যিলকদ ১৪৩১   ||   নভেম্বর - ২০১০

হজ্ব-উমরার আমলসমূহ : মর্তবা ও ফযীলত

মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ ফাহাদ

মুমিন বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহ এই যে, তিনি তাকে এমন কিছু ইবাদত দান করেছেন, যা দ্বারা বান্দা তার রূহানী তারাক্কী, কলবের সুকুন ও প্রশান্তি এবং দুনিয়া-আখিরাতের খায়র ও বরকত লাভ করে থাকে। এসবেরই একটি হল হজ্ব। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে বাইতুল্লাহর হজ্ব করার নির্দেশ দিয়েছেন যেন এর মাধ্যমে তারা গুনাহ থেকে পাকসাফ হয় এবং জান্নাতে উচ্চ মর্তবা ও মাকাম লাভ করে।

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহর পথের মুজাহিদ এবং হজ্ব ও উমরাকারী হল আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহও তাদের প্রার্থনা কবুল করেন।-সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৮৯৩

অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হজ্ব ও উমরাকারীরা হল আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহও তাদের প্রার্থনা কবুল করেন।-মুসনাদে বাযযার/তারগীব হাদীস : ১৬৬১

নিম্নে হজ্ব ও উমরার কিছু ফযীলত উল্লেখ করা হল। যেন এর মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ লাভে অনুপ্রাণিত ও উৎসাহী হতে পারি।

হজ্বের ফযীলত

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি হজ্ব করে এবং অশ্লীলতা ও কটুক্তি থেকে বিরত থাকে সে এমনভাবে প্রত্যাবর্তন করে যেমনটি তার মা তাকে প্রসব করেছিল। (সহীহ বুখারী,হাদীস : ১৫২১)

অন্য এক বর্ণনায় তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন। জিজ্ঞাসা করা হল, এর পর কী? বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। বলা হল, এরপর? তিনি বললেন, মাবরূর হজ্ব।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৫১৯

জাবির রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মাবরূর হজ্বের প্রতিদান কেবল জান্নাত। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা  করলেন, মাবরূর হজ্ব কী? ইরশাদ করলেন, খাবার খাওয়ানো ও সালামের প্রসার ঘটানো।-মুসনাদে আহমদ ৩/৩২৫

আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা তিন ব্যক্তির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন : ১. যে ব্যক্তি আল্লাহর কোনো মসজিদের উদ্দেশে বের হয় ২. যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ করতে বের হয় ৩. যে ব্যক্তি হজ্বের উদ্দেশে বের হয়।-হিলয়াতুল আওলিয়া ৯/২৬২

কষ্টসাধ্য অবস্থায় হজ্ব করার ফযীলত

উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হজ্ব হল প্রত্যেক দুর্বলের জিহাদ।-সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদীস : ২৯০২ 

মহিলাদের হজ্ব করার ফযীলত

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। তাহলে আমরা (নারীরা) কি জিহাদ করব না? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না। তোমাদের জন্য উত্তম জিহাদ হল মাবরূর হজ্ব।-সহীহ বুখারী,হাদীস : ১৫০২

উমরার ফযীলত

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এক উমরা অন্য উমরা পর্যন্ত মধ্যবর্তী সকল কিছুর কাফফারা। আর মাবরূর হজ্বের একমাত্র প্রতিদান হল জান্নাত।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৭২৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩৪৯

হজ্বে খরচ করার ফযীলত

ইবনে আওন ইবরাহীম ও আসওয়াদের সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তাঁরা বলেছেন, হযরত আয়েশা রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! লোকেরা তো দুইটি ইবাদত নিয়ে ফিরে যাচ্ছে। আর আমি শুধু একটি নিয়ে ফিরব? তখন তাঁকে বলা হল, অপেক্ষা কর। যখন তুমি পবিত্র হবে তখন তানঈমে যাবে এবং (উমরার) ইহরাম বাঁধবে। এরপর অমুক স্থানে যাও। অবশ্য এসবের প্রতিদান হবে তোমার ব্যয় ও কষ্ট অনুযায়ী।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৭৮৭

অন্য বর্ণনায় তিনি আরো বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উমরার সময় বললেন, তোমার ব্যয় অনুপাতে উমরার প্রতিদান দেওয়া হবে।-মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৭৭৭; তারগীব, হাদীস : ১৬৮১

হজ্ব-সফরের ফযীলত

হযরত ইবনে ওমর রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা হজ্বকারীকে তার উটনীর প্রতি কদমে একটি নেকী লেখেন কিংবা একটি গুনাহ মুছে দেন। অথবা একটি মর্তবা বুলন্দ করে।-সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস : ১৮৮৭; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস : ৪১১৬

