তাঁদের নামায ও আমাদের নামায
মুহাম্মাদ এনামুল হাসান
একজন মুসলমানের জন্য ঈমানের পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হচ্ছে নামায। কুরআন মজীদের বিভিন্ন জায়গায় ঈমানের পরেই নামাযের কথা বলা হয়েছে। সূরা বাকারার শুরুতেই ইরশাদ হয়েছে-(তরজমা) ‘এটি সেই কিতাব; এতে কোনো সন্দেহ নেই। মুত্তাকীদের জন্য পথপ্রদর্শক। যারা ঈমান রাখে গায়বের প্রতি, নামায আদায় করে এবং আমি তাদেরকে যা দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।’ (সূরা বাকারা : ২-৩)
হাদীস শরীফে এসেছে-‘ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি : ১. সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল। ২. নামায আদায় করা। ৩. যাকাত প্রদান করা। ৪. হজ্ব করা। ৫. রমযানের রোযা রাখা।’ (সহীহ বুখারী ১/৬)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে যখন কেউ ইসলাম গ্রহণ করত তখন তিনি তাকে সর্বপ্রথম নামাযের অঙ্গীকার করাতেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পূর্বের নবী-রাসূলগণও তাওহীদের পরেই নামাযের আদেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-‘তাদেরকে তো আদেশ করা হয়েছিল একনিষ্ঠভাবে ইখলাসের সাথে আল্লাহর ইবাদত করতে এবং নামায কায়েম করতে ...।’ (সূরা বায়্যিনাহ ৫)
নামাযের ফযীলত
নামাযের অগণিত ফযীলতের মধ্যে একটি হচ্ছে নামায মানুষকে অন্যায় ও গুনাহ থেকে রক্ষা করে। ইরশাদ হয়েছে-‘নিশ্চয়ই নামায অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সূরা আনকাবূত : ৪৫)
এখানে প্রশ্ন হয়ে থাকে, নামায তো আমাদের গুনাহ থেকে হেফাযত করে না? এর উত্তর উক্ত আয়াতের মধ্যেই রয়েছে। বলা হয়েছে যে, ‘অবশ্যই আল্লাহর যিকর (স্মরণ) সবচেয়ে বড়’। এ অংশে আল্লাহ তাআলা গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখার প্রকৃত রহস্য বলে দিয়েছেন। অর্থাৎ অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরতকারী হচ্ছে আল্লাহর স্মরণ। যার নামাযে আল্লাহর স্মরণ যত বেশি হবে নামায তাকে তত বেশি গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখবে। আমাদের নামায সম্পর্কে যদি চিন্তা করি তাহলে আমাদের নামাযের প্রকৃত অবস্থা নিজেরাই অনুধাবন করতে সক্ষম হব। আমাদের তো গাফলতের কারণে এমনই অবস্থা যে, অনেক সময় নামাযের শেষে মনেও করতে পারি না যে, কোন কোন সূরা পড়েছি। আর মোটামুটি খেয়াল করে নামায পড়লেও আমরা কি খেয়াল করি যে, আমার রবের সাথে আমার কী কী কথোপকথন হল? এগুলো চিন্তা করলেই আমরা বুঝে যাব এই ফযীলত লাভের আমরা কতটুকু হক্বদার।
নামাযের ফযীলত সংক্রান্ত বহু হাদীস বিভিন্ন কিতাবে রয়েছে। এখানে কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হল।
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘তোমরা কি বলতে পার যদি তোমাদের কারো দরজার সামনে একটি নদী থাকে আর সে ঐ নদীতে পাঁচবার গোসল করে তাহলে তার শরীরে কি কোনো ময়লা থাকবে? সাহাবীগণ উত্তর দিলেন, তার শরীরে কোনো ময়লা থাকবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযও ঠিক এমনই। আল্লাহ তাআলা এর দ্বারা গুনাহসমূহ ধুয়ে মুছে ছাফ করে দেন।’ (সহীহ বুখারী ১/৭৬)
হযরত উছমান রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যখন নামাযের ওয়াক্ত উপস্থিত হয় তখন যে মুসলিম সুন্দরভাবে অযু করে খুশু-খুযূর সাথে উত্তমরূপে নামায আদায় করে, তার কবীরা গুনাহ ছাড়া পূর্বের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়। আর এ রকম সর্বদাই চলতে থাকে। (সহীহ মুসলিম ১/১২১)
