রবিউল আউয়াল ১৪৩২   ||   ফেব্রুয়ারী ২০১১

শেয়ার বাজার : প্রসঙ্গ কথা

মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ

 

প্রশ্ন : গত বছরের (২০১০) এপ্রিল মাসে শেয়ারবাজার সম্পর্কে আপনার একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর বিগত ৯ মাসে ঐ বাজারের অনেক উত্থান-পতন হয়েছে। আপনি বলেছিলেন, বর্তমান শেয়ারবাজার মূলত একটি স্বতন্ত্র মানি-মার্কেট। এটাকে বলাও হয় পুঁজিবাজার। এখানে বিভিন্ন কোম্পানির নাম ব্যবহৃত হলেও শেয়ারের দাম উঠা-নামার ক্ষেত্রে ঐসব কোম্পানির আর্থিক অবস্থা অনেক ক্ষেত্রেই তেমন গুরুত্ব পায় না; অন্যান্য উপকরণ ও কার্যকারণকে কেন্দ্র করে এটি একটি স্বতন্ত্র মানি-গেম বা টাকার খেলার মার্কেটে পরিণত হচ্ছে। এখন আমরা স্টক এক্সচেঞ্জে অনেকটা সে রকমই দেখছি। বিষয়টি আরো খুলে বলবেন কি?

উত্তর : প্রথমে শেয়াবাজারের কয়েকটি দৃশ্য দেখুন।  

দৃশ্য ১ : ৮ ডিসেম্বর ২০১০, ভেন্যু : ডিএসই (ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ) বেলা ১০:৫৫ মিনিট : সূচক ৮৬০০ পয়েন্ট, ১১:৫৫ মিনিট : সূচক ৮৩০০ পয়েন্ট, ১২:১৫ মিনিট : সূচক ৮০০০ পয়েন্ট, (এপর্যায়ে বিক্ষোভ-ভাঙ্গচুর অতঃপর বিভিন্ন বৈঠক) এরপর দুপুর ১:৫৫ মিনিট : সূচক ৮৬০০ পয়েন্টের উর্ধ্বে।  

দৃশ্য ২ : ১০ জানুয়ারি ২০১১, ডিএসই, বেলা ১১টা : সূচক ৭১৫০ এর বেশি, বেলা ১১:২০ মিনিট : সূচক ৬৭০০ পয়েন্টের কিছু কম, বেলা ১১:৫০ মিনিট : সূচক ৬৪৭৪ পয়েন্ট। অর্থাৎ ৫০ মিনিটের ব্যবধানে ৬৭৪ পয়েন্ট উধাও।

দৃশ্য ৩ : ২০ জানুয়ারি ২০১১, (ডিএসই) লেনদেন শুরু : বেলা ১টা সূচক ৬৯১৩ পয়েন্ট। ৫ মিনিট পর (বেলা ১:০৫ মিনিট) সূচক ৬৩১২ পয়েন্ট। অর্থাৎ ৫ মিনিটে প্রায় ৬০০ পয়েন্ট গায়েব। এরপর লেনদেন বন্ধ।

শেয়ারবাজার বর্তমানে এমন একটি পাগলা ঘোড়ার নাম, যাকে কোনোক্রমেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না। বড় বড় মন্ত্রী, আমলা, বুদ্ধিজীবী, অর্থনীতিবিদ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এসইসিসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠান এবং উচ্চস্তরের গবেষকগণ রাতদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলেও এর কোনো কুল-কিনারা করতে পারছেন না। ইতিমধ্যে বাজারের কোনো রকম একটা ভারসাম্য রাখতে বহুমুখী এমনকি অনেক স্ব-বিরোধী পদক্ষেপও নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সর্বশেষ অফিস/বাড়ির ইলেক্ট্রিক বোর্ডের মতো সার্কিট ব্রেকারও বসানো হয় শেয়ার বাজারে। ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল যে, ২২৫ পয়েন্টের বেশি সূচক উঠানামা করলেই সার্কিট ব্রেকার পড়ে যাবে এবং লেনদেন বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এর এক দিন পরেই (২০ জানুয়ারি ২০১১) তা ব্যর্থ হয় এবং পাঁচ মিনিটে ৬০০ পয়েন্টের পতন হওয়ার পর বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়।

