মুহাররম ১৪৩৫   ||   নভেম্বর ২০১৩

যে বাড়িটি সারারাত ইবাদতে সজীব

ড. আয়েয আলকরনী

সালেহ ইবনে হুয়াই-এর স্ত্রীর কাহিনী ! দুটি সন্তান  রেখে তাঁর স্বামী মারা যান। মা সন্তান দুটিকে অতি যত্নে লালন-পালন করেন। তাদের দ্বীনী শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। তাদের মাঝে আল্লাহর ভয় ও জান্নাতের আশা জাগ্রত করেন। যখন তারা যৌবনে পদার্পণ করল তখন তাদেরকে কিয়ামুল লাইলে (রাত জেগে নফল নামায) অভ্যস্ত করলেন।

একদিন মা সন্তানদের নিয়ে পরামর্শ করলেন, এসো আমরা চেষ্টা করি আমাদের বাড়ি সারারাত ইবাদতে সজীব রাখতে। নেক মা-বাবার নেক সন্তান, তারা আগ্রহের সাথে মায়ের প্রস্তাবকে স্বাগত জানাল। সকলে মিলে উপায় বের করল; রাত্রকে তিন ভাগে ভাগ করা হবে। প্রথমাংশে এক ছেলে নামাযে দন্ডায়মান হবে। দ্বিতীয়াংশে আরেক ছেলে। তৃতীয়াংশে ফজর পর্যন্ত মা ইবাদতে মশগুল হবেন এবং ফজরের আযান হলে ছেলেদের ফজরের জামাতের জন্য জাগিয়ে দিবেন।

এভাবে চলতে থাকল। মা-সন্তান মিলে সারারাত বাড়িটি আল্লাহর ইবাদতে সজীব রাখে। কখনো নামাযের মাধ্যমে কখনো বা যিকির-তিলাওয়াতে। একদিন মায়ের ইন্তেকাল হয়ে গেল, কিন্তু তারা কিয়ামুল লাইল ছাড়ল না। দুই ভাই মিলেই সারারাত ইবাদতে বাড়িটিকে সজীব রাখল। কারণ ততদিনে তারা আল্লাহর ইবাদতের স্বাদ পেয়ে গেছে এবং রাতের ইবাদতের মুহূর্তগুলো তাদের কাছে জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মুহূর্ত হয়ে গেছে।

তারা রাতকে দুই ভাগে ভাগ করে ইবাদাত করতে থাকল। কখনো যদি এক ভাই অসুস্থ হত তো আরেক ভাই একাই সারারাত ইবাদতে মশগুল থাকত। আর তাদের মা-বাবা কবরে বসে তাদের রেখে যাওয়া এ অমূল্য সম্পদ ভোগ করতে থাকল। 

 

 

advertisement