হযরত উবাদা ইবনে ছামিত রা. থেকেও অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। (দেখুন : আলমুজামুল আওসাত, হাদীস : ২৩৪১)

তালবিয়া পাঠের ফযীলত

সাহল ইবনে সাদ আসসায়েদী রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনো ব্যক্তি যখন তালবিয়া পাঠ করে তখন তার ডানে ও বামে পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যা কিছু আছে যেমন, গাছপালা, মাটি, পাথর সকল কিছু তালবিয়া পাঠ করতে থাকে।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ৮২৮; ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৯২১

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো মুমিন যখন ইহরামের হালতে দিন কাটাবে তখন সূর্য তার সকল গুনাহ নিয়ে অস্ত যাবে। আর কোনো মুসলিম যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ্বের তালবিয়া পাঠ করবে তখন তার ডানে-বামে পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত সবকিছু তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে।-জমে তিরমিযী, হাদীস : ৮১০; তারগীব, হাদীস : ১৭০৩

হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কেউ তালবিয়া পাঠ করবে তাকে সুসংবাদ দেওয়া হবে। এবং যে কেউ তাকবীর বলবে তাকে সুসংবাদ দেওয়া হবে। জিজ্ঞাসা করা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! জান্নাতের সুসংবাদ? উত্তরে নবীজী বললেন, হ্যাঁ।-আলমুজামুল আওসাত, তবারানী, হাদীস : ৭৭৭৫; তারগীব, হাদীস : ১৭০৭

মক্কা মুকাররমার ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে আদী ইবনে হামরা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হাযওয়ারানামক স্থানে ছিলেন তখন তাকে উটের উপর সওয়ার অবস্থায় বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই তুমি আল্লাহর শ্রেষ্ঠ যমীন। আর আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আল্লাহর কসম! যদি আমাকে তোমার (বুক) থেকে চলে যেতে বাধ্য না করা হত তাহলে আমি কখনো যেতাম না।-সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৩১০৮

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, ফতহে মক্কার দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেন, নিশ্চয়ই আসমান-যমীন সৃষ্টির দিনই আল্লাহ এই যমীনকে হারাম/সম্মানিত করেছেন। সুতরাং কিয়ামত পর্যন্ত তা হারাম ও সম্মানিত। ...।- সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩৫৩

মসজিদে হারামে নামায আদায়ের ফযীলত

আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, শুধু তিনটি মসজিদের উদ্দেশে সফর করা যাবে : আমার এই মসজিদ (মসজিদে নববী), মসজিদে হারাম ও মসজিদে আকসা।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩৯৭

জাবির রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমার এই মসজিদে একটি নামায অন্য মসজিদে হাজার নামায থেকেও উত্তম। তবে মসজিদে হারাম ছাড়া। কেননা, মসজিদে হারামে একটি নামায অন্য মসজিদের এক লক্ষ নামাযের চেয়ে উত্তম।-মুসনাদে আহমদ ৩/৩৯৭

বাইতুল্লাহর তাওয়াফের ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করে এবং দুই রাকাত নামায আদায় করে সে একটি গোলাম আযাদ করার ছওয়াব পাবে।   - ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৯৫৬

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, বাইতুল্লাহর তাওয়াফ হচ্ছে নামাযের মতো। তবে এতে তোমরা কথা বলতে পার। সুতরাং এ সময় যে কথা বলবে সে যেন শুধু উত্তম কথাই বলে।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ৯৬০

হাজরে আসওয়াদে চুমু খাওয়ার ফযীলত

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘এই দুটি রোকন (হাজরে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামানী) স্পর্শ করা গুনাহসমূহকে মুছে দেয়।’-জামে তিরমিযী, হাদীস : ৯৫৯

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, এই পাথর কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উপসি'ত হবে যে, তার দুটি চোখ থাকবে, যা দ্বারা সে দেখবে এবং জিহ্বা থাকবে, যা দ্বারা সে কথা বলবে। সে ঐ ব্যক্তির পক্ষে সাক্ষ্য দিবে যে তাকে সঠিক পন্থায় ইসতিলাম করে।-ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৯৪৪

সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈর ফযীলত

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই সাফা-মারওয়া আল্লাহর দুটি নিদর্শন।... -সূরা বাকারা : ১২৮

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ... । আর সাফা-মারওয়ায় তোমার সাঈ করা। তা তো ৭০ জন দাস মুক্ত করার সমতুল্য।-বাযযার/কাশফুল আসতার, হাদীস : ১০৮২; ইবনে হিব্বান, হাদীস : ১৮৮৭

