রবিউল আওয়াল-রবিউল আখির ১৪৩৪   ||   ফেব্রুয়ারি ২০১৩

বি ভ্রা ন্তি : একটি স্মারকের গল্প

খসরূ খান

ঢাকার কয়েকটি পত্রিকায় খবরটি ছাপা হয়েছে ১৯ জানুয়ারি শনিবার। ওই খবরে দেখা গেছে, বাংলাদেশে আহমদীয়া ‘মুসলিম’ জামা’ত (কাদিয়ানী সম্প্রদায়) প্রতিষ্ঠার শতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের ৩৬ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ‘কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপক স্মারক’ প্রদান করা হয়েছে। ঢাকার বকশিবাজারে ১৮ জানুয়ারি কাদিয়ানীদের জাতীয় কেন্দ্রে আয়োজিত ‘কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন’ অনুষ্ঠানে এই স্মারক দেওয়া হয়। এখানে ‘স্মারক’ বলতে বুঝানো হয়েছে সম্মাননা পদক।  কদিয়ানীদের প্রতি সহযোগিতার এ পদক পেয়েছে কিছু প্রতিষ্ঠান ও ক’জন ব্যক্তি। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- আইন ও সালিশ কেন্দ্র, ব্লাস্ট, অধিকার, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, জাতীয় আইনজীবী পরিষদ, নারীপক্ষ, দ্য ডেইলি স্টার, নিউ এজ ও দৈনিক সংবাদ। আর ব্যক্তিরা হচ্ছেন- সুফিয়া কামাল, কে এম সোবহান, কবীর চৌধুরী, গাজীউল হক, ফয়েজ আহমদ। এরা সবাই মরণোত্তর পদক পেয়েছেন। জীবিতদের মধ্যে পেয়েছেন শাহরিয়ার কবির, রাশেদ খান মেনন এমপি, হাসানুল হক ইনু এমপি, মঈনুদ্দীন খান বাদল এমপি, এডভোকেট সুলতানা কামাল, ড. কামাল হোসেন, ড. হামিদা হোসেন, ড. ফস্টিনা পেরেরা, ড. আসিফ নজরুল, শরিফ এ কাফী, এ এফ হাসান আরিফ (প্রাক্তন এটর্নি জেনারেল), ব্যারিস্টার সারা হোসেন, খুশী কবীর, ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, রোজালিন ডি কস্ত, নাঈম মোহাইমেন, অধ্যাপক যতীন সরকার, কাজী মুকুল, প্রফেসর কাজী নূরুল ইসলাম, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, প্রফেসর পারভিন হাসান, তালেয়া রেহমান।

বেশিরভাগ পাঠকই এই কৃতী ব্যক্তিদের চেনেন। চেনেন প্রতিষ্ঠানগুলোকেও। এ তালিকার দু-একটি নাম কিছুটা বিস্ময়ের উদ্রেক করলেও গত তিনযুগে ধর্মীয় বিষয়ে এদের অধিকাংশের ভূমিকা সবিশেষ পরিচিত। কোনো মসজিদ, মাদরাসা, মাহফিল, জলসায় উঁকি দিয়ে দেখতে দ্বিধাগ্রস্ত হলেও এরা কাদিয়ানীদের জাঁকালো অনুষ্ঠানে বেশ উদ্দীপনা ও তৃপ্তি নিয়েই গিয়েছেন এবং পদক পেয়ে ধন্য হয়েছেন। চারদিকের খোঁজ-খবর রাখা এসব রথি-মহারথির না জানার কোনো কারণ নেই যে, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকায় সংসদের অধিবেশন ও নিয়মিত আদালতে দীর্ঘ জবানবন্দি, সাফাই ও শুনানির পর কাদিয়ানী সম্প্রদায় একটি ভুয়া ও প্রতারক গোষ্ঠী হিসেবে রায় পেয়েছে। সেসব শুনানিতে কাদিয়ানীদের তথাকথিত ‘বিশ্বখলিফা’সহ তাদের আন্তর্জাতিক চাঁই-চামুন্ডাদের অনেকেই  জবানবন্দি দিয়েছে। সবিরোধী বক্তব্য দিয়ে জব্দ  ও অপমানিত পর্যন্ত হয়েছে। তাছাড়া ওআইসির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো মুসলিম দেশেই তাদেরকে মুসলিম মনে করা হয় না। তার পরও ইসলামের সঙ্গে জোর করে তাদের জুড়ে দেওয়া সম্পর্ককে যারা সমর্থন জোগান সেসব মহাজনদের ইহকাল-পরকালের পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ ভালো জানেন। আমরা শুধু বিনয়ের সঙ্গে জোর দিয়ে বলতে পারি, কাদিয়ানীরা ইসলামের ভেতরের কোনো ফের্কা নয়-এ সত্যটা বোঝার চেষ্টা করা উচিত। খতমে নবুওয়তের অমোঘ বিশ্বাস ও চেতনার গলায় যে কাদিয়ানীরা করাত চালায়-তাদের প্রতি যারা সাহায্যের হাত বাড়ান, তারা মুসলমানদের কাছে ভালো মানুষ হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন না। আদর্শহারা কোনো পত্রিকা, রঙিন চশমাওয়ালা কোনো সুশীল কিংবা ভোল পাল্টানো কোনো রাজনীতিক তিনি যে-ই হোন, কাদিয়ানীর সঙ্গীরা বিশ্ব মুসলিমের চোখে শয়তানেরই সঙ্গী। আর শয়তানের যারা সঙ্গী হয় তাদের কোনো শত্রুর দরকার হয় না। ষ

 

 

advertisement