প্রথম দিনের (৮ ডিসেম্বর ২০১০)-এর চিত্রটি দেখুন, প্রথম এক ঘণ্টায় সূচকের ৩০০ পয়েন্ট পতন হয়েছে। এরপর ২০ মিনিটের মধ্যে আরো ৩০০ পয়েন্টের পতন। অর্থাৎ ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটে ৬০০ পয়েন্টের পতন। অথচ এ সময়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি বড় ধরনের কোনো আর্থিক বিপর্যয়ে পড়েনি। দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলো ভুমিকম্প, অগ্নিকান্ড বা যে কোনো আযাব-গযবে পতিত হয়নি এ সময়ে। তাহলে কেন এত বড় দরপতন হল? এবার দেখুন, দ্বিতীয় দিনের চিত্র, বেলা ১ :৫৫ মিনিটে সূচক অতিক্রম করে গেছে ৮৬০০ পয়েন্ট। মাঝের সময় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। এ সময় এ দেশের শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানি আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়েছে এমন কোনো খরব মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়নি। তবে মাঝে মতিঝিলের রাস্তায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও গাড়ি ভাঙ্গচুর হয়েছে এবং এসইসি তাদের দু একটি নীতি সংশোধন করেছে। আমরা সাধারণ নাগরিকেরা এত দিন শুনে এসেছি, দেশে হরতাল, বিক্ষোভ ও ভাঙ্গচুর হলে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে তো উল্টোটাই দেখা গেল। এখন বলুন, এই মহা বৃদ্ধি ও হ্রাস কেন ঘটল।

এবার আরো সহজ কয়েকটি উদাহরণ নিন। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি এবি ব্যাংক। অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের শেয়ার প্রতি নীট সম্পদ আয় (এনএডি) ২৯৮ টাকা। ৯ জানুয়ারি বাজারে তাদের শেয়ার বিক্রি হয়েছে ১৩৬০/-টাকা দরে (১০৬২ টাকা বেশি। শেয়ারটির গায়ের দাম ১০০/-টাকা।

ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের গায়ের দাম ১০০/-টাকা। নীট সম্পদ আয় ২৬৩/-টাকা। ৯ জানুয়ারি ২০১১ বাজার দর ৬৯৯/-টাকা ======।

ঐ দিন আলআরাফা ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি হয়েছে ৫৫/- টাকা ( ফেস ভ্যালু ১০/-টাকা)। তাদের নীট সম্পদ আয় ২৫.৫/-টাকা। উপরের পার্থক্যগুলো শুধু নীট এসেট ভ্যালুর সাথে দেখানো হল, ফেস ভ্যালুর সাথে নয়।

বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ারের গায়ের দাম ১০/-টাকা, এনএডি ৫৬/-টাকা। শেয়ার বিক্রি হয়েছে ১২৬/-টাকা (ফেস ভ্যালু থেকে ১১৬০% বেশি)।

শমরিতা হাসপাতালের ফেস ভ্যালু ১০০/-টাকা, এনএডি ১৬৯/-টাকা। বাজার-দর ১৪০০/-টাকা (যথাক্রমে ১৩০০% ও প্রায় ১২৩০% বেশি)।

বাটা সু লি.-এর ফেস ভ্যালু ১০/-টাকা, এনএডি ৭১/-টাকা, বাজার-দর ৫৮৬/-টাকা।

অটোমোবাইল কোম্পানি আফতাব অটোর শেয়ারের গায়ের দাম ১০/-টাকা, এনএডি ৫৫/-টাকা, বাজার-দর ৩৬০/-টাকা।

মেঘনা পেট : গায়ের দাম ১০/-টাকা, এনএডি ০.২ টাকা। অথচ ঐ দিনের বাজার-দর ২৮/-টাকা।

আমি অনুরোধ করব, উপরের বিষয়গুলো মনোযোগ সহকারে লক্ষ করুন। এরপর নিজেই বলুন, শেয়ারবাজারের লেনদেনে কোম্পানির সম্পদের প্রতিনিধিত্ব কী পরিমাণ আছে।

এবার শুনুন সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বিশেষজ্ঞের কথা। জনাব সালাহউদ্দীন আহমেদ খান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক প্রধান অফিসার (নির্বাহী কর্মকর্তা) কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, অনেকে মনে করেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে ফটকাবাজি ও জুয়াবাজি বেড়ে গেছে। এ বিষয়ে আপনার  দৃষ্টিভঙ্গি কী? জবাবে তিনি বলেন, যে কোনো পুঁজিবাজারেই ফটকা কারবারি ও স্পেকুলেটর থাকবে। যেহেতু আমাদের দেশে এখনো ব্যক্তি শ্রেণীর বিনিয়োগকারী বেশি তাই এটা স্বাভাবিক। অর্থাৎ তাঁর মতে,          ব্যক্তি শ্রেণীর বিনিয়োগকারীর (সাধারণ বেচাকেনাকারী শেয়ার হোল্ডার) আধিপত্য যত বেশি হবে বাজারে ফটকা ও জুয়ার প্রভাব ততই বাড়বে।

