জুমাদাল উলা ১৪৩৬   ||   মার্চ ২০১৫

এটি হাদীস নয় : দুনিয়া পচা মরদেহের মত, আর যে ব্যক্তি (আল্লাহর নাফরমানীর মাধ্যমে) এর পিছে ছুটে সে কুকুরের মত

الدنيا جيفة، وطلابها كلاب

এ দুনিয়া অতি ক্ষণস্থায়ী ও মূল্যহীন; যেমন পচা মরদেহ মূল্যহীন। দুনিয়া অর্জনের পিছে পড়ে আখেরাত বরবাদ করা; আল্লাহর নাফরমানী করা, হালাল-হারামের পরোয়া না করা ইত্যাদি ঠিক নয়- একথা বুঝাতে গিয়ে এ বাক্যটি বলা হয়।

একটি পচা মরদেহ বা পচা মৃতপ্রাণীর যেমন আমাদের কাছে কোনো মূল্য নেই। আমরা তা অর্জনের জন্য এর পিছনে ছুটি না। অথচ কুকুরের কাছে এর অনেক মূল্য। কাড়াকাড়ি-ছেঁড়াছিঁড়ি করে কুকুর তা অর্জন করতে চায়। তেমনি যারা আল্লাহর নাফরমানীর মাধ্যমে, আখেরাতকে বরবাদ করে দুনিয়া নিয়ে ছেঁড়াছিঁড়ি-মারামারি করে তারাও যেন ঐ কুকুরগুলোর মত মূল্যহীন বস্তু অর্জনের জন্য মারামারি-ছেঁড়াছিঁড়ি করছে। এ বাক্যটিতে একথাই তুলে ধরা হয়েছে।

তবে উল্লেখিত কথাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস নয়। আযলূনী রাহ. বলেন, যদিও এর অর্থ সহীহ, কিন্তু এটি রাসূলের হাদীস নয়। ছগানী রাহ. বলেছেন, এটি একটি জাল বর্ণনা। -কাশফুল খাফা, বর্ণনা নং ১৩১৩

আল্লাহর কাছে এ দুনিয়ার মূল্য কতটুকু এ বিষয়ে জামে তিরমিযীর একটি হাদীসে (হাদীস নং ২৩২০) আছে, দুনিয়া যদি আল্লাহ তাআলার কাছে মাছির ডানার বরাবর মূল্য রাখত তাহলে আল্লাহ তাআলা কোনো কাফেরকে (আল্লাহ-দ্রোহীকে) এক ঢোক পানি পান করতে দিতেন না।

কিন্তু বৈধ পন্থায় দুনিয়া অর্জন এবং হালাল উপার্জন কখনোই দোষণীয় নয়। বরং সৎ ও সত্যবাদী ব্যবসায়ী আখেরাতে নবীদের সঙ্গী হবে। তেমনি দুনিয়া উপার্জন যাদেরকে আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে বিমুখ করে না, কুরআনে কারীমে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে।

আসলে দোষণীয় হল, আল্লাহর নাফরমানীর মাধ্যমে আল্লাহকে ভুলে শুধু দুনিয়ার পিছনে পড়ে থাকা। দুনিয়া উপার্জনে হালাল-হারামের তোয়াক্কা না করা।

 

 

advertisement