জুমাদাল উলা-১৪৩৩   ||   এপ্রিল-২০১২

একটি ভুল মাসআলা : মা ভিন্ন হওয়ার কারণে সন্তানরা কি পিতার মীরাছ থেকে অংশ পায় না?

কয়েক দিন আগে এক ভদ্রলোক মাসআলাটি জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, আমরা পিতার মীরাছ বণ্টন করতে চাচ্ছি। আমাদের আরো কয়েকজন ভাইবোন আছে যাদের মা ভিন্ন। তারাও কি এই মীরাছের অংশীদার হবে? একজন বলেছেন, তারাও অংশ পাবে। তার এ কথা কি সঠিক?

আমি তাকে বললাম, কথাটি সঠিক না হলে আপনিইবা কেন অংশ পাবেন! কারণ মৃতের ঐ স্ত্রীর সন্তানরাও  তো বলতে পারে যে, আমাদের পিতার মীরাছ বণ্টন করা হচ্ছে। এতে আমাদের ঐ ভাইবোনেরাও কি অংশ পাবে, যাদের মা ভিন্ন?

এ বিষয়েও কীভাবে কারো বিভ্রান্তি হয়-এটা সত্যি বোধগম্য নয়। যেহেতু পিতার মীরাছ বণ্টন করা হচ্ছে তাই পিতার সকল সন্তান তাতে অংশীদার হবে।

ইন্তেকালের সময় মৃতের যত পুত্র ও কন্যা জীবিত ছিল তাদের প্রত্যেকেই শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত হারে মীরাছ পাবে। সকল সন্তান একই স্ত্রীর হোক বা একাধিক স্ত্রীর, এতে কোনো ফরক হবে না। মৃতের

ইন্তেকালের সময় সকল স্ত্রী জীবিত থাকুক অথবা কেউ মৃত্যুবরণ করুক; বিবাহ বন্ধন অটুট থাকুক বা ছিন্ন হয়ে যাক, সর্বাবস্থায় তার ঔরসজাত সকল সন্তান মীরাছের অংশীদার হবে।

للذكر مثل حظ الأنثيين

নীতিতে সবাই সমান। সে অনুযায়ী সকল সন্তান মীরাছের অংশ পাবে।

 

পিতা ভিন্ন হওয়ার কারণে কি সন্তানরা মায়ের মীরাছ থেকে বঞ্চিত হয়

উপরের ধারণার মতো কেউ এমন ধারণাও করতে পারে যে, মায়ের মৃত্যুর পর তার শেষ স্বামীর ঔরসজাত সন্তানরাই শুধু মীরাছ পাবে। এটিও সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। মায়ের মীরাছে তার সকল স্বামীর সন্তানরাই সমানভাবে অংশীদার। এতে প্রথম স্বামী বা শেষ স্বামীর সন্তানদের মাঝে কোনো পার্থক্য হবে না। এ সম্পর্কে কুরআন মজীদের দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা-

يوصيكم الله فى اولادكم للذكر مثل حظ الانثيين، فان كن نساء فوق اثنتين فلهن ثلثا ما ترك، وان كانت واحدة فلها النصف.

 (তরজমা) আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্পর্কে নির্দেশ করছেন : এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান। কিন্তু কেবল কন্যা দুয়ের অধিক হলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ, কেবল এক কন্যা থাকলে তার জন্য অর্ধাংশ।-সূরা নিসা (৪) : ১১

 

 

advertisement