অর্থাৎ প্রতি নামাযেই এভাবে গুনাহ মাফ হতে থাকে।
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামায এবং এক জুমআ থেকে অন্য জুমআ মধ্যবর্তী সময়ের জন্য গুনাহের কাফফারা স্বরূপ, যতক্ষণ কবীরা গুনাহ সংঘটিত না হয়।’ (সহীহ মুসলিম ১/১২২)
হযরত আবু যর রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শীতকালে একবার বের হলেন। ঐ সময় গাছের পাতা ঝরছিল। তিনি একটি গাছ থেকে দুটি ডাল নিয়ে সেগুলো নাড়া দিয়ে পাতা ফেলতে থাকেন এবং বললেন, আবু যর! আমি বললাম, লাববাইক ইয়া রাসূলুল্লাহ। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই কোনো মুসলমান যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নামায আদায় করে তখন তার গুনাহগুলো এভাবে ঝরে যায় যেমন এই গাছ থেকে পাতাগুলো ঝরে যাচ্ছে। (মুসনাদে আহমদ ৫/১৭৯)
নামাযের প্রতি মুহাববত
নামাযের তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর। মাসায়িল মোতাবেক নামাযের রোকনগুলো আদায় করার পাশাপাশি অন্তরের ইখলাস ও খুশু-খুযূ এবং নামাযের প্রতি মুহাববত নামাযের পূর্ণাঙ্গতার জন্য অপরিহার্য। এই পূর্ণাঙ্গ নামাযের মাধ্যমে স্রষ্টার সাথে সৃষ্টির নিকটতম সম্পর্ক তৈরি হয়। আল্লাহ তাআলার নৈকট্য ও মুহাববত লাভের এবং প্রেমাষ্পদের সঙ্গে যোগাযোগ ও কথোপকথনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম নামায।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন- (তরজমা) ‘আমাকে স্মরণ করার জন্য নামায পড়।’ (সূরা ত্বহা : ১৪)
এক হাদীসে কুদসী থেকে বোঝা যায় যে, আল্লাহ তাআলার নৈকট্য ও মুহাববত সবচেয়ে বেশি নামাযের মাধ্যমে, বিশেষত নফল নামাযের দ্বারা অর্জিত হয়। এজন্য নামায সঠিকভাবে আদায়ের সাথে সাথে অন্তরে নামাযের প্রতি মুহাববত ও ভালবাসা তৈরি করা জরুরি। নামাযের প্রতি মুহাববতের কারণেই আল্লাহর প্রকৃত নেক বান্দাগণ যখন নামাযে দাড়ান তখন তাদের দিলের সব অস্থিরতা ও পেরেশানি দূর হয়ে যায়। হৃদয় ও মন শান্ত ও প্রশান্ত হয়। দিলে সুকূন ও সাকীনা অনুভব করেন। অপরদিকে কোনো কারণে নামায আদায়ে বিলম্ব হলে কিংবা কোনো অসুবিধা হলে তারা অস্থির ও বিচলিত হয়ে পড়েন।
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র সীরাতের দিকে লক্ষ করলে আমরা দেখতে পাই তিনি বলেছেন- নামাযে আমার চোখের শীতলতা।
অন্য এক হাদীসে হযরত বেলাল রা.কে আদেশ করেছেন, ‘হে বেলাল! নামায কায়েম করে আমাদেরকে প্রশান্তি দাও।’ (সুনানে আবু দাউদ ২/৬৮১)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নফল নামাযে দাঁড়াতেন তখন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ কিরাত পড়তেন। কখনও কখনও প্রথম রাকাতে সূরা বাকারা, দ্বিতীয় রাকাতে সূরা আল ইমরান, তৃতীয় রাকাতে সূরা নিসা এবং চতূর্থ রাকাতে সূরা মায়িদা পড়তেন। তিলাওয়াত করতেন তারতীলের সাথে। রহমতের আয়াত এলে থেমে রহমতের জন্য দুআ করতেন, আযাব ও শাস্তির আয়াতে পৌঁছলে আযাব থেকে পানাহ চাইতেন। এভাবে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ফুলে যেত, কিন্তু তিনি নামাযের মধ্যে এমনভাবে মগ্ন হয়ে থাকতেন যে, সেদিকে তাঁর কোনো খেয়ালই হত না।
তদ্রূপ নামায পড়ায় ব্যঘাত সৃষ্টি হলে তিনি অস্থির হয়ে যেতেন।
