জুমাদাল উলা ১৪২৯   ||   মে ২০০৮

ব্যাপক ক্ষুধা ও দারিদ্র্য : আসুন, ঈমানী দায়িত্ব পালন করি

একটি হাদীসে এসেছে, মুমিনগণ পরস্পর ভালোবাসা ও সহমর্মিতায় এক দেহের মতো। আর দেহের কোনো অঙ্গে কষ্টের ছোঁয়া লাগলে গোটা দেহ জ্বর ও নিদ্রাহীনতায় আক্রান্ত হয়। আমরা জানি, অসংখ্য মুমিন নর-নারী ক্ষুধার জ্বালায় কষ্ট পাচ্ছেন। প্রশ্ন হল, বিষয়টি জানার পরও, এমনকি প্রত্যক্ষ করার পরও আমাদের সুখনিদ্রায় কোনো ব্যাঘাত ঘটেছে কি?

মুমিন হিসেবে এ মুহূর্তে আমাদের করণীয় হল, নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী গরীব দুঃখীদের খোঁজখবর নেওয়া। আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর মধ্যে কেউ এমন কষ্টে রয়েছেন কি না-এটা খোঁজ নেওয়া আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। তদ্রূপ যারা আমাদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে সংশ্লিষ্ট-কর্মচারী, কাজের বুয়া, অল্প আয়ের পরিচিত লোকজন, এদের সম্পর্কেও সচেতন হওয়া কর্তব্য।

আর এ ধরনের পরিস্থিতিতে অমুসলিমদের প্রতিও সাহায্য-সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা উচিত। সাধারণ দান অমুসলিমদেরকেও করা যায় এবং এর মাধ্যমে ছওয়াবও পাওয়া যায়। আর হতে পারে, আল্লাহ তাআলা এর মাধ্যমে কোনো হৃদয়ে ঈমানের আলো বিকশিত করে দিবেন। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন।

 

 নারী উন্নয়ন নীতি

না জানলে লা আদ্রী বলুন

সরকারের পক্ষ থেকে নারী উন্নয়ন নীতিমালার উপর সাময়িকভাবে স্থগিতাদেশ আসার পর এ বিষয়ে বিক্ষোভ-আন্দোলনও স্তিমিত হয়েছে। কিন্তু নারী উন্নয়ন নীতিমালা ঘোষিত হওয়ার পর যে শ্রেণীটি অতি মাত্রায় আনন্দিত হয়েছিল, এর স্থগিতাদেশ আসার পর তাদেরকে সেই অনুপাতেই বিক্ষুব্ধ হতে দেখা গেছে। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, এই ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে তারা মিথ্যাচারেরও সুযোগ নিচ্ছেন! জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। এ বিষয়ের অনেক দৃষ্টান্তই দেওয়া যায়। একটি দৃষ্টান্ত এখানে তুলে ধরছি :

গত ২৪/০৪/০৮ দৈনিক প্রথম আলোতে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির একজন অধ্যাপকের একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। নিবন্ধকার লিখেছেন, মুসলিম পারিবারিক আইনে সম্পত্তিতে পুরুষের তুলনায় নারীর অর্ধেক ভাগ। এর পেছনে যুক্তি ছিল, যেহেতু পুরুষ নারীর ভরণ পোষণের পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করবে সেহেতু নারীর অর্ধেক ভাগই ন্যায্য। যে অনুমিতির উপর নারীর অর্ধেক ভাগ প্রাপ্তিকে যথার্থ বলে মনে করা হয়েছিল সে অনুমিতি যদি আর কার্যকর না থাকে তাহলে ধর্মীয় ব্যাখ্যা ও সিদ্ধান্ত পাল্টানোর জন্য পরবর্তী কালের আলেম ওলামারা দায়িত্ব নেবেন না কেন

অন্য সময় হলে ধরে নেওয়া যেত, তিনি বিষয়টি জানেন না। কিন্তু যখন ব্যাপকভাবে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে এবং আলোচনার কেন্দ্রীয় বিষয়ও এটাই যে, উত্তরাধিকারের বিষয়ে কুরআনে সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে। অতএব তার বিপরীত কোনো নীতি বা আইন প্রণয়ন করা যাবে না। এরপরও কীভাবে বলা হল যে,  বিষয়টি নিছক যুক্তিনির্ভর?

একে ইসলামী শরীয়া সম্পর্কে মিথ্যাচার ছাড়া আর কী বলা যায়। আমরা মনে করি, এভাবে ফাঁকি ও প্রতারণা, মিথ্যাচার ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা পরিহার করে ন্যায়সঙ্গত পথে চিন্তাভাবনা, আলোচনা-পর্যালোচনা করা অপরিহার্য। অন্তত আমাদের শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবীদের কাছে আমরা এটাই আশা করি। ইসলামী বিধিবিধানের কল্যাণধর্মিতা সম্পর্কে কোনো সংশয় থাকলে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে আলোচনা করুন। আগে জানুন, তারপর বলুন। জানা না থাকলে লা আদ্রী বলুন। জানি না বলাতে লজ্জার কিছু নেই, মিথ্যাচারেই লজ্জা।


আগামী সংখ্যা থেকে পত্রিকার শুভেচ্ছা বিনিময় পনের টাকা

আগামী সংখ্যা থেকে মাসিক আলকাউসারের শুভেচ্ছা বিনিময় পনের টাকা করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিগত তিনমাস যাবৎ আমরা সম্মানিত পাঠক, গ্রাহক, শুভানুধ্যায়ীদের  মতামত চেয়েছি।  তারা   বাস্তবতার নিরিখে আন্তরিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। আগামী সংখ্যা থেকে পত্রিকার মুদ্রন ও অঙ্গসজ্জা আরও আকর্ষণীয় করার পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে  সবার সহযোগিতা চাই। আরো বিস্তারিত দেখুন ১৬ পৃষ্ঠায়। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। আল্লাহ তাআলা সকলকে  উত্তম বিনিময় দান করুন।

 

 

 

advertisement