শাবান-রমযান ১৪৩৫   ||   জুন-জুলাই ২০১৪

শেকড়ের সন্ধানে

আবু বকর সিদ্দিক

একটি গাছ যতক্ষণ শেকড়ের সাথে সংযুক্ত থাকে ততক্ষণ তাকে গাছ বলা চলে। কিন্তু যখনই সে শেকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাকে আর গাছ বলা হয় না, বলা হয় লাকড়ি বা খড়ি। তার স্থান তখন উনুনে। তাকে আগুনে পোড়ানো হয়। ঈমানদার মানুষের জীবনেও শেকড়ের গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়। শেকড় তথা মূলকে যখনই সে ভুলে যায় তখনই সে নানান বিপদের সম্মুখীন হয়। স্রষ্টা নিজেই বারবার ঈমানের শেকড়কে না ভোলার তাগিদ দিয়েছেন। শেকড়ের এমন গুরুত্বের কারণেই বোধহয় মানুষ বরাবরই শেকড়ের প্রতি দুর্বল। শেকড়কে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা লক্ষ্য করা যায় মানব সমাজে।

শেকড় ও মূল থেকে বিচ্ছিন্ন না হওয়া এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে কওমী মাদরাসা পড়ুয়া কলেজ-ভার্সিটির শিক্ষার্থীদের নিয়ে গত ১মে, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হল শেকড়ের সন্ধানে মিলনমেলা। দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ইসলামী গবেষণাকেন্দ্র মারকাযুদদাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই মিলনমেলায় শেকড়ের টানে উপস্থিত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী। সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির প্রভাষক মুহাম্মাদ হাবীবুল্লাহ-এর উপস্থাপনায় সকাল ১০ ঘটিকায় কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও শিক্ষাবিদগণ জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে এই মেধাবী তরুণ আলেমদের মেধার সঠিক ব্যবহার ও সংগঠিতভাবে কাজের নানা পদক্ষেপের প্রস্তাব পেশ করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সুধী ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আরবী বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক ফখরুদ্দীন আহমাদ। তিনি শিক্ষার্থীদের দাওয়াত-এর প্রতি আহবান জানানোর পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের প্রতি উৎসাহ প্রদান করেন এবং নিজ নিজ বিভাগে সবাইকে শিক্ষক হওয়ার প্রতি তাগিদ দেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ও স্বীয় অনুভূতি ব্যক্ত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আরবী বিভাগের প্রভাষক আব্দুল মান্নান মিয়াজী, শামীম আহমদ এবং উর্দু বিভাগের প্রভাষক আব্দুর রশিদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদানকালে দৈনিক নয়া দিগন্তের সহ-সম্পাদক মাওলানা লিয়াকত আলী সবাইকে নিজ নিজ বিষয়ে পূর্ণ দক্ষতা অর্জন ও সংঘবদ্ধভাবে দেশ, ধর্ম ও জাতির সেবা করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মশালা আয়োজনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি প্রস্তাব করেন। মারকাযুদ্দাওয়াহ-এর পরিচালক ও মাসিক আলকাউসার -এর সম্পাদক মুফতী আবুল হাসান মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ সবাইকে একতার বন্ধনে আবদ্ধ থেকে সমাজের সকল বৈধ ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ার  প্রতি জোর দেন। বিশিষ্ট হাদীস বিশারদ হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক ছাহেব আদর্শ ও ঈমানের বন্ধন ঠিক রেখে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতি আহবান জানান। অনুষ্ঠানে খতিবে আজম আল্লামা সিদ্দিক আহমাদ রাহ.-এর প্রদত্ত কওমি মাদরাসার ভবিষ্যৎ সংক্রান্ত একটি ভাষণের কপিও সবাইকে দেয়া হয়।

সবশেষে এই মেধাশক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঘোষণা ও দুআর মাধ্যমে বিকাল ৫ ঘটিকায় দিনব্যাপী এই মিলনমেলার সমাপ্তি ঘটে। ষ

 

 

advertisement