মক্কার লোকদের সাড়া না পেয়ে অনেক আশা নিয়ে যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়েফ গেলেন তখন তারা মক্কাবাসীদের চেয়েও অধিক নির্দয়তার পরিচয় দিল এবং কুরায়েশদের চেয়েও বেশি নিষ্ঠুরতা দেখাল। নবীজী যখন ভগ্নহৃদয়ে ফিরে আসছিলেন তখন তারা দুষ্কৃতিকারী ও বদমাশদের লেলিয়ে দিল। তারা পাথর ছুড়ে ছুড়ে নবীজীর দেহ মুবারক রক্তাক্ত করে ফেলল। সেই সঙ্গীন মুহূর্তেও দয়ার নবী তাদের জন্য কোনো বদদুআ করেননি; বরং ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন এবং বলেছিলেন, এরা আমাকে চিনতে পারেনি, আমার দাওয়াত বুঝতে পারেনি। এদের ভবিষ্যত প্রজন্ম আমার ডাকে সাড়া দিবে, আমার দাওয়াত কবুল করবে। কিন্তু খন্দকের যুদ্ধে যখন তাঁর আসরের নামায কাযা হয়ে গেল, কাফেররা তাঁকে সময়মতো নামায পড়তে দিল না তখন তাঁর যবান মুবারক থেকে কঠিন বদ দুআ বের হয়ে এল। তিনি বললেন, ‘আল্লাহ এদের ঘরগুলো ও কবরগুলোকে আগুন দিয়ে পরিপূর্ণ করে দিন।’ সূর্য ডুবে গেল অথচ এরা আমাদেরকে সালাতুল উসতা (আসরের নামায) পড়তে দিল না। (সহীহ বুখারী ১/৪১০; সুনানে তিরমিযী ২/১২৭)
সাহাবীদেরও নামাযের সাথে ভালোবাসা ছিল অফুরন্ত।
হযরত আবু বকর রা.-এর নামাযে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রা. বর্ণনা করেন যে, তিনি যখন নামাযে দাঁড়াতেন তখন এমন নিশ্চুপ ও নিশ্চল হয়ে থাকতেন, মনে হত, একটি কাঠ মাটিতে গেড়ে দেওয়া হয়েছে।
হযরত ওমর রা.কে যখন কুখ্যাত আবু লূলূ খঞ্জর দিয়ে আহত করে তখন তিনি বারবার বেহুশ হয়ে পড়ছিলেন। এ অবস্থায় কেউ তাঁকে নামাযের কথা স্মরণ করিয়ে দিলে তৎক্ষণাৎ নামায পড়ে নিলেন এবং বললেন, ‘আমি যদি নামায পড়তেই অক্ষম হয়ে যাই তবে বেঁচে থেকে আর লাভ কী?’
এক যুদ্ধের ঘটনা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের বেলা দুজন সাহাবীকে পাহারার দায়িত্ব দিলেন। তাঁদের একজন ছিলেন মুহাজির অপরজন আনসারী। দুজনে সিদ্ধান্ত নিলেন, আমাদের একজন রাতের দ্বিপ্রহর পর্যন্ত পাহারা দিবে অপরজন বিশ্রাম নিবে। অতঃপর দ্বিতীয় জন উঠে পাহারা দিবে আর প্রথম জন বিশ্রাম নিবে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতের প্রথমভাগে আনসারী সাহাবী পাহারা দেওয়া শুরু করলেন এবং মুহাজির সাহাবী শুয়ে পড়লেন। আনসারী সাহাবী ভাবলেন শুধু বসে না থেকে বরং নামায পড়ি। নামায শুরু করার পর শত্রুশিবির থেকে এক কাফের এসে তাঁকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে তীর ছুড়ল। তিনি অবিচল দাড়িয়ে থাকলেন। ঐ দুশমন মনে করল তীর হয়তো ঠিকমতো লাগেনি। তাই সে আবার তীর ছুড়ল। এদিকে ঐ সাহাবী একভাবেই দাড়িয়ে রইলেন। ওদিকে ঐ দুশমনও একের পর এক তীর ছুড়তে লাগল। আর তা সাহাবীকে বিদ্ধ করতে থাকল। সাহাবী ধীরস্থিরভাবে রুকু-সেজদা আদায় করে যথারীতি নামায শেষ করলেন এবং মুহাজির সাথীকে জাগ্রত করলেন। মুহাজির সাহাবী তাঁর শরীর থেকে রক্ত প্রবাহিত হতে দেখে ব্যাকুল হয়ে গেলেন এবং ঘটনা শুনে বললেন, তুমি আমাকে আরো আগে কেন জাগ্রত করনি? আনসারী উত্তর দিলেন, আমি সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করছিলাম, শেষ না করে রুকুতে যেতে ইচ্ছে হল না। কিন্তু পরে আশঙ্কা হল আমার গায়ে যেভাবে তীর বিদ্ধ হচ্ছে তাতে যেকোনো অবস্থায় আমি শহীদ হয়ে যেতে পারি। আর তোমাকে জাগানোর আগেই যদি আমি শহীদ হয়ে যাই তাহলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে উদ্দেশ্যে পাহারা দিতে বলেছিলেন তা ব্যর্থ হয়ে যাবে। তাই তাড়াতাড়ি নামায শেষ করে ফেলেছি। যদি এ আশংকা না হত তাহলে সূরা শেষ না করে আমি রুকুতে যেতাম না। যদিও আমার জীবন-প্রদীপ নিভে যাক না কেন?
