লেখা আছে, এই বারো জনকে যীশু প্রেরণ করিলেন, আর তাহাদিগকে এই আদেশ দিলেন, তোমরা পরজাতিগণের পথে যাইও না, বরং শমরীয়দের কোন গ্রামে প্রবেশ করিও না; বরং ইস্রায়েল-কুলের হারানো মেষগণের কাছে যাও।
এই আলোচনা দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম, যীশু হলেন শুধু ইস্রায়েল-বংশের নবী। ইস্রায়েল ছাড়া অন্য কোনো জাতির নবী নন। কারণ আমরা ইস্রায়েল-বংশের লোক নই। কুরআনও তাই বলে, আল্লাহ বলেন,‘‘স্মরণ কর, যখন মরিয়ম-তনয় ঈসা বললেন: হে বনী ইস্রাঈল। আমি তোমাদের কাছে আল্লাহ-প্রেরিত রাসূল, আমার পূর্ববর্তী তাওরাতের আমি সমর্থনকারী এবং আমি এমন একজন রাসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন। তাঁর নাম আহমদ।’’ (উল্লেখ্য হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক নাম আহমদ) -সূরা আস-ছাফ-৬১: ৬
এবার তিনি কোনো ধরনের উত্তর না দিতে পেরে এদিক সেদিক বিভিন্ন প্রশ্ন তুলছেন। আমি আবার প্রশ্ন করলাম, সাজু ভাই আপনি কি আসলে ঈসা নবীকে বিশ্বাস করেন?
সাজু ভাই : হ্যাঁ অবশ্যই বিশ্বাস করি।
আবু আমাতুল্লাহ : তাহলে আপনাকে একটি পরীক্ষা করব।
সাজু ভাই : বলুন কী পরীক্ষা?
আবু আমাতুল্লাহ : বাইবেলের মার্ক লিখিত সুসমাচারের ১৬:১৭-১৮নং পদে লেখা আছে- যীশু বলেন, আর যাহারা বিশ্বাস করে, এই চিহ্নগুলি তাহাদের অনুবর্তি হইবে তাহারা আমার নামে ভূত তাড়াইবে, তাহারা নূতন নূতন ভাষায় কথা বলিবে তাহারা সর্প তুলিবে। এবং প্রাণনাশক কিছু পান করিলেও তাহাতে কোন মতে তাহাদের হানি হইবে না; তাহার পীড়িতদের উপরে হস্তার্পণ করিবে। আর তাহারা সুস্থ হইবে।
আবু আমাতুল্লাহ : আপনি মন্দ আত্মা ছাড়াতে পারবেন?
সাজু : না ।
আবু আমাতুল্লাহ : সাজু ভাই! আপনিও বাঙ্গালী আমিও বাঙ্গালী। আমাদের জন্য আরবী হলো নতুন ভাষা, আপনি কি আমার সাথে আরবীতে কথা বলতে পারবেন?
সাজু : না ।
আবু আমাতুল্লাহ : সাপ ধরতে পারবেন, আপনাকে কামড় দিবে না? আপনি ভীষণ বিষাক্ত কিছু খেলে কিছু হবে না। আমাদের দেশে তো ভীষণ বিষাক্ত কিছু নেই, তবে পোকা মাকড় মারার কীটনাশক বিষ পাওয়া যায় সারের দোকানে, এক বোতল বিষ কি আনাবো ? আপনি কি খেতে পারবেন?
সাজু : না ।
আবু আমাতুল্লাহ : আপনি রুগীর গায়ে হাত দিলে রোগ ভালো হয়ে যাবে। তাহলে আপনি থাকতে এখানে ল্যাম্ব হাসপাতাল কেন? আপনি গিয়ে রুগীর গায়ে হাত দিলেই ভালো হয়ে যাবে?
সাজু : আসলে আমাদের পরিপূর্ণ ঈমান নেই। ঈমান পরিপূর্ণ থাকলে এই চিহ্নগুলো দেখাতে পারতাম।
আবু আমাতুল্লাহ : আপনার অসম্পূর্ণ ঈমান আছে কি?