জনাব ফারুক আহমেদ সিদ্দীকি। শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান। সম্প্রতি তিনি শেয়ারবাজার নিয়ে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং অস্বাভাবিক অতি মূল্যায়ন সম্পর্কে বলেন, এই দ্রুত সম্প্রসারণের অনেক কারণই থাকতে পারে। কিন্তু তার কোনোটিই দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে সম্পৃক্ত নয়। অর্থাৎ এই উত্থান অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে ঘটেনি। এই অতি মূল্যায়িত বাজার কোনো মৌলভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে ছিল না। তিনি আরো বলেন, সবার চোখের সামনেই গত এক সপ্তাহে মানুষের বিশাল অংকের অর্থ হারিয়ে গেল। এ মানুষগুলোর অধিকাংশই অনভিজ্ঞ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী। তাদের বেশিরভাগই যেমন অতি মুনাফার লোভ সংবরণ করতে না পেরে না বুঝেই বিনিয়োগ করে তেমনি পড়ন্ত বাজারে আবার আতঙ্কিত হয়ে ক্ষতি স্বীকার করে দ্রুত শেয়ার বিক্রি করে দেয়। (উপরের কথাগুলো ডিসেম্বর ২০১০ এবং জানুয়ারি ২০১১ এর বিভিন্ন দিনের প্রথম আলো ও আমার দেশ পত্রিকা থেকে নেওয়া।)

অর্থনীতির সাথে জড়িত আরো অনেকে শেয়ারবাজারের লেনদেনকে ইতিমধ্যেই ফটকাবাজি বলে আখ্যা দিয়েছেন, যাদের মধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকজনও রয়েছেন।

মূলত এ সকল কথা তাদের বোঝার জন্য, যাদের শেয়ারবাজারের স্বাতন্ত্র এবং শেয়ারগুলোর মৌল ভিত্তির দুর্বলতা ও গৌণতার কথা বুঝে উঠতে সময় লাগে। অন্যথায় সবকিছু বাদ দিয়ে আপনি শুধু একটি কাজ করইে বিষয়টি সহজেই অনুধাবন করতে পারেন। তা হচ্ছে, দৈনিক পত্রিকার অর্থনীতি ও বাণিজ্য পাতায় মাঝে মাঝে চোখ বুলানো। সেখানে খুব ছোট অক্ষরে (আমার ভাষায় তাবীজের মতো) একটি চার্ট থাকে, যাতে আগের দিনের শেয়ারবাজারের লেনদেনের চিত্র তুলে ধরা হয়। যে সকল কোম্পানির শেয়ার বেচা-কেনা হয়েছে, সেগুলোর সর্বশেষ মূল্যসহ নানা তথ্য থাকে। আমি দরসে তালিবে ইলমদের সেগুলো বুঝিয়ে দিয়ে থাকি। এখন ঐ চার্টে আরো ২টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকে,যার একটি আমি উপরে উল্লেখ করেছি। অর্থাৎ এএনডি (অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী শেয়ারপ্রতি কোম্পানির নীট সম্পদ) অন্যটি হচ্ছে ইপিএস (শেয়ারপ্রতি আয়) এ দুটি বিষয় কোম্পানি নিজে ঘোষণা করে থাকে। কেউ তো আর নিজের সম্পদ ভ্যালু (অন্তত শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে) কম দেখায় না; বরং উল্টো অনেক কোম্পানি সম্পর্কে মুখরোচক কথাও মাঝে মাঝে বাজারে চালু হয় যে, তারা শেয়ারবাজারে সুবিধা নেওয়ার জন্য কোম্পানির খরচ কম দেখিয়ে অবাস্তব মুনাফা প্রদর্শন করে। যা হোক, আপনি যদি মাঝে মাঝে ঐ দুটি বিষয় দেখেন এবং একটু কষ্ট করে হিসাব করেন তাহলে আপনার হিসাবের ফলই বলবে, শেয়ারের বাজার-দর সংখ্যা কোম্পানির সম্পদ-মূল্য নয়। কারণ কোম্পানির নিজের ঘোষণাকৃত শেয়ারপ্রতি নীট সম্পদ মূল্য থেকে বাজারে তার শেয়ারের দাম ১০০০%, ২০০০%৩০০০%, ৪০০০% বা ক্ষেত্রবিশেষে তারও অধিক হয়ে থাকে।