প্রিয় পাঠক! নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর প্রিয় সাহাবীদের নামায সংক্রান্ত এরূপ বহু ঘটনা কিতাবের পাতায় পাতায় লিপিবদ্ধ আছে। তদ্রূপ আমাদের সালাফ ও আকাবিরের সম্পর্কেও এ রকম প্রচুর ঘটনা রয়েছে। ছোট্ট একটি ঘটনা উল্লেখ করছি।
একবার এক বুযুর্গ উপস্থিত ব্যক্তিদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, জান্নাতে কি নামায থাকবে? তাঁকে বলা হল, জান্নাত তো প্রতিদানের স্থান। সেখানে তো নামায পড়তে হবে না। ঐ বুযুর্গ একথা শুনে কাঁদতে আরম্ভ করলেন আর বলতে লাগলেন, তাহলে কীভাবে সেখানে থাকব?
নবীজী তো বলেছেন, নামাযে আমার চোখে শীতলতা।
নবীজীর সাহাবীরা তো নামায বিহীন জীবনকে অনর্থক মনে করতেন। নামাযের মধ্যে সামান্য অমনোযোগিতার কারণে তাঁরা লক্ষ টাকার বাগান সদকা করে দিতেন। কিন্তু হায়! আমরা তো এতই হতভাগা যে, চক্ষুর শীতলতা লাভ করা তো দূরের কথা, তাঁরা যেমন প্রশান্তি লাভ করতেন, তার মর্ম উপলব্ধি করতেও আমরা অক্ষম। অন্তত তাঁদের বরকতময় ঘটনাগুলো পড়া ও স্মরণ করার দ্বারা দিলের মধ্যে যদি সামান্য উত্তাপ তৈরি হয় তাতেই বা কম কী?
শেষ কথা, উপরের আলোচনা থেকে কেউ যেন এ ভুল ধারণায় পতিত না হয় যে, আমরা যদি ঐভাবে নামায না পড়তে পারি তাহলে আমাদের নামায হবে না। কিংবা পূর্ণাঙ্গভাবে আদায় হবে না। এ ধারণা ঠিক নয়; বরং নামাযের নিয়ত, তাকবীর, কেরাত, রুকু, সেজদাসহ নামাযের সকল ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নাতগুলো মাসায়িল মোতাবেক আদায় করলে নামায সহীহ হয়ে যাবে। এর পাশাপাশি নামাযের মধ্যে কখন কোন রোকন আদায় করা হচ্ছে এবং কী কী পড়া হচ্ছে সেগুলোর দিকে খেয়াল রাখলে খুশু-খুযূ আদায় হবে। সেই সাথে কারো যদি সারা জীবনও নামায পড়তে কষ্ট হতে থাকে আর সে নফসের সাথে জিহাদ করে নামায পড়তে থাকে তাহলে সে এই কষ্টের জন্য অতিরিক্ত বিনিময় ও পুরষ্কার লাভ করবে। অতএব চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। হ্যাঁ, এই চেষ্টা অবশ্যই চালু রাখতে হবে যেন আমার নামায উত্তরোত্তর সুন্দর হয়।
আল্লাহ তাআলা যেভাবে নামাযে আদায় করলে সবচেয়ে খুশি ও সন্তুষ্ট হন সেভাবে আমাদেরকে নামায আদায় করার তাওফীক দান করুন। আমীন। #