একটি ভুল রীতি : খতম কি বখশানো জরুরি?
ইতিপূর্বে লিখেছি কিনা মনে নেই। আমি গ্রামে দেখেছি এবং কেউ কেউ ফোন করেও জানিয়েছেন যে, সাধারণত মেয়েদের মাঝে এই রেওয়াজ আছে যে, রমযানে তাঁদের খতম সমাপ্ত হওয়ার পর মসজিদের ইমাম সাহেবকে তা জানানোর ইহতিমাম করা হয় যে, অমুক কুরআন খতম করেছে, তা বখশে দিন! কোথাও কোথাও এ কথা জানানোর সাথে সাথে বখশানেওয়ালার জন্য কিছু হাদিয়া পাঠানোরও রেওয়াজ আছে।
এই রেওয়াজের মধ্যে এমন অনেক বিষয় আছে, যা বর্জনীয়। যেমন
ক. কুরআন খতম করা একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ-ইবাদত। কেউ খতম করলে এটা জরুরি নয় বা এমন কোনো বিধান নেই যে, তা বখশাতেই হবে। হ্যাঁ, কেউ কোনো নেক আমল করে মৃত মুসলিমদের জন্য ছওয়াব রেসানী করতে চাইলে তার অনুমতি আছে। কিন্তু না এটা কুরআন-খতমের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ, না রমযান মাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাছাড়া একটি মোবাহ কাজকে জরুরি কাজের মতো গুরুত্ব দেওয়াও সমীচীন নয়।
খ. ছওয়াব রেসানীর জন্য আমলের আগে বা পরে এই নিয়তই যথেষ্ট যে, আমলটি অমুকের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। তদ্রূপ অন্তরের এই দুআই যথেষ্ট যে, আয় আল্লাহ! এই আমলের ছওয়াব অমুক অমুককে দান করুন বা সকল মৃত মুসলমানকে দান করুন। ছওয়াব রেসানীর জন্য এ-ই যথেষ্ট। ইমাম সাহেব, বা কোনো বুযুর্গের মাধ্যমে বখশানোর কোনো প্রয়োজন নেই। কোনো বুযুর্গের দ্বারা বখশানো ছাড়া ছওয়াব পৌঁছবে না এমন ধরণা একটি ভুল আকীদা, যা ত্যাগ করা জরুরি।
গ. বখশানোর জন্য হাদিয়া দেওয়া বা নেওয়ার বিষয়টিও বর্জনীয়। আমল বখশানো অর্থ দুআ করা। আর দুআ একটি খালিস ইবাদত, যার বিনিময়ে হাদিয়ার আদান-প্রদান জায়েয নয়।
এছাড়া এভাবে ইমাম সাহেবের দ্বারা আমল বখশানোর রীতির কারণে মেয়েদের নাম এবং তাদের খতম বা খতমের সংখ্যা ইত্যাদি গোপন বিষয় মানুষের সামনে আসে। কোনো প্রয়োজন ছাড়া এমনটি করার কী যুক্তি? তো সব বিচারেই এই রসম বর্জনীয়।