আরাফায় উকূফের ফযীলত

হযরত আয়েশা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনো দিনই এমন নেই, যেদিন আল্লাহ তাআলা আরাফার দিনের চেয়েও অধিক সংখ্যক বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। আর তিনি তাদের নিকটবর্তী হন। এরপর ফেরেশতাদের সাথে তাদেরকে নিয়ে গর্ব করে করে বলেন, কী চায় এরা?-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩৪৮

হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের সাথে আহলে আরাফাকে নিয়ে গর্ব করেন এবং বলেন, আমার এইসব বান্দাদের দেখ, কেমন উস্কোখুস্কো চুলে, ধুলিমলিন হয়ে আমার নিকট এসেছে।-মুসনাদে আহমদ ২/২২৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস : ৩৮৫২

আরাফার দিনে দুআর ফযীলত

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আরাফা দিবসের শ্রেষ্ঠ দুআ এবং আমি ও পূর্ববর্তী নবীগণ যা বলেছি তার সর্বশ্রেষ্ঠ দুআ হল, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিং কাদীর।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩৫৮৫

জামরায় রমীর ফযীলত

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তুমি জামরায় রমী করলে তা তোমার জন্য কিয়ামতের দিন নূর হবে।-বাযযযার; কাশফুল আসতার, হাদীস : ১১৪০

হাদী নিয়ে যাওয়া ও কুরবানী করার ফযীলত

হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, উত্তম হজ্ব কী? তিনি বললেন, উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা ও পশু কুরবানী করা।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ৮২৭

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ... আর তুমি কুরবানী করলে তা তোমার প্রতিপালকের নিকট সঞ্চিত থাকবে।-বাযযার; কাশফুল আসতার, হাদীস : ১০৮২

হজ্ব থেকে হালাল হওয়ার জন্য হলক ও চুল কাটার ফযীলত

হযরত আবু  হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হে আল্লাহ! আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন। সাহাবায়ে কেরাম আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যারা চুল কাটবে তাদের? তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন। সাহাবায়ে কেরাম আবার আরয করলেন, যারা চুল কাটবে তাদের? তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আপনি হলককারীকে ক্ষমা করুন। সাহাবায়ে কেরাম তৃতীয়বার আরয করলে তিনি বললেন, আর যারা চুল কাটবে তাদেরকেও।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৭২৮

হজ্বে যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণকারীর ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। জনৈক মুহরিম ব্যক্তিকে তার সওয়ারী ভূপাতিত করলে তার মৃত্যু হয়। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা তাকে বড়ই পাতার পানি দ্বারা গোসল দাও এবং তার দুটি কাপড়েই তাকে কাফন পরাও। তবে তার মাথা ও চেহারা ঢেকো না। কেননা, কিয়ামত দিবসে সে তালবিয়া পাঠ করা অবস্থায় উত্থিত হবে।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১২০৬

ছোটদেরকে হজ্ব করানোর ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাওয়াহা নামক স্থানে (কিছু লোকের সাথে) মিলিত হলে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কারা? তারা বলল, মুসলিম। এরপর তারা জিজ্ঞাসা করল, আপনি কে? তিনি বললেন, আল্লাহর রাসূল। তখন তাঁর নিকট একজন মহিলা (একটি ছোট বাচ্চার দিকে ইশারা করে) বলল, এর জন্য কি হজ্ব আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আর তোমার জন্য রয়েছে এর প্রতিদান।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৭৯৪

হাজ্বীদেরকে পানি পান করানো ও তাদের খিদমতের ফযীলত

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করার স্থানে এসে পান করাতে বললেন। তখন আব্বাস রা. বললেন, হে ফযল! তোমার মায়ের নিকট গিয়ে তার কাছ থেকে পানীয় নিয়ে এস। এরপর তিনি বললেন, আমাকে পান করাও। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! লোকেরা এর ভিতরে হাত প্রবেশ করিয়ে থাকে। তিনি বললেন, আমাকে পান করাও। এরপর তিনি তা থেকে পান করলেন। অতপর তিনি যমযমের নিকট এলেন। লোকেরা সেখানে পান করাচ্ছিল ও কাজ করছিল। তিনি বললেন, তোমরা কাজ করতে থাক। কেননা, তোমরা নেক কাজই করছ। এরপর তিনি ইরশাদ করলেন, যদি তোমরা বিজয় লাভ না করতে তবে আমি নেমে আসতাম। আর রশি এর উপর রাখতাম। অর্থাৎ কাঁধের উপর। তিনি হাত দ্বারা কাঁধের দিকে ইশারা করলেন।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৬৩৪

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে  হজ্বের পরিপূর্ণ ফযীলত, বরকত ও রহমত দান করুন। আমীন।

 

 

advertisement