মুহাররম ১৪৩৬   ||   নভেম্বর ২০১৪

একটি বাতিল বর্ণনা : আল্লাহ সুস্থতার নিআমত চাইতেন (নাউযুবিল্লাহ)

মূসা আ. ও আল্লাহর মাঝে কথোপকথন হয়েছে এটা কুরআন দ্বারা স্বীকৃত। এজন্য মূসা আ.-কে মূসা কালিমুল্লাহ বলা হয়। এটাকেই পুঁজি করে এক শ্রেণীর কাহিনীকার মূসা আ. ও আল্লাহর মাঝে কথোপকথন শিরোনামে সমাজে বহু আজগুবি ঘটনা বলে থাকে, যা ওয়াজের মাঠ গরম করে ঠিকই কিন্তু সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।

এগুলোর মধ্যে প্রসিদ্ধ একটি কথোপকথন হল সুস্থতার নিআমত বিষয়ে। ‘‘মূসা আ. আল্লাহকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ! আপনি যদি মূসা হতেন আর আমি যদি আল্লাহ হতাম তাহলে আপনি কী চাইতেন? আল্লাহ বললেন, এটা আমার শান না। মূসা বললেন, তা তো জানি, কিন্তু হলে কী চাইতেন। তখন আল্লাহ বলেন, সুস্থতা চাইতাম।’’

সুস্থতা কত বড় নিআমত একথা বোঝাতে এই বানোয়াট কিচ্ছা বলা হয়, যার সাথে মূসা আ.-এর কোনোই সম্পর্ক নেই।

এমন কথোপকথনের অর্থ দাঁড়ায় মূসা আ. আল্লাহর সাথে মশকরা করছেন। (নাউযুবিল্লাহ) যা একজন নবীর জন্য কখনোই শোভন নয়। একজন নবীর শানে এধরনের কথা বলা বড়ই বেআদবী ও গর্হিত কাজ, যা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

সুস্থতার নিআমতের ব্যাপারে তো হাদীস শরীফে কত সুন্দর সুন্দর কথা এসেছে সেগুলোই বলা উচিত।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

نِعْمَتَانِ مَغْبُونٌ فِيهِمَا كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ: الصِّحَّةُ وَالْفَرَاغُ

 ‘‘দুটি নিআমতের ব্যাপারে মানুষ বড়ই ক্ষতির মধ্যে (লসের মধ্যে) রয়েছে। একটি হল, সুস্থতা, অপরটি হল, অবসর। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪১২)

সুস্থতা ও অবসরকে মানুষ যথাযথ কাজে লাগায় না। যখন অসুস্থ হয় বা ব্যস্ততা বেড়ে যায় তখন বলে, এখন আমি সুস্থ থাকলে বা আমার অবসর থাকলে অমুক ভাল কাজ করতাম। অথবা বলে, সুস্থ হলে বা অবসর পেলে অমুক ভাল কাজ করব। অথচ আগের সুস্থতার সময় বা অবসর সময়কে সে হেলায় নষ্ট করেছে। এদিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে হাদীস শরীফে।

সুতরাং সহীহ বর্ণনা থাকতে ভিত্তিহীন কথা বলা মূর্খতা বৈ কিছুই নয়। আমরা তা থেকে বিরত থাকব এবং যাচাই বাছাই ছাড়া কিছু বলব না এবং কোনো কিছু শোনামাত্রই বলে বেড়াব না। 

 

 

advertisement