দুটি ভুল প্রচলন
১. মুসাফাহার সময় ঝুঁকা
সাক্ষাতের সময় নিজ মুসলিম ভাইকে সালাম করা তো সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ ও ইসলামের শিআর। আগে আগে সালাম দেওয়ার চেষ্টা করা, পরিচিত-অপরিচিত সকলকে সালাম দেওয়া, শুদ্ধ ও পরিষ্কার উচ্চারণে সালাম বলা-কমপক্ষে ‘আসসালামু আলাইকুম’ পর্যন্ত অবশ্যই বলা-সুন্নত।
সালামের পর আরেকটি আমল হল মুসাফাহা, যা মুস্তাহাব পর্যায়ের আমল। তবে সালামের মতো মুসাফাহার আদেশ এতটা তাকিদপূর্ণ নয় যে, পরিচিত-অপরিচিত সকলের সাথে মুসাফাহা করতে হবে। আর আজকাল তো মুসাফাহার আদবের আলোচনাও কম হয় এবং এসবের প্রতি লক্ষ্যও কম করা হয়। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দিলে এ বিষয়ে আলাদা প্রবন্ধ প্রকাশের ইচ্ছা আছে।
মুসাফাহার আদব রক্ষা না করার কারণে অনেক সময় মানুষের কষ্ট হয়। এটা নাজায়েয।
এই মুহূর্তে যে রসম সম্পর্কে আলোচনা করতে চাই তা এই যে, অনেককে দেখা যায় কোনো বুযুর্গ বা বড় ব্যক্তির সাথে মুসাফাহা করার সময় কিছুটা ঝুঁকে যান। অথচ কারো সম্মানার্থে মাথা বা ঘাড় ঝুঁকানোর অনুমতি নেই। ‘কোনো ভাইয়ের সাথে সাক্ষাত হলে কি মুসাফাহা করব’-এ প্রশ্নের উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হ্যাঁ, মুসাফাহা কর। এরপর জিজ্ঞাসা করা হল, তার সামনে কি ঝুঁকতে পারি? ইরশাদ করলেন, না। ঝুঁকা যাবে না। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ২৭২৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৩৭০৩
২. মুসাফাহার পর বুকে হাত লাগানো
অনেক ভাইকে দেখা যায়, মুসাফাহার পর বিশেষ করে কোনো বুযুর্গের সাথে
মুসাফাহার পর ডান হাত নিজের বুকে মুছে নেন। কী নিয়তে এমনটি করেন-তা আমার জানা নেই। সম্ভবত এই নিয়ত হতে পারে যে, মুসাফাহার দ্বারা যে বরকত হল তা নিজ শরীরে মুছে নেওয়া।
এই প্রচলনের যেমন কোনো ভিত্তি নেই তেমনি এই নিয়তেরও। এই ছোট ছোট বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতনতা এজন্য জরুরি যে, ধীরে ধীরে তা রসম-রেওয়াজে পরিণত হয়ে যায়। এ নিয়ে পরস্পর দ্বন্দ্বও সৃষ্টি হয়। এমনকি মূর্খতাপ্রসূত এই রেওয়াজ একপর্যায়ে বিদআত পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অন্যথায় কেউ যদি এমনিতেই বুকে নিজের হাত মুছে নেয় তাহলে এতে ক্ষতির কী আছে!