আমি আপনি যাই বলি, বর্তমান শেয়ারবাজারের একজন সাধারণ বিনিয়োগকারীও বোঝে যে, কোম্পানির সম্পদের মাপকাঠিতে বিবেচনা করলে তার শেয়ার অনেকটাই মূল্যহীন। আর এ কারণেই শেয়ারবাজারে দাম পড়ে গেলে সে দিশেহারা বোধ করে। রাজনীতির সাথে সম্পর্কহীন ভদ্রলোক রাস্তায় নিরীহ মানুষের গাড়ি ভাংচুর, পুলিশকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ প্রভৃতি কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়। কারণ তার জানা আছে যে, এ আজব বাজার ছাড়া অন্য কোথাও তার ঐ দামী জিনিসগুলোর মূল্য নেই। যদি শেয়ারগুলোতে কোম্পানির সম্পদের বিষয়টিই মুখ্য হত তবে বাজারে শেয়ারের দাম কমে গেলেও কি লোকটির তেমন কোনো ক্ষতি হত? একটি সহজ উদাহরণ নিন, আপনার একটি জমি আছে। সেটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার আনুমানিক মূল্য এক লক্ষ টাকা। আশপাশের জমি এ রকম দামেই বিক্রি হয়ে থাকে। আপনার জমিটিরও ৮০/৯০ হাজার টাকা দাম উঠেছে। কিন্তু হঠাৎ দেখছেন ভিন্ন অবস্থা। যে কয়জন ক্রেতা জমিটি কিনতে আসছে তারা ৬০/৭০ হাজার টাকা দাম বলছে, কেউ কেউ আরো কম বলছে। আবার আশপাশের দু একজন কোনো কারণে কম দামে বিক্রিও করছে। আপনি কী করবেন? দিশেহারা হয়ে যাবেন? অস্বাভাবিক আচরণ করবেন? নিশ্চয়ই নয়; বরং বিষয়টিকে পাত্তাই দিবেন না। আপনি চিন্তা করবেন যে, জমি যখন আছে আমি এর আসল দাম পাবই। এরা কম বলছে তো কী  হয়েছে। কিন্তু শেয়ার বাজারের ভাইরা এ চিন্তা করেন না কেন? আসলে তাদের হাতে যে পণ্য রয়েছে তার বাস্তব মূল্য অনেক কম। সে হয়ত একটি কোম্পানির ১০/-টাকা ফেস ভ্যালুর ১ হাজার শেয়ার কিনেছে ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে অর্থাৎ প্রতি শেয়ার ৩০০/- টাকা করে (যার সম্মিলিত ফেস ভ্যালু বা গায়ের দাম ১০,০০০/-টাকা)। এখন যদি সে শেয়ার বাজারে এগুলো বিক্রি করতে না পারে এবং ঐ কোম্পানির লভ্যাংশের আশায় থাকে তাহলে কোম্পানি হয়ত তাকে ২০%, ২৫% অথবা ৩০% বা কমবেশি লভ্যাংশ দিবে। যার পরিমাণ হবে যথাক্রমে ২০০০/-, ২৫০০/- ও ৩০০০/- টাকা। এখন ৩ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে যদি এক বছরে সে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা পায় তাহলে অবস্থা কী হবে? কারণ কোম্পানি ২০% দিলেও তার ক্ষেত্রে এ লাভ ১% এরও কম। কারণ সে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেনি, করেছে ৩ লক্ষ টাকা। সুতরাং বাজারে শেয়ারের দাম কমে গেলে সে দিশেহারা হয়ে যায়। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। ভাংচুরে অংশ নেয়, বিক্ষোভ করে এবং অনেক ক্ষেত্রে আতঙ্কিত হয়ে লস করে নিজের শেয়ারগুলো বিক্রি করতে থাকে। ফলে বাজার আরো পড়ে যায়। এরপর তাদের অনেকের মুখে মুখে উচ্চারিত হতে থাকে, এটা একটা জুয়া। ... (গালি) জুয়াড়িরা পিছন থেকে কল-কব্জা নাড়ছে। কারসাজি করছে। অমুক অমুক গোষ্ঠী এত হাজার কোটি টাকা মার্কেট থেকে নিয়ে গেছে। প্রশ্ন হল, আপনার শেয়ার যদি কোম্পানির সম্পদের প্রতিনিধিই হয়ে থাকে তবে কোম্পানি তো বহাল তবিয়তেই আছে। আগের মতোই ব্যবসা করছে। আপনি বিচলিত ও উত্তেজিত হচ্ছেন কেন? আর উত্তেজিত হলেও স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া তো ছিল, কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে তার পরিচালকমন্ডলি বা ব্যবস্থাপকদের মুন্ডুপাত করা। কিন্তু চরম উত্তেজিত হয়েও আপনি এ কাজটি করছেন না। ষ

(চলবে ইনশাআল্লাহ)

 

 

 

advertisement