সাজু : হ্যা তা তো আছেই ।
আবু আমাতুল্লাহ : তাহলে আরেকটি পরীক্ষা দিতে হবে। দেখুন আপনাদের কিতাব বাইবেলের মথি লিখিত সুসমাচারের ১৭:২০ নং পদে আছে, তোমাদের বিশ্বাস অল্প বলিয়া; কেননা আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যদি তোমাদের একটি সরিষা দানার ন্যায় বিশ্বাস থাকে, তবে তোমরা এই পর্বতকে বলিবে, এখান হইতে ঐখানে সরিয়া যাও, আর ইহা সরিয়া যাইবে; এবং তোমাদের অসাধ্য কিছুই থাকিবে না। আমাদের সামনে তো কোনো পাহাড় নেই, তবে পাহাড়ের উপর কিছু গাছ থাকে, ঐ আমার সামনের গাছটি একটু ইশারা করে সরিয়ে দিন।
এই বিশ্বাস আপনাকে মুক্তি দিবে না। এ কথাও আপনাদের ধর্মীয়গ্রন্থ বাইবেলে উল্লেখ আছে। দেখুন, যাকোবের ২:১৪ এর শুরুতেই আছে, হে আমার ভ্রাতাগণ, যদি কেহ বলে, আমার বিশ্বাস আছে, আর তাহার কর্ম না থাকে, তবে তাহার কি ফল দর্শিবে? সেই বিশ্বাস কি তাহার পরিত্রাণ করিতে পারে? (পবিত্র বাইবেল, নূতন নিয়ম পৃ. ৩৪০)
সাজু : আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব না। আজকে যাই অন্য সময় আপনার সাথে দেখা করব।
আবু আমাতুল্লাহ : সাজু ভাই এটা তো ছিল আপনার সাথে বিতর্ক। আমি বিতর্ক করতে আসিনি। আমার উদ্দেশ্য আপনাকে দাওয়াত দেওয়া; আপনি মুসলমান হয়ে যান, চিরস্থায়ী জাহান্নাম হতে বেঁচে যাবেন। আপনার হাতে ধরি, পায়ে ধরি, আপনি মুসলমান হয়ে যান।
সাজু ভাই : দেখুন আমি ৮ বছর আগে খ্রিস্টান হয়েছি, বুঝে শুনে হয়েছি। এখন এক মুহূর্তে কি ফেরা সম্ভব? আপনি দুআ করুন, আমি যেন আরো গবেষণা করে সঠিক পথে চলতে পারি।
আবু আমাতুল্লাহ : আপনি তো খ্রিস্টানদের দেওয়া নির্দিষ্ট কুরআনের আয়াতগুলো পড়েছেন। যে কোনো কিছু জানতে হলে উস্তাযের প্রয়োজন হয়, ডাক্তার হতে হলে মেডিকেল কলেজে যেতে হয়। সাধারণ কৃষিকাজ জানতে হলেও উস্তায লাগে আর আপনি কুরআন পড়বেন উস্তায ছাড়া এটা কীভাবে সম্ভব? আপনি কুরআন শেখার জন্য উস্তায ধরুন।
সাজু : আমাকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবে কে?
আবু আমাতুল্লাহ : আপনি এই মাওলানা সাহেবের (যিনি আমাকে সাজুর কাছে নিয়ে গেছেন) সাথে যোগাযোগ রাখবেন। তিনি আপনাকে কুরআন শেখাবেন।
সাজু : ঠিক আছে আমি তার কাছে প্রতি শনিবার যাব এবং কুরআন শিখব।
আবু আমাতুল্লাহ : আবার দেখা হবে।
এবার তাকে কিছু বই দিয়ে বিদায় নিলাম।
'মুসলিম বাইবেল পড়ি'
মুন্সিপাড়ার মসজিদের সামনে ছোট্ট একটি মেয়ে খেলা করছিল। কী পড় জানতে চাইলে বলল, ক্লাস থ্রি। কোথায় পড়? ল্যাম্ব হাসপাতালে। কী কী বই পড়ায়? বাংলা, ইংরেজী ও অংক। আর কী? উত্তর দিল-মুসলিম বাইবেল। মুসলিম বাইবেলে কী পড়ায়?
গান ।
একটি গান বলবে?
জি।
বল।
যীশু আমার সঙ্গে
আমিও তার সঙ্গে।
প্রতি পথে পথে যীশু আমার সঙ্গে
তিনি আমাকে প্রেম করেন
আমি ও আমায় রক্ষা করেন। ...
প্রিয় পাঠক! এই হল মুসলমানের সন্তানের অবস্থা। হায় ! আমরা কী করছি?
আমাদের কি একটুও চিন্তা আসে না? হৃদয় কি একটুও কাঁদে না? আমার সামনে একজন মুসলিম চিরস্থায়ী জাহান্নামী হয়ে যাচ্ছে আমি একটুও ফিকির করছি না । কেয়ামত দিবসে আমরা আল্লাহর কাছে কী হিসাব দিব? তারা কি আল্লাহর বান্দা নয়? তারা কি নবীর উম্মত নয়? তারা কি আমাদের ভাই নয়? এ ব্যাপারে কি আমার কোনো দায়িত্ব নেই?
এখানে তো এক স্থানের কথা বললাম। এমন আরো কত পার্বতীপুর যে দেশজুড়ে ছড়িয়ে আছে, যেখানে দলে দলে মানুষ জাহান্নামের আগুনে ঝাঁপ দিচ্ছে। আল্লাহ হেফাযত করুন।