জুমাদাল উলা ১৪৩০   ||   মে ২০০৯

বন্ধুদের প্রতি

আবদুল্লাহ ইবনে আহমদ

 

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার।  আর তিনিই আমাদের যথেষ্ট। সালাত ও সালাম আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের প্রতি, তাঁর সাহাবীদের প্রতি এবং যারা তাঁর অনুসরণ করেছেন তাদের প্রতি।

প্রিয় ভাই! অন্তর থেকে কিছু কথা আপনার নিকট পেশ করছি। কামনা করি, আপনি কথাগুলো উদার চিত্তে গ্রহণ করবেন এবং আমার জন্য আল্লাহর দরবারে দুআ করবেন। আল্লাহ তাআলা কবুল করুন এবং আমাদেরকে উত্তম বিনিময় দান করুন।

প্রিয় ভাই! আশা করি, পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে-শান্তিতে ও নিরাপদে আছেন। অতএব আপনার কর্তব্য হল, যিনি এই নেয়ামত দান করেছেন তাঁর শোকর গোযারি করা। আপনি আল্লাহকে ভয় করুন গোপনে ও প্রকাশ্যে, আপনার প্রতিটি কথায় ও কাজে এবং চিন্তা ও প্রেরণায়।

আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রতি আপনাকে দায়িত্বশীল বানিয়েছেন। অতএব তাদের কল্যাণ কামনায় আন্তরিক হোন।

অধীনস্তদের স্বাধীনভাবে চলতে দিবেন না; বরং স্ত্রী, পুত্র-কন্যার কর্ম ও আচরণ পর্যবেক্ষণ করুন।

সবার প্রতি কল্যাণকামী হোন। দুনিয়াবী বিষয়ে ও আখেরাতের বিষয়ে প্রত্যেকের অবস্থা অনুযায়ী যা ভালো  সে পরামর্শ তাকে দান করুন। মন্দ কাজ থেকে নিজেও বিরত থাকুন এবং অন্যকেও বিরত থাকতে বলুন। নিজেও সৎ কাজ করুন এবং অন্যকেও সৎ কাজে উৎসাহিত করুন।

প্রয়োজন ব্যতীত মার্কেটে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কেননা বাজার আল্লাহর কাছে সর্বনিকৃষ্ট স্থান।

ছুটির সময় আল্লাহর আনুগত্যে অতিবাহিত করুন। এটা এভাবে   যে :

১. কুরআনে কারীম তেলাওয়াত করুন। কুরআনের কিছু অংশ হিফয করুন এবং সহীহ-শুদ্ধ করে পড়ার চেষ্টা করুন।

২. তাফাক্কুহ ফিদ্দীন-দ্বীনী ইলম ও দ্বীনী সমঝ অর্জনের চেষ্টা করুন। দ্বীন শিক্ষার বিভিন্ন কোর্সে বা যে সব মসজিদ বা দ্বীনী প্রতিষ্ঠানে এর ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে অংশগ্রহণ করুন।

৩. দ্বীনী কিতাব, পত্র-পত্রিকা ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করুন।

৪. দ্বীনী জ্ঞান ও চেতনা বৃদ্ধি করে এমন ক্যাসেট শুনুন।

৫. দ্বীনী সভা-সেমিনার ও মজলিস-মাহফিলে অংশগ্রহণ করুন। সাধ্যমতো কিছু হাদীস মুখস্থ করুন এবং সে অনুযায়ী আমল করুন।

৬. আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে দেখা-সাক্ষাত করুন।

৭. সময়ের হিফাযত করুন। কেননা এ সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। সম্পদের অপচয় ও অপব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। কেননা, আপনার নিকট থেকে এই সম্পদের হিসাব নেওয়া হবে।

৮. শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে মন্দ কাজে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। মন্দ বিষয় শোনা, মন্দ দৃশ্য দেখা ও মন্দ কাজ করা থেকে পরহেয করুন এবং সব ধরনের মন্দ স্থান থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।

৯. সাধ্য থাকলে ওমরা করুন এবং মসজিদে হারামে নামায পড়ুন।

১০. মসজিদে নববী যিয়ারত করুন এবং সেখানে নামায পড়ুন এবং নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রওযায় সালাম পেশ করুন।

১১. আপনার সন্তানদেরকে হিফয খানা বা গ্রীষ্মকালীন দ্বীনী কর্মশালায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করুন।

১২. অবসরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোথাও বেড়িয়ে আসুন। এতে জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে এবং চিন্তা-শক্তি বিকশিত হবে।

১৩. প্রত্যেক কাজ সমাপ্ত করার পর ভালো-মন্দের পর্যালোচনা করুন। ভালো কাজগুলোর জন্য আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করুন। আর ভুল ত্রুটিগুলোর জন্য আল্লাহর দরবারে ইস্তিগফার করুন এবং আগামীতে বিরত থাকার সংকল্প করুন। #

 

অনুবাদে : মুহাম্মাদ হাবীবুল্লাহ

মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান

 

 

 

advertisement