একটি ভুল ঘটনা : হযরত ওমরের ইসলাম গ্রহণের দিন কাবা শরীফে আযান শুরু
প্রচলিত আছে যে, হযরত ওমর রা. যেদিন ইসলাম গ্রহণ করেন, সেই দিন থেকে কাবাঘরে প্রথম আযান শুরু হয়।
রাহাতুল কুলুব জাতীয় কিছু বাজারী অনির্ভরযোগ্য বইয়েও এটিকে আরেকটু চটকদার করে উত্থাপন করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যতদিন পর্যন্ত হযরত আমীরুল মুমিনীন ওমর ইবনে খাত্তাব রা. ইসলাম আনেননি ততদিন পর্যন্ত নামাযের আযান গুহায় গহবরে দেওয়া হত। কিন্তু যেদিন হযরত আমীরুল মুমিনীন হযরত ওমর ফারুক রা. ঈমান আনলেন সেদিন তিনি তলোয়ারমুক্ত করে দাঁড়িয়ে হযরত বেলাল রা.কে বললেন, কাবাঘরের মিম্বরে উঠে আযান দাও। হযরত বেলাল রা. তাঁর নির্দেশমতো কাজ করলেন।
বহুল প্রচলিত হলেও এই ঘটনাটি ভুল। কারণ বিশুদ্ধ রেওয়ায়েত ও নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক সূত্র মতে, আযানের আদেশ এসেছিল মদীনায়, নবীজীর হিজরতের পর। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬০৪; ফাতহুল বারী ২/৯৩-৯৪)
অথচ হযরত ওমর রা. ইসলাম গ্রহণের ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল মক্কায়, ইসলামের প্রাথমিক যুগে। অতএব তাঁর ইসলাম গ্রহণের দিন কাবা শরীফে আযান শুরুর কথা অযৌক্তিক।
তবে এই কথা সত্য, হযরত ওমর রা. ইসলাম কবুলের পর ইসলামের শান-শওকত অনেক বুলন্দ হয়। ইসলামের প্রকাশ্য কার্যক্রম শুরু হয়। হযরত ইবনে মাসউদ রা. বলেন, আমরা ওমরের ইসলাম গ্রহণের ফলে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি। আমরা পূর্বে কাবা শরীফে নামায আদায় করতে পারতাম না। যখন ওমর ইসলাম কবুল করলেন তাদের সাথে যুদ্ধ করলেন, ফলে তারা আমাদেরকে বাইতুল্লাহয় নামায পড়তে দিতে বাধ্য হল। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ৩৬৮৪; ফাতহুল বারী ৭/৫৯; তবাকাতে ইবনে সাদ ৩/২৭০)
হয়ত বাইতুল্লায় প্রকাশ্য নামায আদায়ের রেওয়ায়েতটিকেই ভুলভাবে উপস্থাপন করে আযান দেওয়ার শব্দে বলা হয়েছে। অথচ সহীহ রেওয়ায়েতে আযানের কোনো উল্লেখ নেই।